অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম oxygen-cylinder-bebohar-er-niyom

অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম

অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। আজ আমি আপনাদের সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। অক্সিজেন সাধারণত মেডিকেলে রোগীদের ব্যবহার করা হয়। বর্তমান সময়ে মানুষের  ঘরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে। যার ফলে বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হচ্ছে।

কিন্তু আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার এর নিয়ম জানিনা।  সব সময়  রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়  না। সুস্থ মানুষের অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ। অক্সিজেন তখনই ব্যবহার করতে হয়, যে সময় অক্সিজেনের মাত্রা ৯০  শতাংশের নিচে নেমে যায়। বর্তমান  সময়ে  করোনা রোগী আমাদের চারপাশে। করোনা  হলে অক্সিজেনের মাত্রা কবে আসে। যার ফলে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা  কমে গেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে হয়। 

অক্সিজেন  দিতে দেরি হলে রোগীর মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় রোগী মারা যায়। এসব কারণে অনেকেই বাসায়  অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখছে। হঠাৎ কারও অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে সাথে সাথে  দিতে পারে। অক্সিজেন সিলিন্ডার অনেকের বাসায় রয়েছে কিন্তু ব্যবহারের নিয়ম অনেকেই জানেনা। আজ আমি  অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা।


আরও পড়ুনঃ থাইরয়েড নরমাল কত হওয়া উচিত


কিভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করবেন

অক্সিজেন সিলিন্ডার সম্পর্কে সকলের ধারণা রয়েছে। কিন্তু অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করার নিয়ম অনেকের জানা নেয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করার আগে সকলের জানা থাকা দরকার কখন কিভাবে অক্সিজেন দিতে হয়। সিলিন্ডার থেকে সরাসরি  অক্সিজেন ব্যবহার করা যায় না। তার জন্য কিছু নির্দেশিকা মানতে হয়।  এখন আমি আলোচনা করব সিলিন্ডার ব্যবহারের বিধি।

অক্সিজেন সিলিন্ডার এর সাথে একটি ফ্লোমিটার থাকে। যেখানে আপনি পাবেন একটি  নজিল কেনালা, একটি হিউমিনিটি  বোতল, একটি অক্সিজেন মাক্স  এবং একটি ফ্লোমিটার। প্রথমে অক্সিজেন সিলিন্ডারের মুখের কাবার খুলে ফেলি। এইবারে অক্সিজেন সিলিন্ডারের মাথায় ফ্লোমিটার ভালো করে সেট করে। এবং সেটা ডান দিকে ঘুরিয়ে টাইট দিতে হবে।

এবারে হিউমিনিটি ওয়াটার  বোতলে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে দাগ পর্যন্ত  ভরতে হবে। এইবারে বোতলের মুখা টি শক্ত করে আটকে দিন। এবারে হিউমিনিটি ওয়াটার বোতল ফ্লোমিটার এর সাথে  শক্ত করে আটকে  দিন।  অক্সিজেন ফ্লোমিটার এর সাথে অক্সিজেন মাক্স যুক্ত করুন। এরপর ফ্লোমিটার  এর চাকি বন্ধ করতে হবে তারপর অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাবি খুলে দিতে হবে।

 অক্সিজেন সিলিন্ডারের শাবি খোলার সাথে সাথে  মিটারের কাটা উপরের দিকে উঠে যাবে। একেই বুঝতে পারবেন কত পরিমান অক্সিজেন রয়েছে।  এবারে রোগীকে অক্সিজেন মাক্স পরিয়ে দিতে হবে। এরপর ফ্লোমিটার এর চাবি  ধীরে ধীরে খুলতে হবে।

অক্সিজেন ফ্লোমিটরি  এর সাহায্যে 1 থেকে 15 লিটার অক্সিজেন দেওয়া যাবে। রোগীর যেন সমস্যা না হয় সে অনুপাতে অক্সিজেন দিতে হবে। সাধারণত তিন থেকে চার লিটার অক্সিজেন  ব্যবহার করতে হয়। এই ভাবেই আপনারা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিজে নিজেই ব্যবহার করতে পারবেন।

