হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসা

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় 

হাঁটু ব্যাথা বৃদ্ধ বয়সে একটি সাধারন সমস্যা। কিন্তু বর্তমানে যুবকরাও অল্প বয়সে এই হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। অনেকে এই ব্যাথার প্রতিকার খুজেন। তবে সঠিক তথ্য না থাকায় তারা এই ব্যাথার চিকিৎসা করাতে পারে না। 

শুধু কি তাই, হাঁটু ব্যাথার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপনেও অনেক ব্যঘাত ঘটে। তাই এই ব্যাথা নিয়ে অবহেলা করা উচিৎ নয়। নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে হাঁটুর হড়ের ক্ষয় হতে শুরু করে। যাদের ঔজন বেশি তারা এই সমস্যায় বেশি ভুগেন।

হাঁটু ব্যাথা বিভিন্ন ধরনের আঘাত,অস্টিওথ, মচকে যাওয়া ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়, এর কারন, চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।  

আরও পড়ুনঃ এলার্জি দূর করার উপায় ও ঔষধের নাম

আজকের আলোচ্য বিষয়

হাটু ব্যাথার সাধারণ সমস্যাগুলো

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

১। অস্টিওআর্থ্রাইটিস: আস্টিওর্থ্রাইটিস ফলে হাঁটুর জয়েন্টর তরুণাস্থি কমে যায়। যার ফলে হাঁটু শক্ত হয়ে যায় এবং হাঁটু ফুলে যায়।

২। হাঁটু লিগামেন্ট ইনজুরি: অনেক সময় আঘাতজনিত কারণে এসিএল (অ্যান্টেরিয়ার র্করুসিয়েট লিগমেন্ট ,এম সি এল (মিডিয়াল কোলেটারাল লিগামেন্ট ),পিসিএল (পোস্টেরিয়ার্র র্করুসিয়েট লিগামেন্ট ) হাঁটু ব্যাথা হয়।

৩। মেনিস্কাস টিয়ারস: অনেক সময় হাঁটু  হঠািৎ মোচড়ানোর বা জোরে ঘোরার ঘোরানার কারণে উরুর হাড় যা কার্টিলেজ ,মেনিস্কাসের ক্ষতি এবং শিনবোনের ক্ষতি হয়ে থাকে।

৪। প্যাটেলার টেন্ডোনাইটিস: টেলার টেন্ডানাইটিসের কারণে হাঁটুর ঠিক নীচে অংশে ব্যাথা হয়  কারণ হাঁটুর হাড়ের সাথে টেন্ডার প্রদাহ জড়িত। এই রোগকে জাম্পারের হাঁটু নামে পরিচিত।

৫। বারসাইটিস: অনেক সময় হাঁটুর চারিদিকে দেখা যায় ছোট তরল বা ভরা তলির মত প্রদাহ। এটি হাঁটুর জয়েন্টর চারিদিকে হয়ে থাকে। এর ফলে ব্যাথা, ফোলাভাব এবংকোমলতা হয়।

হাঁটু ব্যাথার কারণসমুহ 

হাঁটু ব্যাথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমনপা মচকে যাওয়া, অস্টিওআথারটিস, অতীতের আঘাত, বিভিন্ন ধরণের বাত, শারীরিক চাপ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের মতো পুষ্টির ঘাটতির কারনে হয়ে থাকে। হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় জানার আগে এর কারণগুলো জানবো-  

১। বয়সজনিত ক্ষয়: মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে  মানুষের হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি পায় । বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিশেষ ৫০ পার হলে হাঁটু ব্যাথা বেশি দেখা দেয় ।

২। অধিক ওজন: শরীরের ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে হাটুতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে । যার কারণে হাঁটু ব্যাথা বেড়ে যায় ।

৩। আঘাতজনিত কারণ: হাঁটুতে আঘাত লাগার কারণে বিভিন্ন সময় ব্যাথার অনুভব হয় এবং হাঁটু ব্যাথা আঘাতজনিত কারণে বেড়ে যায়।

৪। লিঙ্গ: হাঁটু ব্যাথা নারী পুরুষ যেকোন বয়সে যেকারো হতে পারে । তবে মেয়েদের আর্থাইটিস মাসিক বন্ধের পর বেশি দেখা যায় ।

