আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা

আমলকির উপকারিতা

আমলকির অনেক গুণাগুণ রয়েছে তবে সঠিকভাবে আমলকি খাওয়ার নিয়ম, আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা অনেকেই জানি না। আজকে সে বিষয় নিয়েই জানার চেষ্টা করব। দৈনন্দিন জীবনের ফলের উপকারিতা আমরা কম বেশি সবাই জানি। মৌসুমি ফলসহ অন্যান্য নানান ফল আমাদের শরীরের নানান উপকারে আসে।

ভিটামিনের অন্যতম উৎস হতে পারে এই ফল। সকলেরই কোন না কোন ফল পছন্দ, গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে রয়েছে আম, কাঠাল, লিচু, আনারস, পেপে, তরমুজ, বাংগী, জাম ইত্যাদি।

শীতকালীন ফলের মধ্যে রয়েছে কদবেল, আমলকি, আঙ্গুর, পেয়ারা, আনার ইত্যাদি। ফ্রোজেন পদ্ধতির দ্বারা এখন সব ফলই সারা বছর আমরা পেতে পারি তবে তাজা ফলের স্বাদ অন্যরকম হয়ে থাকে। এমনই একটি ফলের নাম আমলকি। 

আমলকি খাওয়ার নিয়ম

আমলকি সেবনের সবচেয়ে উত্তম সময় হলো খুব সকালে বা ভোরে। ঘুম থেকে ওঠেই  গরম পানিতে আমলকির রস এক চামচ ভালো করে মিশিয়ে খালি পেটে খেয়ে নিলেই হবে। এতে করে পেটের নানান সমস্যা যেমন বদ হজমের সমস্যা, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, পাইলসের সমস্যার সমাধান অনায়াসেই হতে পারে।

সবচেয়ে  ভালো হচ্ছে কাঁচা খাওয়া বা রসটুকু আলাদা করে পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম কারণ আমলকি যত শুকানো হবে ততই তার পুষ্টিগুণ কমতে থাকে। 

বিদ্রঃ রাতের বেলা আমলকির সেবন না করাই উচিত কারণ এটি ঠান্ডা এবং কস স্বাদযুক্ত যা রাতের বেলা পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ খেজুরের উপকারিতা এবং অপকারিতা

আমলকির ইংরেজি নাম 

আমলকির ইংরেজি নাম হলো Indian Gooseberry ( ইন্ডিয়ান গুসবেরি)। একে আমলাও বলা হয়ে থাকে। ভারতে আমলকিকে আমলা বলেই সম্বোধন করা হয়। আমলকির বৈজ্ঞানিক নাম হলো Phyllanthus Emblica ( ফিলানথাস এম্বলিকা)। এর স্থানীয় নাম হলো ধাত্রী, শ্রীফল, অমৃতকলা ইত্যাদি। 

আমলকি ও আমলকি গাছের বর্ণনা 

আমলকির উপকারিতা আমলকি গাছ সাধারণত আট (৮) থেকে আঠারো (১৮) মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এর পাতার ধরণ ঝরা প্রকৃতির হয়, পাতা এক থেকে দুই ইঞ্চি লম্বা এবং যৌগিক পর্বের হয়। পাতার রং হালকা সবুজ, হালকা হলুদ রঙ্গয়েরও হয়। এর পাতা, ফুল ও বাকল ব্যবহার করা হয়। 

আমলকি দেখতে মার্বেল বা তার চেয়ে কিঞ্চিত বড় হতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে একই গাছে স্ত্রী ও পুরুষ ফুল ধরে। আমলকির গাছ দেখতে অনেক বড় হয়।  আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত ও মাটিভেদে এর উচ্চতা ভিন্ন হতে পারে। গাছের পাতা দেখতে অনেকটা তেঁতুল পাতার মতো এবং এটি বনজ প্রকৃতির গাছ। 

ফলটি আঁশযুক্ত, একটু কসকস এবং খেতে টক স্বাদের। শুধু লবণাক্ত স্বাদ ছাড়া আমলকিতে সব স্বাদই পাওয়া যায়।  শরৎকালে এই গাছে ফুল ফোটে এবং শীতের প্রারম্ভে ফল ধরতে শুরু করে। ফলের আকৃতি বড় ছোট বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে এবং শীতের শেষ দিকে ফল পেকে যায়। ফলটির ভেতরে একটি বিচি থাকে এবং এখান থেকেই বীজ আরোহণ হয়। 

আমলকির অনেক গুণ রয়েছে। স্বাস্থ্য ও রুপচর্চায় আমলকির ব্যবহার দিন দিনে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বেশ কিছু উপকারি উপাদান রয়েছে। আমলকির উপাদানগুলো হলো 

  • প্রোটিন ০.৯ গ্রাম
  • ক্যালরি ৯৬
  • আইরন ১.২ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট ৬.৯ গ্রাম
  • ফ্যাট ০.১ গ্রাম 
  • ফাইবার ৩.৪ গ্রাম 

আয়ুর্বেদে আমলকির ব্যবহার

আয়ুর্বেদে আমলকিকে একটি সমৃদ্ধ জায়গা দেওয়া হয়েছে। এর ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এবং বিভিন্ন পণ্যে এর অভিনব ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। আয়ুর্বেদে আমলকির ব্যবহার নিচে দেখানো হলোঃ 

  • চুলের তেলে আমলকির ব্যবহার প্রচুর। টিভিতে বিজ্ঞাপনগুলো খেয়াল করলেই দেখা যাবে তেলের অনেকগুলো উপাদানের মিশ্রণের মধ্যে আমলকি/ আমলা অন্যতম এবং কিছু তেলের প্রধান উপাদান হিসেবেও আমলকির নাম থাকে
  • চুলের প্যাক তৈরি করতেও এর জুড়ি নেই। আমলকির গুড়ো বা পাউডার অন্যান্য আয়ুর্বেদিক উপাদান যেমন শিকাকাই, মেথি, ভৃঙ্গরাজ, নিমের গুড়োর সাথে মিশিয়েও চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়। 
  • ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্যে ক্রিমেও আমলকির ব্যবহার হয়।
  • বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে বিভিন্ন উপাদানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 
  • অ্যালোভেরার সাথে আমলকির রস মিশিয়ে সেবন করলে বদহজম ও অম্বলে শরীরে আরাম বোধ হয়।
  • আমলকি টুথ পেস্টেও ব্যবহৃত হয় এবং নিয়মিত ব্যবহারে পি এইচ (Ph) মাত্রা ভারসাম্যে থাকে। 
  • নিয়মিত আমলকি খেলে দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। 

আমলকি খাওয়ার নানান পদ্ধতি

আমলকির উপকারিতা আমলকি খাওয়ার নানান উপায় রয়েছে, যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন এর নিয়মিত ভক্ষণ ও সেবন স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ভূমিকা রাখে। আমলকি খাওয়ার বেশ কিছু পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলোঃ

  • আমলকি সরাসরি ধুয়ে কাঁচা ভক্ষণ করা যায়। স্বাদ বৃদ্ধির জন্যে আমলকির ওপর হালকা লবণ ছিটিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
  • এক চামচ হলুদ ও এক চিমটি লবণের সাথে আমলকি কেটে মিশিয়ে সেদ্ধ করে ছেকে মিশ্রণটি খেতে পারে। যাদের আমলকি সরাসরি খেতে সমস্যা হয় তারা এভাবে খেয়ে দেখতে পারেন। 
  • আমলার বিচি ফেলে, ফালি ফালি করে কেটে লবণ ছিটিয়ে, সামান্য লেবুর রস ছিটিয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে বেশ কিছুদিন, এরপর যখন একদম শুকিয়ে যাবে তখন বয়ামে ভরে সংরক্ষণ করতে হবে। এইভাবে ছয় মাস থেকে এক বছর সংরক্ষণ করা যায়। 
  • আমলা ছোট ছোট করে কেটে তার সাথে পুদিনা, ধনে পাতা, রসুন, পেয়াজ, কাঁচামরিচ, চিনি, লবণ, দৈ ও বেশ কিছু ভাজা বাদাম ব্লেন্ড করে পেস্ট করে নিলেই হয়ে যাবে আমলার সুস্বাদু চাটনী। 
  • গুড়, ধনে পাতা, রসুন, পেয়াজ, কাঁচামরিচ, চিনি, লবণ, হিং, মেথী দানা, সরিষা, আদা, কারি পাতা এক সাথে করে বানানো যেতে পারে চমৎকার সবজির তরকারি।

আরও পড়ুনঃ কালোজিরা ও রসুনের উপকারিতা

প্রতিদিন কয়টি আমলকি খাওয়া উচিত

প্রতিদিন টক খেতে কারোরই ভালো লাগে না, তবে যদি স্বাস্থ্যরক্ষার কথা বিবেচনা করা হয় তাহলে প্রতিদিন পঁচাত্তর (৭৫) থেকে নব্বই (৯০) গ্রাম আমলকির সেবন শরীরের জন্যে উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। এতে শরীরের বিপাক ক্রিয়া (Metabolism) বাড়ার সাথে সাথে ওজন কমাতেও সাহায্য করবে। 

আমলকির আচার কিভাবে বানাবেন

আমলকির উপকারিতা আমলকির আচার অনেকের বাড়িতেই নিত্যদিনকার খাবার। আবার টকের কারণে কেউ কেউ খেতেই পারে না তবে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলেই সুস্বাদু আচার তৈরি করে বয়ামে ভরে বেশ অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। 

