বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি (The right way to conceive a child) => সন্তান হলো সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক অমূল্য উপহার। যার জন্য প্রত্যেক দম্পতির পরম আকাঙ্ক্ষায় থাকে। বিয়ের পর দম্পতিদের প্রথম চিন্তা থাকে, সন্তান (child) কবে নিবেন?

বাচ্চা নেওয়ার উপযুক্ত বয়স (Suitable age for childbearing) নিয়ে সবার মাঝে দ্বিধা দ্বন্দ্ব থেকে থাকে। কারণ সন্তানের জন্ম দেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। মা হওয়ার জন্য প্রয়োজন প্রস্তুতি আবার সন্তান কে মানুষ করা,

সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য দরকার সঠিক সময় নির্বাচন। আগে মনে করা হতো মেয়েদের ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই প্রথমবার সন্তানধারণ করা উচিত, কিন্তু দিন বদলাচ্ছে। বর্তমান যুগে চিকিৎসকরা মনে করছেন, ২০ বছর নয়,

আরও একটু দেরি অর্থাৎ ২৪-৩০ এরমধ্যে মা হওয়া নিরাপদ। তবে ২০ বছরের আগে সন্তান নেয়া ঠিক নয় কারণ ২০ বছরের আগে নারীর শারীরিক বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয় না। যার ফলে সন্তান নিলে বাচ্চার নানা ধরনের অপুষ্টিজনিত রোগ ও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বর্তমানে পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, শারীরিক, মানসিক, আর্থিক অবস্থা বিবেচনা সবকিছু মিলিয়ে প্রথম সন্তান নেয়ার জন্য মেয়েদের ২৫ বছর হলো উপযুক্ত সময়। গবেষণায় দেখা গেছে যে ৩০ বছর পর নারীর প্রজনন ক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়।

আজকের আর্টিকেলের উদ্দেশ্য হলো বাস্তবসম্মত ধারণা নিয়ে আপনি যেন উপযুক্ত সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং সেই সিদ্ধান্ত যেন আপনার জীবনকে আরও মধুর করে তোলে। চলুন তাহলে বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি (The right way to conceive a child) জেনে নেওয়া যাক- 

আজকের আলোচ্য বিষয়

কত বছর বয়স থেকে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় (At what age does fertility decline?)

সাধারণত একটি ছেলে শিশু জন্মের সময় শরীরে শুক্রাণু নিয়ে জন্মায় না, ছেলে শিশুর বয়ঃসন্ধিকালে (During puberty) দেহে শুক্রাণু (sperm) তৈরি হওয়া শুরু হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরে প্রতিদিন প্রায় ৩০ কোটি শুক্রাণু তৈরি হয়। তবে বয়স যখন ৪১-৪৫ হয়ে যায়, তারপর থেকে একজন পুরুষের প্রজনন প্রতি বছর সাত শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ৫০ বছর বয়সের আগে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা (Male fertility) খুব একটা কমে না।

অপরদিকে নারীদের প্রজনন ক্ষমতা তাদের বয়সের উপর নির্ভর করে। প্রাকৃতিক নিয়মে একটি মেয়ে শিশু জন্মের সময় ১০-২০ লক্ষ ডিম্বাণু (ovum) নিয়ে জন্মায়, যা বয়সের সাথে সাথে কমতে শুরু করে। মেয়ে শিশু জন্মের সময়ে নির্দিষ্টই সংখ্যক ডিম্বাণুগুলো থেকে পরবর্তী জীবনে সন্তান ধারণ করে। 

প্রতি মাসিক চক্রে একটি করে ডিম্বাণু (ovum) পরিপক্ব হয়, এর সাথে আরো কিছু ডিম্বাণু এই প্রক্রিয়ায় পরিপক্ব হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বয়স যত বাড়ে ডিম্বাণুর সংখ্যা তত কমতে থাকে। যেহেতু জন্মের পরে নতুন করে কোনো ডিম্বাণু (ovum) তৈরি হয় না, ফলে নারীদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের প্রজনন ক্ষমতা ও কমতে থাকে। একজন নারীর বয়স যখন ৩৭ এর কোঠায় গিয়ে পৌছায় তখন ডিম্বাণু ২৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে। তাই ডাক্তারদের মতে, কোন নারী যদি ৪০ এরপর কনসিভ করার চিন্তাভাবনা থাকে তাহলে সব সময় ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। কারণ এই সময় বাচ্চা এবং মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বেশি থাকতে পারে।

বিয়ের পরপরই বাচ্চা নেয়ার সিদ্ধান্তে দম্পতির বয়স বিবেচনায় আনতে হবে। কেননা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী ২০ এর ঘরের নারী স্বাভাবিক নিয়মে সহজেই গর্ভবতী হতে পারেন তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশই বিষয়টি জটিল হতে থাকে। ৩৫ বছরের পরেও মহিলারা সফলভাবে গর্ভবতী হতে পারে অসম্ভব নয় তবে কিছু কিছু শারীরিক জটিলতার সম্ভাবনা থাকে। আপনি দুটি বা তার বেশি সন্তান নিতে চান তবে, আপনার উচিত সঠিক বয়সে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া।

আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা যা জানা জরুরী

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় ও বয়স (The right time and age to conceive a child)

বয়সভেদে বাচ্চা নেয়ার ক্ষমতার তারতম্য হয়ে থাকে। কোন বয়সে বাচ্চা নেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে চলুন সে বিষয়ে জেনে নেয়া যাক-

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় ও বয়স The right time and age to conceive a child

২০ – ২৯ বছর বয়সী নারীর প্রজননের সম্ভাবনা

  • -বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এই সময়টি হলো সন্তানধারণের আদর্শ সময়। জৈবিক ঘড়ি অনুযায়ী, ২৪ বছর বয়স হলো মেয়েদের জন্য গর্ভধারণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
  • -এই সময় জেনেটিক সমস্যা কম থাকে।
  • -জরায়ুতে সিস্ট, ফাইব্রোয়েট এর মত সমস্যা কম থাকে।

৩০ – ৩৫ বছর বয়সী নারীর প্রজননের সম্ভাবনা

  • -৩০-৩৫ এর মধ্যে অনেকেই সন্তান নেয়ার জন্য উপযুক্ত সময় মনে করেন। কারণ নারীরা এই সময় শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকেন।
  • -তবে ৩৫ এরপর থেকেই কিন্তু প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে।
  • -৩০ বছরের পর থেকে জরায়ুতে সিস্ট (Cysts in the uterus), ফ্রাইবয়েড হবার সম্ভাবনা ২০শতাংশ বেড়ে যায়।

৩৫ – ৪০ বছর বয়সী নারীর প্রজননের সম্ভাবনা

  • -৩৫ বছরের পরে গর্ভবতী হওয়ার ক্ষেত্রে নানান অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি থাকে। যেমন, ডাউন সিনড্রোম (Down syndrome) যুক্ত শিশুর জন্মের হার প্রতি ১২০০ জনের মধ্যে ১ জন।
  • -৩৫ এরপর গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
  • -৪০ এরপর থেকে ডিম্বাণুর গুনাগুন কমে যাওয়ার ফলে এই সময় সন্তান নিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সময় গর্ভধারণ করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
  • -এই বয়সে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- হাই ব্লাডপ্রেশার (High blood pressure), ডায়াবেটিস (Diabetes), প্লেসমেন্ট প্রবলেম প্রভৃতি কারণে গর্ভবতী হওয়া খুব ঝুঁকিবহুল হয়ে পড়ে।
  • -বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সহ্যশক্তির মাত্রাও কমে যায় তাই সন্তান জন্ম দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

পুরুষের ক্ষেত্রে প্রজননের সম্ভাবনা (Fertility potential in male)

পুরুষের যেহেতু ৪৫ বছরের পর প্রজনন ক্ষমতা (Fertility) কমতে থাকে, তাই এই বয়সের পর সন্তান নিতে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শিশু অটিজমে (Autism) আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক ধরণের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন বয়স্ক পুরুষ ও একটি শিশুর বাবা হতে পারবে অসম্ভব নয়। তবে বাস্তবতা হলো পুরুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রজনন ক্ষমতা ও হ্রাস পায় তখন নারীদের প্রাকৃতিক গর্ভধারণকে আরো কঠিন করে তোলে।

আরও পড়ুনঃ পিরিয়ডের ব্যাথা কমানোর উপায় ২০২৩

গর্ভধারণের সঠিক সময় ও বয়স (Correct time and age of conception)

প্রথমবার বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় কখন- এই প্রশ্ন থাকে সবার মনে। সাধারণত বলা হয় যে নারীর ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নেওয়া উচিত। তবে এই উত্তরটি সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ একটি দম্পতি কয়টি বাচ্চা চান, তার উপরে ভিত্তি করে প্রথম বাচ্চা নেওয়ার বয়সটাও ভিন্ন হবে।

