স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয়, দায়িত্ব ও কর্তব্য

স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় 

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক যত মধুর হবে ততই দাম্পত্য জীবন সুখ শান্তিতে ভরে যাবে। সুখে থাকার জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই আন্তরিকতা এবং ভালোবাসা দরকার। স্বামীর যেমন স্ত্রীর প্রতি অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে, তেমনি স্ত্রীরও রয়েছে

স্বামীর প্রতি অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। আল হাদিসে আছে, “যে স্ত্রী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরণ করে, সে জান্নাতবাসিনী হবেন।” তাহলে বুঝতেই পারছেন ইসলাম স্বামীকে কতটা গুরুত্ব দিতে বলেছে। অনেক নারীরাই জানতে চান স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয়।

বিশেষ করে যারা নতুন বিবাহিত মহিলা আছেন তারা এ ব্যাপারে অনেকেই অবগত নন। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব ইসলামে স্বামীর গুরুত্ব, স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব, স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।

আরও পড়ুনঃ হতাশা থেকে মুক্তির উপায় ইসলামিক

ইসলামে স্বামীর গুরুত্ব 

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই পবিত্র এবং বরকতময়। স্বামীর কাছে তার স্ত্রী যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি স্ত্রীর কাছেও তার স্বামী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনার মূল বিষয় স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয়। ইসলাম ধর্মে এমন কোন বিধান নেই যা মানবকূলের জন্য ক্ষতিকর। তাই স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় জানার আগে ইসলামে স্বামীর গুরুত্ব সম্পর্কে আগে জেনে নেই। 

  • রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “আমি যদি (আল্লাহ ছাড়া) অন্য কাউকে সিজদা করার হুকুম দিতাম, তবে স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সিজদা করার হুকুম দিতাম।” (তিরমিজি :১১৫৯) 
  • রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “স্বামী যখন তার প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকে, সে যেন অবশ্যই তার কাছে আসে; যদিও সে রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত থাকুক।” (তিরমিজি :১১৬০) 
  • রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “কোন নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজানের রোজা রাখে, নিজের সতীত্ব রক্ষা করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে; তাহলে তাকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো।” (মুসনাদে আহমদ : ১৬৬১)

উপরের হাদিসগুলো পড়ে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, স্বামীকে যথাযথ সম্মান করা স্ত্রীর কতটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এছাড়াও স্বামীর বৈধ আদেশ পালন করা ওয়াজিব। প্রতিটি স্ত্রীর উচিত স্বামীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। 

স্বামীর প্রতি আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য 

আদর্শ স্ত্রী হওয়ার জন্য স্বামীর প্রতি কিছু কর্তব্য পালন করুন। দেখবেন আপনার দাম্পত্য জীবন সুখ শান্তিতে ভরে যাবে। প্রতিটি স্ত্রীর জানা উচিত স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয়। এছাড়াও একজন স্ত্রীর স্বামীর প্রতি রয়েছে অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। নিচে একজন আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্যগুলো আলোচনা করা হল: 

ভালোবাসা 

একজন আদর্শ স্ত্রীর প্রথম শর্ত হচ্ছে তার স্বামীকে ভালোবাসা। স্ত্রী যদি স্বামীর প্রতি পর্যাপ্ত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, সেক্ষেত্রে তার স্বামী অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হবে না। একই সাথে স্বামীর বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে। প্রত্যেক নারীর স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় সে সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার।

রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “তোমাদের জান্নাতি রমনীরা হচ্ছে, যারা স্বামীর প্রতি প্রেমময়ী ও অধিক সন্তান প্রসবকারিণী। স্বামী রাগ করলে সে এসে স্বামীর হাতে হাত রেখে বলে, আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাবো না।” (সহিহুল জামে, হাদিস : ২৬০৪)

আনুগত্য প্রকাশ করা  

যে সকল স্ত্রীলোক মহান আল্লাহ তায়ালার সকল হুকুম পালন করে এবং সেইসাথে স্বামীরও আনুগত্য প্রকাশ করে ; সেই স্ত্রী জান্নাতি হবেন। তবে স্বামী যদি অবৈধ কোন কাজ করতে বলে সেক্ষেত্রে তা অমান্য করতে হবে। 

আনন্দ প্রদান  

একজন আদর্শ স্ত্রী চেষ্টা করে তার স্বামীকে আনন্দ প্রদান করে মুগ্ধ করার। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “আমি কি তোমাকে মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ সম্পর্কে অবহিত করবো না? তা হলো, নেককার স্ত্রী। সে (স্বামী) তার (স্ত্রীর) দিকে তাকালে স্ত্রী তাকে আনন্দ দেয়। তাকে কোন নির্দেশ দিলে সে তা মেনে নেয়। সে (স্ত্রী) যখন তার (স্বামী) থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সে তার সতীত্ব ও তার সম্পদের হেফাজত করে।” (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৬৪)

