ক্রেডিট কার্ড কি
পছন্দের কেনাকাটায় কিংবা হঠাৎ টাকার প্রয়োজনে বর্তমান যুগে নগদ অর্থের পরিবর্তে ওয়ালেটে জায়গা করে নিয়েছে ক্রেডিট কার্ড (credit card)। তাই আজ আমরা জানব, ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।
ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এক প্রকার লোন যা দিয়ে কার্ড ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট সীমা অনুযায়ী পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধ করতে পারে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে শুধু দেশেই নয়, বিদেশে গিয়েও থাকছে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের সুযোগ।
এছাড়া কোনো সুদ ছাড়াই ৪৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধেরও সুযোগ মিলছে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দৈনন্দিন লেনদেন করা যায় খুব সহজে এবং দারুন সব সেবা উপভোগ করার সুবিধা থাকায় দেশে প্রতিনিয়ত ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক এখন ২১ লাখ এবং প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
ক্রেডিট কার্ড (Credit card)
ক্রেডিট কার্ড (credit card) হলো- ব্যাংক বা আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত একটি চিপ-ভিত্তিক প্লাস্টিকের কার্ড যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আর্থিক ঋণ প্রদান করা হয়। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ড হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ধার নিয়ে খরচ করা যায়। যেমন প্রতিমাসে আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারপরে বিদ্যুৎ বিল দেই, আবার পোস্ট পেইড সিম কার্ডের ক্ষেত্রে ও সারা মাস খরচ করার পর বিল পেমেন্ট দেওয়া হয়।
ক্রেডিট কার্ড ও ঠিক তেমন, ক্রেডিট কার্ড এর কাজই হচ্ছে ব্যবহারকারীদের বাকিতে লেনদেনের সুবিধা প্রদান করা। এবং নির্দিষ্ট সময় পর টাকা পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া। কার্ডটিতে তথ্য দেওয়া থাকে ক্রেডিট কার্ডধারীর নাম, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, মেয়াদ শেষ এর তারিখ, সিভিভি, ক্রেডিট কার্ডধারীর স্বাক্ষর এবং কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের বিবরণ, ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ শেয়ার বাজার কি? বিনিয়োগের নিয়ম
ক্রেডিট কাডের লিমিট কত?
প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডে খরচের মাত্রা নির্ধারণ করা থাকে। ব্যাংক (Bank) বা ক্রেডিট কার্ড (credit card) ইস্যু প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আপনার আয়ের উপর নির্ভর করে অথবা সক্ষমতার উপর নির্ভর করে। কার্ডে আগে থেকেই নির্দিষ্ট এমাউন্ট ঠিক করে দেয়। খুব সহজ ভাষায় বলা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্ড ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট খরচের মাত্রা কে ক্রেডিট লিমিট বলা হয়।
ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম করলে ক্রেডিট কার্ড (credit card) থেকে আর অর্থ খরচ করা যায় না। ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ (Paying credit card bills) করার পর আবার এটি ব্যবহার করা যায়। সাধারণত এক মাসের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরের মাসের কোনো এক সময়ে প্রদান করতে হয়।
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা
ক্রেডিট কার্ড (credit card) পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রশ্ন হলো ব্যাংক আপনাকে উপযুক্ত মনে করছে কি না। ব্যাংক সাধারণত ব্যক্তির মাসিক আয়ের উপর নির্ভর করে ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা দিয়ে থাকে। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ খরচ করার তা ফেরত দেওয়ার সক্ষমতা রাখেন কিনা সেই বিষয়ে বিবেচনা করে ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড (credit card) দিয়ে থাকে। বাংলাদেশী নাগরিককে ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা হলো :-
