আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আমাশয় রোগের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। প্রায় সকল মানুষের কম বেশি এই রোগটি হয়েছে। অল্প সংখ্যক লোক রয়েছে যারা আমাশয় রোগের সম্মুখীন হয়নি।

আমাশয় হল অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টিকারী রোগ। এই রোগটির ফলে পেটে খুব ব্যাথা করে এবং ডায়রিয়া হতে পারে। এই রোগটি ৪ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্খায়ী থাকে। চলুন জেনে নিয় আমাশয় কেন হয়? এবং আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে । আমাশয় এর কিছু সাধারন লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হল, বমি বমি

ভাব, বমি,  হঠাৎ করে জ্বর আসছে এবং ডিহাইড্রেশন। নানা কারণে আমাশয় হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় শারীরিকভাবে দূর্বল এবং ডিহাইড্রেশন এর জন্য আমাশয় হয়ে থাকে। আমাশয়ের শেষ পরনতি মৃত্যু হতে পারে।

আমাশয়

আমাশয় হল অন্ত্রে সংক্রামন। যার ফলে মলের সাথে রক্ত  এবং শ্লেষ্মা  যায়। এই রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া হল শিগেলা এবং এন্টামোবাই।  আমাশয় রোগের লক্ষণ হল দিনে তিন থেকে আট বার এর মত তরল অথবা নরম মলত্যাগ হওয়া। এ রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে পেটের ব্যথাও বৃদ্ধি পায়। এবং মলের সাথে রক্ত প্রচুর পরিমাণ বের হতে লাগে।

এর পাশাপাশি প্রচন্ড জ্বর আসে। যদি পাঁচ বছরের বেশি বা তার কম বয়সের বাচ্চাদের এই সমস্যা হয় তাহলে জ্বর নাও আসতে পারে। যদি ক্লিনিকাল চিকিৎসায় কাজ না করে তাহলে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ রোগটি খুব ছোঁয়াচে। সাধারণত থালা বাসন, খাবার এবং বাথরুম ব্যবহার করলেও এই জীবাণু ছড়াতে পারে।

এই রোগের বিস্তার রোধ করতে  আপনার যা করণীয় তা হচ্ছে বাথরুম থেকে আসার পর ভালোভাবে হাত-পা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এই রোগটি এতটাই ছোঁয়াশে যে প্রাণীদের মধ্যেও ছড়ায়। আপনার যদি ডায়রিয়া বা উচ্চ মাত্রায় জ্বর আসে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে, এ রোগের লক্ষণ বুঝতে পারলে সাথে সাথে ঘরোয়া চিকিৎসা নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা সমূহ

আমাশয় সম্পর্কে কিছু তথ্য

আমাশয় রোগটি সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে আমরা তেমন কিছুই জানিনা। কি কারনে হয় কেন হয় এ বিষয়ে। আমাশয় সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:

  1.   আমাশয় একটি সংক্রামন রোগ যা অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
  2.  আমাশয় এর প্রধান লক্ষণ হচ্ছে পেট ব্যাথা করা এবং পেট ফুলে যাওয়া।
  3.  আমাশয় এর আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ডায়রিয়া।
  4.  যদি তাড়াতাড়ি মত চিকিৎসা না করা হয় তাহলে রোগীর  মৃত্যু হতে পারে।
  5.  এই রোগটির চিকিৎসার সহজ উপায় হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা।

আমাশয় কত প্রকার

আমাশয় দুই প্রকার। যথা ১. অ্যামিবিক আমাশয় এবং ২. ব্যাসিলারি আমাশয়। প্রতিটি মানুষের উপর আমাশয়ের নিজস্ব প্রভাব রয়েছে। আপনি যদি আমাশয় এর সঠিক প্রকারভেদ করতে না পারেন তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি  হতে পারে। কিন্তু যদি এর প্রকারভেদ চিনতে পারেন তাহলে খুব সহজেই চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব।

