৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম
ফর্সা হওয়ার জন্য অনেকেই ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম খোঁজ করে থাকেন। কিন্তু অনেকেই লো কোয়ালিটির প্রোডাক্ট ব্যবহার করে ত্বকের অবস্থা বেশ বাজে করে তোলেন। যা কখনোই কাম্য নয়!
কারণ এই বাজে পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে অনেক বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয়। সুতরাং এই কষ্ট ভোগ করতে না চাইলে কৃত্রিম ট্যানিং করার মতো আপনি আপনার ত্বকের টোন পাল্টাতে ব্যবহার করতে পারেন আজকের আলোচিত ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিমগুলি।
উল্লেখিত সকল ক্রিম হবে হোয়াইটেনিং ক্রিম। যাদের ত্বক সূর্যের আলো বা অন্যান্য কারণে কালো হয়ে যাচ্ছে তারা এসব ক্রিম (skin whitening cream) ব্যবহার করে যথেষ্ট উপকৃত হতে পারবেন। আসুন তবে ত্বকের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ উপাদান সহ সেরা মানের হোয়াইটেনিং ক্রিম সম্পর্কে জেনে নিই।
আরও পড়ুনঃ মেছতা দূর করার উপায় – কারন ও প্রতিকার
রেমেডিয়াল ডার্ক স্পট রিমুভিং ক্রিম
৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম হিসাবে শুরুতেই আমরা আলোচনা করবো রেমেডিয়াল ডার্ক স্পট রিমুভিং এবং স্কিন লাইটেনিং ক্রিম (skin whitening cream) সম্পর্কে।
কার্যকারিতা
- আপনাকে এসএলএস, পিইজি, প্যারাবেন এবং গ্লুটেন ইত্যাদি উপাদানের এফেক্ট ছাড়াই ত্বকে ফর্সা করে
- অ্যাসকরবির উপাদান ত্বককে ব্রাইটেনিং করে তুলবে।
- এতে থাকা সোডিয়াম হায়ালুরোনেট উপাদান ত্বককে হাইড্রেট করে রাখতে সাহায্য করে
- রোজা রুগোসা ফুলের তেল ত্বককে সমান বা মসৃণ করে তুলবে
- এতে রয়েছে জোজোবা বীজ তেল, শিয়া মাখন এবং পুনিকা গ্রানাটাম বীজ তেলসহ বিভিন্ন উপাদান
- এতে থাকা বিদেশি প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে প্রাকৃতিকভাবেই ফর্সা করে তুলবে
পন্ডস হোয়াইট বিউটি এন্টি স্পট ক্রিম
হোয়াইটিং ক্রিম ব্র্যান্ড হিসাবে সারা পৃথিবীতে পন্ডস ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আমরা জানি। যাইহোক! এই বিশেষ হোয়াইটেনিং ক্রিমটি তৈরি করা হয়েছে গ্লিসারিন, পামিটিক অ্যাসিড, স্টিয়ারিক অ্যাসিড, লিনালুল, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড, টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইড এবং অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড ইত্যাদি রাসায়নিক উপাদানের সাহায্যে।
কার্যকারিতা
- এটি আপনার ত্বককে সূর্যের আলো দ্বারা ক্ষতির হাত থেকেও বাঁচাবে
- ত্বকের টোন এবং টেক্সচারকে মসৃণ করবে
- ত্বকে থাকা সমস্ত কালো স্পট মুছে দিতে সাহায্য করবে
- এই ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিমটি দামের দিক দিয়ে বেশ সাশ্রয়ী।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
ফেয়ার এন্ড হোয়াইট স্কিন ব্রাইটনিং লোশন
যদিও এটি ক্রিম নয়! বরং লোশন! তবে এটিকে আপনাকে নির্দ্বিধায় ক্রিমের পরিবর্তে ত্বকে ব্যবহার করতে পারবেন। এই লোশনে ভিটামিন সি রয়েছে।
কার্যকারিতা
- এটি আপনার ত্বককে সাদা করতে সাহায্য করবে ত্বক এক গঠন উন্নত করতে কাজ করবে
- এটি ত্বককে যথাসম্ভব মসৃণ করবে
- এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন এবং ইলাস্টিন উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে
- ত্বকের পুষ্টি জোগায়
