ওজন কমানোর উপায় ডায়েট

ওজন কমানোর উপায় ডায়েট

ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায় সমুহ জানা উচিত । বর্তমানে আধুনিক সমাজে বাড়তি বা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন একটি প্রধান সমস্যার কারণ। দিন দিন মানুষের সমাজ ব্যবস্থা আধুনিকায়নের মতো জীবনযাপন ও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে সাথে পরিবর্তন হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস।

মানুষেরা কায়িক পরিশ্রম বাদ দিয়ে মানসিক পরিশ্রম বেশী করার ফলেই দিনদিন মানুষ মুটিয়ে যাচ্ছে যার ফলাফল মানুষের ওজন দ্রুত বাড়ছে এবং ওজন কমানোর উপায় ডায়েট জানা দরকার। অতিরিক্ত ওজন কারোরই কাম্য নয়,, বাড়তি ওজন বর্তমানে একটা বড়

সমস্যা হিসেবে ধরা দিয়েছে বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ ওজন কমানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করছে কিন্তু তারপরেও নিজেকে ফিট  করতে ওজন কমাতে পারছে না।

আবার অনেকেই বাড়তি ওজন কমানো দরকার পড়ে তার কর্মস্থল এর জন্য আবার এরকম অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে পদোন্নতির জন্য শারীরিক ওজন  জরুরী বিষয় হিসাবে দেখা হয় আবার অনেক সময় মানুষ অস্ত্রোপচারের পূর্বেও জরুরী ভিত্তিতে ওজন কমানোর উপায় ডায়েট করতে হয় তা না হলে অস্ত্রোপচার অসম্ভব হয়ে পড়ে

ওজন কমানোর খাবার তালিকা

  •  প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
  •  আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ব্যায়াম করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন।
  •  প্রচুর পানি পান করুন, যতটা পারেন চিনিযুক্ত পানীয় ত্যাগ করুন।
  •  গভীর রাতে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  •  আপনি পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং ফাইবার পাচ্ছেন কিনা তা প্রতিদিন খাবার মেন্যু থেকে ঠিক করুন। 
  •  উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত খাবার এবং স্ন্যাকস খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  •  রেস্টুরেন্টে, বাইরে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  •  নিশ্চিত করুন যে আপনি পর্যাপ্ত ঘুমাচ্ছেন।
  •  যতটা সম্ভব মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
  •  বেশি চর্বিহীন প্রোটিন, শাকসবজি এবং ফল খান।
  •  দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
  •  উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  •  অস্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  •  অতিরিক্ত লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

আরও পড়ুনঃ পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায়


ওজন অনুযায়ী ডায়েট চার্ট

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

মাসে ৬ কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে হলে আপনাকে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সেজন্য আপনাকে  প্রতিদিন খাবার গ্রহণের সময় যেন একই সময় হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

  •  সকালে অবশ্যই ভারী নাস্তা করতে  হবে
  •  দুপুরের খাবারে এক বাটি ভাত, বেশি সবজি ও সালাদ, এক টুকরো মাছ বা দুই টুকরো মাংস

 এক থেকে দুই পিস রুটি সবজি  খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে মাঝে কিছু হালকা ফলমূল খেতে পারেন এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে যদি এই নিয়ম মেনে শুরু করতে পারেন তাহলে অবশ্যই এটা আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে

পুষ্টিকর ও সুষম খাবার

ওজন বাড়ানোর আরেকটি প্রধান কার্যকরী উপাদান হচ্ছে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ আপনাকে অবশ্যই বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে বিপরীতে  চর্বি জাতীয় খাবার, তেলে ভাজা খাবার, এবং ফাস্টফুড খাওয়া পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে প্রয়োজনে খাদ্য তালিকা থেকে এসব খাবার  বাদ দিতে হবে। এবং এই সময়ে খিদে পেলে পপকর্ন, পাকা ফল, চিনি ছাড়া ফলের শরবত, এবং সালাদ খেতে পারেন রঙিন ফল বা সবজি দিয়ে তৈরি টক দই মেশান থাকতে পারে আপনার খাবার তালিকা