অ্যামিবিক আমাশয় এবং ব্যাসিলারি আমাশয় মহাশয় হওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সে সব হল,  পেটে প্রচন্ড ব্যথা, ঘন ঘন পায়খানা, পায়খানা সময় রক্ত বের হওয়া। এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা হতে পারে।

আমাশয় হওয়ার কারন

আমাশয় কেন হয়? এর কারণ চিহ্নিত করতে পারলে আপনি সহজেই এই রোগের চিকিৎসা ঘরোয়া ভাবে করতে পারবেনা। এজন্য ঠিক কি কারনে আমাশয় হচ্ছে সেটা জানতে হবে। আমাশয় সাধারণত হয়ে থাকে শিগেলা, ই কোলাই,ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর এবং সামমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে।

এসব বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া যা আপনার তন্ত্রে পাওয়া যায় তাহলে খুব সহজেই আপনার পুরো শরীর ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার ফলে পেট ব্যাথা এবং ঘন ঘন পায়খানা শুরু হয়।

আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা ও প্রতিকার amasay roger ghoroya cikitsa o protikar

আমাশয় এর রোগ জীবাণু কিভাবে ছড়ায় নিম্নে তুলে ধরা হলো

  •  দূষিত খাবার।
  •  দূষিত পানি এবং অন্যান্য পানীয়।
  •  সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা।
  •  দূষিত পানিতে গোসল করা।
  •  অপরিষ্কার বাথরুম ব্যবহার করা।

আমাশয় সাধারণত হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে। এসব ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকম ভাবে আক্রমণ করতে পারে। এসব ব্যাকটেরিয়া থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে চলাফেরা করতে হবে।

আমাশয় রোগের লক্ষণ

আমাশয় রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ধারণা পেলে আপনার ঘরে বসে এই রোগের চিকিৎসা করতে পারবেন। তবে আপনি যদি আমাশয় রোগের লক্ষণ সঠিকভাবে জেনে থাকেন তাহলে খুব সহজেই রোগটি শনাক্ত করতে পারবেন।

এ রোগের লক্ষণ হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। এই রোগটি সাধারণত হয়ে থাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলাফেরা করলে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বলতে বোঝানো হয়েছে অপরিষ্কার  স্থানকে। অপরিষ্কার স্থানে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণুর সংক্রমণ থাকে। এসব স্থান থেকেই আমাশয় মত রোগ ছড়ায়।

আমাশয়ের লক্ষণ  হালকা এবং গুরুতর হতে পারে। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা কমাতে এবং আপনাকে স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে সাহায্য করতে পারে। নিম্নে আমাশয় রোগের কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো:

  •  পেটে ব্যথা
  •  ডায়রিয়া
  •  উচ্চ জ্বর যা ১০০ ডিগ্রী থেকে বেশি
  •  ক্ষুধামান্দ্য
  •  পেট ফুলা
  •  ক্রমাগত মৌলের সাথে রক্ত বের হওয়া
  •  ওজন কমা
  •  প্রচন্ড মাথা ব্যথা

উপরে যেসব লক্ষণগুলোর কথা বলা হয়েছে সবগুলো প্রাথমিক লক্ষণ। আমাশয় হওয়ার পূর্বে এই সব সমস্যা দেখা দিতে। এই সমস্যাগুলো যদি তিন থেকে পাঁচ দিন স্থায়ী হয় তাহলে বুঝবেন আপনার আমাশয় হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ পেটে গ্যাস কমানোর উপায়

আমাশয় এর চিকিৎসা

আপনি যদি আমাশায় আক্রান্ত রোগী  হয়ে থাকেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা উচিত। আমাশয় রোগীদের চিকিৎসার শুরু করতে হয় তরল জাতীয় ওষুধের মাধ্যমে। তরল জাতীয় ওষুধ বোঝায় স্যালাইন।

আমাশয় হওয়ার ফলে শরীর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। যার ফলে রোগীর ডিহাড্রেটেড হয়ে যেতে পারে। এ কারণে রোগের চিকিৎসা শুরু করতে হবে স্যালাইনের মাধ্যমে। রোগীর গুরুতর অসুস্থ হলে স্যালাইনের সাথে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার শুরু করতে হবে। কারণ, ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ হওয়ার ফলে আমাশয় হয়ে থাকে। এন্টিবায়োটিক ব্যক্তিরা ধ্বংস করে।