– জাতীয় পরিচয়পত্র (National Identity Card)
– টি আই এন সার্টিফিকেট (TIN Certificate)
– চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকরিতে যোগদানের প্রমাণপত্র, আয়ের সনদ এবং ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটম্যান।
– ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স (Trade license) এবং মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশনের ৩ মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশন স্টেটম্যান (Bank Transaction Statesman)।
এছাড়াও আপনার যদি অর্থনৈতিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী আমানত থাকে তাহলে আপনি সেখানে ও ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম
ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়ন যারা সাধারণত ক্রেডিট কার্ড (credit card) দিয়ে থাকে তারা ব্যবসায়ীদের সাথে এক ধরনের চুক্তি করে থাকে। যেন ক্রেডিট কার্ড কে নগদ টাকার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ক্রেডিট কার্ড একটি দারুন ব্যবস্থা এবং নিরাপদ উপায় যার মাধ্যমে খুব সহজেই বিল পেমেন্ট করা যায়। আপনি নিজের জন্য ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ড (Credit card issued) কিভাবে ব্যবহার করবেন তা জেনে নিতে অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো-
১. ক্রেডিট কার্ড এক্টিভেশন (Credit card activation)
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের কাছে অনেকটা লোনের মত। যখন কোনো ব্যাংক আপনাকে একটি ক্রেডিট কার্ড (credit card) দিবে তখন প্রথমেই আপনাকে ইস্যুকৃত কার্ড টি এক্টিভ করতে হবে। কার্ড এক্টিভ না হওয়া পর্যন্ত সেটি দিয়ে আপনি কোন লেনদেন করতে পারবেন না।
২. পাসওয়ার্ড সেট করা (Set password)
ক্রেডিট কার্ড (Credit Card) অথবা ডেবিট (debit) দুই ক্ষেত্রেই প্রথমে আপনাকে ৪ ডিজিটের একটি পিনকোড সেট করতে হবে। ক্রেডিট কার্ড একটিভ করার সময় ৪ ডিজিটের একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং নাম্বারটি মনে রাখুন। ভুলেও কখনো এই পিনকোড কাউকে বলবেন না।
৪. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ (Collection of required documents)
ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার সময় আপনাকে প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। ডকুমেন্টসগুলির কপি নিজের কাছে যত্নে রাখবেন। কারণ কার্ডের যেকোনো সমস্যা হলে উক্ত ডকুমেন্টসগুলি দরকার হবে। ক্রেডিট কার্ড (credit card) একটিভ থাকলে অনলাইন (online) ও অফলাইন (off line) যেকোনো জায়গায় আপনি খুব সহজেই বিল পে করতে পারবেন।
৫. ক্রেডিট কার্ডের খরচ ও শর্ত (Credit card costs and terms)
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাংক বিভিন্ন চার্জ নিয়ে থাকে। যেমন- জয়েনিং ফি, দেরিতে পেমেন্ট করলে চার্জেস, রিনিওয়াল ফি ইত্যাদি। ক্রেডিট কার্ড (Credit Card) ব্যবহারের আগে অবশ্যই এর চার্জ ও শর্ত জেনে নিবেন।
৬. গোপনীয়তা নিশ্চিত করুন (Ensure confidentiality)
ক্রেডিট কার্ড এর বিভিন্ন ইনফরমেশন (information) খুব সেনসিটিভ একটা বিষয়। প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন স্ক্যামিং ওয়েবসাইট (website) আছে যেগুলো বিভিন্ন কারণে আপনার কার্ডের তথ্য চেয়ে বসতে পারে। এসকল ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সবসময় মাথায় রাখবেন কোনোভাবেই যেন এই তথ্যগুলো প্রকাশ না হয়। বিশেষ করে আপনার পিনকোডের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন যেন কেউ ফ্রড করে টাকা তুলতে না পারে।
ক্রেডিটি কার্ডের সুবিধা (Credit card benefits)
বর্তমান যুগে আর্থিক লেনদেনে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বড় ধরনের কেনাকাটায় নগদ অর্থের বিকল্প ক্রেডিট কার্ডটি বেশ কাজে আসে। ক্রেডিট কার্ড credit card ব্যবহারের সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে –
আরও পড়ুনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন কি
১. দ্রুত লেনদেন (Fast transaction)
