সুখী হওয়ার ১০টি উপায় ও সুখ অর্জনের প্রচেষ্টা

সুখী হওয়ার ১০টি উপায়

সুখে থাকতে কে না চাই, সকলেই সুখে থাকতে চাই। সুখ এমন একটি শব্দ যার সন্ধানে সকলেই ব্যাস্ত। সুখের সংজ্ঞা প্রত্যেকের নিকট আলাদা। কারো কাছে সুখ হলো স্বাধীনতা,

আবার আরেকজনের কিছু না থাকলেও সে সুখী থাকতে পারে। সুখে থাকার চাবি কাঠি রয়েছে নিজের হাতেই। আমাদের মস্তিষ্ক এবং মনের সংযোগ সুখের ধরণ গড়ে তোলে। সুখের অনুভূতি বিভিন্ন অবস্থায় আমাদের মনে ধারণা করে পাওয়া যায়, যেমন আনন্দ, শান্তি, বিশ্রাম, ও আত্মসম্মান।

কারও কাছে সুখ হলো সকলের সাথে মিলেমিশে থাকা ,আবার কারও কাছে মনের সুখই আসল সুখ। আজ আলোচনার বিষয় সুখী হওয়ার ১০টি উপায়। সম্পদই অশান্তির কারণ “সুখ একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। একজনের অনেক সম্পদ থাকলেও সুখ নেই।

আজকের আর্টিকেলে সুখী হওয়ার ১০টি উপায় ও কিভাবে সুখী হওয়া যায় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হল।

সুখী থাকার সহজ উপায়

মনিষীগনরা বিভিন্ন ভাবে তাদের মত অনুযায়ী সুখের সংজ্ঞা দিয়েছেনঃ

সুখ তখনই হয় যখন আপনি যা ভাবেন, আপনি কি বলেন এবং যা করেন তা সামঞ্জস্যভাবে হয়। (মহাত্ন গান্ধী ) 

সুখী হওয়ার ১০টি উপায়
সুখী হওয়ার ১০টি উপায়

এই জীবনে সুখের জন্য তিনটি প্রয়োজনীয়তা হলো কিছু করা, কিছু ভালবাসা এবং কিছু আশা করা।( জোসেফ অ্যাডিসন )

১.সৎ থাকা

নিজের কাছে সৎ থাকা সুখী হওয়ার ১০টি উপায় এর মধ্যে অন্যতম। কেননা কোন মানুষ যখন মনের দিক থেকে সৎ থাকবে তখন সকল কাজেই শান্তি অনুভব করবে। নিজের মনে যে কাজকে অসৎ বলে মনে হবে তা পরিহার করা উচিত। নয়তো পরবর্তীতে সেই কাজ মনকষ্টের কারন হয়ে দাড়ায়। সব সময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা উচিত। আদর্শ অনুসরন করলে জিবনে শান্তি পাওয়া যায়।

২.সুখী হওয়ার ১০টি উপায় – সুস্থ থাকা

নিজেকে খুশী রাখার জন্য সুস্থ থাকা প্রয়োজন। শরীর সুস্থ থাকলে মন ভালো থাকে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টি হীনতা মানুষের মনোভাবের ওপর প্রভাব ফেলে। সুখে থাকার উপায় নিয়মিত ব্যায়াম করা। আর শরীর ভালো থাকলে মনের খিটখিটে ভাব দূর হয়। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত অন্তত ১৫ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। 

৩.ইতিবাচক চিন্তা করা

সুখে থাকতে চাইলে সর্বদা ইতিবাচক চিন্তা করা উচিত। কারন যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করলে মন খারাপ হয় সেই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা উচিত না। যে কাজ করলে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা আসে সেই কাজ না করাই উত্তম। নেতিবাচক চিন্তা মানুষের মনকে দুর্বল করে দেয়। তাই সুখী হওয়ার ১০টি উপায় এর মধ্যে একটি হল নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করে সর্বদা ইতিবাচক চিন্তা করা উচিত।

