চুল লম্বা করার উপায় সম্পর্কিত সকল তথ্য ও সমাধান

চুল লম্বা করার উপায় 

ঘন ও লম্বা চুল ভালোবাসেন না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু নানা কারনে সেটা হয়ে ওঠে না। অনেক মানুষ আছে,

যারা চুল নিয়ে অনেক চিন্তায় থাকে। চুল লম্বা করার উপায় নিয়ে ঘাটাঘাটি করে। চুল পড়ে গেলে আমাদের সৌন্দর্যের অনেকটা ঘাটতি সৃষ্টি হয়।

অনেক কারণেই আমাদের চুল পড়ে যেতে পারে যেমন, থাইরয়েডের সমস্যা, ভিটামিন ই এর অভাব ইত্যাদির কারণে। তবে, ভিটামিন ডি এর অভাবেও চুল পড়তে দেখা যায়। 

অনেকেই আছেন যারা এখনো পড়ালেখা করছেন অথবা জব করছেন, তাদের কর্মের ব্যস্ততায় সূর্যের আলোয় যাওয়াই হয়না।

অথচ, ভিটামিন ডি’গ্রহনের প্রধান উৎস ই হলো সূর্যের আলো। চুলে আমাদের উচিত হলো রোদের আলো বা তাপ দেয়া যা আমাদের চুলের জন্য উপকারী।

অনেক ছোট ছোট বিষয় আছে যে ব্যস্ততার জন্য করে উঠতে পারি না। সে সকল কিছুর ঘাটতির জন্যই আমাদের চুলের ক্ষতি হয়।

আজকের আর্টিকেলে আমরা চুল লম্বা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন।

আরও পড়ুনঃ মেয়েদের চুল লম্বা করার তেলের নাম ও তেলের ব্যবহার

চুল পরার কারন

চুল লম্বা করার উপায়

চুল পড়ার কোনো নিদৃষ্ট কারণ হয়না। চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ হতে পারে।বংশগত কারণ।অর্থাৎ আপনার পরিবারের যদি কারোর চুল পড়ার সমস্যা থাকে, যেমন আপনার বাবা মা এর থাকে, তবে আপনারও এই সমস্যা হতে পারে।

এটা বংশগত রোগ হয়ে থাকে। খাওয়া দাওয়া ঠিক না থাকলেও কিন্তু অনেক সময় চুল পরে যায়। আমাদেরকে  প্রোটিন, ফ্যাট এবং শর্করা জাতীয় খাদ্য ঠিক পরিমাণে খাওয়া দরকার। স্ট্রেস থেকেও চুল পড়তে পারে। ফলে চেষ্টা করুন চিন্তা মুক্ত থাকার। ক্যান্সার বা অন্য কোনো কঠিন ব্যাধি হলে চুল পরে যাই।

চুল লম্বা করার উপায়সমুহ

গাছ বড় করতে যেমন দিতে হয় সার, তেমনি চুল লম্বা করতে প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন। দৈনন্দিন জীবনযাপনের ফাঁকে সাধারণ উপায়ে দ্রুত চুল লম্বা করা যায়।চুল লম্বা করার উপায় জানার আগ্রহ সকলেরই থাকে।

কারণ লম্বা, ঘন চুল কে না ভালোবাসে? আর মেয়েদের সৌন্দর্য মেয়েদের লম্বা, ঘন চুলেই বিদ্যমান। তাই লম্বা চুল চাইলে চুলের যত্ন নেয়া জরুরি। চুলের যত্নে প্রতিদিন কিছু কাজ করতে পারেন –

১.প্রতিদিন চুলে তেল মালিশ করুন

চুলে তেল মালিশ করা চুলের দৈর্ঘ্য বা মাত্রা বাড়তে সহায়তা করতে পারে। জীবাণুগত থেকে চুলের পোষক উপাদান পান করার জন্য আপনি কাছাকাছি থাকা হিমালয় তেল, জটিলা তেল ইত্যাদি ব্যবহার করুন। এটা চুলে পুষ্টি যোগীয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

২.পুষ্টিকর খাবার খান

চুল স্বাস্থ্যকর থাকতে চায়। আপনার খাদ্যে পুষ্টিকর উপাদান যুক্ত থাকলে এটি চুল গড়তে সহায়তা করতে পারে। প্রোটিন, ভিটামিন, আয়রন, জিংক, ওমেগা-3 মাত্রার খাবার যেমন মাছ, ডাল, মুগডাল, নারিকেল, আলু ইত্যাদি আপনার খাবারে অন্তর্ভুক্ত করুন।

চুল পড়া রোধ এ করণীয় 

চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে, কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করে চুল পড়া রোধ করা সম্ভব। চুল লম্বা করার উপায় জানতে চায় সকলেই, সেই সাথে চুল পড়া রোধ ও করতে চায়।

কারন ঘন, কালো চুল সকলেরই পছন্দের।বর্তমানে মানুষের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা হলো চুল পড়া। তবে আমরা যদি ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করি তাহলে আমাদের চুল পড়া রোধ করা সম্ভব।

সপ্তাহে দুই বা তিনবার শ্যাম্পু করুন। মাথার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। ভেজা চুলে আঁচড়ানো এড়িয়ে চলুন।চুল শুকাতে হেয়ার