কৃতজ্ঞ থাকা 

একজন আদর্শ স্ত্রী আল্লাহ তায়ালার সকল নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে এবং তার স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়। (আমি দেখি) তার অধিবাসীদের অধিকাংশই নারী। (কারণ) তারা কুফরি করে। তিনি বলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ হয়। তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাকো, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, আমি কখনো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি।” (বুখারি, হাদিস : ২৯)

বিপদে সান্তনা প্রদান  

প্রত্যেকের জীবনেই উত্থান এবং পতন আসে। স্বামীর ভালো দিনে যেরকম পাশে থাকবেন তেমনি খারাপ দিনেও তার পাশে থাকতে হবে। স্বামীর বিপদে থাকে সান্তনা প্রদান করুন এবং বিপদ থেকে মুক্তি পেতে যথাযথ সাহায্য করুন। বিপদের সময় স্বামীর পাশে থাকা একজন আদর্শ স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য। 

কষ্ট না দেওয়া  

একজন আদর্শ স্ত্রী কখনোই তার স্বামীকে কষ্ট দিবে না। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “যখন কোন নারী তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দেয়, তখন জান্নাতের হুরদের মধ্যে যে তার স্ত্রী হবে সে বলে, (হে অভাগিনী!) তুমি তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন। তিনি তোমার কাছে আগন্তুক। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবেন।” (তিরমিজি, হাদিস : ১১৭৪)

গৃহে অবস্থান  

লজ্জা নারীর ভূষণ এবং একজন আদর্শ স্ত্রী কখনোই প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে যাবে না। হাদিসে আছে, “তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করো, প্রাচীন জাহেলি যুগের নারীদের মতো নিজেদের প্রদর্শন করো না।” (সূরা আহযাব, আয়াত : ৩৩) 

অপর একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: “নারী হচ্ছে গোপন বস্তু। যখন সে বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে (সৌন্দর্য প্রকাশে) উদ্বুদ্ধ করে।” (তিরমিজি, হাদিস : ১১৭৩)

পর্দার বিধান পালন 

আদর্শ স্ত্রী অবশ্যই পর্দার সহিত চলাফেরা করবেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: “নগ্ন পোশাক পরিধানকারী নারী, যারা পুরুষদের নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও পুরুষদের নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট হবে।  তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধবিশিষ্ট উটের ন্যায় হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (মুসলিম, হাদিস : ৫৪৭৫)

স্বামীর হক আদায়  

একজন আদর্শ স্ত্রী আল্লাহ তায়ালার হক আদায়ের সাথে সাথে তার স্বামীর হক আদায়ের ক্ষেত্রেও যত্নবান থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “যার হাতে মোহাম্মদের প্রাণ তাঁর কসম করে বলছি, স্ত্রী ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে সক্ষম হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার স্বামীর হক আদায় না করবে।” (ইবনে মাজাহ,  হাদিস : ১৮৫৩)

স্বামীকে বিছানায় কিভাবে আদর করতে হয় 

প্রতিটি নারীর জীবনেই স্বামী অত্যন্ত মূল্যবান একজন ব্যক্তি। একজন আদর্শ স্ত্রী সব সময় চেষ্টা করে তার স্বামীকে খুশি রাখার। স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য সহবাস একটি উৎকৃষ্ট পন্থা। সহবাসের নিয়ম নীতি সম্পর্কে যেমন জানতে হবে, তেমনি স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় সে ব্যাপারেও প্রত্যেকটি স্ত্রীর জানা দরকার। তাহলে আলোচনা শুরু করা যাক স্বামীকে বিছানায় কিভাবে আদর করতে হয় এই প্রসঙ্গে। 

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা 

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।  স্বামীর সাথে থাকার ক্ষেত্রে অবশ্যই  পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন থাকবেন। হাদিসে রয়েছে,  “তোমাদের স্ত্রীরা হল তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার করো।” (সুরা – আল বাকারা : ২২৩) এই হাদিসটির মাধ্যমে বোঝা গেল, স্বামীরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তাদের স্ত্রীর সাথে সঙ্গম বা সহবাস করতে পারে। তাই স্ত্রীরও সেভাবে তৈরি থাকা উচিত। 