৪.নিজের ওপর ভরসা রাখা

নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকলে জীবনে সহজেই সুখি হওয়া যায়। নিজেকে যোগ্য ভাবতে হবে। নিজের ওপর ভরসা থাকলে সহজেই অনেক কাজে এগিয়ে থাকা সম্ভব। আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও অসুখী হয় না। অন্য লোকে কি ভাবছে তা নিয়ে না ভেবে বরং আপনি আপনাকে নিয়ে ভাবুন এবং সঠিক কাজ করুন। 

৫.অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা

আমাদের মন সর্বদা বড় কিছু করতে চায়, এগুলো সবই আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আর এগুলোকে পূরণ করতে আমরা ছুটতে থাকি। আর যখন লক্ষ্য ভ্রষ্ট হই, তখন ডিপ্রেশনে চলে যাই। কিন্তুু আমাদের যা আছে, তাই নিয়ে আমাদের শান্তিতে থাকাই সুখী হওয়ার ১০টি উপায় এর একটি। তাই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছেড়ে নিজের যা আছে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা উচিত।

 ৬.অর্থের সঠিক ব্যবহার

আমরা সম্পূর্ণ অবগত যে, আমাদের সুখ এবং শান্তির গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ হচ্ছে অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করা। প্রতিদিনের জীবনে অর্থের ব্যবহারের উপর একটি পরিকল্পনা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে আমরা সব সময় অর্থের জন্য বৃথা চিন্তা না করি।

৭.অন্যকে সাহায্য করা

অপরের বিপদে সাহায্য করা মহৎ গুন। মন বড় থাকলে এমনিতেই জিবনে সুখি অনুভব করা যায়। নিঃস্বার্থ ভাবে কাউকে সাহায্য করলে মানসিক শান্তি বেড়ে যায়। গরীব কে সাহায্য করা উচিত । এতে মনের দিক থেকে অনেকটা শান্তি অনুভব করা যায়।

৮.প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো

সবসময় ঘরে না থেকে, সময় বের করে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা উচিত। প্রকৃতির মত সুন্দর বন্ধু কেউ হতে পারে না। প্রকৃতির কোমল হাওয়ার স্পর্শ মনকে শান্তনা দেয়। তাই প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৯.পরিবারের সাথে সময় কাটানো

অপর দিকে প্রকৃতির পাশাপাশি পরিবারের সাথে সময় কাটানো উচিত। পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করলে সম্পর্ক দৃঢ় হয়। যার জন্য হতাশা কেটে যায়। বর্তমানে আত্মহত্যা ও হতাশার অন্যতম কারন হলো পরিবারের প্রতি অনীহা।

১০.অন্যের সাথে তুলনা না করা

নিজেকে কখনো অন্যের সাথে তুলনা করা উচিত না। নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা ব্যাক্তি সর্বদা অসুখী থাকে। নিজের মধ্যে যা আছে তাই নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করা উচিত। তাই অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা না করে, নিজের মধ্যে যা আছে তা দিয়ে চেষ্টা করা উত্তম। নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করলে দুশ্চিন্তা বাড়ে।

পরিশেষে

সবশেষে বলা যায়, সুখের জন্যই আমরা জীবনের যত সংগ্রামে অবতীর্ণ হই। নিজের চলার পথ নিজেকেই তৈরি করে নিতে হবে। সুখের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা না থাকলেও বিভিন্ন উপায়ে আমরা জীবনে সুখী হওয়ার চেষ্টা করি । যত যাই হোক সর্বদা নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। সকল প্রকার নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে নিজেকে অভয় দিন, “দিন শেষে আমিই জয়ী “। আশা করছি সুখী হওয়ার ১০টি উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন।

আরও পড়ুন-

ঋণ মুক্তির দোয়া, আমল ও ঋণ থেকে নাজাতের পথ

Leave a Comment