তওবা করার নিয়ম ও দোয়া
আমরা সকলেয় গুনহগার এই গুনাহ থেকে পানহা পেতে আমরা জানব তওবা করার নিয়ম ও দোয়া, পাপ বর্জনের উপায় এবং কি কি শর্তে তওবা কবুল হয় এবং তওবার পরিপূরক বিষয়সমূহ সমন্ধে বিস্তারিত জানবো। আরও জানবো তওবার মাধ্যমে কিভাবে পাপ বর্জন করতে পারি সে উপায় সম্পর্কে।
প্রিয় দ্বীনি ভাই-বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আমাদের সাইট এ আসার জন্য আপনাদের আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আরও পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম
তওবা কিভাবে করতে হয়
তওবা কিভাবে করতে হয় সেটা জানার আগে কিন্তু তার আগে আমাদের জানতে হবে তওবা কি।“তওবা” এমন একটি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক এর অর্থ অতীতের সকল পাপ কাজ থেকে ফিরে আসা, নিজেকে সকল পাপ কর্ম থেকে বিরত থাকার সংকল্প করা এবং ভবিষ্যতে এরূপ পাপ কাজ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।
পবিত্র কোরআনের ৬৬ নং সূরাহ আল-তাহরিম এর ৮ নং আয়াতে “তওবা” শব্দটি “নাসূহ” শব্দ সহকারে ব্যবহৃত হয়েছে যার বাংলা অর্থ “খাটি”।সুতরাং তওবার প্রকৃত তাৎপর্য হচ্ছে আন্তরিকভাবে অনুশোচনা করা।
অন্যভাবে বলা যেতে পারে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রত্যাবর্তন করা বা ফিরে আসা।কোরআন এবং হাদীসে তওবা শব্দটি আল্লাহর নিষেধকৃত বিষয়গুলো ত্যাগ করা এবং তার আদেশ কৃত বিষয়সমূহের দিকে ফিরে আসা অর্থে বোঝানো হয়েছে। ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অনুযায়ী শব্দটি নিজের অতীত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া,ক্ষমা প্রার্থনা এবং তা পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্প কে বোঝায়।তাই ইসলাম ধর্মে তওবার গুরুত্ব অনেক কারন তওবা ব্যতীত কবিরা গুনাহ মাফ হয় না।
কুরআনের আলোকে তওবা
“তওবা” পবিত্র কুরআনে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরার নাম এবং এছাড়াও এর গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে সূরা বাকারাহ,সূরা ফুরকান,সূরা নূর,সূরা তাহরীম সহ পবিত্র কোরআনের আরো অনেক স্থানে তওবা’র গুরুত্ব স্থান পেয়েছে।
যার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত হচ্ছে “হে বিশ্বাসীগণ,তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো”
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তওবা করেন তার কাছে এবং তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন যারা নিজেদেরকে পবিত্র করে “
সূরা আল-বাকারা।
হাদিসের আলোকে তওবা
পবিত্র কোরআনের ন্যায় হাদিসেও তওবার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। তিরমিজি গ্রন্থে একটি হাদিসে উল্লেখ আছে যে রাসুলুল্লাহ বলেছেন “প্রত্যেক আদম সন্তান ত্রুটিশীল ও অপরাধী, আর অপরাধীদের মধ্যে উত্তম ব্যাক্তি তারাই যারা তওবা করে”এরকম হাজারো হাদিস আছে তওবা সম্পর্কে তাই মানবজীবনে তওবার গুরুত্ব অসীম।
তাওবা করার সঠিক নিয়ম
তওবা করার নিয়ম ও দোয়া, তওবা খাঁটি হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। আলেম ও ওলামাগণ কোরআন ও হাদিসের আলোকে তওবার জন্য কিছু শর্ত উল্লেখ করেছেন যার মধ্যে তওবা পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য নূন্যতম ৩টি শর্ত প্রয়োজন এবং এতে মানুষের হক আদায় জড়িত থাকলে ৪ টি শর্তে তওবা করতে হবে এবং এই শর্ত গুলো সঠিকভাবে পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মানুষের তওবা কবুল হবে না।এদিকে সৌদিআরবের একজন প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ মুহাম্মদ বিন সালিহর মতে সব মিলিয়ে তাওবার শর্ত মোট পাঁচটি।
- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং তওবা করতে হবে মহান আল্লাহর কাছে।
- গুনাহের কাজ করার জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে।
- যে গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য তওবা করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে।
- ভবিষ্যতে গুনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে।
- মানুষের হক বা তার অধিকার তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ নামাজ ফরজ কেন? নামাজ পড়ার নিয়ম
তওবা করার পদ্ধতি