স্বামী-স্ত্রীর ভিতর লজ্জার কোন সম্পর্ক নেই। সহবাসের ক্ষেত্রেও একে অপরের শরীর এবং লজ্জাস্থান দেখতে পারে। তাই উচিত হবে নিজের লজ্জাস্থান এবং বগলের চুল পরিষ্কার রাখা। যেন এটা অস্বস্তির কোন কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। আবার যেহেতু চুম্বনের একটা ব্যাপার আছে, তাই মুখে দুর্গন্ধ বের হয় এমন কোন কাজ করবেন না। ভালো হয় সহবাসের আগে দাঁত ব্রাশ করবেন অথবা মাউথ ওয়াস ব্যবহার করবেন। 

অন্তর্বাস এবং সুগন্ধি 

সহবাস করার সময় স্বামী তার স্ত্রীকে উত্তেজিত করার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে। তেমনি একজন স্ত্রীরও উচিত তার স্বামীকে উত্তেজিত করা। তাহলেই সহবাস হবে সর্বোচ্চ আরামদায়ক এবং প্রশান্তিদায়ক। রঙিন এবং আকর্ষণীয় অন্তর্বাস স্বামীকে উত্তেজিত করতে পারে। তাই স্ত্রীরা সহবাস করার প্রথমে আকর্ষণীয় অন্তর্বাস পড়ুন। অনেক স্বামীরা নিজেই স্ত্রীর অন্তর্বাস খুলতে পছন্দ করে।

তবে স্বামী এই কাজটি না করলে আপনি নিজেই তার সামনে অন্তর্বাস খোলা শুরু করুন। স্বামী পছন্দ করে এমন কোন সুগন্ধি ব্যবহার করুন। স্বামীকে আকৃষ্ট করার আরেকটি উপায় হচ্ছে সুগন্ধি ব্যবহার করা। সুগন্ধি কিন্তু অন্য পর পুরুষের সামনে ব্যবহার করা উচিত নয় মুসলিম মেয়েদের। 

নিরিবিলি স্থান নির্বাচন 

একান্ত নিরিবিলি স্থানে সহবাস করতে হবে। স্বামী স্ত্রী উভয়েই উত্তেজিত হওয়ার ফলে সহবাসে লিপ্ত হয়। কিন্তু যদি কোলাহলপূর্ণ জায়গা হয় আপনার সব উত্তেজনা ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে স্ত্রীরা খেয়াল রাখতে পারেন। নিরিবিলি স্থানে স্বামীকে সহবাসের জন্য আহবান করতে পারেন। আমরা জানি স্বামীকে আদর করা সুন্নত। একথাটি প্রত্যেকটি স্ত্রীর মনে রাখতে হবে। তাই সহবাস করার পূর্বে স্ত্রীগণ এমন কিছু করবেন যাতে আপনার স্বামীরা খুব খুশি হয়।

স্বামীকে আদর করা 

সহবাস করার সময় স্বামীর সঙ্গে প্রেমময় বাক্যের আদান প্রদান করতে পারেন। তার বিভিন্ন অঙ্গে চুমু খেতে পারেন। এমনকি স্বামীর কোন কোন অঙ্গে উত্তেজনা বেশি হয় এই দিকে খেয়াল রাখবেন। সেসব স্থানে চুমু এবং হালকা কামড়ও দিতে পারেন যদি স্বামী পছন্দ করে। স্বামীর শরীরে হাত বুলিয়েও আদর করতে পারেন। স্ত্রীর উচিত হবে স্বামী যেন তার চাহিদা পূরণ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় তা জানা থাকলে কাজগুলো শুরু থেকেই সহজ হয়ে যায়। 

আরও পড়ুনঃ ফিতরা দেওয়ার নিয়ম ও পদ্ধতি

স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় – স্বামীর মন জয় করার উপায় 

স্বামী স্ত্রীর মধুর সম্পর্কের সঙ্গে অন্য কোন কিছুরই তুলনা হয় না। প্রতিটি স্ত্রীর উচিত স্বামীর মন জয় করে চলা। স্বামীর মন জয় করার কয়েকটি উপায় নিচে দেওয়া হল :