অ্যান্টিভাইটিক ব্যক্তিদের প্রতিশোধক হিসেবে মানবদেহে কাজ করে। যদি এন্টিবায়োটিক দেওয়ার ৬ দিনের মধ্যে যদি আমাশয় ভালো না হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তারপর রোগের রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী নতুন করে চিকিৎসা শুরু।

অ্যামিবিক আমাশয় হলে সাধারণত মেট্রোনিডাজল  এবং টিনিডাজল জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। অ্যামিবিক আমাশয় এর জীবাণু খুব শক্তিশালী হয়ে থাকে এ কারণে এসব ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। আপনার স্বাস্থ্য গুরুতর হলে চিকিৎসার সময় প্রচুর পরিমাণ তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাছাড়া রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

আমাশয় রোগের ঔষধ

আমাশয় সাধারণত হয়ে থাকে শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলে। শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। কারণ, শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে যার ফলে রোগ জীবাণুর সাথে আমাদের শরীরের অ্যান্টিবায় ঠিক লড়াই করে টিকে থাকতে পারে না।

যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু আমাদের শরীরে বাসা বাঁধ। এর সাথে আমাশয় রোগের জীবাণু থাকতে পারে। এ কারণে দুর্বল শরীরে আমাশয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্তমান সময়ে আমাশয় ঘরোয়া চিকিৎসা করা যায়। ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজেই আমাশয় ভালো করা সম্ভব। চলুন জেনে নেই কিভাবে এবং কি দিয়ে ঘরে বসেই আমাশয় চিকিৎসা করা যায়।

  •  ডাবের পানি
  •  আদা 
  •  পুদিনা এবং লেবু
  •  ক্যারাম বীজ
  •  ডালিম

ডাবের পানি পান

আমাশয় সাধারণত হয়ে থাকে রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে। জীবাণু আক্রমণ করে আমাদের পাকস্থলীতে। তারপর শুরু হয় ডায়রিয়া এবং সাথে রক্ত বের হয়। তখন আমরা বুঝতে পারি আমাশয় হয়েছে। আমাশায় হওয়ার ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। যার ফলে রোগীর শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা যায়।

পানি স্বল্পতা দূর করতে ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়। কারণ, ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এবং এন্টিবায়োটিক যা রোগ জীবাণু ধ্বংস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাশয় রোগীদের ওষুধের মত কাজ করে ডাবের পানি।

আদা খাওয়া

আদা মসলা হলেও সকল ধরনের রোগের প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে। আদায় সকল প্রকার উপাদান রয়েছে যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমাশয় রোগের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসার খুব কার্যকরী উপাদান আদা। আদা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এটি খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে, পরিমাণও আদা কুচি কুচি করে কেটে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। ফোটানো পানি দিনে তিন থেকে চার বার খেতে হবে। 

এভাবে আদা চা করে খেতে হবে। এছাড়াও আধা ভালোভাবে বেটে নিন। তারপর আদার রস এর সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে লবণ যেন আয়োডিনযুক্ত হয়। কারণ, আমাশয় হওয়ার ফলে শরীর থেকে আয়োডিন বের হয়ে যায়। আয়োডিন এর ঘাটতি লবণের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব।

পুদিনা ও লেবু খাওয়া

পুদিনা ও লেবু পেট প্রশমিত করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পুদিনাতে এন্টিভাইরাল রয়েছে। এই উপাদানটি পাকস্থলীর কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যার ফলে খুব সহজেই সকল ধরনের খাবার হজম করা সম্ভব হয়। এবং পেটের মধ্যে জমে থাকা জীবাণুগুলো ধ্বংস করে।