পদ্ধতিটি নিচে দেখে নেব। 

  • এক কেজি আমলকি এনে সেগুলো একটি পানি ভর্তি পাত্রে ঢেলে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  •  দুই কাপ পানি দিয়ে আমলকিগুলোে একটি পাত্রে সিদ্ধ করে নিতে হবে। পাত্রটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে ১০ মিনিটের জন্যে। 
  • ১০ মিনিট পর সিদ্ধ হয়ে গেলে পানি ছেকে আমলকিগুলো আলাদা করে নিতে হবে। এতে করে আমলকির কস সরে যাবে।
  • এরপর বাটিতে নিয়ে থেতো করা যায় এমন কিছু যেমন চামচ বা ডাল ঘুটনি দিয়ে ভালো করে থেতো করে নিতে হবে।
  • এবার তৈরি করতে হবে আচারের মশলা এবং এর জন্যে যা যা লাগবেঃ 
  • একটি বাটিতে নিয়ে নিতে হবে চার পাঁচটা রসুন, কাঁচা মরিচ, এক টেবিল চামচ সরিষা, এক টেবিল চামচ ধনে গুড়ো আধা চামচ পাঁচফোড়ন এবং এক টেবিল চামচ শিরকা (Vinegar) দিয়ে ব্লেন্ডার বা পাটার সাহায্যে মিহি পেস্ট করে নিতে হবে।
  • এবার একটি কড়াইতে এক কাপ সরিষার তেল দিতে হবে, গরম হয়ে এলে ২-৩ টা শুকনা মরিচ, ১-২ টি দারুচিনি, ৩-৪ টির মতো এলাচ ও ১ টি তেজপাতা।
  • কিছুক্ষণ এই গরম মশলাগুলো ভেজে নেওয়ার পর মশলার সেই পেস্টটা কড়াইতে দিয়ে দিতে হবে। 
  • সামান্য ভাজা হয়ে গেলে দিয়ে দিতে হবে ১ চামচ মরিচের গুড়ো, ১/২ চামচ হলুদের গুড়ো, এরপর দিয়ে দিতে হবে থেতো করে নেওয়া আমলকি আর শেষে দিয়ে দিতে হবে ১/২ কাপ পরিমাণ চিনি। (কোন পানি দিতে হবে না)
  •  মিডিয়াম থেকে লো আঁচে নেড়ে চেড়ে নিতে হবে। 
  •  ওঠানোর আগে অল্প করে শুকনা মরিচের গুড়ো এবং বিট লবণ ছিটিয়ে দিতে হবে। 

এরপর বেশ কিছুক্ষণ নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।  আচার বয়ামে ভরে রেখে দিলেই এই আচার ভালো থাকবে ১ থেকে ১.৫ বছর।

আরও পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি উপকারিতা

নিয়মিত আমলকির ব্যবহার বা সেবন শরীরের নানান উপকারে আসতে পারে। কিছু কিছু উপকারিতা নিচে দেখানো হলোঃ 

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি (Vitamin C) যা পানিতে দ্রবণীয় এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
  • লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় দারুনভাবে কার্যকরী।
  • খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের সমস্যা কমাতে ও সমাধান করতে সাহায্য করে।
  • কিডনির জন্যে উপকারি।
  •  চুলের বৃদ্ধি ও মাথার ফাঁকা স্থানে চুল গজাতে সাহায্য করে।
  •  ওজন ঠিক রাখতে, ওজনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  •  এতে রয়েছে  এস্ট্রিনজেন্ট  (Astringent) যা ত্বককে টান টান রাখতে সাহায্য করে। 
  •  আমলকির রস নিয়মিত খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।
  •  লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
  •  আমলকির জুস এজমা ও ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যায় উপকারী।
  •  সর্দি কাশিতে দামী ওষুধ না খেয়ে সামান্য আমলকির রস খেলেই ঠান্ডা, কাশি ও সর্দি থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। 
  •  মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের শক্তি বর্ধন করে। 
  •  মুখের রুচি বাড়ায়।
  •  যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে বা ইনসমনিয়া ( Insomnia) এর রোগি তাদের আমলকির নিয়মিত সেবনে উপকার হবে। 
  •  শরীরের পেশী মজবুত করে। 
  •  বমি ও শারীরিক ব্যাথায় আরাম পাওয়া যায়। 
  •  আমলকিতে রয়েছে ফাইটো ক্যামিকেল যা চোখের জ্যোতির জন্যে উপকারি।আমলকির অপকারিতা
  • আমলকিতে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন সি যার অতিরিক্ত সেবনে পেটের নানান সমস্যা যেমনঃ কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, বদ হজম ইত্যাদি। 
  •  অনেকের আমলকিতে এলার্জি থাকে, তাই তাদের জন্যে আমলকির সেবন ক্ষতিকর হতে পারে। 
  •  যাদের মাথার ত্বক শুষ্ক তাদের অতিরিক্ত আমলকির সেবনে মাথার ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। 
  •  গুরুতর কোন সার্জারির পর আমলকি খেলে রক্ত পাতলা হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। 
  •  উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম থাকায় ডায়েবেটিস ও কিডনির রোগিদের অতিরিক্ত সেবনে সমস্যা হতে পারে।  ।

চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার

চুলের যত্নে যেভাবে ব্যবহৃত হতে পারে আমলকি চলুন জেনে নেয়ঃ

  • তেল হিসেবেঃ ১ কাপ নারিকেল তেল, সামান্য রেড়ির তেল ( Castor Oil), জয়তুনের তেল (Olive Oil), স্বল্প পরিমাণে মেথি ও কালোজিরা, শুকনো নিম পাতা এক সাথে করে চুলায় ২০ মিনিট জ্বাল করে ছেঁকে ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রোদে ২ দিন রেখে সপ্তাহে ৩ দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পরা, মাথার বিভিন্ন অংশে ফাঁকা হওয়া দূর হওয়া সম্ভব। 
  • চুলের প্যাক হিসেবেঃ কলা, ডিম, মেহেদী ও সামান্য আমলকির গুড়ো এক সাথে করে মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেই মসৃণ চুলের দেখা পাওয়া যাবে। 

আমলকির অপকারিতা

আমলকি ছোট্ট একটি ফল। এটি খেতে কষ ও তেঁতো, তবে আমলকি খাওয়ার পর মিষ্টি লাগে। আমলকির জুস খাওয়ার থেকে আমলকি চিবিয়ে খাওয়া অনেক ভালো। আমলকির বিশেষ গুণ রয়েছে। তবে প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে, তেমন তার ঠিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আমলকির ও বিশেষ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।

  • নিয়ম করে আমলকি খাওয়া ভালো। অতিরিক্ত মাত্রায় আমলকি খেলে পরে জ্বর – সর্দি কাশি হতে পারে।
  • আমলকি খেলে শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। খুব কম মানুষেরই আমলকি খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
  • অধিক মাত্রায় আমলকি খেলে, পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।
  • হার্টের জন্য ক্ষতিকর আমলকি। অতিরিক্ত মাত্রায় আমলকি খেলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগের সমস্যা থাকলে আমলকি খাওয়ার আগে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • সার্জারি হলে আমলকি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • প্রতিনিয়ত একটি থেকে দুটি আমলকি খাওয়া যায়। এর অধিক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ হতে পারে।
    স্তন্যদানকারী ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা আমলকি থেকে দূরে থাকুন।

বিশ্বের কোথায় সবচেয়ে বেশি আমলকি উৎপাদিত হয়

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমলকি উৎপাদন হয় ভারতে। নেপাল ও ভারতে বেশিরভাগ গ্রামীণ উপজাতির লোকেরা আমলকি সংগ্রহে এগিয়ে রয়েছে। ভারত মূলত প্রতি বছরে এক হাজার পঁচাত্তর (১০৭৫) মেট্রিক টন আমলকি উৎপাদন করে। এমনকি ভারত আমলকি সহ আমলকির আচার বহির্বিশ্বে রপ্তানিও করে থাকে।

সবশেষে এই কথাই বলব যে আমাদের আশেপাশে এমন অনেক প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যার দ্বারা আমাদের স্বাস্থ্য ও রুপচর্চার সমস্যার সমাধান করতে করি। শুধু শুধু ক্যামিকেলযুক্ত পণ্য শরীরে ও মুখের ত্বকে ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেও স্বাস্থ্য রক্ষা ও ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় অনায়াসেই ব্যবহার করা যায়। আমরা যেকোন উপাদান ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেব। 

উপসংহার

আমলকির মধ্যে কমলার থেকে ২০ গুন এবং আপেলের থেকে ১২০ গুন বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। একজন সাধারণ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। যা একটি আমলকি থেকে খুব সহজেই পাওয়া যায়। আমলকি সম্পর্কে আরও তথ্য জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আমলকির উপকারিতা, আমাদের ওয়েবসাইটে সব রকম ফলের উপকারিতা নিয়ে লিখা পোস্ট করা হয়। তাই আপনার প্রয়োজনীয় ইনফর্মাশনের জন্য আমাদের সাথে থাকুন।

আরও পড়ুন-

ডায়রিয়া হলে করণীয় কি ও প্রতিকার

সিরাম ব্যবহারের নিয়ম

Leave a Comment