ড্রায়ারের পরিবর্তে তোয়ালে ব্যবহার করুন। চুলের গিঁট বাঁধার সময় খুব টাইট না করা। রাসায়নিকযুক্ত চুলের রং, স্ট্রেটনিং, বা পার্মিং এড়িয়ে চলুন।

চুলের গোড়া শক্ত করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল চুলের জন্য খুব উপকারী।

নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারে চুল পড়া রোধ করা সম্ভব। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে চুল পড়া কমে।

চুল পড়া একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হতে পারে। যদি আপনার চুল পড়ার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

কি কি কারণে চুল পড়তে পারে

চুল লম্বা হওয়ার উপায় নিয়ে অনেকেই ঘাটাঘাটি করে। কিন্তু চুল লম্বা না হওয়া এবং চুল পড়ার অনেক কারণ থাকতে পারে।যেমন

১. বংশ গত পরিবর্তন: বংশগত বিভিন্ন কারনে চুল পড়ার মত সমস্যা হতে পারে।

২.হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, প্রসব, মেনোপজ, পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিন্ড্রোম (PCOS) বা থাইরয়েড সমস্যার কারণে হরমোনের মাত্রার ওঠানামা চুল পড়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।

৩.পুষ্টির ঘাটতি: প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন D, এবং ভিটামিন B12 এর ঘাটতি চুল পড়ার কারণ হতে পারে।

৪.মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ।

৫.চুলের যত্নের ভুল রীতি: অতিরিক্ত গরমের ব্যবহার, রাসায়নিক চিকিত্সা, এবং চুল টানা বা বেঁধে রাখা চুলের ক্ষতি করতে পারে এবং ঝরে যেতে পারে।

এছাড়াওঅ্যালোপেসিয়া আরিয়েটা, টেলোজেন এফ্লুভিয়াম, এবং স্ক্যাল্প ইনফেকশন এর মতো কিছু রোগ চুল পড়ার কারণ হতে পারে। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চুল পড়তে পারে।

এবং ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, ওজন কমানো, এবং ঘুমের অভাব চুল পড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

চুল সুরক্ষিত রাখার উপায় 

.গরমের সরঞ্জাম থেকে

হেয়ার ড্রায়ার, স্ট্রেটনার, কার্লিং আয়রন ইত্যাদির অতিরিক্ত ব্যবহার চুলের ক্ষতি করে। এগুলো ব্যবহারের সময় কম তাপমাত্রা ব্যবহার করুন এবং হিট প্রোটেক্টেন্ট স্প্রে ব্যবহার করুন।

২.রাসায়নিক থেকে

চুলের রং, ব্লিচ, পারম ইত্যাদির ব্যবহার চুলকে দুর্বল করে। এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন এবং বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

৩.ভেজা চুলকে সাবধানে ট্রিট করুন

ভেজা চুল খুবই নাজুক থাকে। তাই শ্যাম্পু করার পর চুলের জল টাওয়েল দিয়ে হালকা করে শুকিয়ে নিন। ভেজা চুল আঁচড়ানো এড়িয়ে চলুন। ভেজা চুল আঁচড়ানোর সময় চওড়া দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। ভেজা চুল গোল করার সময় টাইট বান না করা ভালো।

৪.সঠিকভাবে শ্যাম্পু করুন

আপনার চুলের ধরণ অনুযায়ী শ্যাম্পু নির্বাচন করুন। যদি আপনার চুল শুষ্ক থাকে, তাহলে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত চুলের জন্য অয়েল-ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

চুল ভেজা করার পর সামান্য পরিমাণ শ্যাম্পু হাতে নিয়ে ফেনা তৈরি করুন। স্ক্যাল্পে আলতো করে ম্যাসাজ করুন এবং চুলের দৈর্ঘ্য boyunca ফেনা ছড়িয়ে দিন। ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার শ্যাম্পু করা যথেষ্ট। অতিরিক্ত শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল চলে যেতে পারে।

৫.নিয়মিত কন্ডিশনার ব্যবহার করুন

শ্যাম্পু করার পর চুলের দৈর্ঘ্য boyunca কন্ডিশনার লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।কন্ডিশনার চুল নরম, মসৃণ ও চকচকে করে তোলে।

পরিশেষে

চুল লম্বা করার উপায় জানতে চায় সকলেই। তবে চুল কেন লম্বা হচ্ছে না অথবা চুল কেন পড়ছে তার সঠিক কারণ আগে আমাদের জানতে হবে।

চুলের সমস্ত ধরনের যত্ন করার পরও যদি চুল পড়া বন্ধ না হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। অনেক সময় নিজের শারীরিক সমস্যার প্রভাব আমাদের চুলে গিয়ে পড়ে। তাই সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আমরা আমাদের চুলের পরিচর্যা করতে পারি। 

চুল সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১.চুলের জন্য কোন তেল ভালো হবে?

উত্তর: নারকেল তেল

২.ক্যাস্টর অয়েল এর কাজ কি?

উত্তর : মাথার তালু বা স্ক্যাল্পে হওয়া বিভিন্ন ইনফেকশন, ইচিং বা চুলকানি, খুশকি ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।

৩.দিনে কতবার চুল আচড়ানো উচিত?

উত্তর:৩-৪ বার।

আরও পড়ুন-

আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও চিকিৎসা

১ মাসে চুল ঘন করার উপায় ও চুলের যত্নে করনীয়

Leave a Comment