৫। মাংসপেসীর দুর্বলতা: পেশীর অতিরিক্ত দুর্বলতার কারনে অনেক সময় হাঁটুতে চাপ পড়ে এবং হাঁটু ব্যাথা সৃষ্টি হয় ।

৬। সন্ধির তরল অস্থিপদার্থ কমে গেলে: হাঁটুর জয়েন্টের ভেতর এক প্রকার তরল পদার্থ ব্যাবহৃত হয়। জয়েন্টে ঘর্ষণ লেগে তরল পদার্থ কমে যাওয়ার কারণে হাড় ক্ষয় হয়ে হাঁটুতে ব্যাথা হয় ।

৭। পেশাজনিত কারণঃ সিড়ি দিয়ে অতিরিক্ত উঠানামা করলে ,অতিরিক্ত ভার বহন,বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করলে হাঁটুতে চাপ পড়ে ব্যাথা সৃষ্টি হয়

৮।প্যাটেলার ট্রাকিং: শাররীক কার্যকালাপ বা বিশেষ করে নড়াচড়া করার সময় হাঁটুর ক্যাপ এর ম্যালাইনমেন্ট বা অস্থিরতা ব্যাথা সৃষ্টি করে ।

৯। গাইড: ভিটামিন সি কোলেজেন উৎপাদন করে যা হাঁটুর কার্টিলেজের  প্রধান উপাদান ।কোলাজেন হাড়ের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্ব ভূমিকা রাখে ।ভিটামিন সি হাড়ের ফ্রাকচার এবং হাড় ক্ষয় প্রতিরোধ করে থাকে

১০। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ সৃষ্টি করে।  যার    কারণে হাঁটু ব্যাথা,ফোলাভাব সৃষ্টি হয় ।

১১। আঘাত বা ট্রমা: হাঁটা চলাফেরা করতে গিয়ে অনেক সময় মচকে যাওয়া,স্ট্রেন,স্থানচ্যুতি বা হাঁটুতে সরাসসি আঘাতের কারণে ব্যাথা হতে পারে ।

১২। অস্টিওআর্থারাইটিস: অস্টিওআথাইটিস হলো জয়েন্টের রোগ যার কারণে হাঁটুর তরুণাস্থি চলে যায় যার ফলে নমনীয়তা,ব্যাথা,এবং দৃঢ়তা হ্রাস পাই ।

১৩। টেন্ডোনাইটিস: হাঁটুতে বারবার ব্যাবহার এবং চাপের কারণে টেন্ডানগুলির ফোলাভাব হয়ে থাকে এবং প্রদাহ বা জ্বালা হয় ।

১৪। মেসিকার টিয়ারঃ হাটু মোচড়ানো বা নড়াচড়ার কারণে মেনিস্কাস ছিঁড়ে যায় যার কারণে হাটু ব্যাথা এবং ফুলে যায় ।

১৫। লিগামেন্ট ইনজুরি: হাঁটুর লিগামেন্টে সরাসরি প্রভাব,স্ট্রেন হঠাৎ মোচড়,অশ্রু বা খেলাধুলা সংক্রান্ত আঘাতের কারণে ব্যাথা এবং অস্থিরতা হয়ে থাকে ।

১৬। বারসাইটিস: হাঁটু ব্যাথা,ফোলাভাব এবং কোমলতা অনেক সময় জয়েন্টর চারপাশের বারসার কারনে হয়ে থাকে । বারসা ছোট তরল-থলি ভারা এর প্রদাহর কারণে হয় ।

১৭। প্যাটেলার ট্রাকিং ডিসঅর্ডার: হাটুর নড়াচড়া এবং শাররিক কার্যকলাপের সময়  হাঁটুর ক্যাপ এর ম্যালাইনমেন্ট ব্যাথা সৃষ্টি করে ।

১৮। অত্যধিক ব্যবহার বা  যান্ত্রিক সমস্যা: অতিরিক্ত ব্যবহার ক্রিয়াকলাপ ,অনুপযুক্ত পাদুকা, দুর্বল বায়োমেকানিক্স হাটুতে চাপ দেয় এবং ব্যাথা সৃষ্টি করে ।

হাঁটু ব্যাথার সমস্যা নির্নয়

শারীরিক পরীক্ষা : ডাক্তার রুগীকে হাঁটুর গতি ,কোমলতা, স্থায়িত্ব এবং ফোলা ইত্যাদির উপর সাররীক পরীক্ষা নির্নয় করে ।

