৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল

স্মার্টফোন ছাড়া ব্যস্ত এই পৃথিবীতে চলাচল করা এখন প্রায় অসম্ভব,তাই আজ আমরা জানব ৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল সম্পর্কে। মোবাইলকে আমরা অনেকে মুঠো ফোন বলে থাকি, সত্যিই মোবাইল আজ এসে গেছে একেবারে আমাদের হাতের মুঠোয়। মোবাইল এক সময়ে আভিজাত্যের পরিচায়ক ছিল কিন্তু আজ আর তা আভিজাত্যে আটকে নেই, প্রয়োজনেই ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ফোনসহ আরো নানান ডিভাইস যা আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে।

প্রথম মুঠো ফোনের আবিষ্কারক ছিলেন মার্টিন কুপার ( Martin Cooper)। মার্টিন কুপার বিখ্যাত মোবাইল কোম্পানি মটোরোলার সাথে নিযুক্ত ছিলেন। উনি ১৯৭৩ সালে একটি হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে নিউয়র্ক শহরে প্রথম মুঠোফোন প্রদর্শন করেছিলেন। হ্যান্ডসেটটির ওজন ছিল দুই কিলোগ্রাম (২ কি.গ্রা)। তাই এই কথা নিশ্চিন্তে বলা যায় যে মটোরোলা হচ্ছে সেই কোম্পানি যেটি সর্বপ্রথম মোবাইল ফোন উদ্ভাবন করে বাজারে নিয়ে আসেন। সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত মোবাইল ফোনের বাজার মূল্য ছিল তৎকালীন চার হাজার (৪০০০) মার্কিন ডলার।

আজকাল সবার হাতেই একটা না একটা মোবাইল দেখা যায়। নিন্ম মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সবার হাতেই শোভা পাচ্ছে নানান ব্র্যান্ডের, নানান ডিজাইন, নানান মূল্যের ও বৈশিষ্ট্যের ফোন। অনেকের আবার কাজের সুবাদে থাকছে একাধিক ফোন। আজ আমরা জেনে নেব ৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো ফোন কোনগুলো বাজারে রয়েছে।

আজকের আলোচ্য বিষয়

আরও পড়ুনঃ ১৫-২০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো ল্যাপটপ

স্মার্টফোন কাকে বলে

আমরা চাইলেও দাম বেশি হওয়ায় ল্যাপটপ কিনতে পারিনা তাই আমরা স্মার্টফোন কিনতে আগ্রহি হয়। যে ফোনে ল্যাপটপ এর মতো একাধিক কাজ একই সময়ে সম্পন্ন করা যায় তাকে স্মার্টফোন বলে।যার মধ্যে রয়েছে টাচ স্ক্রিন, ইন্টারনেট ও তারবিহীন হওয়ার মতো আরও অনেক সুবিধা, এবং যা খুব সহজেই বহন করা যায়, হাতের মুঠোয় রাখা যায় ও ইচ্ছেমত ব্যবহার করা যায়।

বাটন ফোন আমরা সবাই কমবেশি দেখেছি এবং ব্যবহারও করেছি।

বাটন ফোনের কিছু বৈশিষ্ট্যে আজ আমরা দেখে নেবঃ

বাটন ফোনের স্ক্রিন ছোট হয়ে থাকে।
বাটন ফোনের পেছনে এল ই ডি লাইট (LED) থাকে
কি-প্যাড লক সিস্টেম থাকে।
রেডিও শোনার ব্যবস্থা থাকে।
মিউজিক প্লেয়ার থাকে।
খুবই সাধারন ক্যামেরা থাকে।
ডুয়াল সিম ক্যাপাসিটি থাকে।
ইন্টারনেট ব্যবহার করার ব্যবস্থা থাকে।
এবং অবশ্যই মেসেজ ও কথা বলার সুবিধা রয়েছেই।

আরও পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার উপায়

5000 টাকার মোবাইল

প্রাথমিক সময়ে মোবাইল শুধু যোগাযোগ বা কথাগুলোর পরিমাণ বেড়ে দাড়িয়েছে অনেক বেশি। প্রতি বছর এমনকি প্রতি মাসেই বের হচ্ছে নতুন নতুন ফিচার ও মডেলের মোবাইল ফোন। আমরা আজ জেনে নেব কম মূল্যে বা ৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল ফোন কোনগুলো সেই সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে যেনে নেয়া যাক-

