রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম এর ব্যাবহার

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম

অনেকেরই চুলকানি হয়। চুলকানি খুবই বিরক্তিকর একটি রোগ। অনেক সময় দেখা যায় যে জায়গায় চুলকানি হয় সে জায়গায় চুলকাতে চুলকাতে রক্ত বের হয়ে যায়। তাও চুলকানি কমে না। বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হয়ে থাকে।

কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় রানের চিপায় চুলকানি হয়। অর্থাৎ দুই পায়ের মাঝখানে চুলকানি হয়। সেই ক্ষেত্রে চুলকানি দূর করতে অনেক ধরনের মলম এবং ক্রিম রয়েছে। যা ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার চুলকানি দূর হতে পারে।

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে চুলকানি দূর করা যায়। আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম। তাই যারা চুলকানির সমস্যায় ভুগছেন তারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ পড়বেন। 

শরীরের বিভিন্ন স্থানের চুলকানি দূর করতে বিভিন্ন প্রকার ক্রিমের নাম আমাদের এই পোস্ট থেকে জেনে নিন। কারণ এখানে আমরা এই বিভিন্ন ধরনের ক্রিমের নাম বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছি।

এছাড়াও আমাদের এই পোস্ট এর মধ্যে জানতে পারবেন এই চুলকানির ক্রিম গুলোর দাম কত। আসুন জেনে নেই রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম বা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানির ক্রিম বা মলম সম্পর্কে বিস্তারিত।

আরও পড়ুনঃ পাতলা পায়খানা হলে করণীয়, চিকিৎসা ও খাবার তালিকা

রানের চিপায় চুলকানি কেন হয়

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম

সাধারণত বেশিরভাগ সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় যেমন আবহাওয়া যখন বেশি গরম থাকে। অথবা আবহাওয়া যখন অত্যাধিক শীতল থাকে তখনই রানের চিপায় চুলকানির মাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায়। গরমের দিনে প্যান্ট বা পায়জামা পরার কারণে এবং হাঁটাচলা করার কারণে রানের চিপা প্রচন্ড পরিমাণে ঘেমে যায়।

যার কারণে সেই ঘাম থেকে তৈরি হয়ে ব্যাকটেরিয়ার। ওই ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে রানের চিপায় চুলকানি হয়। বিপরীত ক্রমে প্রচন্ড শীতকালে আমরা নিয়মিত গোসল করি না, যার ফলে রানের চিপায় ময়লা জমে যায়।

রানের চিপায় সেই ময়লা গুলোর ফলেই সেখানে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। তার সাথে কালো কালো এক ধরনের দাগেরও সৃষ্টি হয়। ফলে সেখান থেকেই শুরু হয় রানের চিপায় চুলকানি। 

রানের চিপায় চুলকানি দূর করতে ক্রিম

আপনার যদি রানের চিপায় চুলকানি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। তবে রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিমগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

অতএব যাদের রানে চিপা চুলকানি হয়ে থাকে তাদেরকে ডাক্তার বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করতে বলেন। আর সেসব ক্রিমের নাম নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল সম্পন্ন করেছি।

পিভিসণ ক্রিম শরীরের বিভিন্ন জায়গার  চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। তবে যাদের রানের চিপায় চুলকানি রয়েছে তারা পেভিসন ক্রিম সহ কর্টিসোন ক্রিম, steroid cream, Lidocaine cream ইত্যাদি ক্রিম গুলো আপনার রানের চিপার চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে।

ডাক্তার আর রোগীদের চুলকানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মলম ব্যবহার করতে বলেন বা পরামর্শ দেন। বিভিন্ন ওষুধ প্রদান করার পাশাপাশি মলম প্রদান করে থাকেন। তবে বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদেরকে মলম প্রদান করা হয়ে থাকে।

আর চুলকানি সারাতে এই মলম গুলো অনেক বেশি কার্যকরী। আপনি চাইলে মলম আপনার রানের চিপার চুলকানি দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলকানি দূর করার ক্রিমের দাম কত

