ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ, ও প্রচলিত ধারনা

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে একটি নারী যখন গর্ভবতী হয় তখন তার মাঝে এই কৌতুহল কাজ করে। গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা গ্রাম অঞ্চলের অনেক মা, মাসিমা, পিসিমারা বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখে বলে দিতে পারে।

প্রচালিত ধারণা অনুযায়ী নানী, দাদীরা গর্ভবতী নারীরছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ বলে দিতে পারে। আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে জানা যায় গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে। এই পদ্ধতির কোন ক্ষতিকর দিক নেই এবং খুব সহজ পদ্ধতি।

গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ থেকে জানা যায় গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে। রবি রত্নাকরণ জানিয়েছেন ”যদি গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ প্রসবের আগে কম থাকে, তাহলে সাধারণত ,সেই মহিলা কন্যা সন্তান প্রসাব করেন। আর মহিলার রক্তচাপ যদি বেশি থাকে, তাহলে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।” 

আরও পড়ুনঃ ৮ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া ও সচেতনতা

গর্ভের সন্তান ছেলে হবে তা বুঝার লক্ষণ

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

প্রথম সন্তান যেন ছেলে হয় তা বেশিরভাগ পিতা মাতার মনে আকাঙক্ষা জাগে। ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমুহ অনেক পিতা মাতা গুগলে সার্চ করে জানতে চায়। নিম্নে ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ আলোচনা করা হলো:

১। বমির প্রবণতা

মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যদি কোন অন্ত: সত্ত্বা নারীর মর্নিং সিকনেস অর্থৎ বমির প্রবণতা বেশি থাকে। এই সময় মেয়ে অন্ত: সত্ত্বা নারী বেশি বমি করে কারণ মেয়ে হলে শরীরের হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়।

এই খবরটি প্রথম দ্যা ল্যানসেট নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তবে পরবর্তীতে এটি নিয়ে কোন গবেষণা করা হয়নি। ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যদি মনিং সিকনেস বা বমির প্রবণতা কম থাকে।

২। চুলের অবস্থা

কন্যা সন্তান হয় যদি কোন গর্ভবতী মায়ের চুলের সৌন্দর্যহীনতা ও উজ্জ্বল্যহীন হয়ে পড়ে এবং চুল খুব পাতলা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে। ছেলে সন্তান হয় যদি এর উল্টো লক্ষণ দেখা দেয়। 

৩। খাবারের অবস্থা 

মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো গর্ভবতী নারী মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি পছন্দ করে। আর ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ হলো গর্ভবতী নারী মিষ্টি বাদে অন্যান্ন খাবার বা লবণ জাতীয় খেতে বেশি পছন্দ করে।

৪। ঘুমের অবস্থা 

কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো যদি নারী নিজের অজান্তেই বেশিরভাগ সময় ডান দিকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে। আর ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ যদি এর উল্টোটি হয়।

৫। ইউরিনের পরিবর্তন

গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় ইউরিনের পরিবর্তন ও নানা সমস্যা দেখা দেয়। কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো যদি গর্ভবতী মায়ের মাঝে মাঝে প্রস্রাবের রং স্বাভাবিক না হয়ে সাদা ঘোলাটে হয়। আর পুএ সন্তান জন্মের লক্ষণ যদি ঠিক এর উল্টোটা হয়।

৬। বেবি বাম্প দেখে বোঝা

সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা অনেক সময় বেবি বাম্প দেখে বুঝা যায়। ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ মনে করা হয় যদি বেবি বাম্প নিচের ডদিকে ঝোলানো থাকে। আর কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ যদি এর উল্টোটা হয়। 

৭। মুড সুইং

গর্ভবতী মায়ের যদি কথায় কথায় রাগ এবং কান্না পেয়ে থাকে এবং তার ঘন ঘন মুড সুইং হয় তবে এটি কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ। আর পুএ সন্তান হওয়ার লক্ষণ যদি এর উল্টোটা হয়।

৮। পায়ের পাতা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া

গর্ভবতী নারীর  যদি নারীর পায়ের পাতা দিনের অধিকাংস সময় ঠান্ডা হয়ে যায় তবে এটি  ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ  অনেকে মনে করে। আর মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো যদি এর উল্টোটা হয়।

৯। ওজন বৃদ্ধি

গর্ভবতী নারীর ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ  হলো পেট আগের তুলনায় ফোলা দেখায় এবং দৈহিক ওজন বেড়ে যায়। গর্ভবতী নারীর যদি মুখ ফুলে যায় এবং শরীরে মেদের হাড় বৃদ্ধি পায় তবে এটি মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ ।

১০। ব্রণের প্রকাশ

হরমোনাল পরিবর্তন গর্ভকালীন সময়ে অনেক বেশি হয়ে হয়ে থাকে। হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। গর্ভবতী মায়েদের মুখে যদি  বেশি পরিমাণ ব্রণ দেখা যায় তাহলে ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ বলে ধারণা করা হয়। 

১১। স্তনের আকৃতি

গর্ভকালীন সময়ে মেয়েদের স্তনের আকৃতি বৃদ্ধি পায় স্তনে দুধ আসার কারণে। নারীদের বামদিকের স্তনের চেয়ে ডানদিকের স্তন যদি বড় হয়ে থাকে তবে গর্ভে ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ  বলে ধারণা করা হয়।

১২। হার্ট রেট

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার হার্ট রেট চিকিৎসকরা প্রায় মেপে থাকেন। এই সময় গর্ভের বাচ্চাটি ছেলে হলে হার্ট রেট প্রতি মিনিটে ১৪০ বিট থাকে।

