ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি, ব্যবহার ও কার্যকারিতা

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি

ন্যাপ্রোসিন 500 একটি অস্টেরিওডাল বিরোধী-প্রদাহজনক ড্রাগ, যা ব্যথ্যা নিবারক হিসেব্র বেশ পরিচিত। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ কে মেডিকেলের ভাষায় ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ বলা হয়।

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি, বৈশিষ্ট্য, ক্ষন্যাপ্রোসিন 500 এর প্রভাব, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এর বিকল্প কোন ঔষধ আছে কি না সবকিছু নিয়েই আজকের এই আলোচনা সাজানো। 


আরও পড়ুনঃ Fexo 120 এর কাজ কি, ব্যাবহারবিধি ও সতর্কতা


ন্যাপ্রোসিন 500 এর ব্যবহার

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি

যেহেতু ন্যাপ্রোসিন ৫০০ ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ তাই এটি খুব অল্প সময়েই শরীরের ব্যথ্যা ও প্রদাহ থেকে মুক্তি দান করে।ন্যাপ্রোসিন ৫০০ একটি শক্তিশালী ব্যথ্যানাশক ঔষধ।

এই ঔষধটি অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, গাউট এবং কিশোর বাতের মতো অবস্থার ব্যথা এবং প্রদাহ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।

 ন্যাপ্রোসিন 500- এর আরো বেশকিছু কাজ ও উপকারিতা রয়েছে যা নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ 

  • পেশী এবং জয়েন্টের ব্যথা
  • মাথাব্যথা
  • দাঁতের ব্যথা 
  • মাসিকের ক্র্যাম্প
  • হাটুর ব্যথ্যা
  • পা ব্যথ্যা
  • কব্জি ব্যথ্যা
  • পিঠে ব্যথ্যা 
  • সায়াটিকা
  • যেকোন ধরণের ফ্রাকচারের ব্যথ্যা, যেমনঃ হাত,পা,কলারবোন, কনুই, চোখের সকেটের,আঙুলের, নিম্ন বাহুর, হাতের, হিপ হাড়, চোয়ালের,লোয়ার,নাকের,পাঁজরের,উপরের বাহুর ফ্রাকচার। 
  • বুকের ফাটল। 
  • স্প্রেন।
  • চিকুনগুনিয়া। 
  • স্লিপ ডিস্ক। 
  • জরায়ুর ব্যথ্যা। 
  • হাড় ব্যথ্যা।
  • হাড়ের বৃদ্ধি। 
  • মেরুদণ্ডের ফাটল। 
  • পাঁজরের ব্যথা। 
  • মেরুদণ্ডে ব্যথা। 
  • মাংস ফেটে যাওয়া। 
  • স্নায়ু তে চাপ।
  • উপরের পায়ে ফাটল। 
  • হাড় ব্যাথা। 
  • পাঁজর ফোলা। 
  • পায়ের হাড়।
  • গোড়ালি ফাটল। 
  • মেরুদণ্ডের ফাটল। 
  • হিপ হাড় ভাঙ্গা।
  • হিলে ব্যথ্যা।
  • কাঁধের বিচ্ছিন্নতা।
  • টেন্ডারের চোট।

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি তা তো জানালাম এখন একে একে ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর সেবনবিধি, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মাএাবিধি, সতর্কতা ও সংরক্ষণবিধি জেনে নেয়া যাক।

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ ঔষধের সেবনবিধি

শুধু ন্যাপ্রোসিন ৫০০-ই নয়, যেকোন ঔষধ সেবনের আগে আপনাকে অবশ্যই সেবন পদ্ধতি ডাক্তারের কাছে জেনে নিতে হবে। যেকোন ঔষধ সেবন করার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে সেটি নির্ভর করে সেই ঔষধের ফর্মুলার উপর। যদিও ন্যাপ্রোসিন ৫০০ সেবন করার কোন বিশেষ নিয়ম নেই।

এটি আপনি পানি, দুধ বা ফলমূল সম্মিলিত কোন পদার্থের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে এই ঔষধ সেবনের পর আপনার পেটে খারাপ হবে না। যেহেতু এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এই ঔষধটি চিবিয়ে বা ভেঙ্গে খাবেন না একবারে গিলে খেয়ে ফেলুন।

তাছাড়া ন্যাপ্রোসিন ৫০০ সেবনের দুই ঘন্টা পর পর্যন্ত কোন প্রকার অ্যান্টিসিড গ্রহণ করবেন না।এ ই ঔষধ গ্রহণ করা কালীন অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা, এটি পেটের সমস্যার ঝুঁকি বাড়াবে। আর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ন্যাপ্রোসিন ৫০০ প্রতিনিয়ত গ্রহণ করতে হবে। 

ন্যাপ্রোসিন ৫০০-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি শুধু সেই ব্যাপারেই জ্ঞান থাকলে হবে না জেনে নিতে হবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। কারণ সব ঔষধেরই কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে এটি নির্ভর করে ঔষধটি আপনি সঠিক সেবনভাবে সেবন করছেন কিনা।