- ত্বকের ফ্রি র্যাডিকেল নিশ্চিত করে
- সূর্যের অতিবেগুনী বিকিরণের বিরুদ্ধে লড়াই করে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে
- বলে রাখা ভালো এই ক্রিম কোম্পানিটির সার্ভিস কমিউনিকেশন খুব ভালো
ডু মি প্রিমিয়াম ইন্টিমেট স্কিন লাইটেনিং ক্রিম
যারা ত্বকে নিয়মিত ফেসিয়াল করেন এবং ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম তুলে থাকেন তাদের জন্য এই ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিমটি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। এছাড়াও ডিপিলেটরি ক্রিম (face whitening cream) ব্যবহার করেন তাদের জন্যে এই ক্রিমটি ব্যবহার করাকে এক প্রকার বাধ্যতামূলক স্কিন কেয়ার রুটিনও বলা যায়।
কার্যকারিতা
- ডু মি প্রিমিয়াম ইনটিমেট এরিয়াস হোয়াইটনিং ক্রিম (face whitening cream) ফেইস ছাড়াও বডির বিভিন্ন অংশে ব্যবহার করা যায়
- দেহের যেসব অংশ অনেক বেশি কালো সেসব অংশে এটি ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়
- এই ক্রিমে থাকা নারকেল তেল, কোজিক অ্যাসিড এবং নিয়াসিনামাইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ ত্বকের পুষ্টি উপাদান ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে
কিস রেড ই হোয়াইটিং ক্রিম
আপনারা সকলেই তো জানেন গ্রিন টি আমাদের ত্বক এবং দেহের জন্য কত উপকারী! আর এই উপকারিতাকে সরাসরি ক্রিম আকারে ত্বকের প্রয়োগ করতে ব্যবহার করতে পারেন এই কিস রেড ই হোয়াইটিং ক্রিম(face whitening cream)। এটি বর্তমানে ন্যাচারাল উপাদানে তৈরি ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম বিউটি সেক্টরে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে।
কার্যকারিতা
- গ্রিন টির পাশাপাশি এই ক্রিমে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বকের পুষ্টি জোগায়
- এটি হলো অ্যান্টি-এজিং ক্রিম হিসাবে ভালো একটি হোয়াইটেনিং ক্রিম
- এই ক্রিম ব্যবহারকারীর ত্বকের বয়সকে ধরে রাখবে
- সারাজীবনই টান টান ত্বকের নিশ্চয়তা দেবে
নেলা হোয়াইটেনিং এন্ড ব্রাইটনিং টোন-আপ ক্রিম
ত্বককে মুক্তোর মতো সাদা করে তুলতে নেলা হোয়াইটেনিং এন্ড ব্রাইটনিং টোন-আপ ক্রিমটি (face whitening cream) ব্যবহার করুন।
কার্যকারিতা
- ত্বকের ব্রাইটনিং টোন-আপ নিশ্চিত করবে
- হাইপো-অ্যালার্জিক ক্রিম হিসাবে এটি ব্যবহার করা যাবে
- এতে থাকা বিফিডা ফার্মেন্ট ফিল্ট্রেট এবং সিউডোঅল্টেরোমোনাস ফার্মেন্ট এক্সট্র্যাক্ট ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখবে
- এটি ব্যবহারে আপনার ত্বককে কোনো জ্বালা পোড়া ছাড়াই স্বাভাবিক ব্রাইটেনিং এনে দেবে
আরও পড়ুনঃ মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি ও নিয়ম প্রণালি
ডার্মাট্রু কোলাজেন ব্রাইটনিং স্কিন ক্রিম
যেকোনো দাগ, কালো দাগ, ব্রণের চিহ্ন এবং ত্বকের অমসৃণতা যাদের কনফিডেন্সকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে তারা এই ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিমটি (face whitening cream) ব্যবহার করতে পারেন৷ আরবুটিন, প্যাপেইন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এবং আঙ্গুরের বীজ দিয়ে এই ক্রিম তৈরি করা হয়।
কার্যকারিতা
- এটি আপনাকে ৭ দিনে ফর্সা করে তুলবে
- এতে থাকা আরবুটিন, প্যাপেইন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এবং আঙ্গুরের বীজ ত্বকের পুষ্টি জোগাবে