সিম্ফোনি ভি-৯৯ + থ্রি জি ( SYMPHONY V-99 + 3g) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- পাঁচ ইঞ্চি
প্রসেসর কোয়াড- কোর
র‍্যাম ( RAM)- ১ জিবি
রম /স্টোরেজ (ROM)- ৮ জিবি
পেছনের ক্যামেরা (Back Camera) ৫ মেগাপিক্সেল
সামনের ক্যামেরা (Front Camera) ৫ মেগাপিক্সেল
ব্যাটারি ক্যাপাসিটি লিথিয়াম আই-অন ২০০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৩৮৯০ ( তিন হাজার আটশত নব্বই

এই ফোনটির ব্যবহারের পর রিভিউ যথেষ্ট ভালো পাওয়া গিয়েছে, যদি সাড়ে তিন হাজারের ওপর একটু ভালো মোবাইল কিনতে চান তাহলে এই মোবাইলটি বেশ ভালো পছন্দ হবে আশা করি। ও

ওয়ালটন প্রিমো ই-টুয়েলভ ফোর জি (WALTON PRIMO E-12 4g) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- পাঁচ ইঞ্চি
প্রসেসর – কোয়াড কোর প্রসেসর
প্রাইমারি ক্যামেরা (Primary Camera) ৫ মেগাপিক্সেল
সেকেন্ডারি ক্যামেরা (Secondary Camera) ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম -১ জিবি
রম (স্টোরেজ)- ৮ জিবি
ব্যাটারি ক্যাপাসিটি -২০০০ এম এ এইচ
অফিশিয়াল বাজার মূল্য- চার হাজার চারশত নব্বই (৪৪৯০) টাকা

নোকিয়া সি- ওয়ান (NOKIA C 1) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- ৫.৪৫ ইঞ্চি
প্রসেসর -কোয়াড কোর ১.৩ (গিগা হার্জটস)
রম /স্টোরেজ (ROM)- ১৬ জিবি
র‍্যাম (RAM)-১ জিবি
ক্যামেরা- ৫ মেকাপিক্সেল
ব্যাটারি- ২৫০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা

ম্যাক্সিমাস পি ১১ (MAXIMUS p11) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- ৫.৪৫ ইঞ্চি
প্রসেসর- কোয়াড কোর প্রসেসর
মেইন ক্যামেরা (Main Camera) – ৮ মেগাপিক্সেল
ফ্রন্ট ক্যামেরা (Front Camera)- ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ২ জিবি
রম /স্টোরেজ( ROM)- ১৬ জিবি
ব্যাটারি- ৩১০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৪৯৯০ ( চার হাজার নয়শত নব্বই টাকা )

আরও পড়ুনঃ হারানো সিম বন্ধ করার উপায়

ওয়ালটন প্রিমো ই ১১ (WALTON PRIMO E11) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- ৫ ইঞ্চি আই পি এস (এল সি ডি) এইচ ডি +
প্রসেসর- কোয়াড কোর প্রসেসর
মেইন ক্যামেরা- ৫ মেগাপিক্সেল
ফ্রন্ট ক্যামেরা – ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ১ জিবি
রম/ স্টোরেজ (ROM)- ১৬ জিবি
ব্যাটারি- ২০০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৪২৯৯ (চার হাজার দুইশত নিরানব্বই টাকা)

আইটেল ম্যাজিক থ্রি- (ITEL MAGIC 3) বৈশিষ্ট্য।

ওয়েট (ওজন)- ১২০ গ্রাম
নেটওয়ার্কের ধরন- 2g
র‍্যাম (RAM)- ৮ এম বি
রম /স্টোরেজ (ROM)- ৮ এম বি
কার্ড স্লট- মাইক্রো এস ডি থেকে ৬৪ জিবি
নেটওয়ার্ক সিম- ডুয়াল সিম
ডিসপ্লে- ২.৪” ইঞ্চি
টাচ কিপ্যাড ডিসপ্লে
মাল্টিমিডিয়া- এম পি থ্রি, এম পি থ্রি
ব্যাটারি- ১৫০০ এম এ এইচ
বাজারমুল্য- ২১০০ টাকা (দুই হাজার একশত টাকা)

* যাদের স্মার্টফোন পছন্দ না বা প্রয়োজন নেই তাদের জন্যে বাটন ফোন খুবই কার্যকরী। মোটামুটি মূল্যের মধ্যে এই বাটন ফোনটির ফিচার অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে চাইলে এই ফোনটি বেশ সময় ধরে ব্যবহার করা যাবে।

