টিন সার্টিফিকেট কি? ই-টিন (E-TIN)কী, কেন ও কীভাবে করতে হয়?

টিন সার্টিফিকেট 

 নিয়মিত আয়কর প্রদানকারী ব্যক্তিদের কাছে খুবই পরিচিত একটি নাম হলো TIN (Taxpayer Identification Number) বা টিন। করপ্রদান ছাড়াও ব্যবসায়িক, দাপ্তরিক এমনকি ব্যক্তিগত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজেও টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) এর প্রয়োজন হয়।

 টিন সার্টিফিকেটধারী ব্যক্তি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কাজ সহজেই সম্পন্ন করতে পারে।তবে TIN বা টিন সম্পর্কিত পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে অনেকেই এই মুল্যবান সার্টিফিকেটটি তৈরী করতে বিলম্ব করছেন। অনেকে আবার টিন সার্টিফিকেটের ব্যবহার ও বিধিমালা

নিয়ে সঙ্কোচে রয়েছেন। তাই আপনি যদি এই সার্টিফিকেটের উপযোগী হয়ে থাকেন তবে শীঘ্রই TIN এর জন্য আবেদন করে ফেলুন। কারণ সরকারি ও বেসরকারি নানা খাতে এই টিন সার্টিফিকেটের (tin certificate) ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। 

টিন সার্টিফিকেট কী

TIN (Taxpayer Identification Number)  এর বাংলা অনুবাদ হলো করদাতা শনাক্তকারী সংখ্যা। 

টিন হলো মুলত ১২ ডিজিটবিশিষ্ট একটি নম্বর যা দ্বারা বাংলাদেশের যেকোনো করদাতাকে শনাক্ত করা হয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, টিন(TIN) করদাতাদের পরিচয়পত্র হিসেবে কাজ করে।

করদাতাকে ১২ ডিজিটের নম্বরসম্বলিত যে সনদপত্র প্রদান করা হয় তা-ই হলো টিন সার্টিফিকেট (tin certificate)। যদিও এই সার্টিফিকেটে TIN (Taxpayer Identification Number)  ছাড়াও করদাতার বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ থাকে। যেমন: করদাতার নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, স্থায়ী ঠিকানা ইত্যাদি। সার্টিফিকেটটিতে একটি কিউআর কোড বসানো থাকে। 

তবে টিন সার্টিফিকেটের মুল ভিত্তি হলো ১২ ডিজিটবিশিষ্ট নম্বরটি, যা করদাতার পরিচয় বহন করে। যারা আগে টিন সার্টিফিকেট করে রেখেছেন তাদের সার্টিফিকেটের নম্বরটি ১২ ডিজিটের কম হতে পারে। এক্ষেত্রে পুরাতন টিন সার্টিফিকেটধারীকে নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে এবং তার জন্য একটি নতুন TIN (Taxpayer Identification Number) বা টিন বরাদ্দ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ সঞ্চয়পত্রের নতুন নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট কি কাজে লাগে

জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো টিন সার্টিফিকেটও (tin certificate) খুবই দরকারি ডকুমেন্ট। কারণ সরকারি ও বেসরকারি যেকোনো কাজে প্রয়োজন হতে পারে।

আয়কর রিটার্ন প্রদানসহ আরো ঠিক কোন কোন কাজে টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় তা জেনে নেওয়া যাক :

  • আয়কর রিটার্ন জমা দিতে প্রয়োজন হয়
  • নতুন ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স বানাতে অথবা পুরাতন ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়
  • কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে হলে সার্টিফিকেট দেখাতে হয়
  • যেকোনো ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পূর্বে প্রয়োজন হয়
  • ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে লাগে
  • সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত জমি, ফ্ল্যাট বা যেকোনো সম্পত্তি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন
  • মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পত্র নিবন্ধনের জন্য দরকার হয়
  • নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে চাইলেও সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় 
  • কোনো ব্যবসায়িক সংগঠন অথবা কোনো নিবন্ধিত সংগঠনের সদস্যপদ পেতে হলেও সার্টিফিকেট লাগে
  • এছাড়াও আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের টিন সার্টিফিকেট থাকা জরুরি 

টিন সার্টিফিকেট কাদের জন্য আবশ্যক

বয়স ও আয়ের উপর নির্ভর করে TIN বা টিন এর আবশ্যিকতা রয়েছে৷ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী আপনার মাসিক বা বার্ষিক আয় যদি করসীমার উপরে থাকা সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কর পরিশোধ করতে হবে এবং কর পরিশোধের জন্য টিন সার্টিফিকেট থাকা আবশ্যিক। 