ইমেজিং টেস্ট : হাঁটুর  হাড় ,তরুনণাস্থি ,লিগামেন্ট বা টেন্ডারের ক্ষতি সনাতক্তর জন্য এক্স-রে ,এমআরআই   সিটি স্ক্যান প্রদান করতে হবে ।

ল্যাব টেস্ট : রক্ত পরীক্ষা করার জন্য  ল্যাব টেস্ট করতে হবে ।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় খাদ্যাভ্যাস

বর্তমানে অনেকে হাঁটুর সমস্যায় ভুগে থাকেন। জয়েন্টের ব্যাথা শীতকালে বেশি বাড়ে এবং সহজে সারতে চায় না। বসতে ও চলাফেরা করতে হাঁটুর ব্যাথার কারণে সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তারদের মতে খ্যাদ্য ভাসে পরিবর্তনের মাধ্যমে হাঁটুর ব্যাথা সারানো যায়। কিছু খাদ্য আছে যা হাঁটু ব্যাথা সারানোতে সাহায্য করে থাকে ।

১। রসুন

রসুন হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসাবে  ব্যাবহৃত হয়। রসুনের মধ্যে আন্টিইনফ্ল্যামেচার উপাদান রয়েছে যা গাটের ব্যাথা দূর করে এবং পেশী সবল রাখে। তাই নিয়মিত রসুন খেলে ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

২। আদা

আদা একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। আদা শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা, সর্দি কাশি , গ্যাস ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। আদা চা হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসাবে অনেক কার্যকারী। আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

৩। বাদাম

হাঁটু ব্যাথার জন্য কাঠবাদাম,কাজুবাদাম,পেস্তা বাদাম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের বাদাম অনেক কার্যকারী। আখরোট এবং কাটবাদাম হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়  হিসাবে ব্যাবহৃত হয়। চিয়া বীজ হাঁটু ব্যাথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।

৪। বেরিজাতীয় ফল

বেরিজাতীয় ফল হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসাবে অনেক পরিচিত। শীতে হাটু ব্যাথা বেড়ে যায়। শীতকালে বেরি জাতীয় ফল বেশি পাওয়া যায় যেমন: ট্রবেরি, মাল্টা,র্বলুবেরি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্রডেন্ট আছে যা হাটু ব্যাথা সারাতে সাহায্য করে।

৫। অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ওলিয়োক্যানথাল উপাদান রয়েছে যা হাটু ব্যাথা সারাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েলের তেল দিয়ে তৈরি খাবার হাটু ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।

৬। মাছ

সামুদ্রিক মাছ সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ হাঁটুর ব্যাথার জন্য উপকারী। মাছের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ডি, ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টিকর বিভিন্ন উপাদান যা হাটু ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।

হাটু ব্যাথা সমাধানের কিছু ঘরোয়া উপায়

১। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার

আপেল সাইড ভিনেগার এর মধ্যে ভিটামিন সি থাকে যা হাটুঁর ক্ষয়পূরণেও সাহায্য করে  এবং ম্যালিক অ্যাসিড প্রদাহ জনিত অস্বস্তি দূর করে। ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত খাবেন এতে উপকার পেতে পারেন।

২। আদা 

হাঁটুর ফোলা ভাব ও ব্যাথা কমাতে দারুন উপকারী হলো আদা। আদা হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় নামে পরিচিত । আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটারী আর্থ্যাইটিসের ব্যাথা কমাতে সাহাায্য করে। মধুর সাথে আদা থেঁতো করে নিয়মিত খান।

নিয়মিত আদা চা খেলেও খুব ভালো কাজ করে। হাঁটুর জন্য খুবই উপকারী আদার তেল। আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিনজেরাল যা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহনাশক হিসাবে কাজ করে ।

৩। হলুদ

প্রাচীনকাল থেকেই  হলুদ প্রাকৃতিক ঔষুধ হিসাবে জনপ্রিয়। এটি  হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়। হাড়ের জোড়ের ব্যাথা এবং প্রদাহ সারাতে হলুদ কার্যকর ভুমিকা রাখে। আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি রাসায়নিক যাতে থাকে কারকিউমিন যা হাঁটুর জন্য উপকারী।

পানিতে আদা ভিজেয়ে রেখে সাথে একটু হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে নিয়মিত প্রতিদিন খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ১ চা চামচ হলুদ গুড়া তার সাথে ১ চামচ জল মিশিয়ে বৃত্তাকারে হাঁটুতে লাগিয়ে নিন ।