১৩। খাওয়ার ইচ্ছা

গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষুধার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। গর্ভবতী মহিলা যদি টক বা লবণাক্ত খাবার বেশি খেতে পছন্দ করে তাহলে ধারণা করা হয় গর্ভে ছেলে সন্তান আছে।

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে 

গর্ভবতী মায়ের গর্ভের বাচচা যখন ৫ মাস চলতে থাকে তখন বাচ্চা বেশি নড়াচড়া করে। গর্ভবতী মা এই সময় বাচ্চার নড়াচড়া বুঝতে পারে না। তবে গর্ভবতী মা গর্বের বাচ্চার নড়াচড়া বুঝতে পারে ৬ মাসের শুরুর দিকে।

গর্ভবতী মায়েদের ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ এর একটি হলো সন্তান পেটের ডানদিকে নড়াচড়া করে। যদিও এই কথাটির বিজ্ঞান সম্মত কোন ভিত্তি নেই তারপরও অতীতে দশজনের মধ্যে সাত জনের এই কথাই ঠিক হয়েছে।

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ -ছেলে সন্তান কত সপ্তাহে হয় 

ছেলে বা মেয়ে কোন আলাদা আলাদা সপ্তাহে হয় না। একজন গর্ভবতী মায়ের ছেলে অথবা মেয়ে যেই সন্তানিই হোক না কেন ৩৭ সপ্তাহ সময় লাগে স্বাভাবিকভাবে তার গঠন সম্পন্ন হতে। এরপর নারীদের ডেলিভারি করা হয় প্রসব বেদনার উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ ডেলিভারি করা হয় যার যখন প্রসাব বেদনা উঠে।

কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ 

একজন গর্ভবতী নারী গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে এই চিন্তাটি প্রথমে থেকে সে করতে থাকে। যদিও ২০ সপ্তাহ পর আলট্রাসনো গ্রাফের মাধ্যমে জানা যায় গর্ভের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে।

তবে দাদী নানীরা প্রচালিত কিছু লক্ষণ দেখে ধারণা করে  বলে দিতে পারে কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ। নিম্নে কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ আলৈাচনা করা হলো:

১। যদি গর্ভবতী নারীর চুল দিনে দিনে রুক্ষ  শুষ্কহয়ে যায় এবং গর্ভবতী নারীর চুলর সৈন্দর্যতা এবং উজ্জ্বল্যতা হারিয়ে যায় তাহলে ধলে নিতে হবে  যে এটি কন্যা সন্তান হওয়াল লক্ষণ।

২। গর্ভবতী নারীর কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো নারীর চেহেরার সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি পাই।

৩। গর্ভবতী নারীর কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো যদি গর্ভবতী মহিলা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। 

৪। গর্ভবতী নারীর কন্যা সন্তান হওয়ার লক্ষণ হলো সকালে যদি বেশি অলসতা দেখা দেয়।  

এই ধারণা গুলো আদীমকাল থেকে প্রচালিত আছে যদিও এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই।

শেষ কথা

দাদী নানীরা প্রচালিত এসকল ধারণার ভিত্তিতে বলে থাকে মেয়ে সন্তান অথবা  ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ  এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই। বিজ্ঞানের মতে, যখন পুরুষ ও নারীর শুক্রানুর সাথে ডিম্বাণু মিলে যায় তখন নারীর গর্ভে সন্তান জন্ম নেয় এই সময় শশুর লিঙ্গ, চোখের মণির রং, চুলের রং ইত্যাদি নির্ধারণ হয়ে যায়। 

শিশুর যৌনাঙ্গ তৈরি হয় নারীর অন্ত: সত্তা হওয়ার ১১ সপ্তাহের মাথায়। গর্ভের শিশু ছেলে নাকি মেয়ে তা জানা যায়  ২০ সপ্তাহ পর আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে।

ছেলে সন্তান সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১। গর্ভে ছেলে সন্তান কোন দিকে থাকে?

উত্তরঃ যদি আপনার জরায়ুর ডান দিকে আপনার প্লাসেন্টা তৈরি হয়, তাহলে শিশুটি সম্ভবত একটি ছেলে , তত্ত্বটি দাবি করে। 

২। মর্নিং সিকনেস কখন হয়?

উত্তরঃ গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে (প্রথম 3 মাস) 10 জনের মধ্যে অন্তত 7 জন গর্ভবতী মহিলার মর্নিং সিকনেস থাকে। এটি সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রায় 6 সপ্তাহে শুরু হয় এবং প্রায় 9 সপ্তাহে এটি সবচেয়ে খারাপ হয়। 

৩। গর্ভাবস্থার লক্ষণ কতদিন পর প্রকাশ পায়?

উত্তরঃ গর্ভাবস্থার হরমোনগুলি 1 থেকে 2 সপ্তাহে বৃদ্ধি পায় এবং এর সাথে সম্পর্কিত প্রাথমিক লক্ষণগুলি হতে পারে, যেমন ফোলাভাব, মাথাব্যথা এবং ক্লান্তি। 1 থেকে 2 সপ্তাহে, শরীর রক্ত ​​উত্পাদন বৃদ্ধি করে, যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি এবং নিম্ন রক্তচাপ সহ গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়।

আরও পড়ুন-

৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া ও সচেতনতা

নাভি দেখে সন্তান বুঝার উপায় ও সঠিক পদ্ধতি

Leave a Comment