একবার টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) বানিয়ে নিলে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। নিম্নে কিছু আবশ্যিক ক্ষেত্র তুলে ধরা হলো:

  • বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ম অনুসারে, কোনো ব্যাক্তি যদি মাসিক ১৬ হাজার টাকার উপরে আয় করে তবে সেই ব্যাক্তির TIN বা টিন থাকা আবশ্যক
  • পুরুষদের ক্ষেত্রে বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ টাকার উপরে হলে TIN থাকা আবশ্যক
  • নারী এবং ৬৫ বছরের উর্ধ্বে সকল নাগরিকের বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার উপরে হলে টিন থাকা আবশ্যক
  • প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বার্ষিক আয় ৪ লক্ষ টাকার উপরে হলে টিন থাকা আবশ্যক
  • করপ্রদান যোগ্য আয় না থাকা সত্বেও অনেক সময় TIN এর প্রয়োজন হয়। যেমন: ব্যাংক লোন, ব্যবসায়িক চুক্তি, গাড়ির মালিকানা, সংগঠনের সদস্যপদ, জমি রেজিষ্ট্রেশন ইত্যাদি।

টিন সার্টিফিকেট আবেদন জন্য কী কী লাগে

নিজের নামে টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) নিবন্ধনের জন্য ব্যাক্তিগত কিছু তথ্যাবলি ও ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। টিন সার্টিফিকেট বানানোর জন্য যা যা প্রয়োজন তা হলো:

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র 
  • আবেদনকারীর পিতা ও মাতার নাম
  • আবেদনকারী বিবাহিত হলে তার স্বামী বা স্ত্রীর নাম (বাধ্যতামূলক নয়)
  • আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকান ও বর্তমান ঠিকানার বিবরণ
  • আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর
  • কোনো কোম্পানির হয়ে টিন রেজিষ্ট্রেশন করতে চাইলে কোম্পানির নিবন্ধন নম্বর

আরও পড়ুনঃ ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন

বর্তমানে অনলাইনেই টিন (tin certificate) রেজিষ্ট্রেশন করা যায়। এছাড়া যেসব TIN বা টিন অনলাইনে নিবন্ধিত নেই ঐসব টিনসমূহ অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এর ফলে আবেদনকারীর টিন সার্টিফিকেটের সকল তথ্য অনলাইনে নিরাপদে সংরক্ষিত থাকে এবং হারিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

নিম্নে অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট (e-tin certificate) তৈরীর পদ্ধতি দেওয়া হলো:

ধাপ-১:

ই-টিন (e-tin certificate) নিবন্ধনের জন্য সর্বপ্রথম জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই উপরের ট্যাবে “REGISTER” নামক একটি অপশন চোখে পড়বে। অপশনটিতে ক্লিক করলেই আপনাকে রেজিষ্ট্রেশনের পৃষ্ঠায়(Page) নিয়ে যাওয়া হবে।

ধাপ-২:

এই পৃষ্ঠায় আসার পর আপনার কাজ হলো একটি ইউজার একাউন্ট (User Account) খোলা। ইউজার একাউন্ট খোলার নিয়ম:

  • প্রথমে ইউজার আইডি লেখা খালি ঘরটিতে নিজের আইডির নাম বসাতে হবে। 
  • খালি ঘরটিতে আপনাকে একটি গোপন পাসওয়ার্ড বসাতে হবে। পাসওয়ার্ড অবশ্যই ৮ অক্ষর অথবা সংখ্যার হতে হবে।  
  • এরপরের ঘরটিতে রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রায় ১৯ টির মতো প্রশ্ন দেওয়া থাকবে।   সেই প্রশ্নগুলো থেকে আপনি যে প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারবেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। এই খালিঘরে আপনাকে পূর্বে সিলেক্ট করা প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে
  • এরপরে ঘরটিতে আপনাকে নিজের দেশের নাম নির্বাচন করতে হবে
  • এরপরে থাকা মোবাইল নম্বর ও ইমেইল এড্রেসের ঘর দুটিতে নিজের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল এড্রেস বসিয়ে দিবেন। যদি কোনো ইমেইল এড্রেস না থাকে তবে ইমেইলের ঘরটি খালি ছেড়ে দিন। 
  • এরপর নিচের দিকে  ক্যাপচা বা অক্ষরসম্বলিত যে ছবিটি রয়েছে ঐ ছবি হতে অক্ষরগুলো শনাক্ত করে নিচের খালিঘরটিতে বসিয়ে একেবারে নিচের দিকে কোনায় থাকা রেজিস্ট্রার (Register) বাটনে ক্লিক করলে আপনার কাছ থেকে একটি কোড চাওয়া হবে। এই কোডটি আপনাকে এসএমএসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এসএমএস থেকে কোডটি দেখার পর তা কোড বসানোর জন্য যে খালিঘরটি রয়েছে সেখানে বসাতে হবে
  • কোড বসানো সম্পন্ন হলে নিচে থাকা Activate বাটনে ট্যাপ করার সাথে ই-টিন রেজিষ্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ইউজার একাউন্ট চালু হয়ে যাবে

