কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা, কিসমিসের ব্যবহার

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা সবাই জানি, কিসমিস অনেক উপকারী। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটিই রয়েছে। এটি শরীরের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল দূর করে। কিসমিসে আছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল।

কিসমিস না-খেয়ে শুধু কিসমিসের পানি খেলেও এই ভিটামিন ও মিনারেল শরীর গ্রহন করতে পারে। কিসমিসের ব্যবহার বহু প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। মিশর, গ্রীস এবং রোমের মতো প্রাচীন সভ্যতায়

কিসমিসের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আঙ্গুরকে রোদে শুকনো করে তৈরি করা হয় এই কিশমিশ। 

আঙ্গুরকে রোদে শুকানোর ফলে আঙ্গুরের মধ্যে থেকে জল বেরিয়ে যায়। এই ভাবে কিসমিসকে আমরা অনেকদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখতে পারি। এমনকি এই প্রক্রিয়ার কিসমিসের গন্ধ, বর্ণ ও স্বাদ সুরক্ষিত থাকে।

আজকের আর্টিকেলে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা, কিসমিসের পুষ্টিগুণ, কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

আরও পড়ুনঃ খাঁটি মধু চেনার উপায়, কৌশল ও সঠিক পদ্ধতিসমুহ

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। সব খাবারের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। যে সব উপকারিতা রয়েছে-

১.হার্টের জন্য

হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই কিসমিস রাখতে হবে। কিসমিসে থাকা পুষ্টি আপনার হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। কিসমিসে থাকা ফাইবার পরিপাকতন্ত্রে হজমের জন্য খুব উপকারি। 

কিসমিসে থাকা ফাইবার আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। শরীরে কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রার কারণে শিরা ও ধমনীতে ফ্যাট বা চর্বি জমে যায় ফলে শিরা ও ধমনীর মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিক রক্তের প্রবাহ করতে সমস্যা হয়। 

হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় ফলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভবনা বেড়ে যায়। কিসমিস রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যৌগ যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ফেনোলিক যৌগ যা আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে থাকে। 

ফলে হৃদ রোগের ঝুঁকি কমে যায়। কিসমিসে রয়েছে পটাসিয়াম, গবেষণায় দেখা গেছে যে, পটাসিয়াম উচ্চ রক্ত চাপ কমিয়ে হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে। 

এছাড়াও কিশমিশে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম, যা হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সরবরাহ করে। 

ম্যাগনেসিয়াম হার্টের পেশী ও স্নায়ুর কার্যকারিতা সঠিকভাবে সচল রাখে। ক্যালসিয়াম পেশী সংকোচন এবং শক্তিশালী হাড় তৈরিতে সাহায্য করে। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে কিসমিসের এটি প্রধান উপকারিতা।

২.ওজন কমাতে সাহায্য করে 

আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন কিসমিস খেতে হবে অব্যশই। কিসমিসে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে। 

ফাইবার জাতীয় খাবার পেটকে অনেক সময়ের জন্য ভর্তি রাখতে পারে। ফলে বেশি কিছু খাওয়ার প্রয়োজন হবে না। এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

এছাড়া ফাইবার জাতীয় খাওয়ার আমাদের হজমে ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতাগুলোর মধ্যে কিসমিসের ব্যবহার ওজন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।  

৩.রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে

কিশমিশ পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস, পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

পটাসিয়াম শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহয়তা করে। যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। 

কিসমিসে রয়েছে ফাইবার, যা শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল হার্টের জন্য খুব ক্ষতিকর, কোলেস্টেরলের ফলে হার্টের রক্তচাপ বেড়ে যায়। 

এছাড়া কিসমিসে থাকা ম্যাঙ্গানিজ রক্তনালিকাগুলোকে শিথিল করে রক্তের প্রবাহের উন্নতি করতে সাহায্য করে। ফলে রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

৪.হজমে সাহায্য করে 

কিসমিস ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার। যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। কিসমিসে থাকা ফাইবার মল নরম করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। খাবারের পরে কয়েকটি কিসমিস খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। 

কিসমিসে থাকা ফাইবার, যা প্রাকৃতিক শর্করার সাথে হজম প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে থাকে। বদহজম বা অ্যাসিড-এর মতো উপসর্গগুলি থেকে রক্ষা পেতে অনেকসময় চিকিৎসকগণ কিসমিস খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। 

এছাড়াও শুকনো কিসমিস পানির মধ্যে দিয়ে খেলে হজম প্রক্রিয়া সহজ করে। 

৫.শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে 

কিসমিসে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা যেমন- ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ। এই প্রাকৃতিক শর্করা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তির যোগান দিতে পারে। 

