কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে পুষ্টিতে ভরা ড্রাই ফুডগুলোর মধ্যে কিসমিস অন্যতম। নিয়মিত কিসমিস খাওয়া শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, খনিজ ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগমুক্তির অন্যতম কারণ।

আরও রয়েছে  আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফাইবার এবং ক্যালসিয়াম, যা আমাদের সুস্থ্য রাখতে ও শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

কিসমিসের পুষ্টিগুণ আরও ভালোভাবে পাওয়া যায় যদি কিসমিসের ভেজানো পানি পান করা যায়। কিসমিসের সরারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সহজেই ভিজানো পানির সাথে মিশে যায়। যার ফলে সেই পানি পান করলে কিসমিসের গুণাগুণ আমাদের শরীর খুব সহজে গ্রহন করতে পারে।

কিসমিসের ভেজানো পানি আমাদের রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। নিয়মিত কিসমিসের পানি খেলে ওষুধ ছাড়াই অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্যর মত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


এছাড়াও কিসমিস খেলে যে উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় তা হলো:

কিসমিসের উপকারিতা সমূহ

জমশক্তি বাড়ায়

সুস্থ্য থাকার জন্য হজমশক্তি সঠিকভাবে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি। কিসমিস হজমশক্তি বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। কিসমিসের সাহায্যে হজম শক্তি বাড়াতে প্রতিদিন রাতে এক মুঠো কিসমিস এক গ্লাস পরিস্কার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। আর তা সকালে খালি পেটে পান করুন। নিয়মিত ১৫-২০ দিন পান করলে নিজেই ফলাফল বুঝতে পারবেন।

উচ্চ রক্তচাপ বা  ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে

কিসমিসের উপকারিতা গুলোর মধ্যে আর একটি উপকারিতা হলো এটি প্রাকৃতিকভাবে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কিসমিসের জুড়ি মেলা ভার। কিসমিসে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের রাখতে সাহায্য করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কিসমিস অন্যতম একটি শুকনো খাবার। কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  যা  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আপনি যদি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান তাহলে নিয়মিত কিসমিস ও এর ভিজিয়ে রাখা পানি খান।

রক্ত স্বল্পতা বা রক্ত শূন্যতা কমায়

শরীরে রক্ত শূন্যতা দূর করতে কিসমিস যথেষ্ট উপকারি। নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার মাধ্যমে এর মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও কিসমিসে রয়েছে তামা যা রক্তে লাল রক্তকণিকা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

বিষমুক্ত শরীর

কিসমিসের উপকারিতা গুলোর মধ্যে আর একটি অন্যতম উপকারিতা নিয়মিত ভাজা-পোড়া, তেল-চর্বি খাওয়ার করনে আমাদের শরীরে নানান ক্ষতিকারক পদার্থ জমতে থাকে যাকে বিষের সাথে তুলনা করা হয়। এই বিষকে শরীর থেকে দূর করতে নিয়মিত ভাজা-পোড়া, তেল-চর্বি খাওয়ার বাদ দিয়ে নিয়মিত কিসমিস খান।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য তেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনি যদি নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভোগেন। তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন। নিয়মিত ১৫-২০ দিন খেলেই এর সুফল অনুভব করতে পারবেন।

হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন:

শরীরকে সুস্থ-সবল রাখতে হলে আমাদের শরীরের হাড়কেও  সুস্থ-সবল রাখতে হবে। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম যা হাড় ও দাঁতকে মজবুত করে। এছাড়াও, কিসমিসে রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা সঠিক ভাবে হাড় গঠনে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে:

কিসমিসে থাকে ক্যাটেচিন অ্যান্টিওক্সিডান্ট যা শরীরে ভেসে বেড়ানো ফ্রি র‍্যাডিকলগুলিকে ধ্বংশ করে। শরীরের এই ফ্রি র‍্যাডিকলগুলো ক্যান্সার সেলের স্বতঃস্ফুর্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং মেটাস্টাসিসেও সাহায্য করে। নিয়মিত কিসমিস শরীরে ক্যাটেচিনের মত শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্টের মাত্রা বৃদ্ধি পায়,ফলে শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

শেষকথা

নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা অনেক, ক্যান্সার প্রতিরোধ, হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর কারা সহ আরো অনেক রোগের প্রাকৃতিক ঔষধ এই কিসমিস। নিয়মিত কিসমিস খাওয়া শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খবই উপকারী।

আরও পড়ুন-

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা

Leave a Comment