  • স্বামীর সঙ্গে খোলাখুলি ভাবে কথা বলার অভ্যাস করুন। সবসময় সত্য কথা বলার অভ্যাস করুন। 
  • স্বামী কোন আদেশ করলে সেটি মেনে চলার চেষ্টা করুন। কোন কাজে নিষেধ করলে সেটি থেকে বিরত থাকুন। তবে সব কিছুই শরীয়তের ভিতর হতে হবে। 
  • স্বামীর মন জয় করার জন্য তার শুভাকাঙ্ক্ষী হন। 
  • নিজেকে সবসময় পরিপাটি রাখার চেষ্টা করুন। যেন স্বামী কখনোই আপনাকে দেখে বিরক্ত না হয়।
  • স্বামীর কোনো ভালো কাজে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করুন এবং অনেক বেশি প্রশংসা করুন। 
  • স্বামীর পছন্দনীয় কাজ করে তাকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করুন। যেমন তার পছন্দের রান্না করা, তার পছন্দের ড্রেস পড়া ইত্যাদি। 
  • অযথা তর্ক করবেন না স্বামীর সঙ্গে। মন কষাকষি হলে নিজেই আগে সরি বলবেন ।
  • স্বামীর সঙ্গে নারী সুলভ আচরণ করবেন। কখনোই কর্কশ হওয়ার চেষ্টা করবেন না। 
  • অন্য পুরুষের সঙ্গে ভুল করেও নিজের স্বামীর তুলনা করবেন না। কারণ পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষই আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। 
  • ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামীর যাবতীয় হক আদায় করার চেষ্টা করুন। অকারনে কৈফিয়ত চাইবেন না স্বামীর কাছে। 
  • স্বামীর সঙ্গে তার পরিবারের সমালোচনা করবেন না। শশুর শাশুড়ির সাথে ভালো ব্যবহার করুন। 
  • ক্ষমা করা একটি মহৎ গুণ। স্বামী যদি কোন ভুল করে তাহলে চেষ্টা করবেন ক্ষমা করে দেওয়ার। 
  • নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করুন। নিজেকে শুধুমাত্র স্বামীর জন্য উজাড় করে দিন। 
  • স্বামীকে ধর্মের প্রতি উৎসাহিত করুন। শেষ রাত্রে নিজে উঠবেন এবং স্বামীকেও তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য ডাকতে পারেন। 
  • স্বামী যতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকবে ততক্ষণ খোঁজ নিন ফোনে বা মেসেজ দিয়ে। সে খেয়েছে কিনা, সবকিছু ঠিক আছে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে। 

শেষকথা 

আশা করি উপরের আলোচনা থেকে একটা ধারণা পেয়েছেন স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় এই সম্পর্কে। প্রতিটি স্বামীই চায় তার স্ত্রীর কাছ থেকে আদর সোহাগ পেতে। কিন্তু অনেক স্ত্রীই এ সম্পর্কে অবগত নয়। যার ফলে স্বামীরা পর নারীতে আসক্ত হয় এবং সংসারে অশান্তি হয়। সহবাস করার সময় একজন স্বামী বিভিন্ন উপায়ে তার স্ত্রীকে উত্তেজিত করে।

তেমনি স্ত্রীদেরও স্বামীকে আদর ভালোবাসা দিয়ে উত্তেজিত করতে হবে। ভালোবাসা গভীর করার জন্য স্বামী-স্ত্রীর দুজনেরই অবদান রয়েছে। স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। চোখের ভাষায় কথা বলুন, ভালোবাসার মহত্ব বোঝার চেষ্টা করুন। পুরুষেরা অশ্লীলতা ভালোবাসে। তাই চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব নিজেকে খোলামেলা রাখতে স্বামীর সামনে। ইসলামে কোন বাধা নেই স্বামীর সামনে খোলামেলা হতে। আপনার দাম্পত্য জীবন খুবই সুখের হবে এই কামনায় আজকের আলোচনা শেষ করছি।

স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয় সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ 

১. স্বামীর ভালবাসা লাভের দোয়া কি? 

উত্তর : স্বামীর ভালবাসা লাভের দোয়া :

“আল্লাহুম্মা আল্লিফ বাইনা কুলুবিনা, অজআল বাইনি অবাইনা যাওজিল মাওয়াদ্দাহ ওয়া রাহমাহ।” 

আরবিতে না পারলে নিজের ভাষাতেও আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে পারেন  । 

২. স্বামী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় কি? 

উত্তর : স্বামী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় :

  • স্ত্রীর প্রতি অবহেলা 
  • ইন্টারনেট বা ফোনে আসক্তি 
  • স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে উদাসীনতা 
  • অকারনে রাগ দেখানো 
  • সংসারের প্রতি অবহেলা 

৩. বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার উপায় কি? 

উত্তর : বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার উপায় হল :

  • স্বামীর সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় 
  • সৌজন্যমূলক আচরণ 
  • গিফট প্রদান 
  • স্বামীর ভালোলাগা এবং খারাপ লাগা জানার চেষ্টা 
  • স্বামীর কাছে নিজেকে শোপে দিন যৌন মিলনের জন্য। 

৪. স্বামীর চরিত্র খারাপ হলে করণীয় কি? 

উত্তর : স্বামীর চরিত্র খারাপ হলে উচিত হবে স্বামীকে বেশি বেশি সময় দেওয়া। স্বামীর পছন্দনীয় কাজগুলো করা। বাইরে চলাফেরা এবং ইন্টারনেটের আসক্তি থেকে দূরে আনা। ধর্মের প্রতি মনোযোগী করা। 

আরও পড়ুন-

তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

বদনজর থেকে বাঁচার দোয়া

Leave a Comment