ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে ও বাচ্চার অবস্থান

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে

গর্ভাবস্থায় ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে বা থাকে এ বিষয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। অনেক মা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে চাই তার গর্ভের সন্তান ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু এবং সেটা কিভাবে বুঝবেন।

বাচ্চার পজিশন অনুযায়ী কিছুটা বোঝা যায় যে ছেলে বাচ্চা না মেয়ে বাচ্চা। তাই ছেলে বাচ্চার পজিশন গুলো আজকে জানবো এবং গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চা বিভিন্ন সময় কোন পজিশনে থাকতে পারে তা জানবো।

তাই যারা গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চার স্থান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য পরামর্শ একটু ধৈর্য্য সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়বেন।

আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ ও সতর্কতা

ছেলে সন্তান পেটের কোন পাশে থাকে

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে

সাধারণত যদি আমরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ বছর আগের কথা বলতে যাই, তখন আল্টাসনোগ্রাফি এতটা সহজলভ্য  ছিল না। এজন্য আমরা জানতে পারতাম না গর্ভে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে।

তখন কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে ধারণা করা হতো যে গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে। ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে এ বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে গর্ভবতী নারীর পেট যদি নিচু হয় তাহলে ছেলে সন্তান হবে। আপনাদের এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে হবে।

তবে বৈজ্ঞানিকভাবে কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের সময় পেট স্বাভাবিকভাবে নীচু হতে পারে এবং প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে বেশি উঁচু হয়।

সাধারণত ছেলে বাচ্চারা একটু বেশি চঞ্চল হয় এবং সেই চঞ্চল বাচ্চারা যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখনও পেটের বাম পাশে চাপ সৃষ্টি করে এবং অনেক চঞ্চল হয়ে থাকে।

সেই হিসেবে গর্ভাবস্থায় যে বাচ্চাটি বেশি নড়াচড়া করবে সেটা দেখে অনেকে ধারণা করতে পারেন যে গর্ভে ছেলে সন্তান রয়েছে।

ছেলে সন্তান হওয়ার প্রচলিত ধারণা

প্রত্যেক নারীর জীবনে একটা বিশেষ সময় প্রেগন্যান্সির এই ৯ মাস। নিজের শরীরে একটা প্রাণের আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠার মতো অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন না অনেক হবু মা।

ভয়,আনন্দ,উৎকণ্ঠা মিলিয়ে এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করে সবার মধ্যেই। সঙ্গে থাকে একটা জিনিস জানার কৌতুহল, সেটি হলো গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে? আর ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে?

মা দাদিমাদের দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনি অনুধাবণ করতে পারবেন যে পুত্র না কন্যা সন্তানের জননী হতে চলেছেন আপনি।

চলুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থার কোন লক্ষণ দেখে কী বুঝবেন–

১. ছেলে সন্তান হলে মর্নিং সিকনেস কম হয়। বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা কম হয় । আর মেয়ে হলে সাধারণত হবু মায়ের মধ্যে এরকম প্রবনতা বেশি থাকে।

২. ছেলে হলে নাকি মুড সুইং কম হয়। রাগ কম হয়। আর মেয়ে হলে ঠিক এর উল্টোটা হয়ে থাকে। 

৩. ঘুমানোর ধরণ দেখেও বোঝা যায় ছেলে না মেয়ে। ছেলে হলে সাধারণত বাঁ দিক ফিরেই শুতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে হবু মায়েরা। 

৪. হবু মা যদি দেখতে ধীরে ধীরে আরও সুন্দরী হয়ে যায়, তাহলে পুত্র সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

৫. আর হবু মায়ের যদি খুব বেশি ঝাল বা টক খেতে ইচ্ছে করে,তবে ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি থাকে। 

৬. প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গর্ভের সন্তানের হৃদস্পন্দন হার যত বেশি হবে, মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।

৭. বেবি বাম্প যদি নীচের দিকে ঝোলা থাকে তাহলে ছেলে হবে বলেই মনে করা হয়। অন্য দিকে, মেয়ে সন্তান থাকলে বেবি বাম্প থাকে পেটের মাঝামাঝি জায়গায় ও উঁচু হয় বেশি। 

গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে কিভাবে বুঝবেন

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে তা জানার পরে গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে বোঝার বেশ কয়েকটি সহজ উপায় আছে যার মাধ্যমে আপনি কোন ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই সেটা বুঝতে পারবেন।

সাধারণত আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে সেটা দেখা যায়। তবে এটা এক ধরনের অপরাধ এবং সেই অপরাধ থেকে যদি নিজেকে দূরে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই পদ্ধতি গুলো জানতে হবে।