আল্লাহর কাছে কিভাবে তওবা করতে হবে তার কিছু সঠিক নিয়ম পদ্ধতি রয়েছে এবং তা যথাযথ পালন করার মাধ্যমেই মহান আল্লাহ তওবা কবুল করে নেবেন তাই আমাদের কিছু পদ্ধতি মেনে চলা জরুরী।
তওবাহ হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য
মহান আল্লাহর ভয় বা সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন সৃষ্টির ভয় বা তার সন্তুষ্টির জন্য তওবা করলে সেই তওবা কখনো কবুল হবে না। এছাড়া কেনো মানুষ দেখানো বা কারো নৈকট্য পাওয়া অথবা কারো চাপে পড়ে বা কোন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অথবা কারো মন রক্ষার জন্য তওবা করলে সেই তওবা খাঁটি হবে না এবং গুনাহ মাফ হবে না কারন তওবা করার উদ্দেশ্য হবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি, গুনাহ থেকে মুক্তি এবং পরকাল।
এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে তওবা করা যাবে না এবং তা করলে গুনাহ তো মাফ হবেই না বরং আমলনামায় গুনাহের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।তাই সরাসরি আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে তওবা করলে তা কখনো কবুল হবে না বরং তা শিরক করা হবে আল্লাহর সাথে। তাই তওবা খুব সাবধানে আদবের সাথে মহান আল্লাহর কাছে করতে হবে।
গুনাহের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া
যেকোনো গুনাহ করার পর তওবা করতে চাইলে অবশ্যই সে তার কৃতকর্মের জন্য নিজ অন্তর থেকে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে এবং নিজ কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া খাঁটি তওবার পূর্ব শর্ত।হাদিসে আছে নবিজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “তওবার মূল বিষয় হচ্ছে অনুতপ্ত হওয়া”
সুতরাং নিজ কর্মের জন্য লজ্জিত না হয়ে, অনুতপ্ত না হয়ে আমরা যতোই তওবা করিনা কেন তা আল্লাহ কবুল করবেন না।ইসলামের ভাষায় পাপ কাজ করে লজ্জিত হলে পাপ কমে যায় অন্য দিকে পূণ্য কাজ করার পর গর্ববোধ করলে তার পূর্ণ বাতিল হয়ে যায়।সুতরাং যে পাপ কাজ করে সে সাধারণ মানুষ আর যে পাপ কাজ করার পর অনুশোচনা করে,অনুতপ্ত হয় সে নেককার মানুষ।
পাপ গোপন রাখা
আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে যাদের কাছে পাপকাজ অনেক গর্বের। তারা পাপ করে বন্ধু-বান্ধব ও সমাজের কাছে তা নিয়ে গর্ব করে। এরা হচ্ছে নির্বোধ কারন এর ফলে গুনাহ মাপ হওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। কারন হাদিসে আছে নবিজী বলেছেন আমার প্রত্যেক উম্মতের পাপ মাফ করে দেওয়া হবে তবে যে প্রকাশ্যে পাপ করবে তার ক্ষমা নেই।
সুতরাং বান্দার যদি কোন পাপ কাজ হয়ে যায় তাহলে তা গোপন রাখতে হবে এবং লজ্জিত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে।পাপ গোপন রেখে তওবা করলে আল্লাহ কবুল করেন।
গুনাহ ত্যাগ করতে হবে
গুনাহগার ব্যাক্তি যদি গুনাহ করার পর তওবা করতে চায় তাহলে তওবার শুরুতেই তাকে সেই গুনাহ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে অর্থাৎ গুনাহ ত্যাগ করতে হবে।কারন তওবার পূর্ব শর্তসমূহের মধ্যে এটা গুরুত্বপূর্ণ এক শর্ত।যেমনঃ কেউ যদি বাবা-মা র অবাধ্য হওয়ার গুনাহ থেকে তওবা করতে চায় তাহলে তাকে সবার আগে বাবা-মার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে।
গুনাহ না করার প্রতিজ্ঞা
তওবা করার প্রধান উপায় হচ্ছে নিজের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া এবং লজ্জিত হয়ে গুনাহ বর্জন করলেই হবে না বরং ভবিষ্যতে আর এই গুনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে।
নির্ধারিত সময়ে তওবা করা
তওবা করার নির্ধারিত সময় আছে এবং সেই সময় ২ ধরনের।
- প্রত্যেক ব্যাক্তির তওবার সর্বশেষ সময় হচ্ছে তার মৃত্যু সুতরাং মৃত্যু আসার পূর্বেই তওবা করতে হবে।
- সব মানুষের জন্য তওবা করার সর্বশেষ সময় হচ্ছে কিয়ামতের আলামত হিসেবে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সুতরাং পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বেই তওবা করতে হবে।
মূলত প্রতিটি মানুষের পাপকাজ করার পরক্ষনেই তওবা করা উচিৎ কারন অনেকে শেষ বয়সে চুল-দাড়ি পাকলে পরে তওবা করবে বলে অপেক্ষায় থাকে এবং অবহেলা করে কিন্তু হঠাৎ মৃত্যু এসে গেলে তখন সেই সুযোগ আর পাওয়া যাবে না।
মানুষের হক বা অধিকার ফিরতে দিতে হবে