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার

গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে মানুষের ক্ষুধা বেশি লাগে। ফলে মানুষের মোটা হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। ওজন কমাতে হলে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে

বিশ্রাম

ওজন কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই আপনাকে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে দিনে ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে অতিরিক্ত ঘুম শরীরের জন্য ক্ষতিকর

ব্যায়াম

ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় ব্যায়াম। ব্যায়াম যেমন দ্রুততম অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে, ঠিক তেমনি শরীর ফিট রাখে তাই আমাদের প্রত্যেকের নিয়ম মেনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত সেটা হতে পারে হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ইত্যাদি

পানি পান করা

ওজন কমানোর আরেকটি উপায় পানি পান করা। পরিমিত পানি আধা ঘন্টা পর পর পান করলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায়। 

চিনি পরিহার

ওজন কমাতে হলে আপনাকে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিতে হবে। কারণ চিনিতে প্রচুর ক্যালোরি থাকে যা থেকে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

গ্রিন টি গ্রহণ

ওজন কমানোর একটি প্রাকৃতিক উপাদান গ্রিন টি। গবেষণায় দেখা গেছে, গড়ে দিনে ৪ কাপ গ্রিন টি পান করলে সপ্তাহে প্রায় ৪৪0 গ্রাম ক্যালোরি ক্ষয় হযর। এতি শরীরের বাড়তি ওজন কমানোর জন্য যথেষ্ট সহায়ক

ভিটামিন-সি গ্রহণ

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন-সি রাখতে হবে, কারণ ভিটামিন-সি ওজন কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যেসব ফলে বা খাবারে ভিটামিন সি আছে এগুলো  আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন

আপনার সন্তানের খাদ্য অভ্যাস

ছোটবেলা থেকেই আপনার সন্তানের খাবারের প্রতি নজর রাখুন, বাহিরে স্ন্যাকস ফাস্টফুড ও পুষ্টিকর খাবারের থেকে পুষ্টিকর খাবার খেতে অনুপ্রাণিত করুন। বাচ্চার অতিরিক্ত ওজনের দিকে নজর রাখুন।কারণ অতিরিক্ত ওজন বড়দের সাথে সাথে বাচ্চাদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাচ্চাকে খেলাধুলা করার সুযোগ করে দিন। অতিরিক্ত ওজন আপনার সন্তানের বিভিন্ন জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পিতামাতারা, বিশেষ করে পিতারা, তাদের সন্তানের খাদ্যাভ্যাসের উপর একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বাচ্চারা যেভাবে খেতে শেখে তা পিতামাতা নিজেরা ঠিক করে নিতে পারে।


আরও পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়


শেষ কিছু কথা

ঘরোয়া উপায়ে মাসে ৪-৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব, এবং তার নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ রাখতে আবার কারো যদি জরুরি প্রয়োজন পড়ে এক মাসের ৬ কেজি বা তার বেশি ওজন  কমানোর তাহলে অবশ্যই তাকে বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই সামনে এগোতে হবে

এক্ষেত্রে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যার ফলে শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণই নয় পুরো জীবন যাপন ব্যবস্থাকেই একটা  অভ্যাসে নিয়ে আসতে হবে আর তা যদি করা সম্ভব হয় তবে কাঙ্খিত সাফল্য পাওয়া সম্ভবওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন সুস্থ থাকুন ওজন কমানোর উপায় ডায়েট থাকুন আপনার সুস্থতাই একান্ত কাম্য।

আরও পড়ুন-

এক মাসে ফর্সা হওয়ার উপায় ১০টি কার্যকারী

শীতকালে ত্বকের যত্ন ঘরোয়া উপায়

Leave a Comment