৪। লাল মরিচ

প্রাকৃতিক ব্যাথানাশক হিসাবে পরিচিত একটি নাম লাল মরিচ হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় এই লাল মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইন নামক উপাদান যা হাটু ব্যাথার জন্য উপকারী। এক চা -চামচ মরিচের গুঁড়া সাথে দুই চা -চামচ জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে মালিশ করতে হবে ।

৫। ইপসম লবণ 

এর মধ্যে রয়েছে ব্যাথানাশক উপাদান ম্যাগনেসিয়াম ও সালফেট। এটি  হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে অন্যতম একটি মাধ্যম। এক চামচ ইপসম লবন গোসল করার সময় পানিতে মিশিয়ে রাখা যায়।

৬। তাপ ও ঠান্ডা

ব্যাথার ধরনের উপর নির্ভর করে যে গরম তাপ দেওয়া লাগবে নাকি বরফ ঘষতে হবে। বাতের ব্যাথা হয়ে থাকলে আক্রান্ত স্থানে গরম ভাব দিতে হবে। খেলাধুলা , দুর্ঘটনা ,হাঁটুর প্রদাহ থাকলে বরফ ঘোষতে হবে।

৭। সরষের তেল

সপ্তাহে অন্তত দুবার সরষের তেলের ভেতর রসুন কুচি ফুটিয়ে মালিশ করুন। এতে হাঁটুর ব্যাথা অনেকটাই কমবে। এটি  হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসাবে পরিচিত।

৮। কর্পূর তেল

এক চামচ কর্পূর গুড়া সাথে এক চামচ নারিকেলের তেল মিশিয়ে তেলকে সামান্য ফুটাতে হবে। তেল ঠান্ডা করে মালিশ করতে হবে সপ্তাহে অবশ্যই ৪ দিন। কর্পূর তেলের একটি বিশেষ গুন হলো এটি শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।

৯। এসেস্নিয়াল অয়েল

এসেস্নিয়াল অয়েল অত্যান্ত উপকারী হাটুর ব্যাথা সারানো ঘরোয়া উপায় হিসাবে পরিচিত। আদা ও কমলা থেকে তৈরি হয় এই এসোস্নিয়াল অয়েল যা হাঁটু ব্যাথা কমায় এবং পেশি শিথিল করে।

১০। ভিটামিন সি

ভিটামিন সি হাঁটুর কার্টিলেজের প্রধান উপাদান ।এটি হাড়ের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।ভিটামিন সি হাড়ের ফ্র্যাকচার ও হাড় ক্ষয় প্রতিরোধ করে ।

১১। সাঁতার

হাঁটুর জন্য সাঁতার খুব উপকারী ব্যায়ম। এটি হাঁটুর জয়েন্ট ও হাঁড়কে শক্তিশালী করে এবং জয়েন্টের আশেপাশের পেশিকেও শক্তিশালী করে।

১২। ভিটামিন -ডি

ভিটামিন ডি হাড় ক্ষয় ও ফ্রাকচারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। শরীরে ক্যালসিয়াম উৎপাদনের জন্য ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন।

১৩। প্রদাহরোধী খাবার

হাঁটুর প্রদাহরোধের জন্য কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন। যেমন:মিষ্টি আলু, পালংশাক, জলপায়ের তেল, আদা, রসুন, কাটবাদাম ইত্যাদি স্থানের ব্যাথা কমাতে কার্য়কারী ভুুমিকা পালন করে ।

১৪। নিয়মিত শরীরচর্চা

শরীরচর্চা অসুখ দূর করতে সাহায্য করে। একারণে নিয়মিত ব্যায়ম করতে হবে। হাঁটু ব্যাথা দূর করার জন্য কিছু ব্যায়ম কার্যকারী এর মধ্যে হাঁটা, সাঁতার, সাইকেল চালানো, তাই চি ,ইয়াগো ব্যায়ম দারুন কার্যকারী। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম স্বাস্থের জন্য উপযোগী।

১৫। ওজন কমাতে হবে

অতিরিক্ত ওজনের কারনে হাঁটুর উপর ভার পড়ে। ফলে হাটু ব্যাথার পরিমাণ বেড়ে যায় । তাই নিয়মিত ডায়েট ও শরীর চর্চার মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে ।