ব্যায়াম করলে, এক্সারসাইজ করলে বা খেলোয়াড়দের প্র্যাক্টিসের পর তাদের কিসমিস খেতে বলা হয় কারণ কিসমিস শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। 

কিসমিস কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, এই কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের প্রাথমিক শক্তির উৎস। যে কোন ভারী কাজের পর শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কিসমিস খাওয়া প্রয়োজন।

কিসমিস প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ। এই কারনে কিশমিশ শরীরে শক্তির পুনরুদ্ধার, পেশির কার্যকারিতা, বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি করতে যথেষ্ট সক্ষম। 

৬.থাইরয়েডের সমস্যায়

থাইরয়েডের সমস্যায় আয়োডিন একটি অপরিহার্য খনিজ উপাদান। আয়োডিনের অভাবে থাইরয়েড হতে দেখা দিয়ে থাকে। 

কিসমিসে থাকা আয়োডিন থাইরয়েডের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন ব্রেক-ফাস্টে ৫টি থেকে ৬টা কিসমিস খেতে হবে। 

সেলেনিয়াম থাইরয়েড সমস্যার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। কিশমিশে অল্প পরিমাণে সেলেনিয়াম রয়েছে, যা থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনের জন্য এবং থাইরয়েড গ্রন্থিকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্ত করে থাকে। 

কিসমিসে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট- যেমন ভিটামিন ‘সি এবং ই’। এই ভিটামিনগুলো থাইরয়েড সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৭.চোখের জন্য

কিশমিশে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি চোখের কোষগুলিকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে থাকে। 

রাতে যারা চোখে দেখতে পায় না বা যাদের রাতকানা রোগ রয়েছে তাদের জন্য ভিটামিন এ খুব উপকারি। ভিটামিন এ-এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়ে থাকে। কিসমিস হলো ভিটামিন এ-এর একটি ভালো উৎস। 

কিসমিসে থাকা জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। 

৮.মুখের ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য

কিশমিশে ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিক্যালের মতো অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল কিছু যৌগ রয়েছে।  

এগুলো মুখের ভেতরে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে নষ্ট করে দেয় এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর ফলে মুখের দুর্গন্ধ অনেকাংশে দূর হয়ে যায়। 

কিসমিস স্বাদে মিষ্টি হলেও এর মধ্যে সুক্রোজ থাকে না বরং এর পরিবর্তে ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ থাকে। 

ফলে চিনির বিকল্প হিসেবে কিসমিসকে রাখা যেতে পারে। চিনিযুক্ত খাওয়ারের তুলণায় কিসমিস দাঁতের জন্য অনেক ভালো। 

কিসমিসে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা আমাদের দাঁত, মাড়ি ও হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে মুখ ও দাঁত এর জন্য কিসমিস অনেক উপকারি।

৯.অ্যানিমিয়া দূর করতে

কিসমিস আমাদের শরীরে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে কিসমিসে আয়রন এবং ভিটামিন বি 6 রয়েছে যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। 

অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা লাল রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের অভাবে দেখা দেয়ার জন্য শরীরে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

কিসমিস আয়রনের একটি উৎস। এটি হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হিমোগ্লোবিনের কাজ হল লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করা। এছারাও হিমোগ্লোবিন শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। 

কিসমিস খেলে আমাদের শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ হয়। কিসমিসে থাকা ফলিক অ্যাসিড লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে থাকে। যা অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

১০.ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে

কিসমিস আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে চান তাহলে অবশ্যই কিসমিস খেতে হবে। 

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে যেমন- ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই ও ফেনোলিক যৌগ ইত্যাদি। ত্বকের ক্ষতিকারক ফ্রি-রেডিকালগুলোকে নষ্ট করতে সহায়তা করে, অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে পরিত্রান করে। 

কিসমিসে ভিটামিন সি আছে যা মানবদেহে কোলাজেন উৎপন্ন করে। এই কোলাজেন ত্বকের জন্য খুব উপকারি। কারন এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ও ত্বকের তারুন্যভাব বজায় রাখতে সহায়তা করে। 

কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে কিসমিসে থাকা পানি আমাদের হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে। ত্বক হাইড্রেটেড থাকলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।  

১১.কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতাচুলের স্বাস্থ্যে

আয়রনের অভাবে আমাদের চুল পাতলা হয়ে যায়, চুল পড়তে থাকে, চুলের গোড়া আলগা হতে থাকে। কিসমিসে থাকা আয়রন আমাদের চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। উভয় ভিটামিন চুলের জন্য বা মাথার ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।

কিসমিসে থাকা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান, ফাইবার, আয়রন আমাদের মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে ফলে চুল পড়া বন্ধ, চুলের গোড়া মজবুত হতে থাকে। 

কিসমিসের অপকারিতা 

যদিও কিসমিস খাওয়া শরীরের পক্ষে উপকারি ও নিরাপদ তাহলেও অতিরিক্ত কোনো কিছুই শরীরের পক্ষে উপকারি নয়। 

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটিই রয়েছে। অতিরিক্ত কিসমিস খেলে যে সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো-

  • কিসমিসে ক্যালোরির পরিমান বেশি থাকে।  বেশি পরিমানে কিসমিস খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ক্যালোরির পরিমান বেড়ে যেতে পারে। শরীরে ক্যালোরির পরিমান বেড়ে গেলে যে সব সমস্যা দেখা দেয় তা হলো মোটা হওয়া, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার রোগ ইত্যাদি। 
  • কিসমিসে যেহেতু শর্করার মাত্রা বেশি থাকে তাই অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত শর্করা আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। শর্করা বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। 
  • কিসমিসে চিনির মাত্রা বেশি থাকে, কিসমিস আঠালো হয় ও খাওয়ার পর দাঁতে লেগে থাকে। কিসমিস খাওয়ার পর দাঁত ভালো করে না ধুলে দাঁতে পোকা লাগা,  দাঁতের গহ্বর সৃষ্টির মতো সমস্যা হতে পারে। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম অপকারিতা।
  • কিসমিস শুকোনোর প্রক্রিয়াতে কিসমিসে সালফাইটের ব্যবহার করা হয়। এই সালফাইট অনেকের ক্ষেত্রে অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই যাদের সালফাইট জাতীয় পদার্থে অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া উচিত নয়। এটিও কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে অন্যতম অপকারিতা।
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, পেটে গ্যাস, পেট ফোলাভাব, পেট ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • কিসমিসে থাকা অক্সালেট, ক্যালসিয়াম অক্সালেট রূপে আমাদের কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। ফলে অতিরিক্ত কিসমিস খেলে কিডনিতে পাথরের সমস্যা হতে পারে। 
  • কিসমিসে থাকা ক্যালোরি ও শর্করা আমাদের শরীরে ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাই প্রতিদিন বেশি পরিমানে কিসমিস আপনার খাদ্য তালিকাতে থাকলে তা আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। 
  • কিসমিসে পটাসিয়ামের পরিমান বেশি থাকে। কিডনির সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের পটাসিয়াম গ্রহণের উপর নজর রাখা উচিত।
  • কিসমিসে ফাইবারের পরিমান বেশি থাকে। ফাইবার বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে উপকারি হলেও অত্যধিক ফাইবার গ্রহণ কিছু ব্যক্তির মধ্যে অস্বস্তি বা  বদ হজমের কারণ হতে পারে। 
  • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে তাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। 

পরিশেষে

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুই রয়েছে। প্রত্যেকটি জিনিসের উপকার অপকার রয়েছে । অতিরিক্ত কোন খাবারই ভালো না। 

তবে নিয়মিত নিয়ম মেনে খেলে অনেক উপকার রয়েছে। আমাদের উচিত নিয়ম মেনেই কিসমিস খাওয়া। তাহলেই আমরা এর কার্যকারী উপাদান পাবো। 

আশাকরি আজকের কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত বোঝাতে পেরেছি।

কিসমিস সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর / FAQ

১। সকালে খালি পেটে কিসমিস ভিজিয়ে খেলে কি হয়? 

উত্তরঃ হজমশক্তি বাড়ায়: কিসমিস ভিজিয়ে রাখলে এতে থাকা ফাইবার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে হজমশক্তি বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। রক্তস্বল্পতা দূর করে: কিসমিসে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি-12 থাকে। এই উপাদানগুলি রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

২। প্রতিদিন কি পরিমান কিসমিস খাওয়া উচিত? 

উত্তরঃ কিসমিসে ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন, পটাসিয়াম, কপার এবং ভিটামিন বি৬ ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে এটি খেলে অনেক উপকার মেলে। তবে তা খেতে হবে পরিমিত। পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া যায়।

৩। কিসমিস খেলে কি মোটা হওয়া যায়? 

উত্তরঃ ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন সব মিলিয়ে ছোটো একমুঠো কিশমিশ খাওয়াই যায়, তবে শুধুমাত্র কিশমিশ খেলেই কিছু ওজন বাড়ে না। তবে কোনোকিছুই বেশি মাত্রায় সেবন স্বাস্থ্যকর নয়। এটি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে এর মধ্যে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরির কারণে অযাচিতভাবে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুন-

ঘি এর উপকারিতা, ঘি খাওয়ার নিয়ম ও পুষ্টিগুণ

কাঠবাদাম এর উপকারিতা

Leave a Comment