এটি নির্ভর করে গর্ভে থাকা সন্তান মায়ের গর্ভে কেমন আছে এবং কি অবস্থায় রয়েছে তার ওপর। ২০০৯ সালে চীনের একটি শহরে ৭ বছর ধরে একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয় এবং সেই গবেষণায় তিনশত পঁচাত্তর জন গর্ভবতী নারীর উপর পরীক্ষা করেছে এই গবেষক দল।

তাদের মধ্যে ১৬৯২ জনের রক্তচাপ কোলেস্টরেল ও অন্যান্য মূল্যায়ন করা হয় এর পাশাপাশি ৭৩৯ জনের ছেলে ও ৬২৭ জনের মেয়ে হয়। এখানে যে বিষয়গুলো তারা লক্ষ্য করেছে সেটা হচ্ছে।

যদি প্রসবের আগে গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ অনেক বেশি কমে যায়,তাহলে তিনি কন্যা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রক্তচাপ অনেক বেড়ে যায় তাহলে তিনি পুত্র সন্তান জন্ম দিচ্ছেন এটা ধারণা করা হয়।

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে – ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ নিয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করবো। আর এ বিষয়গুলো নিয়ে অনেকের মনে খুব কৌতূহল হয়ে থাকে। অনেকেই এই ব্যাপারে খুবই আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তবে অনেকে অনলাইনে এসে ছেলে সন্তান হওয়ার যে লক্ষণ সমূহ তা খুঁজে বের করতে চান। তাই নিম্নে ছেলে সন্তান হওয়ার যে লক্ষণসমূহ রয়েছে তা উল্লেখ করে যাচ্ছি।

  • গর্ভবতী মহিলার তলপেট যদি সামনের দিকে থাকে তাহলে মনে করবেন আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন আপনার ডান দিকের স্তন বাম দিকের তুলনায় বেশি বড় হয়ে থাকে প্রাকৃতিক ভাবে তাহলে আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • অন্তঃসত্ত্বা হওয়া কালীন যদি বামদিকে ফিরে ঘুমাতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন তাহলে আপনার পুত্র সন্তান হবে।
  • গর্ভবতী অবস্থায় আপনার যদি নতুন  চুল গজায়, তাহলে আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • ছেলে সন্তান হলে গর্ভবতী মহিলার চুল লম্বা হয়।

শেষ কথা 

আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হলো নেককার সন্তান। ছেলে হোক বা মেয়ে সবার ক্ষেত্রেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে হবে।

আল্লাহ যেই সন্তানই দিবেন অবশ্যই সেই সন্তান কল্যাণকর হবে মা বাবার জন্য। তাই ছেলে সন্তান পেটের কোন পাশে থাকে এই বিষয়ে খুব বেশি চিন্তা করা যাবেনা।

কোন জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে এ বিষয় সম্পর্কে জানা খুবই সহজ।

তবে গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে এটি জানা বা জানানো দন্ডণীয় অপরাধ।সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে সন্তান হলেই আল্লাহর শুকরিয়া করুন।

আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেননা আজ এ পর্যন্তই।ধন্যবাদ।

ছেলে সন্তান সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১) ছেলে সন্তান কত দিনে নড়াচড়া করে?

উত্তর: ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে এটি এবং সাধারনত ১৮ – ২০ সপ্তাহ সময়ে মা বাচ্চার এই নড়াচড়া প্রথম বুঝতে পারেন। তবে এক বাচ্চা যাঁদের আছে তারা ১৬ সপ্তাহ থেকেও বুঝা শুরু করতে পারেন। সাধারনত ১২ ঘন্টায় ১০ বার নড়াচড়া করা স্বাভাবিক।

২) গর্ভাবস্থায় ছেলে না মেয়ে কে বেশি সক্রিয়?

উত্তর: সুস্থ শিশুদের মধ্যে তারা কত ঘনঘন এবং কতটা জোরে “লাথি মারে।” লাথি সব ধরনের আন্দোলন অন্তর্ভুক্ত. গবেষণায় দেখা গেছে মেয়েরা ছেলেদের মতো প্রায়ই লাথি দেয়। যেসব শিশু গর্ভে প্রচুর লাথি মারে তারাও জন্মের পর বেশি সক্রিয় থাকে।

৩) কিভাবে গর্ভাবস্থায় বাচ্চার অবস্থান জানা যায়?

উত্তর: শিশুটি কোন অবস্থানে আছে তা কীভাবে বলবেন। খুঁজে বের করার সর্বোত্তম উপায় হল ডাক্তার বা মিডওয়াইফের সাথে কথা বলা। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় প্রতিটি অ্যাপয়েন্টমেন্টে, ডাক্তার বা মিডওয়াইফের ভ্রূণের অবস্থান পরীক্ষা করার জন্য ব্যক্তির পেট অনুভব করা উচিত।

আরও পড়ুন-

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ, ও প্রচলিত ধারনা

৮ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া ও সচেতনতা

Leave a Comment