খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুর আমাদের কাছে বেশ পরিচিত একটি ফল। এই ফলটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও স্বাথ্যকর। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ফাইবার, ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মত নানান পুষ্টিগুণ। আমাদের বয়স ৩০-এর কোঠা পার হওয়ার সাথে সাথে এসব খাদ্য উপাদান শরীরে জন্য অতীব জরুরী হয়ে ওঠে।

এ সময় থেকে মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতা কমা শুরু করে। শুধু তাই নয়, দেহের কর্মশক্তি হ্রাস, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস, পেশির সমস্যা, হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হজমে সমস্যা, হিমোগ্লোবিনের অসামঞ্জস্যতা, হাড় ক্ষয়, ডায়াবেটিস সহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।

আর এসব সমস্যারই সমাধানে অন্যতম একটি দামি অস্ত্র হতে পারে এই খেজুর। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে, তো চলুন শুরু করা যাক।

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা

  • খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা খাবার হজম করতে দারুন সহায়তা করে।
  • খেজুরে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে।
  • মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায় ও স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
  • খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি যা আমাদের কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
  • প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে থাকে ২৭০- ৩১০ ক্যালরি যা অনায়াসেই আমাদের ক্যালরির ঘাটতি মেটায়।
  • খেজুরে থাকা অসংখ্য পুষ্টিগুন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
  • খেজুরে বিদ্যমান এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম। 
  • খেজুরের মধ্যে শরীরের ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে, এবং এর এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্ত্র থেকে গ্লুকোজ শোষনের হার কমাতে পারে যা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।
  • খেজুর কিডনির অতিরক্ত প্লাজমা (Plasma) এবং ক্রিয়েটিনাইন (Creatinine) কমাতেও সাহায্য করে যা কিডনির সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো। 
  • খেজুর হাড়ের ক্ষয়রোধ করতে এবয় হাড়ের সঠিক গঠনে সাহায্য করে।
  • খেজুরে থাকা আয়রন অতিরিক্ত চুল পরা রোধ করে। 
  • খেজুরে রয়েছে ভিটামিন এ যা রাত কানা রোগ রোধে সহায়ক।

খেজুরের অপকারিতা

খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা আছে, এটা যেমন সত্য তেমন কিছু কিছু ক্ষেত্রেখেজুর গ্রহনে সতর্ক হওয়া উচিত।

যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছে এবং যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং প্রয়োজরে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

যাদের খেজুরে এলার্জির আছে তাদের ক্ষেত্রে খেজুর এড়িয়ে চলা উত্তম। যদি আপনার রক্তে গারের মাত্রা বেশি থাকে সে ক্ষেত্রে অতি মাত্রায় খেজুর গ্রহন রক্তে সুগারের মাত্রা খুব দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে।

যদি আপনার ওজন অতিরিক্ত বেশি হয় সে ক্ষেত্রে খেজুর কম খাওয়াই ভালো, কারন খেজুরে ক্যালরির মাত্রা বেশি থাকায় এটি ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।

জনপ্রিয় কিছু খেজুরের নাম 

বাজারে অনেক খেজুর পাওয়া তাদের মধ্যে জনপ্রিয় কিছু হলঃ

  • খুদরি
  • সেফরি
  • মাবরুম
  • খালাস 
  • মুসকানি
  • আজোয়া
  • শালাবি
  • ওয়াসালি
  • সাফাওয়ি
  • সিক্কারি
  • ওয়ান্নাহ
  • ডেইরি
  • সাগী
  • আনবারা
  • বেহরি 

প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে যা যা থাকে

  • ক্যালোরি: ২৭৭
  • শর্করা: ৭৫ গ্রাম
  • ফাইবার: ৭ গ্রাম
  • প্রোটিন: ২ গ্রাম
  • পটাসিয়াম: ১৫% ডিভি
  • ম্যাগনেসিয়াম: ১৩% ডিভি
  • তামা: ৪০% ডিভি
  • ম্যাঙ্গানিজ: ১৩% ডিভি
  • আয়রন: ৫% ডিভি
  • ভিটামিন বি৬: ১৫% ডিভি

উপসংহার

খেজুর নিঃসন্দেহে পুষ্টিগুনে ভরা একটি উপকারি খাবার। ক্যালরি, ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন সহ নানা পুষ্টিগুনের উৎস হিসেবে খেজুর সহজলভ্য। এত পুষ্টিগুন একসাথে খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়। আমাদের চেষ্টা করা উচিত প্রতিদিন ৩-৪ টি খেজুর খাওয়া। তবে যাদের সুগার লেভেল বেশী বা ডায়েবেটিস রয়েছে তাদের খেজুর বেশি পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

আপনার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন-

কলা খাওয়ার উপকারিতা

Leave a Comment