আপনি বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন মলম বা ক্রিম সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে ভালো মানের যে ক্রিমগুলো রয়েছে সেই ক্রিমগুলোর দাম মোটামুটি ভাবে কম রয়েছে। যেমন পেভিসন ক্রিম ৭০ টাকা। এর থেকেও কম দামে আপনি ক্রিম ক্রয় করতে পারবেন অর্থাৎ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ টাকায় একটি ক্রিম রয়েছে। 

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম

আপনাদের যদি চুলকানি হয় অর্থাৎ ফাংগাস ইনফেকশন হয়ে থাকে তাহলে এই ক্রিমগুলো অন্তত দিনে তিনবার অথবা চারবার লাগিয়ে রাখতে পারেন। তবে এই ওষুধগুলো ব্যবহারের সময় বা আপনার চুলকানির সময় জাংগিয়া পড়তে হবে।

তা প্রতিদিন পরিবর্তন করে পড়তে হবে। কিভাবে ব্যবহার করবেন রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিমগুলো তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি ক্রিম বা মলমগুলো ব্যবহার করবেন। আপনি যদি নিজ ইচ্ছায় মলম বা ক্রিম গুলো চুলকানির স্থানে ব্যবহার করেন, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

চুলকানি শরীরের যেকোন স্থানে হতে পারে। আপনার শরীরের যেকোনো জায়গায় চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায় আপনি নিরাময় করতে পারবেন।

তবে নিরাময় করতে হলে আপনাকে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। অর্থাৎ সংক্ষেপে আপনাদেরকে জানাতে যাচ্ছি কিভাবে রানের চিপার চুলকানি ঘরোয়া উপায়ে দূর করবেন। ঘরোয়া উপায়গুলি নিম্নরুপ –

  • নারকেল তেল ব্যবহার করে আপনি আপনার চুলকানি দূর করতে পারেন। নারকেল তেল চুলকানো জায়গায় প্রতিদিন ব্যবহার করলে চুলকানি কমে যায়।
  • বেচাক কোন কাপড় বেশিক্ষণ পরে তাকবেন না বা চুলকানো স্থানে চেষ্টা করবেন যাতে পানি না লাগে। চুলকানি স্থান যদি বেঁচে থাকে তাহলে চুলকানি আরো বেড়ে যায়।
  • গরম পানিতে তুলসী পাতা দিয়ে সেই পানিতে গোসল করুন। তুলসী পাতার মধ্যে এমন এমন বৈশিষ্ট্য গুলো রয়েছে যার কারণে চুলকানি কমে যায়।
  • চুলকানির জন্য এলোভেরার জেলও অনেক উপকারী। তবে সেটা চিরকালের জন্য চুলকানি কমায় না।
  • লেবুর রসও আপনি চুলকানির ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। চুলকানি সারাতে লেবু অত্যন্ত দ্রুত কাজ করে।
  • তাৎক্ষণিক চুলকানি কমাতে আপনি বরফ ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলকানি পুরোপুরি কমবে না কিন্তু তাৎক্ষণিক সময় আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন এবং আরাম পাবেন।
  • রানের চিপায় চুলকানির অন্যতম একটি ঘরোয়া উপায় হচ্ছে, চা গাছের তেল ব্যবহার করা। প্যান্ডেলেরা অয়েলের মতো এতে রয়েছে ন্যাচারাল এন্টিসেপটিক। যা খুবই কার্যকরী বিভিন্ন ইনফেকশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। ২ চামচ নারিকেল তেলের সাথে, ৪ চামচ চা গাছের তেল মিশিয়ে দুইবার করে আক্রান্ত স্থানে লাগাবেন। এতে চুলকানি নিরাময় হওয়া সম্ভব। 
  • মধু ও রসুন দিয়ে একটি পেস্ট খুবই কার্যকরী রানের চিপায় চুলকানির জন্য। রসুন বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে। প্রাকৃতিক মধুতে রয়েছে হিস্টামিন নিয়ন্ত্রণ করার মত কার্যকরী ক্ষমতা। রসুন ও মধু দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগালে চুলকানি দূর হয়ে যায়। রসুনের তেল সরাসরি শরীরের কোন অংশে লাগাবেন না। এতে জ্বালাপোড়া হতে পারে। 