১৬। সঠিক খাবার খান

বাইরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেন । বাসার খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে । তাজা ফল ও সবজী জাতীয় খাবার খেতে হবে এতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার  রয়েছে যা শরীর সুস্থ রাখে ।

১৭। স্ট্রোচিং করতে হবে

স্ট্রেচিং হাঁটু ব্যাথার জন্য কার্যকারী । নিয়মিত স্ট্রেচিং হাঁটু ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে ।

১৮। ম্যাসেজ

হাঁটুকে শক্তিশালী করতে ম্যাসেজ একটি ভালো মাধ্যম। এটি হাঁটু ভালোভাবে শক্ত রাখে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

১৯। সঠিক পাদুকা

হাঁটুর চাপ কমাতে আরামদায়ক জুতা পরতে হবে।

২০। খাদ্যতালিকা পরিবর্তন

ওমেগা -৩ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন :চিয়া বীজ,ফ্লাক্সসিড ,মাছ ইত্যাদি খাওয়া এবং ফল,শাকসবজি ইত্যাদি খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবঙ হলুদের মতো  মসলা খেতে হবে ।

২১। হাঁটু বন্ধনী ব্যাবহার

হাঁটু বন্ধনী ব্যবহার করা শাররীক স্থিতিশীলতা এবং অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে।

হাঁটু ব্যাথার প্রতিকার

১। শরীরের ওজন বৃৃদ্ধির কারণে হাঁটু ব্যাথা হয় ।তাই শরীরের ওজন কমাতে হবে।

২। প্রতিদিন ৩০ মিনিট নিয়মিত হাটতে হবে।

৩। মিনারেল, ক্যালসিয়াম,আঁশযুক্ত খাবার,ভিটামিন ইত্যাদি খ্যাদ্য পযাপ্ত পরিমাণে নিয়মিত খেতে হবে।

৪। অতিরিক্ত সিড়ি দিয়ে উঠানামা করা এবং বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকার কাজ পরিহার করতে হবে।

৫। ওয়াকাপ পরে খেলাধুলা করা যাতে হাঁটুতে আঘাত লাগলে ব্যাথা যেন না হয়।

৬। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়ম হাঁটু ব্যাথা সারাতে সাহায্য করে।

৭। ঘোরোয়া উপায় মেনে চলার মাধ্যমে হাঁটু ব্যাথা কমানো যায়।

৮। হাঁটু ব্যাথার জন্য চিকিৎসা করতে হবে।

পরিশেষে

হাঁটুর ব্যাথার আশঙ্কা বর্তমানে অনেকটাই বেড়েছে। হাঁটুর ব্যাথা এখন কম বয়সের লোকেদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে। মহিলাদের এই রোগে আক্রান্ত বেশি পরিমাণে দেখা দিচ্ছে। পুরুষ মানুষও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই রোগ নিয়ে মানুষকে সতর্ক হতে হবে এবং হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় জানতে হবে।

বেশিরভাগ মানুষ হাটঁর ব্যাথা নিয়ে কষ্ট পাওয়ার পরও তারা কোনও সমাধানের দিকে এগোয় না। তারা শুধু পেনকিলারের উপর নির্ভর হয়ে থাকেন। পেইনকিলার খেলে সমস্যা শুধু বাড়ে কমে না । প্রতিটি মানুষকে হাঁটু ব্যাথার বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।

হাটুর ব্যাথা সম্পর্কিত প্রস্ন-উত্তর / FAQ

১। কি খেলে হাঁটু ব্যথা কমবে?

উত্তরঃ

  • রসুন রান্নার স্বাদে পরিবর্তন আনা ছাড়াও, রসুন শরীরের ব্যথা-যন্ত্রণাও দূরে রাখে। …
  • আদা হাঁটুর ব্যথা কমাতে আদা খুব উপকারী ভূমিকা পালন করে। …
  • বাদাম …
  • বেরিজাতীয় ফল …
  • অলিভ অয়েল …
  • মাছ

২। বাত রোগ কি?

উত্তরঃ রিউম্যাটিক ডিজিজ হল একটি শব্দ যা আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য বিভিন্ন অবস্থাকে বোঝায় যা জয়েন্ট, টেন্ডন, পেশী, লিগামেন্ট, হাড় এবং পেশীকে প্রভাবিত করে।

আরও পড়ুন-

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়

Leave a Comment