অক্সিজেন কখন দিতে হয়

অক্সিজেন কখন দিতে হয় সেটা  আমরা অনেকেই জানিনা। সব ধরনের রোগীর জন্য অক্সিজেন না। কিছু কিছু রোগী আছে যারা অসুস্থ হলে অক্সিজেন নিতে হয়। অক্সিজেন দিতে দেরি হলে তারা মারা যেতে পারে। যেসব রোগের জন্য অক্সিজেন দিতে হয় তা হল।

শ্বাসকষ্ট, করোনা হলে রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা কমে আসে। রোগীর বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করতে অনেক কষ্ট হয়। শ্বাসকষ্ট হলে রোগী নিঃশ্বাস নিতে পারে না।  এ কারণে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কবে আসবে। যার ফলে রোগীর ব্রেন ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে রবি কে বাঁচানোর জন্য  অক্সিজেন দিতে হয়।  অক্সিজেন দিতে দেরি হলে অনেক সময় রোগী মারা যায়।

বর্তমান সময়ে  করোনা  ভাইরাস  মহামারীর রূপ ধারণ করেছে। করোনা আক্রান্ত  রোগীর সবচেয়ে বড় সমস্যা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া। রোগী শ্বাস নিতে পারে না। যার ফলে রোগী মারা যাচ্ছে। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করছে। পরিবারের কারও কোন সমস্যা হলে সাথে সাথে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছে। যার ফলে রোগীর ভোগান্তি এবং মৃত্যুর হার কমে যাচ্ছে।


আরও পড়ুনঃ প্রেগনেন্সি টেস্ট কিভাবে করে


রক্তে অক্সিজেনের কমে কি কি  সমস্যা হয়

অক্সিজেন এর মাত্রা মাপার জন্য সাধারণত অক্সিমিটার ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে রোগীর  রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যায়। কিন্তু অক্সিমিটার ছাড়াও  অক্সিজেনের  মাত্রা বুঝার উপায় রয়েছে। নিচে আলোচনা করা হলো।

রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মাথা ঝিমঝিম করবে। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হবে। শরীর দুর্বল হয়ে যাবে অনেক সময় রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তখনি বুঝবেন রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে।

অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মস্তিষ্কের  অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। যা খুব বিপদজনক। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে রোগীর  কমায় যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে খুব চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

সাবধানতা

অক্সিজেন সিলিন্ডার বাসায় থাকবে  অনেক সতর্কতাঃ অবলম্বন করতে হবে। কারণ, অক্সিজেন আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে। অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বালাতে সাহায্য করে। এই কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডার রান্নাঘর থেকে দূরে রাখতে হবে।

যে স্থানে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা হবে সেখানে ধূমপান করা যাবে না। ওই ঘরে বডি স্প্রে রুম স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না। আগুন ধরতে পারে এরকম কোন পদার্থ সিলিন্ডারের কাছে রাখা যাবে না। কারণ অক্সিজেন সিলিন্ডারের কাছে আগুন জাতীয় কিছু থাকলে তাৎক্ষণিক আগুন ধরতে পারে।

কোন সময় যদি বুঝতে পারেন অক্সিজেন সিলিন্ডার লিক হয়েছে। তাহলে বাসায় কোন ধরনের আগুন জ্বালাবে না। সাথে সাথে ঘরের  জানালা দরজার খুলে দিন। যার ফলে অক্সিজেন ঘর থেকে দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই মনে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার কোন বিপদ জনক নয়। কিন্তু এ ধারণা পুরোপুরি ভুল। অনেক সময় অক্সিজেন সিলিন্ডার বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


আরও পড়ুনঃ কালোজিরা ও রসুনের উপকারিতা


উপসংহার

উপরের আলোচনা থেকে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন অক্সিজেন সিলিন্ডার  কেন ব্যবহার করতে হয়। কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হয়। এবং কিভাবে ব্যবহার করতে হয়।  আমার বিশ্বাস সবকিছু ভালোভাবে পড়ে থাকলে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বুঝতে পেরেছেন।

অক্সিজেন সিলিন্ডার সব সময় সাবধানতা সাথে ব্যবহার করবে। সাবধানতা অবলম্বন করলে অনেক ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। সঠিক মাত্রায় অক্সিজেন ব্যবহার না করলে  রোগীর  মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম সম্পন্ন লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 

আরও পড়ুন-

কালোজিরা ও রসুনের উপকারিতা

কাঠবাদাম এর উপকারিতা

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।