আপনি দামি কোনো জিনিস কিনতে চাইছেন। সব টাকা জোগাড় করতে পারছেন না আবার কারও কাছে ধারও করতে পারছেন না। এসব ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার করে পণ্যটি আপনি খুব সহজেই কিনে ফেলতে পারবেন। কয়েক মাস ধরে মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ থাকে যার ফলে ঋণের বোঝা খুব বেশি মনে হয় না। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমা অনুযায়ী মূল্য পরিশোধ করতে হবে, তা না হলে জরিমানা গুনতে হতে পারে।
২. সুরক্ষা (protection)
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বলা হয়। নগদ, ডেবিট কার্ড (Debit card) ও চেক ব্যবহারের থেকে। আপনার কার্ডটির ভুলত্রুটি বা জালিয়াতি হলে কিংবা চুরি হলে আপনি উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে আপনার অর্থ ফেরত পাবেন। তবে অবশ্যই কার্ডের পিন নম্বরটি মনে রাখতে হবে।
৩. ঋণের সুবিধা (Loan facility)
দেশের কিছু ক্রেডিট কার্ড (credit card) এবং বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে শূন্য শতাংশ সুদে ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রে মাসে আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করতে হয়, যা বেশ সুবিধাজনক।
৪. মূল্যছাড় (discount)
প্রতিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। যেমন: ক্যাশ ব্যাক অফার, স্পেশাল ডিসকাউন্ট ইত্যাদি। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে, নামকরা হোটেলে, ব্র্যান্ডের শোরুমে, প্লেনের টিকিট কাটতে ও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে অনেক সময়ই মূল্যছাড় দেওয়া হয়।
৫. ক্রেডিট কার্ড পরিবর্তনযোগ্য (Credit cards are interchangeable)
আপনি একটি অফারের ক্রেডিট কার্ড credit card নিয়েছেন একসময় দেখলেন যে কার্ডটি ব্যবহারে ঋণের বোঝা বেশি হয়ে গেছে। তখন আপনি এটি পরিবর্তন করে অন্য অফারের কার্ড নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে হয়তো আপনাকে হয়তো সামান্য অর্থ বেশি খরচ করতে হতে পারে। তবে তা ক্ষতি না হলেও লাভজনকই হয়।
৬. সিবিল স্কোর (Sybil Score)
আপনি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে যত কেনা কাটা করবেন তত আপনার সিবিল স্কোর বাড়বে। আপনার সিবিল স্কোর যত বেশি হবে অর্থনৈতিক দিক থেকে ব্যাংক আপনাকে বেশি ভরসা করবে। যার ফলে পরবর্তী কালে আপনি খুব সহজেই যেকোনো লোন পেতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা
ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড (credit card) ব্যবহারে যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি আবার কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমন-
১. ঋণের ফাঁদ (The debt trap)
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কিন্তু একটি ঋণ loan নেওয়ার মাধ্যম। আপনি হয়তো এখন কিনছেন, কিন্তু পরে তো অর্থ পরিশোধ করতেই হবে। একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। যদি আপনি সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করতে পারেন তাহলে ঋণ বাড়তেই থাকবে।
আরও পড়ুনঃ সফটওয়্যার কি ও সফটওয়্যারের প্রকারভেদ
২. লুক্কায়িত ব্যয় (hidden costs)
সুদের হার পরিশোধই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের একমাত্র ব্যয় নয় আপনার জানা অজানা অনেক ব্যয় রয়েছে। যেমন- জয়েনিং ফী (Joining fees), দেরিতে পেমেন্ট করলে চার্জেস (Late payment fees), রিনিওয়াল ফী (Renewal fees) ইত্যাদি।
এছাড়াও সময়মতো মাসিক মূল্য পরিশোধ না করলে জরিমানা গুনতে হতে পারে। ক্রেডিট কার্ডে যে লিমিট থাকে, সেটা অতিক্রম করলেও একটা নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নগদ অর্থ তুলতে চাইলে এর জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হতে পারে।
৩. সঠিক কার্ডটি চেনা (Identify the correct card)
সবসময় সুবিধাজনক সঠিক কার্ডটি বেছে নেওয়া জরুরি। কারণ একটি ভুল কার্ড দিনের পর দিন ব্যবহার করলে ঋণের বোঝা কেবল বাড়তেই থাকবে। তার জন্য অবশ্যই সকল শর্তাবলি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। আপনার আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এমন ধরনের কার্ড বেছে নিতে হবে।