- ত্বকে থাকা যেকোনো দাগ, কালো দাগ, ব্রণের চিহ্ন দূর করবে
- ত্বকের অমসৃণতা দূর করে ত্বককে মসৃণ করে তুলবে
স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার ক্রিম
নিম্নে উল্লেখিত ৬ টি ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম সারা পৃথিবীতে সমান হারে জনপ্রিয়। যা প্রতিটি স্কিন টোন বা স্কিন টাইপের সাথেই যাবে। সুতরাং যারা ভালো মানের ফর্সা হওয়ার ক্রিম (face whitening cream) খুঁজছেন তারা এসব ক্রিমের যেকোনো একটি লোকাল বিউটি শপ বা অনলাইন শপ থেকে কিনে নিতে পারেন। ক্রিমগুলি হলো:
- Olay Regenerist Vitamin C + Peptide 24 Brightening Face Cream
- Obagi Medical Nu-Derm Clear Fx Face Cream
- FAMIROSA Dark Spot Corrector Cream
- REMEDIAL Dark Spot Removing and Skin Lightening Cream
- POND’S White Beauty Anti-Spot Fairness Cream
- Fair and White Exclusive Skin Brightening Lotion
৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারে সতর্কতা
৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারে আপনাকে অবশ্যই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। যেমন এসব ক্রিম এপ্লাই করার সময় সম্ভব হলে একইসাথে পুরো বডিতে এপ্লাই করতে হবে। আর যদি তা করা না হয় সেক্ষেত্রে বডির এক অংশ কালো এবং আরেক অংশ অনেক বেশি ফর্সা (whitening cream) হয়ে যাবে। যা দেখতে দৃষ্টিকটু মনে হবে।
যেসব ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমে (whitening cream) মার্কারি, লেড, স্টেরয়েড, নানা প্রিজারভেটিভসহ অজস্র রাসায়ানিক থাকে সেসব ক্রিম ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং তা এড়িয়ে চলতে হবে। তাছাড়া যাদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, বিষণ্ণতা ও মানসিক অস্থিরতা সম্পর্কিত সমস্যা রয়েছে তারা এসব ক্রিম দিনের পর দিন ব্যবহার করেও খুব একটা ফল পাবে না। এ বিষয়টা নিয়েও যতটা সম্ভব সতর্ক থাকতে হবে।
শেষ কথা
মনে রাখবেন সাধারণত ত্বকে মেলানিনের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলেই ত্বকের উজ্জ্বলতা (whitening cream) বাড়ে। সুতরাং আমাদের এমন ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে যাতে এই উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। সেই সাথে সূর্যের আলো, গর্ভাবস্থা, ব্রণের সমস্যা বা ত্বকের সাথে রাসায়নিকের প্রতিক্রিয়ার মতো বিভিন্ন কারণ থেকে ত্বককে বাঁচাতে হবে। আর হ্যাঁ! যেহেতু ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে লেজার এবং আইপিএলের মতো স্থায়ী ট্রিটমেন্টগুলি খুব একটা কাজ করে না সেহেতু কেবল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে গিয়ে দিনের পর দিন এসব ট্রিটমেন্ট গ্রহণ না করাটাই উত্তম।
৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ’s
১. ৭ দিনের ফর্সা হওয়ার ক্রিম কিভাবে ব্যবহার করবেন?
উত্তরঃ পরিষ্কার এবং পোষা শুকনো জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রিম নিন, আলতো করে প্রয়োগ করুন এবং বৃত্তাকার গতিতে ঘষুন এবং শোষিত হওয়ার জন্য এটি ছেড়ে দিন।
২. নাইট ক্রিম কোনটি ভালো??
উত্তরঃ ব্র্যান্ডের নাইট ক্রিম স্কিনের জন্য ভালো যেমন: পন্ডস, নিভিয়া, জিয়াওলি, 4k প্লাস, গার্নিয়ার ইত্যাদি। এই ধরনের নাইট ক্রিম ত্বকের জন্য ভালো।
আরও পড়ুন-
কোলেস্টেরল কমানোর উপায়
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার