সর্দির ট্যাবলেট এর নাম, সেবনবিধি ও সঠিক চিকিৎসা

সর্দির ট্যাবলেট এর নাম

সর্দি কাশি সাধারণ একটি সমস্যা। তবে সর্দি কাশি মাঝে মাঝে আমাদের অনেক ভুগিয়ে থাকে। সর্দি কাশির সমস্যা আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে বিশেষ করে শীত ও বসন্তকালে সমস্যাগুলো বেশি বেড়ে যায়।

সাধারণত সর্দি হলো রাইনোভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি যা শ্বাস নালীর ভাইরাস সংক্রমণ। সর্দি হলে যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পাই তার মধ্যে অন্যতম হলো হাঁচি ,গলা ব্যাথা, কাশি, সর্দি কখনোও হালকা জ্বর দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। 

সর্দির কারণে অনেক সময় শরীরে জ্বর আসতে পারে আবার নাও পারে। তবে ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিভিন্ন লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায় যেমন: শরীর ম্যাজম্যাজ করে, গলাব্যাথা, মাথাব্যাথা, সর্দি এবং কাশি ইত্যাদি। সর্দি কাশিতে এন্টিবায়টিক কাজ করে না কারণ এটি ভাইরাস সংক্রামণের কারণে হয়ে থাকে। সর্দি কাশি গড়ে ১৮ দিন পর্যন্ত থাকে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা সর্দির ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। এর সাথে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে এই সর্দি কাশি কমানো যায় তা জানবো।

আরও পড়ুনঃ টাইফয়েড লক্ষণ, কীভাবে ছড়ায় ও প্রতিরোধে করণীয়

সর্দির কারণ 

সর্দির ট্যাবলেট এর নাম

সর্দির ট্যাবলেট এর নাম জানার আগে আমাদের সর্দির কারণ সর্ম্পকে জানতে হবে। সর্দি কারণ জেনে সর্দির ট্যাবলেট খাওয়া উচিৎ। নিম্নে সর্দির কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১। ভাইরাস সংক্রমণ

২। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ

সর্দির লক্ষণ 

১। সর্দি হলে প্রথম যে উপসর্গটি দেখা যায় তা হলো নাক দিয়ে পানি ঝড়তে থাকা।

২। কোন খাবার  খাওয়ার সময় গন্ধ নেয়ার পর পরিবর্তন টের পাওয়া যায়।

৩। সর্দি হলে অনবরত পানি ঝরার কারণে নাক ভারি হয়ে আসে।

৪। শরীরে জ্বর হওয়া এবং জ্বর জ্বর অনুভাব হওয়া। 

৫। শরীরে ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভতি হওয়া কিংবা শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়।

৬। কাশি

৭। গলা ব্যাথা

৮। মাথা ব্যাথা

৯। জ্বর 

১০। স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভতি কমে আসা 

১১। কানে ও মুখে চাপ অনুভাব করা 

১২। মাংসপেশিতে ব্যাথা

১৩।নাক বন্ধ হওয়া

১৪। হাঁচি 

সর্দির ট্যাবলেট এর নামসমূহ

সর্দি জ্বর আসাটা স্বাভাবিক বিষয়। বর্তমানে সর্দি জ্বর নিরাময়ের জন্য বেশ কিছু ট্যাবলেট তৈরি হয়েছে। নিম্নে কিছু  সর্দির ট্যাবলেট এর নাম আলোচনা করা হলো:

১। হিস্টাসিন (Histachin)

২। হিস্টালেক (Histalex)

৩।ফেক্সো  (Fexo 60)

৪। ডেসলর ( Dslor)

৫। এন্টিবায়টিক  (Antibiotic)

৬। এইচ প্লাস  (Ace+)

৭। নিউসিলর (Neocilor)

৮। ডেসলর (Napa Extend)

৯। এন্টিবায়টিক (Flamex 400)

১০। নিউসিলর (Neocilor)

১২। নাপা এক্সটেন্ড (Napa Extend)

১৩।ফিলামেন্ট (Flamex 400)

১৪।মেটারিল (Metril)

সর্দির ট্যাবলেটের নাম স্কয়ার 

সর্দির জন্য স্কয়ার কোম্পানির যে সকল ট্যাবলেট আছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

1. Carva (75)

2. Cefotil Plus

3. Cinaron

4. Cinaron Plus

5. Cefotil (250)

প্রেসক্রিপশন ছাড়া OTC যুক্ত ওষুধগুলো ফার্মেসিতে থেকে কেনা যায়। নিম্নে OTC যুক্ত ওষুধগুলোর নাম আলোচনা করা হলো: 

১।  অ্যাসিটামিনোফেন (টাইনেল)

২।  আইবুপ্রোফেন ( মোট্রিন, এডভিল)

৩। ন্যাপরক্সন (অ্যালেভা )

৪। ডেক্সট্রোমেথরফান (রোবিটাসিন)

৫। গায়ফেনেসিন (মুসিনিক্স)

৬। সিউডোফেড্রিন (সুডাফেড)

সর্দির সিরাপের নাম

সর্দির ট্যাবলেট এর নাম অনেকে আমরা জানি কিন্তু সিরাপের নাম জানি না। অনেকে সর্দির জন্য সিরাপ খেয়ে থাকে। নিম্নে কার্যকারী সর্দির সিরাপের নাম আলোচনা করা হলো:

১। এডোভাস

২। রেকোমকফ

৩। তুসকা

এই তিনটি সর্দির জন্য খুব ভালো সিরাপ। এই সিরাপগুলো কাশির জন্যও কার্যকারী হয়ে থাকে। এগুলো সিরাপ খেলে আর কোন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

ডেসলর ট্যাবলেট 

খাওয়ার নিয়ম: খুব কার্যকারী একটিসর্দির ট্যাবলেট এর নাম হলো ডেসলর।  যাদের বয়স ১২ বছরের ঊর্ধ্বে কেবল তারাই সেবন করতে পারে এই ট্যাবলেট। এই ট্যাবলেট প্রতিদিন ১ টি করে খেতে হবে।

এই ঔষুধটি প্রস্তুত করেছেন ওরিয়ন ফার্মা লিমেটিড। ডেসলর ওষুদের গ্রুপের নাম হলো ডেসলোরাটাডিন। ডেসলর শিশুদের ঔষুধটি শিশুদের জন্য সিরাপ এবং ড্রপ আকারেও পাওয়া যায়।

চিকিৎসকের পরমর্শ অনুযায়ী যেসব শিশুদের বয়স ৬ মাস বা তার বেশি তারা এই সিরাপটি সেবন করতে পারে। চিকিৎসকের পরমর্শ নিয়ে গর্ভকালীন ও স্তন দানকারী মায়েরা সেবন করতে পারবে এই ওষুধ।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : ডেসলর ট্যাবলেটের পার্শ্ব প্রতিক্রয়া গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো: 

১। বমি বমি ভাব 

২। মাথা ব্যথা

৩। অবসাদগ্রস্ত হওয়া

৪। বদহজম

৫। ঝিমুনি ভাব

৬। মাংস পেশির ব্যাথা

৭। গলবিলের প্রদাহ 

মূল্য: ডেসলর ট্যাবলেটের প্রতি পিচের মূল্য ৫ টাকা।

ফেক্সো ট্যাবলেট

খাওয়ার নিয়ম:  একটি কার্যকারী সর্দির ট্যাবলেট এর নাম হলো ফেক্সো ট্যাবলেট। ফেক্সো ট্যাবলেটের নাম হলো ফেক্সোফেনাডিন হাইড্রোক্লোরাইড। এই ট্যাবলেটটি (১২০ মি.গ্রা.) প্রতিদিন ১ বার করে সেবন করতে হয়।

অনেকে এই ট্যাবলেট সকাল এবং রাতে একটি ট্যাবলেট ২টি অংশে বিভক্ত করে সেবন করতে পারেন। ফেক্সো টেবলেট সাধারণত ১২ বছরের অধিক বয়সী শিশুরা এবং প্রাপ্তবয়স্করা সেবন করতে পারে।

ফেক্সো সিরাপ বাচ্চারা সেবন করতে পারে। দৈনিক ৬০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট ৬-১১ বছর বয়সী শিশুরা সেবন করতে পারে।

পাশর্ব প্রতিক্রিয়া: এই ট্যাবলেটে এ পর্যন্ত কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

বিশেষ সতর্কীকরণ : কোন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরমর্শ নিয়ে ফেক্সো ট্যাবলেট সেবন করবেন।

সর্দির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

কিছু নিয়ম অবলম্বন করে সর্দি কমানোর জন্য ঔষধ গ্রহণ করতে পারেন। সর্দি কমানোর জন্য যে কোন একটি সর্দির ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।

১। সর্দির ট্যাবলেট সকাল ও রাতে দুইবার খাওয়া যেতে পারে।

২। খাবার খাওয়ার পর সর্দির ট্যাবলেট খেতে হবে।

৩। ভরপুর পেটে সর্দির ট্যাবলেট খাওিয়া উচিত নয়।

৪। এক্সপায়ার ডেট লক্ষ করতে হবে ট্যাবলেট গ্রহণের পূর্বে।

৫। সর্দির ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বে গ্যাসের ট্যাবলেট খেতে হবে এবং ট্যাবলেট খাওয়ার পর বেশি পরিমাণ পানি পান করতে হবে।

সর্দি হলে করণীয়

সর্দি লাগলে সর্দির ট্যাবলেট এর নাম জেনে আমরা ওষু খাওয়া শুরু করি। কিছু ঘরোয়া খাবার আছে যা সর্দি হলে আমরাদের খাওয়া উচিৎ। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো:

১। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।

২। সর্দির জন্য মধু খুব কার্যকারী।

৩। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।

৪। জিংক সমৃদ্ধ খাবার প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।

৫। সর্দি নিরাময়ের জন্য হট স্যালািইন পান করতে হবে।

৬। প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার পান করতে হবে।

৭। লেবু ওমধুর মিশ্রণ

৮। সিদ্ধ গাজন

৯। কলা

১০। চিকেন স্যুপ

১১।  ডিম

১২। রসুন

১৩। তরল জাতীয় খাদ্য

১৪। কমলালেবুর রস

১৫। সবুজ শাকসবজি

১৬। আমলকি

১৭। জলপাই

১৮। আঙ্গুর

১৯। পেয়াড়া

২০। আমড়া  

সর্দি হলে বর্জনীয় 

১। স্ট্রাবরি ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২। টক জাতীয় ফল খেলে গলায় সমস্যা দেখা দেয় তাই এ জাতীয় ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩। সর্দি হলে আখরোট, কলা, পেঁপে ফল ,দুধ, দই এবং চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।

৪। সর্দি হলে কফি এবং চা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

৫। সর্দি লাগলে অতিরিক্ত তেলে ভাজা পোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৬। শুকনো খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে।

শেষ কথা

সর্দির সমস্যা হলে প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার। সর্দির ট্যাবলেট এর নাম জানা থাকলেও তা সেবন করা ঠিক না। তবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সর্দি ভালো না হলে সাধারণ ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সর্দির ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

সর্দির ট্যাবলেট সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ 

১। সর্দি কাশির ভালো ঔষধ কি?

উত্তরঃ এছাড়া রয়েছে ক্লোরোহেক্সিডিন মাউথওয়াশ, ক্লোট্রিমাজোল ও একটি অ্যান্টিফাংগাস ক্রিম। কাশির জন্য ডেক্সট্রোমেথরফান হাইড্রোব্রোমাইড লজেঞ্জ।

২। সর্দি কমানোর ঘরোয়া উপায় কি?

ফ্লু ও সাধারণ সর্দি-কাশির চিকিৎসা

  • বিশ্রাম নিন ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
  • শরীর উষ্ণ রাখুন
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানির পাশাপাশি তরল খাবারও উপকারী। …
  • গলা ব্যথা উপশমের জন্য লবণ মিশিয়ে কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করুন। …
  • কাশি উপশমের জন্য মধু খেতে পারেন।

 ৩। তিনটি ট্যাবলেট কি কি?

উত্তরঃ কোল্ড 3 ট্যাবলেট কিভাবে কাজ করে। Cold 3 Kit হল তিনটি ওষুধের সংমিশ্রণ: Cetirizine, Paracetamol এবং Phenylephrine , যা সাধারণ ঠান্ডার উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি দেয়।

৪। ২৪ ঘন্টায় সর্দি দূর করার উপায়?

উত্তরঃ সাধারণ সর্দি-কাশির জন্য এখনও কোনও পরিচিত প্রতিকার নেই। যাইহোক, আপনি কিছু প্রতিশ্রুতিশীল ভিটামিন এবং সম্পূরক গ্রহণের পাশাপাশি ভাল স্ব-যত্নে নিযুক্ত করে আপনার অসুস্থতার সময়কাল কমাতে পারেন।

আরও পড়ুন-

বাচ্চাদের কাশির সিরাপ, ব্যবহারবিধি ও সতর্কতা

সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও প্রয়োজনীয়তা

Leave a Comment