যেমন একটি সন্তান চাইলে যে বয়সে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা শুরু করা প্রয়োজন, আবার তিনটি নিতে চাইলে তার অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও একটি দম্পতির জীবনের লক্ষ্য, পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, আর্থিক অবস্থা, ব্যক্তিগত বিষয়, সন্তান ধারণের সমস্যার উপরে সন্তান নেওয়ার আদর্শ সময় নির্ভর করে। এখানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে।

গর্ভধারণের সঠিক সময় ও বয়স Correct time and age of conception

১. আপনি যদি ১টি সন্তান নিতে চান

*  ৩২ বছর বয়সে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা  শুরু করতে পারেন। তাহলে সফলতার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত থাকে। 

* ৩৭ বছর বয়সে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে হয়ে যায় ৭৫ শতাংশ। 

*  আর ৪১ বছর বয়সে তা ৫০ শতাংশে নেমে যায়।

২. আপনি যদি ২টি সন্তান নিতে চান

* ২৭ বছর বয়স থেকে সন্তানের চেষ্টা করলে সফলতার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত থাকে।

* ৩৪ বছর বয়সে সেই সম্ভাবনা কমে ৭৫ শতাংশে চলে যায়। 

* বয়স ৩৮ বছর হয়ে গেলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

৩. আপনি যদি ৩টি সন্তান নিতে চান

* ২৩ বছর বয়সে চেষ্টা করতে শুরু করলে সফলতার সম্ভাবনা থাকে ৯০% শতাংশ।

* ৩১ বছর বয়সে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা শুরু করলে সেই সম্ভাবনা ৭৫% শতাংশ পর্যন্ত কমে নেমে আসে। 

* আর ৩৫ বছর বয়সে সম্ভাবনা কমে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হয়।

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি (The right way to conceive a child) সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ন আপনার ও আপনার সঙ্গীর। কেননা আপনি ৯০% শতাংশ সফলতার সম্ভাবনা চাইবেন, নাকি ৭৫ বা ৫০ শতাংশ চাইবেন – এটা একান্তই একটি দম্পতির নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কিছু কিছু দম্পতির কাছে সন্তান নেওয়াই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তারা হয়তো ৯০% শতাংশ সম্ভাবনা থাকার সময়টাকে বেছে নেবেন। আবার কোন কোন দম্পতি জীবনের বিভিন্ন অবস্থা বিবেচনা করে ৭৫% শতাংশ সম্ভাবনা থাকার সময়টাকে বেছে নেন। 

প্রজননের সম্ভাবনা কমে যাওয়ার লক্ষণ (Signs of decreased fertility)

সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়পক্ষের প্রজননের সম্ভাবনা কমে যাওয়ার কি কি লক্ষণগুলো দেখা যায় চলুন জেনে নেয়া যাক-

আরও পড়ুনঃ  প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি নারীদের ক্ষেত্রে (The correct way to conceive a child is for women)

নারীদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যার জন্য পরবর্তীতে কনসিভ করতে সমস্যা হয়। তবে ভয় পাবার কারণ নেই, এমন লক্ষণ দেখা দিলে সন্তান হবে না তা নয়। এটা সন্তান ধারণের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা মাত্র। তাই দেরি না করে নিচের এই সমস্যাগুলো যদি নিজের মধ্যে দেখতে পান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া শুরু করুন। লক্ষণগুলো হলো-

অনিয়মিত মাসিক (Irregular menstruation)

-২১ দিনের কম সময়ের মধ্যে মাসিক শুরু হওয়া।

– দীর্ঘ সময় পর পর মানে ৩৫ দিন পর পর যদি মাসিক হয়।

– হঠাৎ কয়েক মাস বন্ধ থেকে আবার যদি মাসিক হয়।

এই রকম সমস্যা দেখা দিলে এটা PCOS রোগের লক্ষণ। শরীরে অতিরিক্ত লোম হওয়া, মোটা হয়ে যাওয়াও PCOS রোগের লক্ষণ। 

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও ব্যথা (Excessive bleeding and pain)

মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হলে ও খুব ব্যথা করলে সেটা জরায়ুর (uterus) ফাইব্রোয়েটে এক ধরণের টিউমারের (tumor0 লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় ডিম্বাণু (ovum) জরায়ুর গায়ে বসতে পারে না এই টিউমারের জন্য। ফাইব্রোয়েটের ফলে ডিম্বাণুর মুখ আটকে যায় যার ফলে জরায়ুতে ডিম পৌছায় না। ফলে গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।

অন্যান্য

যদি মাসিকের সময় তলপেটে অনেক ব্যথা হওয়া বা অনেক রক্ত যাওয়া এন্ডোমিট্রিওসিস নামের একটা রোগের লক্ষণও হতে পারে। এই রোগের অন্যতম প্রধান জটিলতা হলো গর্ভধারণে সমস্যা হওয়া। এছাড়াও থাইরয়েড যদি কম কাজ করে তাহলে নারীর শরীরে ডিম ফোটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন আরও কিছু রোগ আছে যার লক্ষণ দেখা দিলে আগে থেকেই চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি পুরুষদের ক্ষেত্রে (The correct method of conceiving a child is for men)

অনেক সময় বাহির থেকে কোন রোগের লক্ষণ পাওয়া না গেলেও, পুরুষদেরও প্রজনন প্রক্রিয়ায় ব্যঘাত ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করে যখন ব্যর্থ হয় তখন ডাক্তাররা কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা উভয়কেই দিয়ে থাকে। পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমেই কি কি সমস্যা রয়েছে তা ধরতে পারা যায়।

  • বংশগত কোন সমস্যা থাকলে।
  • হরমোনাল ইমব্যালেন্স।
  • লাইফ স্টাইল।
  • অস্বাভাবিক স্পার্ম ফাংশন।

আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সহবাস

পরিশেষ কথা

যদি বলা হয় সন্তান নেওয়ার আর্দশ সময় কখন? বিশেষজ্ঞরা এবং মায়েরা সকলেই সম্মত হয়ে থাকেন। যে আসলে এই প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর নেই। বায়োলজিক্যাল (Biological) হিসাবে উত্তরটি সম্ভবত ২০ এর কোঠার প্রথম দিকে, তবে সবক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। কারণ মাতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেবার জন্য অসংখ্য বিষয় রয়েছে যেমন মানসিক পরিপক্কতা, অর্থনৈতিক স্থিতি, কেরিয়ার, কাজের চাপ সবকিছু মিলিয়েই জীবনের পরিকল্পনা সাজাতে হয়, যা এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম।

সুস্থ শিশু জন্মদানের জন্য স্বামী-স্ত্রী দুজনের বয়সের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত। নারীদের ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষদের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নিয়ে নেওয়া ভালো। সবচেয়ে ভালো হলো আপনি যা সঠিক মনে করেন তা করা এবং ভবিষ্যত সুন্দর করার লক্ষ্যে সুপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পরে বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে এবং বোঝতে পেরেছেন। শেষ পয়ন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

প্রশ্ন -১: বিয়ের কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া ভালো?

উত্তর: বিয়ের পর বাচ্চা হুট করে না নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী নেওয়া উচিত। বিয়ের ২-৩ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নেওয়া ভালো। তবে অবশ্যই স্বামী স্ত্রীর বয়সের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নারীর ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নেওয়া উচিত।

প্রশ্ন -২: নারীর প্রজনন ক্ষমতার বয়সসীমা কত?

উত্তর: গর্ভধারণের উপযুক্ত বয়স ২০-৩০.গবেষণা বলছে ৩০ বছরের পর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় ৫০ শতাংশ এবং ৩৫ বছরের পর তা কমে ২৫ শতাংশ হয়। 

প্রশ্ন -৩: পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় কোন বয়স থেকে?

উত্তর: পুরুষের সাধারণত ৪১-৪৫ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি বছর ৭ শতাংশ হারে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় । তবে ৫০ এর আগে খুব একটা কমে না ‌।

প্রশ্ন -৪: একজন নারীর শরীরে মোট কতগুলো ডিম্বাণু থাকে?

উত্তর: জন্মের পর একজন নারীর শরীরে প্রায় ১০-২০ লক্ষ ডিম্বাণু থাকে।বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে থাকে।৩৭ বছর বয়সী নারীর শরীরে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে গিয়ে ২৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে।

প্রশ্ন -৫: বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়?

উত্তর: বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে জন্মগত ত্রুটিযুক্ত এবং ডাউন সিনড্রোম সন্তান জন্মদানের হার অনেক বেশি হয়। এছাড়াও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, প্রসব-পূর্ব রক্তক্ষরণ ও প্রসবকালীন জটিলতা বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে হার কমে যায় এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম বেশি হয়।

আরও পড়ুন-

গর্ভাবস্থায় সহবাস করার নিয়ম

কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়

Leave a Comment