ডোজ কমবেশি হওয়া, মিস হওয়া বা আপনার অন্যকোন সমস্যা আছে কিনা তার উপর সাধারণত নির্ভর করে।ন্যাপ্রোসিন ৫০০-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি হওয়া, বমি বমি ভাব লাগা, মেজাজ পরিবর্তন হওয়া, বদহজম হওয়া, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ক্লান্তিভাব লাগা, দৃষ্টি ও শ্রবণে খানিকটা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ঔষধের মাত্রা

আপনার বয়স, ওজন ও সমস্যা অনুযায়ী আপনার জন্য ন্যাপ্রোসিন ৫০০ সেবনের মাত্রা কমবেশি করতে হয়। যেমন ধরুনঃ আপনি যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকেন এবং আপনার অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস সমস্যা থেকে থাকে তবে ৩৭৫/২০ মি.গ্রা. বা ৫০০/২০ মি.গ্রা. অর্থাৎ দিনে ১টি করে দুইটি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। 

আবার, বয়স যদি ১২ থেকে উর্ধে হয় এবং আপনার ওজন যদি ৫০ কেজির উর্ধে হয় তখন ৭৫/২০ মি.গ্রা. বা ৫০০/২০ মি.গ্রা. অর্থাৎ দিনে ১টি করে দুইটি ট্যাবলেট সেবন করবেন। 

 অপরদিকে, আপনার ওজন যদি ৩০ কেজির উর্ধে এবং ৫০ কেজির নিচে হয় ৩৭৫/২০ মি.গ্রা. সেক্ষেত্রেও আপনাকে দিনে ১টি করে দুইবার ট্যাবলেট সেবন করবেন। 

তবে যেকোন ঔষধ সেবনের সময় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। 

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ ঔষধ সেবনে সতর্কতা

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারকে আপনার যদি কিডনি, হার্টের সমস্যা, হাই প্রেসার, রক্তে বা পরিপাকতন্ত্রে, লিভারে যদি সমস্যা থাকে সে ব্যাপারে জানাবেন।কেননা ডাক্তার যাতে আপনার সমস্যা বুঝে তারপর আপনাকে ঔষধটি প্রেসক্রাইব করতে পারেন।

সংরক্ষণ

বিশেষ কোন নিয়ম মেনে আপনাকে ন্যাপ্রোসিন ৫০০ সংরক্ষন করতে হবে না। এটিকে ৩০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নিচে আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, শুষ্ক ও ঠান্ডা স্থানে রাখুন। অর্থাৎ আপনি এই ঔষুধকে আপনার নরমাল কক্ষ তাপমাত্রায় রাখতে পারবেন। তবে অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। 

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর মাত্রা

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর মাত্রাধিক্যতার কোন মেডিক্যাল ডেটা পাওয়া যায়নি। 

ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর মিথষ্ক্রিয়াঃ 

আপনি যদি এই ঔষধ এন.এস.এ.আই.ডি. এর সাথে ব্যবহার করেন তখন এ.সি.ই ইনহিবিটরের এন্টিহাইপারটেনসিভ ইফেক্ট, ডাইইউরেটিক ও বিটা ব্লকারের কার্যকারিতা কমে যায়। আবার আপনি যদি এটিকে ওয়ারফেরিনের সাথে ব্যবহার করেন তখন আপনার রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 

পরিশেষে

কেউ যদি এককথায় সহজ ভাষায় জানতে চাই ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি? তাহলে এককথায় উত্তর হবে এটি একটি ব্যথ্যানাশক ঔষধ। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ একটি শক্তিশালী ব্যথ্যানাশক হিসেবে বহুল আলোচিত।

যদিও এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে তবে এই ঔষধটি  সেবন করা নিরাপদ। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ আপনি আপনার নিকটস্থ ফার্মেসীতে পেয়ে যাবেন। 

ন্যাপ্রোসিন 500 এর কাজ কি সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১। গর্ভবতী মায়েরা কি ন্যাপ্রোসিন ৫০০ ঔষধটি সেবন করতে পারবেন?

 উত্তরঃ গর্ভবতী মায়েদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ সেবন না করা।তাই আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন আপনার যদি ব্যথ্যাজনিত সমস্যা থেকেও থাকে আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করে ন্যাপ্রোসিন ৫০০ খাবেন না। কেননা, এটি আপনার জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। কিন্ত আপনার সমস্যা বুঝে আপনাকে ঔষধও দিবেন এবং ডোজও নির্ধারণ করে দিবেন।  

২। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর দাম কত?

উত্তরঃ ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর দাম সাধারণত ১৫০ টাকা হয়ে থাকে।

৩। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ কি মাথাব্যথ্যা প্রতিরোধ করে থাকে? 

উত্তরঃ ন্যাপ্রোসিন ৫০০ মাথাব্যথ্যা বা মাইগ্রেনের ব্যথ্যা প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী। 

৪। ন্যাপ্রোসিন ৫০০ এর কোন বিকল্প ঔষধ আছে কি? 

উত্তরঃ হ্যা, আছে। আপনি যদি আপনার আশেপাশের  ফার্মেসীতে ন্যাপ্রোসিন ৫০০ খুজে না পান তবে আপনি প্রোক্সিডম ৫০০ ঔষধটি কিনতে পারেন।   

আরও পড়ুন-

নাপা এক্সট্রা এর কাজ কি ও এর কার্যকারিতা

কাশির সিরাপ এর নাম, সঠিক চিকিৎসা ও কার্যকারিতা

Leave a Comment