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার কিছু ট্যাবলেট

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম বাজারে অনেক ধরনের রয়েছে। ঠিক তেমনি রানের চিপার চুলকানি দূর করার জন্য রয়েছে কিছু ট্যাবলেট। অনেকের রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম বা মলমে কাজ করে না। চুলকানি দূর করার ক্রিম অনেকদিন ব্যবহার করার পরও দেখা যায় চুলকানি থেকে যায়।

তাদের ক্ষেত্রে রানের চিপায় চুলকানি দূর করার জন্য বাজারে কিছু ট্যাবলেট রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। রানের চিপায় চুলকানি দূর করার সেরকমই কিছু ট্যাবলেট হচ্ছে –

  • Sedno50
  • Dharma 50
  • Alatrol
  • Oradin
  • Atarax 25mg
  • Desloratafin
  • Loratidin
  • Fexofenadin

শেষ কথা 

আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারলেন চুলকানি দূর করার ক্রিম এবং ক্রিমের ব্যবহার, কিছু মলম ও ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি দূর করার ক্রিম সম্পর্কিত এই পুরো পোস্টটি এতক্ষন মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নিয়মিত গোসল করুন, নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করুন। ধন্যবাদ। 

রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ

প্রশ্ন ১: ত্বকের চুলকানির জন্য কোন এন্টিহিস্টামিন ব্যবহার করা উচিত? 

উত্তর:- একটি নন প্রেসক্রিপশন মৌখিক এন্টিহিস্টামিন, যেমন-লোরাটাডিন, সেটিরিজিন, বা ডিফেনহাইড্রাইমাইন চুলকানি উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। আপনি এমন টাইপ পছন্দ করতে পারেন যা তন্দ্রা সৃষ্টি করতে করে না তা বিবেচনা করুন। তার বিকল্পগুলো সম্পর্কে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ফার্মাসিস্টকে জিজ্ঞাসা করুন। 

প্রশ্ন ২: চুলকানি কি? 

উত্তর:- চুলকানি হচ্ছে একটি সংবেদন যা শরীরের বিভিন্ন অংশে আচড়ের ইচ্ছা ঘটায়। শরীরে ব্যথার সাথে চুলকানির অনেক মিল রয়েছে এবং উভয়ই অপ্রীতিকর সংবেদনশীল। অভিজ্ঞতা হলেও তাদের আচরণগত প্রতিক্রিয়ার ধরন ভিন্ন। চুলকানি যেকোনো এক ধরনের সংবেদনশীল অভিজ্ঞতা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করার অনেক প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করছে। 

প্রশ্ন ৩: গোড়ালি চুলকানি কিসের লক্ষণ? 

উত্তর:- সাধারণত গোড়ালিতে চুলকানি একটি নিরীহ সমস্যা, যা নিজে থেকেই সেরে যায়। গোড়ালিতে চুলকানির কারণ গুলোর মধ্যে বিরক্তিকর প্রতিক্রিয়া বা অ্যালার্জেন, ত্বকের অবস্থা, যেমন একজিমা এবং সোরিয়াসিস। ছত্রাকের সংক্রমণ এবং ইমিউন সিস্টেমের সমস্যায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। 

প্রশ্ন ৪: চুলকানির মলম এর নাম কি? 

উত্তর:- Salobet ointment সালোবেট মলম, চুলকানির জায়গায় বা প্রয়োগিত অংশে প্রয়োগ করুন। সাধারণত সকালে এবং সন্ধ্যায় প্রতিদিন দুইবার করে ব্যবহার করবেন। এবং অবশ্যই তা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। শুধুমাত্র ত্বকে ওই ওষুধটি ব্যবহার করতে পারবেন। মুখে ব্যবহার করবেন না এবং অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। 

প্রশ্ন ৫: আরবি কাটার পর চুলকানি বন্ধ করার উপায়? 

উত্তর:- লেবুর রস এবং ভিনেগার এই দুটিরই হালকা অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা চুলকানির জন্য দায়ী অক্সালেট স্ফটিককে নিরপেক্ষ করতে পারে। যেকোনো স্টার্চি সবজির খোসা ছাড়ানোর পর, লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে আলতো করে ঘষবেন।

আরও পড়ুন-

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

কোলেস্টেরল কমানোর উপায়

Leave a Comment