নিয়মিতভাবে পুদিনা খাওয়ার ফলে পেটের ব্যথা কমে যায়। আমাশয় রোগের জন্য খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখ। এটি খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে, ভালোভাবে পুদিনা পাতা বেটে নিতে হবে। তারপর পুদিনা পাতার সাথে লেবুর রস দিতে হবে। পুদিনা ও লেবুর রস দিয়ে শরবত করে খেতে হবে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড থাকে যার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

ক্যারাম বীজ খাওয়া

পেট খারাপের জন্য ক্যারাম বীজ একটি কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিষেধক। এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পেট ভাপা এবং ফোলা ভাব দূর করে। আমাশয় রোগের জন্য কার্যকরী। খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে পানি ফুটাতে হবে। তারপর এক চা চামচ পরিমাণ ক্যারাম বীজ পানিতে দিতে হবে। ভালোভাবে পানিতে বীজ সিদ্ধ করতে হবে। তারপর কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। খাওয়ার মত পরিবেশ হলে গরম গরম চায়ের মত করে খেতে হবে।  এভাবে নিয়মিত খেলে আমাশয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডালিম বা বেদেনা খাওয়া

আমাশয় বন্ধ করার জন্য ডালিম রস দুর্দান্ত প্রতিশোধক। আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা দ্রুত ফলাফলের জন্য ডালিম এর রস খেতে পারেন। ডালিমের পাশাপাশি ডালিম পাতার রস আমাশয় ভালো করতে সাহায্য করে। দ্রুত ভাবে আমাশয় ভালো করতে দিনে দুই থেকে তিনবার এক গ্লাস করে ডালিম রস খেতে পারেন।

আমাশয় রোগীর খাবার তালিকা

আমাশয় রোগটি হয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণ। এটি পেটের রোগ। এ কারণে আমাশয় রোগীর সুনির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা আবশ্যক। খাওয়ার মধ্যে কোন সমস্যা হলে আমাশয় বেড়ে যেতে পারে।  আমাশয় হলে, আলু, বিভিন্ন ধরনের ফল, সেদ্ধ সবজি, ডালিম ফলের রস, ডাবের পানি এসব খাবার খেতে পারেন।

আমাশয় হলে বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ, খাবারে কোন সমস্যা হলে আমাশয় ভালো না হয়ে বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। এ রোগটি পেটের যার ফলে সবকিছু খাওয়া ঠিক না।

আমাশয়  হলে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে

  •  দুধ, দই, মাখন, আইসক্রিম মতো দুগ্ধ জাতীয় খাবারের এড়িয়ে চলতে হবে।
  •  মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত ভাজা এবং চর্বিযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  •  পাস্তা এবং পিজ্জার মত ময়দা দিয়ে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  •  উচ্চ  ফাইবার যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  •  লাল মাংস এবং কাঁচা শাকসবজি আমাশয় বৃদ্ধি করে। এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।
  •  অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে।

আমাশয় রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

আমাশয় রোগের যত চিকিৎসা করুন না কেন যদি সঠিকভাবে চলা চলাফেরা না এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। আমাশয় থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকতে হবে। আমাশয় কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  •  ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
  •  ফল খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। 
  •  বাইরের ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
  •  বাসি খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  •  সবসময় পরিষ্কার পানি খেতে হবে।
  • বাসায় শিশু থাকলে তাদের কাপড় পরিষ্কার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

এসব নিয়ম মেনে চললে সকল প্রকার রোগ থেকেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আমাশয় সাধারণত হয়ে থাকে খাবারের জন্য। খাবারের মাধ্যমে আমাদের পাকস্থলীতে ব্যাক্তিদের আক্রমণ হয়। যার ফলে আমাশয় হয়ে থাকে।

শেষ কথা

আমাশয় রোগটি সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা আমাশয় কেন হয়? যার ফলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আমাদের জানা নায়। এ রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করা যায়। এই কন্টেইনে আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস সম্পূর্ণ কন্টেনটি পড়লে আমাশয় রোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পাবেন। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ কন্টেনটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন-

ঢেকুর কমানোর উপায়

কালোজিরার উপকারিতা

Leave a Comment