ধাপ-৩:

একাউন্ট চালু হলে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে একটি মেসেজ দেখাবে এবং এরপর আপনাকে আবারও নতুন করে লগইন(Login) করতে হবে। নতুন করে লগইন(Login) করার নিয়ম:

  • প্রথমেই উপরের ট্যাবে থাকা লগইন(Login) অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে
  • লগইন(Login) অপশনে ক্লিক করলে দুটি খালিঘর আসবে। এর মধ্যে প্রথম যে খালিঘরটি রয়েছে তাতে আপনার ইউজার আইডি (User Id) এর নাম বসাতে হবে। 
  • এরপর নিচের খালিঘরটিতে পাসওয়ার্ড বসাতে হবে।
  • সঠিক ও শুদ্ধভাবে ইউজার আইডি (User Id) ও পাসওয়ার্ড (Password) বসানোর পর নিচের দিকে থাকা লগইন (Login) বোতামে চাপ দিলে আপনার লগইন( Login) সম্পন্ন হবে

ধাপ-৪:

লগইনের পর আপনার সামনে একটি নতুন পৃষ্ঠা (Page) ওপেন হবে। পৃষ্ঠার বাম অংশের উপরের দিকে থাকা  “TIN Application” নামক অপশনটিতে ট্যাপ করার মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। 

  • “TIN Application” আপশনটিতে ট্যাপ করার পর একাধিক খালিঘর সম্বলিত একটি নতুন পৃষ্ঠা ওপেন হবে
  • করদাতার ধরণ বা Taxpayer’s Type নির্বাচনের জন্য দুটি খালিঘর থাকবে। ব্যাক্তিগত পর্যায়ের করদাতা হলে দুটি খালিঘরেই “Individual” সিলেক্ট করতে হবে। আর যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের হয়ে নিবন্ধন করতে চান তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুযায়ী  “Company” অথবা “Partnership Firm” সিলেক্ট করতে হবে
  • এরপর “Registration Type/রেজিষ্ট্রেশন ধরণ” ঘরটিতে গিয়ে “New Registration” সিলেক্ট করতে হবে 
  • সবগুলো ঘর সঠিকভাবে পূরণ করার পর নিচের দিকে থাকা “Go to Next” নামক অপশনটিতে ট্যাপ করতে হবে

আরও পড়ুনঃ আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম

ধাপ-৫:

“Go to Next” অপশনে ট্যাপ করার সাথে সাথে আরেকটি নতুন পৃষ্ঠা(Page) ওপেন হয়ে যাবে। 

এই পৃষ্ঠায় যা যা পূরণ করতে হবে:

  • “Taxpayer’s Name/করদাতার নাম” নামক অপশনটিতে নিজের নাম বসাতে হবে 
  • এরপরের খালিঘরে নিজের লিঙ্গ বা Gender বাছাই করতে হবে। আবেদনকারী পুরুষ হলে Male সিলেক্ট করতে হবে এবং আবেদনকারী মহিলা হলে Female সিলেক্ট করতে হবে 
  • এরপরের ঘরটিতে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বা NID Number বসাতে হবে
  • এরপরের ঘরে নিজের জন্মতারিখটি বসাতে হবে। 
  • এরপরের ঘরে নিজের পিতার নাম বসাতে হবে
  • পিতার নামের পরের ঘরটিতে মাতার নাম বসাতে হবে
  • এরপরের ঘরটিতে নিজের স্বামী / স্ত্রীর নাম বসাতে হবে (যদি থাকে)
  • এরপরের ঘরগুলো হলো যথাক্রমে “Current Address” বা বর্তমান ঠিকানা, “Permanent Address” বা স্থায়ী ঠিকানা ও সবশেষে “Other Address” বা অন্যান্য ঠিকানা (যদি থাকে)। প্রত্যেকটি ঘর সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে
  • সবগুলো ঘর সঠিকভাবে পূরণ করার পর নিচে থাকা “Go to Next” অপশনে ক্লিক করতে হবে

ধাপ-৬:

