ভোটার আইডি কাড সংশোধন

ভোটার আইডি কাড সংশোধন

অনেকে আছে যারা পূর্বে ভোটার আইডি বা এনআইডি কার্ড করেছে কিন্তু তারা প্রতিনিয়ত ভোটার আইডি কার্ডের ভুলগুলো নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তাই ভোটার আইডি কার্ড বা NID কীভাবে সংশোধন করবে তা নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে। অনেকের নামে ভুল রয়েছে অনেকের ছবিতে সমস্যা রয়েছে।

আবার অনেকের বাবা-মায়ের নামে ভুল থাকে, আবার অনেকের বয়সের ভুল থাকে। যেমন জন্ম নিবন্ধনে একটি বয়স ভোটার আইডি কার্ডে অন্য একটি বয়স। আর এই ভুলগুলো পুরনো আইডি কার্ডগুলোতে বেশিরভাগ দেখা যায়। একটা সময় ছিল যখন মানুষ ভোটার আইডি কার্ডের ভুল নিয়ে তেমন ভাবতো না।

কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল যুগ। বাংলাদেশ সরকার ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন নিয়ে এবং ডিজিটাল করতে খুবই নজরদারি করেছে। নতুন আইডি কার্ডে ভুল দেখা যায় না এটাও ঠিক নয়। অনেক সময় নতুন আইডি কার্ড করা হলেও ভুল হয়তো দেখা যায়। একারনে আপনার এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন বা আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ভুলগুলো ঠিক করতে চাচ্ছেন । চলুন ভোটার আইডি কাড সংশোধন সম্পর্কে জেনে নেয়।

আরও পড়ুনঃ জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসন্ধান

নির্বাচন অফিসে আবেদন

বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক। এটা নিতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে নাম, বয়স কিংবা অন্য যে কোন তথ্যে ভুল হতে পারে। কারোও ক্ষেত্রে পুরাতন জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল আগে থেকেই থাকে।

যা সরকারের এনআইডি কার্ড সংশোধনের নজর দারিতে তাদের চোখে পরে। যা সংশোধন করা জরুরী। সহজ কিছু ধাপ অনুসরণ করে এই ভুল সংশোধন করা যায়। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হলে নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন দুই ভাবে করা যায়।

সংশ্লিষ্ট ঊপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে

জেলা, উপজেলা, থানা, নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম- ২ সংগ্রহ করতে হবে। সেই ফরমটি সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরমের সঙ্গে পিন-আপ করে জমা দিতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশ অথবা রকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত সংশোধনী ফি পরিশোধ করতে হবে। এরপরই সংশোধনের কার্যক্রম শুরু হবে।

অইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধননলা করা যাবে

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন services.nidw.gov.bd সাইটে। এখানে NID নম্বর, জন্ম তারিখ ও ঠিকানা দিয়ে একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করুন। একাউন্টে Log in করে প্রোফাইলের ভুল তথ্যসমূহ এডিট করুন। নির্ধারিত সংশোধন ফি জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র Upload করে আবেদন সাবমিট করুন। আবেদন অনুমোদীত হলেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের যেসব তথ্য সংশোধন করা যাবে

  • ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন
  • ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন
  • ভোটার আইডি কার্ডের মায়ের নাম সংশোধন
  • আইডি কার্ডের বাবার নাম সংশোধন
  • ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
  • অন্যান্য তথ্য সংশোধন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • এস.এসসি/সমমান সনদ
  • নাগরিকত্ব সনদ জন্ম সনদ
  • চাকুরীর প্রমাণপত্র
  • পাসপোর্ট
  • বিবাহনামা
  • পিতা/স্বামী/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি

যদি নাগরিক শিক্ষিত না হন বা বিবাহিত না হয়

যদি কোন নাগরিক শিক্ষিত না হন বা বিবাহিত না হয় তাদের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ সমূহ হলঃ

  • অনলাইন জন্ম সনদের ফটোকপি
  • কাবিননামা চেয়ারম্যান/ কাঊন্সিলরের প্রত্যয়ন পত্র
  • সন্তাদের ভোটারআইডি কার্ড /শিক্ষা সনদ/জন্মনিবিন্ধন(যদি থাকে)
  • পিতা/স্বামী/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি

অনলাইনে ভোটার আইডি কাড সংশোধন

বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রায় সব কাজই অনলাইন এর মাধ্যমে হচ্ছে। টিক তেমনি ভাবে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডও নতন ভাবে করা ও ভুল হলে সংশোধন করার জন্য আবেদন করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক অনলাইনে ভোটার আইডি কাড সংশোধন গুলো কি?

আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

ডকুমেন্টসগুলোর স্ক্যান/ ছবি নেয়া

Computer ও Scanner থাকলে খুবই ভাল। না থাকলে মোবাইলে ভালো আলোতে, ভালোভাবে ছবি তুলে নিন। ছবিটি সুন্দরভাবে ক্রপ করে নিন এবং প্রয়োজন হলে Brightness ও Contrast বাড়িয়ে নিন। যার মাধ্যমে এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করার পূর্বে আপনার সংশোধনের ধরন অনুযায়ী, প্রমাণপত্রগুলো Scan করে নিতে পারবেন। ছবিগুলো আপনার কম্পিউটারের কোন নির্দিষ্ট ফোল্ডার বা মোবাইলে সংরক্ষন করে রাখুন।

রেজিস্ট্রেশন করা

সরকারি  ওয়েবসাইটে services.nidw.gov.bd গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করতে হবে। এবার আপনাকে হোম পেজ থেকে প্রোফাইল অপশন এ ক্লিক করতে হবে এবং প্রোফাইল অপশন এ ক্লিক করলেই আপনি ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য, এবং ঠিকানা নামের তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। আপনি যেই তথ্য সংশোধন করতে চান সেই অপশনটি সিলেক্ট করুন। উপরের দিকে কর্নারে (এডিট) বলে একটি বাটন পাবেন সেখানে ক্লিক করুন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম votar ID card songsodhon korar niyom

ভুল তথ্যটি ঠিক করা

তারপর আপনি আপনার সকল তথ্য দেখতে পাবেন । তারপর পাশে এডিট অপশন দেখতে পাবেন।এডিট অপশনে ক্লিক করার পরে আপনি প্রতিটা জায়গায় একটি খালি বক্সের মতন দেখতে পাবেন । আপনি যেই নামটি বা যেই তথ্যটি পরিবর্তন করতে চান সেই লেখার বাম পাশে একটি ছোট টিক চিহ্ন দেখতে পাবেন আপনি সেই বক্সে একটি টিক মার্ক করে দিবেন এবং আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং যেই লেখাটি ভুল রয়েছে সেই লেখাটি সঠিকভাবে লিখে পরবর্তী অংশ দেখতে পাবেন।

নির্ধারিত অর্থ মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং

ভোটার আইডি কার্ড করতে সরকারি যে চার্জ বাধ্যতামুলক করা হয়েছে সেই চার্জ অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। যেমন বিকাশ, রকেট অথবা নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। প্রতিটি তথ্যর জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অর্থ পেমেন্ট করুন পিন এর মাধ্যমে।

রিসিট সংরক্ষন করা

পেমেন্ট সম্পূর্ণ করার পর আপনাকে একটি রিসিট দেওয়া হবে। সেটি আপনি যেখান থেকে আবেদন করেছিলেন সেখানে গেলেই ডাউনলোড করতে পারবেন যদি আপনি সম্পূর্ণভাবে আপনার পেমেন্ট করতে পারেন।

শেষকথা

উক্ত পদ্ধতি গুলো সঠিকভাবে অবলম্বন করে আপনিও আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ভুলগুলি সংশোধন করতে পারেন। জাতীয় পরিচয় পত্র আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। বর্তমানে অফিস আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে কোন স্থানে কোন কার্যসম্পাদন করতে গেলে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়। তাই অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে কোন ভুল থাকলে তার দ্রুত সংশোধন করার চেষ্টা করুন।

আর ভোটার আইডি কাড সংশোধন গুলো নিয়ে যদি কোন প্রশ্ন সাথে করে ফেলুন আমরা যতাসাধ্য চেষ্টা করবো আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনাকে সাহায্য করতে।

আরও পড়ুন-

বয়স্ক ভাতার আবেদন

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

Leave a Comment