সিম্ফোনি ভি-১২৮ (SYMPHONY V-128) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে- ৫.৭ ইঞ্চি এইচ ডি +
প্রসেসর- কোয়াড কোর প্রসেসর
মেইন ক্যামেরা (Main Camera)- ৫ মেগাপিক্সেল
ফ্রন্ট ক্যামেরা (Front Camera) – ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ১ জিবি
রম/ স্টোরেজ (ROM)- ৮ জিবি
ও এস (O S)-এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম
ব্যাটারি- ২০০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৪৫৯০ টাকা (চার হাজার পাঁচশত নব্বই টাকা)

সিম্ফনোনি আই টুয়েলভ (SIMPHONY i12) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে – ৫.৪৫ ইঞ্চি
প্রসেসর – কোয়াড কোর প্রসেসর
মেইন ক্যামেরা (Main Camera)- ৮ মেগাপিক্সেল
ফ্রন্ট ক্যামেরা (Front Camera) – ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ১ জিবি
রম/ স্টোরেজ (ROM)- ১৬ জিবি
ব্যাটারি- ২৪০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৪৩৯০ টাকা (চার হাজার তিনশত নব্বই)

টেকনো পপ ফাইব এস (TECNO POP 5S) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে – ৫.৪৫ ইঞ্চি
সেলফি ক্যামেরা (Selfie Camera)- ২ মেগাপিক্সেল
ব্যাক ক্যামেরা (Back Camera) – ৫ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ২ জিবি
রম/ স্টোরেজ (ROM)- ৩২ জিবি
ব্যাটারি- ৩০২০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৫০০০ টাকা (পাঁচ হাজার টাকা)

আরও পড়ুনঃ ১২ হাজার টাকার মধ্যে ভালো ফোন

ম্যাক্সিমাস পি নাইন ( MAXIMUS P9) বৈশিষ্ট্য।

ডিসপ্লে – ৫.৪৫ ইঞ্চি
প্রসেসর- কোয়াড কোর প্রসেসর
সেলফি ক্যামেরা (Selfie Camera)- ৫ মেগাপিক্সেল
ব্যাক ক্যামেরা (Back Camera) – ৮ মেগাপিক্সেল
র‍্যাম (RAM)- ১ জিবি
রম/ স্টোরেজ (ROM)- ৮ জিবি
ব্যাটারি- ২২০০ এম এ এইচ
বাজারমূল্য- ৫০৯৯ টাকা (পাঁচ হাজার নিরানব্বই টাকা)

সিম্ফনি

ব্যবহারবান্ধব ইন্টারফেস, উজ্জ্বল ডিসপ্লে এবং প্রয়োজনীয় সব অ্যাপলিকেশনসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য দেশে আকাশ ছোঁয়া খ্যাতি অর্জন করেছে সিম্ফনি। এছাড়া সাশ্রয়ী দামের মধ্যে স্মার্টফোন তৈরিতে সিম্ফনির বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে। ৫,০০০ টাকার মধ্যে ‘সিম্ফনি ভি ১০৫’ দুর্দান্ত একটি স্মার্টফোন।

ম্যাক্সিমাস

মান বজায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে মোবাইল নির্মাতা আরেক সুপরিচিত ব্র্যান্ড ম্যাক্সিমাস। গত এক দশকে বেশ কিছু স্মার্টফোন বাজারে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশের বাজারে তুলনামূলক কম পরিচিত ব্র্যান্ড হলেও, শিক্ষার্থী ও তরুণদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বেশ কয়েকটি স্মার্টফোন এনেছে ম্যাক্সিমাস। এর মধ্যে ‘ম্যাক্সিমাস পি৭ প্লাস’ মডেলের স্মার্টফোনটি অন্যতম।

শেষ কথা

পরিশেষে এটাই বলব যে, মোবাইল আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সাধ্যের মধ্যে ৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল আপনারা চাইলে উপরে উল্লেখিত যেকোন মোবাইলটি আপনাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। চলার প্রতিটি পদক্ষেপে মোবাইলের প্রয়োজনীয়তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না, তবে এর অধিক ব্যবহার কেড়ে নিতে পারে আমাদের মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি। তাই আমরা মোবাইল ব্যবহারে সচেতন হব এই প্রত্যাশা নিয়েই এখানে আজ শেষ করছি।

আরও পড়ুন-

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

২০২৩ সালের সেরা ১০টি স্মার্টফোন

৫ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল

স্মার্টফোন কাকে বলে