যদি কোন গুনাহের সম্পর্ক কোন মানুষের অধিকারের সাথে হয় এবং এতে তার অধিকার নষ্ট হয় তাহলে তার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে এবং তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তার সাথে মিটমাট করে নিতে হবে।যদি জোর করে বা অবৈধ ভাবে কারো সম্পদ বা মাল বা অন্য কিছু গ্রহণ বা হরন করে থাকে তাহলে তা মালিক কে ফিরিয়ে দিতে হবে।মানুষের হক নষ্ট করা যাবে না এবং এটা আল্লাহ খুবই অপছন্দ করেন তাই যথা সম্ভব মানুষের হক তাকে বুঝিয়ে দিয়ে তারাতাড়ি তওবা করতে হবে।
সুতরাং উপরোক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে পালন করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তওবা করলে তওবা কবুল হবে।তবে মনে রাখতে হবে আজাব দেখার পরে তওবা করলে কোনো উপকারে আসবে না কারন মৃত্যুর সময় ফেরাউনের ঈমান তার উপকারে আসেনি সুতরাং সঠিক সময়ে সঠিকভাবে সুন্দর ও সঠিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করে তওবা। তাই মানবজীবনে তওবার গুরুত্ব অনেক।
আরও পড়ুনঃ হালাল ব্যবসায়ের আইডিয়া
পাপ বর্জনের উপায়
তওবা করার নিয়ম ও দোয়া, মুমিন বান্দা পাপ থেকে বাচার চেষ্টা করে কিন্তু পাপের অনুকূল পরিবেশ, অসৎ সঙ্গ,শয়তানের প্রলোভনে পাপ মুক্ত থাকা সম্ভব হয় না। তবে পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে কিছু উপায় অবলম্বন করলে মানুষ অধিক পাপাচারের হাত থেকে বাঁচতে পারে।
আসুন জেনে নেই পাপ বর্জনের কিছু উপায়….
- পাপ কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করা কারন পাপ যেমনই হোক তা পাপই তাই তাকে ছোট ভাবার কারন নেই।
- ভালো মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে কারন সৎ সংগে থাকলে পাপ থেকে দূরে থাকা যায়।
- যে কোন পাপ আল্লাহর অবাধ্যতার সমান তাই ভুল করে পাপ কাজ হয়ে গেলেও তা সবার সামনে প্রকাশ না করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে পাপ বর্জন করা যায়।
- তওবা-ইস্তেগফার সবসময় পড়তে হবে কারন মানুষ হিসেবে শয়তানের প্রচারণায় মানুষের পাপ কাজ হয়ে যায় তাই সবসময় ইস্তেগফার পাঠের মাধ্যমে পাপ বর্জন করা যায়।
- সময় পেলেই কুরআন তিলওয়াত করতে হবে এতে করে, শয়তান কাছে ভিড়তে পারবে না সুতরাং পাপ বর্জন হবে।
- মসজিদে সময় অতিবাহিত করতে হবে তাহলে শয়তানের ধোকা থেকে নিজেকে রক্ষা করে পাপ বর্জন করা যায়।
- সিনেমা,নাটক,অশ্লীল গান-বাজনা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
- বারবার মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে তাহলে নিজ থেকেই যে কোন পাপকাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়।
পাপ বর্জনের উপায়
তওবা করার নিয়ম ও দোয়া, পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া মুসলিম ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটির সাথে জড়িত ভুলগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং স্বীকার করা এবং তাদের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করা। ব্যক্তিগত বৃদ্ধি এবং নিজেকে বোঝার জন্য তওবা করা গুরুত্বপূর্ণ। অনুতপ্ত হওয়ার জন্য, আপনাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত, অন্যায় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সংশোধন করার চেষ্টা করা উচিত এবং পুরানো অভ্যাস এবং আচরণ থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
পাপ এড়ানোর উপায়গুলির মধ্যে রয়েছে বিশ্বাসকে শক্তিশালী করা, ধর্মীয় অনুশীলনগুলি অনুসরণ করা, প্রলোভন এড়ানো এবং বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছ থেকে সমর্থন চাওয়া। নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং একজন ভাল মানুষ হওয়ার জন্য কাজ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিয় দ্বীনি ভাই বোনেরা নিশ্চয়ই আমাদের আজকের আলোচনা আপনাদের ভালো লেগেছে। আশা করি আমাদের আজকের আলোচনা থেকে আপনারা তওবা সম্পর্কিত নতুন কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন।যদি আমাদের আলোচনা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। এতক্ষণ ধরে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন-
অস্থিরতা দূর করার উপায়
ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম