মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় ও নিয়মনীতি

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘরে বসে সামান্য কিছু স্কিলের সাহায্যে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন এই মোবাইল ইনকাম হোল্ডারের একজন। মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার জনপ্রিয় কিছু উপায় হলো: 

  • ইউটিউব থেকে আয়
  • ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে আয়
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় 
  • ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
  • প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয়
  • ছবি বিক্রি করে আয়
  • ফেসবুক থেকে আয়
  • ইনস্টাগ্রাম থেকে আয়
  • গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করে আয়

আরও পড়ুনঃ শেয়ার বাজার কি? বিনিয়োগের নিয়ম

ইউটিউব থেকে আয়

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকামের অন্যতম উপায় হলো ইউটিউব থেকে আয় করা। ইউটিউবে আপনি বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারবেন। যেমন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, এড রান করা কিংবা অন্যান্য সার্ভিস প্রমোট করে। তাছাড়া ইউটিউব থেকে আয় করতে বিভিন্ন কোর্সেরও আয়োজন করতে পারবেন। 

কি কি লাগবে

ইউটিউব থেকে আয় করার যোগ্যতা হিসাবে আপনাকে বেশকিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যার উপর ডিপেন্ড করে আপনি এডসেন্স আর্নিংয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এগুলি হলো: 

  • বছরে ৪০০০ ওয়াচটাইম
  • বিগত বছরে ১০০০ সাবস্ক্রাইব 
  • যথেষ্ট পরিমাণো ভিজিটর

উপরোক্ত বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে না পারলেও মোটামুটি ভিজিটর আসলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে, নিজের প্রোডাক্ট সেল করে কিংবা সার্ভিস বা কোর্স সেল করেও ভালো পরিমাণের ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন৷ 

কিভাবে করবেন

ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে আপনাকে ভিডিওগ্রাফি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। পাশাপাশি নিশ সিলেকশনেও হতে হবে প্রফেশনাল। ভাববেন না! এসব কাজে আপনি গুগলের সাহায্য নিতে পারেন। চলুন ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়গুলি জেনে নিই: 

  • নিশ সিলেক্ট করুন
  • স্ক্রিপ্ট রেডি করুন
  • ভিডিও এডিট করুন
  • কপি রাইট ফ্রি ভয়েস দিন
  • ৫/৬ টি ভিডিও তৈরি করে চ্যানেল খুলুন
  • চ্যানেলের ইউনিক নাম দিন
  • বায়োসহ অন্যান্য সেটিংস সেট আপ করুন 
  • টাইটেল এবং কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ভিডিও আপলোড করুন
  • নিয়মিত ইউটিউব ভিডিওর এসইও করুন

ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে আয়

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে আপনি বিভিন্ন উপায় ফলো করতে পারেন। এক্ষেত্রে এডসেন্স, বিভিন্ন এড কোম্পানির এড, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটং, নিজের প্রোডাক্ট সেলিং, সার্ভিস সেলিং করতে পারেন। 

ব্লগ ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনি মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কারণ ব্লগস্পট প্ল্যাটফর্মের সাহায্য মোবাইল দিয়েই ওয়েবসাইট ওপেন করা যায়। 

কি কি লাগবে 

ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরিতে আপনি ২ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন। একটি হলো আর্টিকেল এবং অন্যটি হলো সার্ভিস বা টুলস। সাধারণত সার্ভিসের বিভিন্ন টুলস তৈরিতে প্রোগ্রামিং জানতে হয়, কম্পিউটার লাগে এবং ভালো স্কিল লাগে। সুতরাং এই অপশনটি হয়তো প্রাথমিকভাবে আপনার জন্যে পার্ফেক্ট হবে না। 

অন্যদিকে আর্টিকেল পাবলিশ করে ব্লগ ওয়েবসাইট চালানোটা আপনার সহজ হবে। আপনি যদি লিখতে জানেন তাহলে মোবাইলের সাহায্যেই আপনি এই কাজটি করতে পারবেন। 

আর যদি লিখতে না জানেন সেক্ষেত্রে অল্প কিছু অর্থ ইনভেস্ট করে আর্টিকেল রাইটার হায়ার করতে পারবেন। মূলত ব্লগ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে লাগবে:

  • একটি ডোমেইন 
  • একটি থিম এবং লোগো
  • নির্দিষ্ট নিশ এবং কিওয়ার্ড 
  • ব্লগস্পটে একটি ওয়েবসাইট 
  • নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশিং 
  • সাইটে প্রয়োজনীয় এসইও নিশ্চিতকরণ 

কিভাবে করবেন

ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে আয় করাটা তাদের জন্যই সহজ মনে হবে যারা বাস্তবজীবনে লেখালেখি করতে ভালোবাসেন। চলুন জানা যাক ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সঠিক স্টেপগুলি কি কি: 

ডোমেইন: শুরুতে আপনাকে একটি ডোমেইন কিনতে হবে। আর এই ডোমেইন হবে আপনার ওয়েবসাইটের নাম। যা পরবর্তীতে আর কেউই ব্যবহার করতে পারবে না। 

যারা ডলারের সাহায্য ডোমেইন কিনতে চান তারা বিদেশি ডোমেইন সেলিং কোম্পানি নেমচিপের সাহায্য নিতে পারেন। আর যাদের ডলার ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই তারা বাংলাদেশী ডোমেইন কোম্পানি এক্সোন-হোস্ট কিংবা পুতুল হোস্টের সাহায্য নিতে পারেন। 

থিম এবং লোগো: নাম সিলেকশন এবং ডোমেইন কিনে ফেলার পর আপনার মনমতো ইউজার ফ্রেন্ডলি একটি থিম বাছাই করবেন। 

সেই সাথে লোগো তৈরি করে নেবেন। থিম আপনি চাইলে ফ্রিতে কিংবা কিনে ব্যবহার করতে পারেন। আর অন্যদিকে লোগো বানাতে ক্যানভা ব্যবহার করবেন। 

কিওয়ার্ড: ওয়েবসাইট তৈরি করতে বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখে নেবেন। আর ওয়েবসাইট তৈরির পরপরই আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। গুগল কিওয়ার্ড প্ল্যানার আপনাকে ফ্রি-তে এই সার্ভিস দেবে। 

নির্দিষ্ট টপিকের উপর মোটামুটি ১০০/১৫০ কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ফেলবেন একসাথে। এতে করে অনেকদিন ধরে আর কোনো কিওয়ার্ড রিসার্চের ঝামেলায় নামতে হবে না। 

আর্টিকেল: মনে রাখবেন ওয়েবসাইটের প্রাণ হলো মানসম্মত আর্টিকেল। এই আর্টিকেল লিখতে হবে নিজ থেকে এবং গুগল রিসার্চিংয়ের মাধ্যমে। 

কপি-পেস্ট আর্টিকেল থেকে কখনোই ইনকাম করা যাবে না। আর আর্টিকেল পাবলিশিংয়ের সময় প্রয়োজনীয় এসইও এবং একটি ইউনিক কভার ফটো নিশ্চিত করতে হবে৷ 

আবেদন: সবশেষে আপনি ইনকাম কোর্স ব্যবহার করে আয় করতে চান সেই ইনকাম সোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

যারা এডসেন্স থেকে আর্ন করতে চান তারা মোটামুটি ভিজিটর পেলে আবেদন করে ফেলবেন। যারা অ্যাফিলিয়েট থেকে আর্ন করতে চান তারা বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট লিংক এড করতে পারেন। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় 

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার আরেকটি উপায় হলো অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করা। সোজা বাংলায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে অন্যের জিনিস কমিশনের ভিত্তিতে সেল করে দেওয়া বোঝায়। 

আর এক্ষেত্রে আপনি কত টাকা কমিশন পাবেন এবং টাকাটা কখন, কিভাবে তুলতে পারবেন তা নির্ভর করবে আপনি যে কোম্পানির প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন সেই কোম্পানির উপর৷ 

কি কি লাগবে 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে আপনার যেকোনো একটি মিডিয়া লাগবে। যেখানে নিয়মিত অডিয়েন্স আসছে৷ আর এসব মিডিয়াতে থাকতে হবে কন্টেন্ট। কারণ কন্টেন্ট ছাড়া কোনো মিডিয়াতে অডিয়েন্স আসবে না। 

সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই কাজটি আপনি ঘরে বসে নিজের ফ্রি টাইমে মোবাইলের সাহায্যে করতে পারবেন। যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তারা অ্যামাজন, দারাজসহ বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে কাজ করতে পারেন। আর এই কাজটি করতে আপনার লাগবে:

  • যেকোনো একটি ব্লগ সাইট
  • অথবা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট 
  • টার্গেটেড অডিয়েন্স
  • যেকোনো ক্যাটাগরির কন্টেন্ট 
  • নিয়মিত কাজ করার মন-মানসিকতা 

কিভাবে করবেন

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে আপনি বিভিন্ন মিডিয়াকে কাজে লাগাতে পারেন৷ আর এসব প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ওয়েবসাইট, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক অন্যতম। তবে বর্তমানে ভিডিও কন্টেন্টের চাহিদা তুঙ্গে। সুতরাং এই টেকনিকটিকে কাজে লাগাতে পারেন৷ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে নিয়মিত:

  • প্রোডাক্ট নিয়ে রিসার্চ করুন
  • মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করুন
  • নির্দিষ্ট সময়ে কন্টেন্ট আপলোড করুন
  • অডিয়েন্সের চাহিদা বুঝুন 
  • লেগে থাকুন 

ফ্রিল্যান্সিং করে আয়

কম্পিটিশনের কারণে বর্তমানে চাকরির বাজার ছোট হয়ে আসছে। আপনি চাইলে এর পরিবর্তে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। বর্তমানে এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), গ্রাফিক ডিজাইন ও লোগো তৈরি, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নামের বেশকিছু কাজের চাহিদা প্রায় দেখার মতো। 

বিদেশের পাশাপাশি আজকাল নিজ দেশেও আপনি এসব কাজ পাবেন। তাছাড়া অনলাইনে কিংবা অফলাইনেও এসব কাজ করার সুযোগ রয়েছে। 

কি কি লাগবে

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম হিসাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বেশকিছু অপশন কাজে লাগাতে পারেন৷ 

কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কিছু পার্টের কাজ আপনি চাইলে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। চলুন দেখে নিই মোবাইলের সাহায্য ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি লাগে: 

  • একটি সচল স্মার্টফোন
  • প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক কানেকশন
  • নির্দিষ্ট একটি স্কিল
  • স্কিলের উপর তৈরিকৃত পোর্টফোলিও 
  • ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্ল্যাসের ব্যবহার
  • সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করে তা ডেলিভারি

কিভাবে করবেন

মোবাইলের সাহায্য ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে যেকোনো একটি স্কিলে ফোকাস করতে হবে। 

কোন কোন স্টেপ ফলো করে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন সে-সম্পর্কে জানতে নিচের পয়েন্টগুলিতে ফোকাস করতে পারেন: 

স্কিল: শুরুতে আপনাকে স্কিল শিখতে হবে। বিশেষ করে মোবাইলের সাহায্যে করার মতো কিছু কাজ হলো কন্টেন্ট রাইটিং এবং টুকটাক ডিজাইনিং। 

পাশাপাশি ডাটা এন্ট্রির কাজও আপনি ফোনের সাহায্যে করতে পারেন। এসমস্ত কাজ কিভাবে করতে হয় তা জানতে ইউটিউবের বিভিন্ন কোর্সের সাহায্য নিতে পারেন। 

পোর্টফোলিও: কাজ শেখা শেষ হলে আপনাকে নিজের স্ট্রং প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। আর এই প্রোফাইলের অংশ হলো ভালো পোর্টফোলিও। যেখানে আপনার ভালো ভালো কাজগুলিকে তুলে ধরবেন৷ 

মার্কেটপ্লেস: কাজ শেখা কিংবা পোর্টফোলিও তৈরি করা তো শেষ! এবার মার্কেটপ্লেসে নিজেকে প্রকাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার, ফাইভার কিংবা আপওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন। এসব মার্কেটপ্লেসে নিজের প্রোফাইল তৈরি করে কাজ খোঁজা শুরু করুন। 

কোনো রেসপন্স পেলে রিলেটেড কাজের ভালো পোর্টফোলিও শেয়ার করে দিন। আশা করি কাজ পেতে কোনো সমস্যা হবে না। 

কাজের ডেলিভারি: কাজ তৈরি করার পর কাজ জমা দেবেন ঠিকই! তবে পাশাপাশি নিশ্চিত করবেন এই শেষ করা কাজটি আপনাকে নতুন কোনো কাজের সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করবে কিনা। 

এক্ষেত্রে ভালোভাবে কাজ জমা দিতে হবে, রিভিউ আদায় করে নিতে হবে এবং ক্লায়েন্ট খুশি করতে তাদের কাজ রিলেটেড যেকোনো সার্ভিসে ডিসকাউন্ট বা অফারের ব্যবস্থা করতে হবে।  

প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয়

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে সেলিং অপশন বাছাই করতে পারেন। যারা নতুন বিজনেস শুরু করতে চান তারা এই বিজনেসকে অনলাইনে নিয়ে আসতে মোবাইলের সাহায্য নিতে পারেন। 

কি কি লাগবে? 

মোবাইলের সাহায্য যেকোনো প্রোডাক্ট সেল করতে প্রয়োজন পড়বে: 

  • একটি মোবাইল 
  • নেট কানেকশন
  • নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট 
  • মিডিয়ার ব্যবহার
  • পোস্ট পাবলিশিং 
  • সেল জেনারেট করা 

কিভাবে করবেন

মোবাইলের সাহায্য প্রোডাক্ট সেল করতে নির্দিষ্ট একটি ক্যাটাগরি বাছাই করে প্রোডাক্টের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রোডাক্ট রিলেটেড বিভিন্ন পোস্ট আপলোড করতে হবে পছন্দের মিডিয়াতে। সেটি হতে পারে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম কিংবা যেকোনো ব্লগ ওয়েবসাইট। 

প্রোডাক্ট নিয়ে কন্টেন্ট আপলোড করার পাশাপাশি টপিক রিলেটেড যেকোনো হেল্পফুল কন্টেন্টও আপলোড করতে পারেন। এতে করে দ্রুত সেল পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। 

ছবি বিক্রি করে আয়

আপনি যদি ফটোগ্রাফি ভালোবাসেন তাহলে আপনি এই ফটোগ্রাফি থেকেও আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে ছবি বিক্রি করতে হবে। 

তবে মনে রাখবেন ছবিগুলি মোটামুটি মানের প্রফেশনাল হতে হবে। কারণ প্রফেশনাল নয় এমন ছবি কোনো ক্লায়েন্টেরই কেনার প্রয়োজন পড়বে না। 

কি কি লাগবে 

ছবি বিক্রি করার যে আয়োজন বা ব্যবস্থা এই ব্যবস্থা আপনাকে বিভিন্নভাবে আর্নিংয়ের সুযোগ করে দেবে। 

বিশেষ করে সার্ভিসের অর্ডার পাওয়ার পথকে সহজ করে দেবে এবং ইনস্ট্যান্ট সেল আাসলে সেই টাকাটাও থাকবে আপনার দখলে। ছবি বিক্রি করে আয় করতে করতে যা যা লাগবে তা হলো: 

  • মোবাইল
  • প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি 
  • মার্কেটিং
  • নিয়মিত লেগে থাকা
  • সার্ভিস রিলেটেড কন্টেন্ট তৈরি 

কিভাবে করবেন

শুরুতে আপনাকে ভালো কিছু ফটোগ্রাফি রেডি করতে হবে। এসব ফটোগ্রাফি যেনো কোনোভাবেই কপি না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। কারণ কপি কোনো ফটোগ্রাফির পিস অনলাইন সেলিং সাইটগুলিতে এলাউ হবে না৷ 

চলুন এবারে বেশকিছু ওয়েবসাইট সম্পর্কে আলোচনা করি যেসব ওয়েবসাইটে আপনি আপনার সেরা মানের ছবিগুলি সেল করতে পারবেন: 

সাটারস্টক: এখানে ছবি সেল করতে পারলে আপনি প্রতি ছবির জন্য .২৫$ থেকে শুরু করে ১০০$+ পর্যন্ত আর্ন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো ইউজার আপনার ছবি ডাউনলোড করলেই টাকাটা আপনার একাউন্টে এড হয়ে যাবে। 

অ্যালামি: ছবির লাইসেন্স নিজের থাকলে এবং ভালো ছবি হলে এই সাইটে আপনি প্রচুর সেল পাবেন৷ বর্তমানে সাইটটিতে ৩০০+ মিলিয়ন ছবি রয়েছে এবং এসব ছবি ভালোই সেল হচ্ছে। আপনিও চাইলে তাদের মতো ছবি সেল করে ভালো এমাউন্ট জেনারেট করতে পারেন। 

শাটারস্টক: গত ১৫ বছর ধরে বেশ ভালো সার্ভিস দিচ্ছে এই শাটারস্টক। এখানে আপনি যতবেশি ছবি আপলোড করবেন ততবেশি সেল পাবেন৷ সুতরাং ভালো আর্নিং করতে অনেক বেশি পরিমাণে ছবি আপলোড করে রাখতে পারেন। তবে প্রতিটি ছবি ইউনিক হতে হবে। 

আস্টক ফটো: এখানকার ছবি বিভিন্ন এজেন্সি ভালো প্রাইজে কিনে নেয়। আর এসব এজেন্সির কাছে সেল করা ছবির প্রাইজের মোট ১৫/৪৫% হবে আপনার ইনকাম। 

বলে রাখা ভালো শুরুতে এখানকার সাইটে ছবি আপলোডের জন্য স্যাম্পল ইউজ করতে হবে। স্যাম্পল এলাউ হলেই আপনি কাজ করতে পারবেন৷ 

স্টকসি: এখান থেকে আপনি ৫০%-৭০% কমিশন পাবেন। বলা হয়ে থাকে ফটোগ্রাফির জগতে স্টকসি হলো সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। কারণ এখানে প্রতি ছবির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে আর্নিংয়ের সুযোগ থাকে। 

ফেসবুক থেকে আয়

ফুড রিভিউ, ট্রাভেল পেজ, নিউজ পোর্টাল কিংবা ট্রেন্ডি কোনো ট্রল পেজের সাহায্যে আপনি ফেসবুক ব্যবহার করে ভালো পরিমাণ আর্নিং জেনারেট করতে পারবেন। এক্ষেত্রে হাতের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহারই যথেষ্ট। 

কি কি লাগবে

ফেসবুক থেকে আর্ন করতে ফ্রি কোনো একটি কোর্স করে নেওয়াটাই সবচেয়ে ভালো ডিসিশন হবে। কারণ কোনোধরণের গাইডলাইন ছাড়া সফল হতে অনেক বেশি সময় লাগবে। 

যার কারণে একটা সময়ে গিয়ে হয়তো বিরক্তির কারণে কাজ ছেড়ে মন চাইবে। যাইহোক! মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে ফেসবুক ব্যবহারে প্রয়োজন পড়বে: 

  • নিশ সিলেকশন
  • কন্টেন্ট তৈরি
  • পেজ তৈরি
  • অডিয়েন্স জেনারেট করা
  • কন্টেন্ট আপলোড করা
  • পেইজের এসইও করা
  • নিয়মিত কাজ করে
  • এডের জন্য এপ্লাই করা

কিভাবে করবেন

ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি চাইলে ফেসবুকে নিজের প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন, অন্যের প্রোডাক্ট সেল করে কমিশন নিতে পারেন অথবা বিভিন্ন এড রান করিয়ে কন্টেন্ট থেকে ভালো আর্নিং নিশ্চিত করতে পারেন। 

তাছাড়া বর্তমানে প্রমোশনাল লাইভেরও একটি হিড়িক চলছে। চাইলে এই টেকনিক ইউজ করেও ভালো পরিমাণ আর্নিং জেনারেট করতে পারেন। 

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করে আয়

অনেক বেশি টাকা ইনভেস্ট করে যাদের কম্পিউটার, মনিটর এবং ল্যাপটপ কেনার টাকা নেই তারা মোবাইলের সাহায্য গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের প্রায় ৩০/৪০% কাজ আপনি মোবাইলের সাহায্যে করতে পারবেন। 

কি কি লাগবে 

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতে শুরুতে আপনার স্কিল থাকা লাগবে। এক্ষেত্রে যেকোনো একটি সেক্টরে কাজ শুরু করতে পারেন। হতে পারে সেটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টার ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইন, থাম্বনেল ডিজাইন কিংবা যেকোনো কভার ফটো। 

কিভাবে করবেন

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতে পারেন। সেক্ষেত্রে: 

ডিজাইন ক্যাটাগরি: শুরুতে ১/২ টি ডিজাইন ক্যাটাগরি বাছাই করবেন। বাছাই করার সময় কম্পিটিশন কেমন আছে, ডিজাইনের চাহিদা আছে কিনা চেক করে নেবেন। 

স্কিল: ডিজাইন বাছাই করার পর স্কিল ডেভলপ করতে পারেন। ডিজাইনিংয়ের কাজে গুগল এবং ইউটিউব ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। তবে ভিডিও কন্টেন্ট এক্ষেত্রে বাড়তি হেল্প করবে। 

কপি ডিজাইন: প্র্যাকটিস হিসাবে শুরুতে আপনাকে বেশকিছু ডিজাইন কপি করা শিখতে হবে। বলে রাখা ভালো মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতে চাইলে ক্যানভার সাহায্য নিতে পারেন। 

মার্কেটপ্লেস: সবশেষে স্কিল ডেভলপ হয়ে গেলে মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করতে পারেন। শুরুতে ইন্টার্ন হিসাবে কাজ করে পরবর্তীতে প্রো ডিজাইনার হিসাবে বিভিন্ন ডিজাইন করবেন। 

শেষ কথা

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে উপরোক্ত উপায়গুলি অবলম্বন করতে পারেন। যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন কিংবা ইনভেস্ট করার মতো পরিস্থিতি নেই তারা চাইলেই হাতের কাছে থাকা ফোনটিকে কাজে লাগাতে পারেন। 

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১, কোন app দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়?

উত্তরঃ Swagbucks, Google Opinion Rewards, Amazon MTurk, Survey Junkie, InboxDollars, ySense ইত্যাদির মতো নানান টাকা ইনকাম apps গুলো রয়েছে যেগুলিতে, পেইড সার্ভে সম্পূর্ণ করা, রেফার করা এবং অন্যান্য ছোট ছোট কাজ গুলো করার মাধ্যমে ইনকাম সম্ভব।

আরও পড়ুন-

ডাটা এন্ট্রি কি ? ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায়

ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়

Leave a Comment