“Go to Next” অপশনে ক্লিক করার পর একটি নতুন পৃষ্ঠা(Page) ওপেন হবে। এরপর যা করতে হবে:

  • নতুন পৃষ্ঠাটিতে পূর্বে সাবমিটকৃত আপনার সকল তথ্যসমূহ নিরক্ষণের জন্য পুনরায় দেখানো হবে
  • পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আপনার সকল তথ্য সঠিক কিনা মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে নিবেন। কোনো তথ্য ভুল থাকলে নিচে থাকা “Back to Previous” অপশনে ক্লিক করে সংশোধন করে নিতে পারবেন
  • তথ্যসমূহের নিচেই একটি ছোট্ট খালিঘর দেখতে পাবেন যার পাশে ইংরেজি একটি বাক্য লেখা থাকবে যার বাংলা অর্থ হলো “উপরে উল্লিখিত সকল তথ্য সঠিক ও সম্পূর্ণ এবং আমার কোনো টিন সার্টিফিকেট নেই”। এ ঘরটিতে একটি টিক চিহ্ন দিবেন। 
  • এরপর একেবারে নিচের দিকে থাকা “Submit Application” অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে

“Submit Application” অপশনে ক্লিক করার সাথেই আপনার আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর “View Certificate” অপশনে ট্যাপ করলে আপনার অনলাইন টিন সার্টিফিকেটটি (e-tin certificate) স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হবে। এটিই হলো আপনার ই-টিন। আপনি চাইলে প্রিন্ট করে বের করে নিতে পারেন।

করপ্রদানে অক্ষম হওয়া সত্বেও টিন সার্টিফিকেট করা উচিত

কোনো ব্যাক্তি যদি করপ্রদানে অক্ষম হয় অর্থাৎ যদি তার বার্ষিক আয় বা মাসিক আয় সরকার প্রদত্ত করসীমার নিচে হয় তবে টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) করা উচিত নয়। 

এর কারন হলো একবার সার্টিফিকেট করে ফেললে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। আপনার আয় করযোগ্য সীমায় থাকুক অথবা না থাকুক, আয়কর রিটার্ন প্রদান করা বাধ্যতামূলক।

টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) করার পরেও যদি আপনি আয়কর রিটার্ন দাখিল না করেন তবে আপনার উপার্জিত অর্থ কালো টাকা হিসেবে বিবেচনা হবে এবং আপনি মামলা-মোকদ্দমায় ফেঁসে যেতে পারেন। তাই করযোগ্য আয় না থাকলে সার্টিফিকেট করা হবে বোকামি।  

শেষকথা

টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) বর্তমান সময়ে করদাতাদের জন্য যতটা স্বস্তির ঠিক ততটাই দরকারী। কারণ আয়কর রিটার্ন দাখিল ছাড়াও ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক নানা কারণে এই সার্টিফিকেটের প্রয়োজন পড়ে। সেইসাথে করদাতারা করপ্রদানের ক্ষেত্রেও বাড়তি কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। 

তাই একজন দায়িত্বশীল করদাতা হিসেবে টিন সার্টিফিকেট (tin certificate) করা নাগরিকদের মৌলিক দায়িত্ব। তবে নিজের আয়ের হিসাব নিকাশ মিলিয়েই এই সার্টিফিকেট করা উঠিত। তবে সামান্য কিছু অসুবিধাকে একপাশে সড়িয়ে রাখলে এটি বলাই যায় যে, বর্তমান সময়ে নাগরিকদের অন্যতম এক অনুষঙ্গের নাম হলো টিন সার্টিফিকেট। 

টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ’s

১। টিন সার্টিফিকেট থাকলেই কি কর দিতে হবে?

উত্তর: এখন টিআইএন থাকলেই আপনার করযোগ্য আয় থাকুক না–থাকুক আপনাকে আয়কর রিটার্ন দিতে হবে

২। বাংলাদেশে কর শনাক্তকরণ নম্বর কি?

উত্তর: এটি 9 সংখ্যার একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা যার মাধ্যমে একজন করদাতাকে চিহ্নিত করা যায় ।

৩। টিন সার্টিফিকেট করতে কত টাকা লাগে? 

উত্তর: নিজের নামে নিবন্ধিত টিন সার্টিফিকেট করতে কোন টাকা লাগে না। 

৪। টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম কি?

উত্তরঃ করদাতার আয় আয়কর আরোপযোগ্য সীমার নিচে থাকলে টিন বাতিলের আবেদন করতে পারেন।

আরও পড়ুন –

মেয়েদের জন্য ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাশন টিপস

কলা খাওয়ার উপকারিতা

Leave a Comment