৪. সর্বনিম্ন বাকি (Minimum left)
ক্রেডিট কার্ড (credit card) ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ক্ষতির মধ্যে একটা হলো সর্বনিম্ন বাকি, যেটা বিলের একদম ওপরে লেখা থাকে। কার্ড ব্যবহারকারীদের মনে হতে পারে যে এটাই বিলের পরিমান (Billing Amount)। যার ফলে অনেকেই কোন কিছুই না ভেবেই সর্বনিম্ন বাকি বা Minimum Due পেমেন্ট করে খুশি মনে আবার শপিং শুরু করে দেয়। ফলশ্রুতিতে বেড়ে চলে বিলের পরিমাণ এবং তার সাথে সুদ।
৫. ক্রেডিট কার্ডে জালিয়াতির সম্ভাবনা (Chances of credit card fraud)
বর্তমান উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা খুব সহজেই আপনার ক্রেডিট কার্ড credit card টি ক্লোন করতে পারে। এমনকি আপনাকে ট্রাপে ফেলতে পারে। দিন দিন ক্রেডিট কার্ড ফ্রডের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তার জন্য অবশ্যই গোপনীয়তা নিশ্চিত করা উচিত। ক্রেডিট কার্ড এর বিভিন্ন ইনফরমেশন, পিনকোড খুব সেনসিটিভ একটা বিষয়। কোনোভাবেই যেন এই তথ্যগুলো প্রকাশ না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি, ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সঠিক নিয়ম, সুবিধা ও অসুবিধা ঠিকমতো জানা থাকলে আপনি অনায়াসেই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। নগদ অর্থের বিকল্প ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড (credit card) ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন, তাহলে তো আর চিন্তা নেই কারণ এই কার্ড ব্যবহারের সুবিধাগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ করে দিয়েছে।
বড় বড় মার্কেট, সুপারশপ, শপিংমল, হোটেল সহ বিভিন্ন জায়গায় ক্রেডিট কার্ড থেকে বিল পে করার পাশাপাশি ইএমআই, আই পে বিল পেমেন্ট করার সুবিধাও রয়েছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন অফার, মূল্য ছাড় দিয়ে থাকে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের আগে কোন কোন খাতে কিভাবে চার্জ করবে, এ বিষয়গুলো অবশ্যই জানা থাকা জরুরি।
ক্রেডিট কার্ড কি? এই সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ
প্রশ্ন -১: ক্রেডিট কার্ড থেকে কি টাকা উত্তোলন করা যায়?
উত্তর: বিকাশ ,নগদ বা রকেটের মতো ক্রেডিট কার্ড (credit card) থেকে কোনো প্রকার টাকা তোলা যায় না। এই কার্ডের মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র টাকা পে করতে পারবেন।
প্রশ্ন -২: ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বন্ধ করা যায়?
উত্তর: ব্যাংকে যোগাযোগ করুন অথবা কাস্টমার কেয়ারে কল করে কথা বলে বন্ধ করতে পারেন। কিছু কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড তাদের অ্যাপ থেকে বন্ধ করা যায়।
প্রশ্ন-৩: কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে ভালো?
উত্তর: আপনার ব্যবহারবিধির উপর নির্ভর করবে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো। আপনার আয়ের উপর নির্ভর করে ঋণ দেওয়া হবে এবং সেই ঋণের উপর নির্ভর করে সুদের তারতম্য হবে। তাই আপনার প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে কোন ব্যাংকের কার্ড ভালো হবে তা আপনি নির্ধারণ করতে পারেন।
প্রশ্ন -৪: ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড কিসের উপর ভিত্তি করে দিয়ে থাকে?
উত্তর: ব্যাংকগুলো সরাসরি আপনার আয় ও পেশা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই এই লোন দিয়ে থাকে। দেশে সাধারণত ৩০ হাজার টাকা বেতন হলেই ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন।
প্রশ্ন -৫: ক্রেডিট কার্ডের লিমিট কত টাকা?
উত্তর: সাধারণত মাসিক বেতনের ৪গুণ পর্যন্ত ক্রেডিট লিমিট দেওয়া হয়। তবে ক্রেডিট লিমিট ৩০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ঋণের পরিমাণ কম হবে।
আরও পড়ুন-
ডাটা এন্ট্রি কি ? ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায়
আউটসোর্সিং কি? আউটসোর্সিং কিভাবে শুরু করবেন