অনলাইনে ট্রেনের টিকেট
জেনে নিন অনলাইনে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম । আজকে আমরা চেষ্টা করব কিভাবে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করবেন, রেজিস্ট্রেশন করবেন এই বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করতে।
বাংলাদেশের প্রায় ৯০% মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতে পছন্দ করে। স্টেশনে যেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার থেকে মানুষ এখন প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে ঘরে বসেই টিকিট ক্রয় করা কে বেশি পছন্দ করে। আমরা আজ জানাবো আপনি নিজে জেনে জাবেন অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম ২০২৩।
মানুষের এই সুবিধার কথা চিন্তা করেই বাংলাদেশ রেলওয়ে স্টেশন এই সিদ্ধান্ত নেয় যে অনলাইনে টিকিট কিভাবে বিক্রয় করা যায় এই সিস্টেমটি চালু করার। দীর্ঘদিন যাবত এই অনলাইনে টিকিট বিক্রির জন্য মালিকানাধীন ছিল। shohoz.com নামক একটি প্রতিষ্ঠান নতুন মালিকানা দায়িত্ব নিলেন, এবং তারা ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রয় সংক্রান্ত সকল বিষয় দেখাশোনা করবেন।
যারা নিয়মিত অনলাইনে টিকিট ক্রয় করে থাকেন। তাদের জন্য আজকের আলোচনাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করছি। ওয়েব সাইটটির নতুন বলে এদের রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি কিছুটা আলাদা, আপনাদের সুবিধার্থে আমি চেষ্টা করব এই পুরো রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিটি পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরতে।
আরও পড়ুনঃডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়
২০২৩ সালের জন্য ট্রেনের টিকিট ক্রয়
যারা অপেক্ষায় আছেন ঘরে বসেই ট্রেনের টিকিট ক্রয় করবেন অনলাইনে, তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই shohoz.com রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু করেছে। সুতরাং ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার আগেই একজন গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। তাই যারা এখনও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করেননি। তারা দ্রুত একাউন্ট তৈরি করুন এবং রেজিস্ট্রেশন ঠিক করে ফেলুন।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট রেজিস্ট্রেশন করার কিছু উপায়
কিভাবে একাউন্ট তৈরি করবেন অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার জন্য যারা এখনও এই বিষয়টি জানেন না, খুব সহজ এবং সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি খুব সহজ কয়েকটি নিয়ম যেভাবে আপনি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশা করছি।
রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট – ধাপঃ ১
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার জন্য প্রথম ধাপটি আপনার হবে www.eticket.railway.gov.bd এই সাইটে প্রবেশ করুন ।
রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট – ধাপঃ ২
এই ওয়েবসাইটের ঠিক নিচের দিকে দেখবেন রেজিস্ট্রেশন নামক একটি বাটন আছে সেখানে ক্লিক করুন।
রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট – ধাপঃ ৩
সেখানে একটি নতুন পেজ আসবে Create an Account” নামের। সেখানে আপনার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য এবং গোপনীয় তথ্য দিয়ে ফরমটি পূরণ করুন, আপনার কাছে Security code ঘর প্রদর্শিত হবে, সেখানে কিছু সংখ্যার একটি গোপন কোড দিন।
এরপর রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার রেজিস্ট্রেশন টি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
আপনার সকল তথ্য সঠিক হলে “Registration Successful” নামক একটি নতুন পেজ আপনার সামনে আসবে।
- আপনার মেইল এড্রেসে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে একটি কনফার্মেশন মেইল পাঠানো হবে।
- বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে পাঠানো মেইল টি আপনার ইনবক্সে জমা হবে যা আপনাকে খুলতে হবে। মেসেজ এর ভিতরে “Click” নামক একটি অংশ থাকবে সেখানে লিঙ্ক দেওয়া থাকবে। এই লিঙ্ক অর্থাৎ “Click” নামক অপশনটিতে আপনাকে ক্লিক করতে হবে। আপনি এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার পরে আপনের রেস্তরেশন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।
বর্তমানে প্রতিটি মানুষই চায় অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে। কিন্তু তারা সঠিক নিয়ম এর অভাবে অনেক সময় অনলাইন থেকে টিকিট ক্রয় করতে ব্যর্থ হন। কিভাবে আপনি অনলাইনে টিকিট বুকিং করবেন সে বিষয়ের নিচে কিছু আলোচনা করব। নিচের নিয়মটি সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করে আপনারা অনায়াসে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন বলে আশা করছি। এবং তার পরেও আপনার যদি কিছু জিজ্ঞাসা করার থাকে তাহলে নিশ্চিন্তে নিচে কমেন্টে জানাবেন।
আরও পড়ুনঃ ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম
ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার নিয়ম
- প্রথমে www.eticket.railway.gov.bd এই ওয়েবসাইটটিতে লগইন করুন।
- “Log in” এই প্যানেলে আপনার ইমেইল এড্রেস পাসওয়ার্ড এবং সিকিউরিটি কোড টি দিয়ে দিন, তারপর “Log in” বাটনে চাপ দিন।
- এর পর যে পেজটি আসবে সেখানে “Purchase ticket” বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনার সামনে যে পেজটি আসবে সেখানে আপনার কাঙ্খিত ভ্রমণের তারিখ, যে ইস্টেশন থেকে আপনি ট্রেনে উঠতে চান, আপনার গন্তব্য স্টেশনে, যে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চান, যে শ্রেণি কি চান, কয়টা টিকিট চান অথবা টিকিটের সংখ্যা এগুলো আপনাকে পূরণ করতে হবে।
- এর পরের পেজে “Registration Seat Available” দ্বারা জানিয়ে দেওয়া হবে আপনার টিকিটের যথেষ্ট পরিমান আছে কিনা।
- টিকিট Available থাকলে “Purchase ticket” এই বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- বিকাশ ক্যারেট কার্ড বাজে কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনি বিলটি প্রদান করতে পারবেন এবং ই-মেইলে ই-টিকেটটি পাঠিয়ে আপনার টিকিট নিশ্চিত করা হবে।
- “Ticket Print Information” থেকে প্রদানকৃত সংশ্লিষ্ট সোর্স স্টেশন থেকে যাত্রীর পূর্বে ছাপানো টিকিট ও সংগ্রহ করতে হবে।
কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করবেন
কিভাবে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে কিনবেন তার সম্পূর্ণ গাইড লাইন এখানে দেয়া হলো। বর্তমানে কাউন্টারে গিয়ে সরাসরি ট্রেনের টিকিট ক্রয় করা কতটা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যেটা হাতে সোনার হরিণ পাওয়ার মত একটা ব্যাপার, তাই এটার সহজ সমাধান হতে পারে ঘরে বসে অনলাইনে মাধ্যমে টিকিট কাটা।
এ কারণে আমরা আপনাদের সহায়তার জন্য একটি সঠিক গাইডলাইনের ব্যবস্থা করেছি যাতে আপনারা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত টিকিটটি আমাদের গাইডলাইন অনুসারে ক্রয় করতে পারেন খুব সহজে। অনলাইনে মোবাইল,ল্যাপটপ এবং ট্যাপ এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করা যায়। আপনার যদি একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল থাকে এবং একটি জিমেইল লগইন করা থাকে তাহলে আপনি সহজেই বাংলাদেশ রেলওয়ে এর টিকেট কিনতে পারবেন.
অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার সময়
সকাল ০৬ থেকে রাত ১১ টার মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে হবে। যারা অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করেননি তারা এই সুবিধাটি পাবেন না। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব অনলাইনে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফেলুন রেজিস্ট্রেশন করার জন্য।
ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম
অনেকেই ট্রেনের টিকিট অগ্রিম কিনে রাখেন। কোন অনাকাঙ্খিত সমস্যার কারণে ভ্রমণ বাতিল হতেই পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেয়ার জন্য অবশ্যই আপনার স্টেশনের কাউন্টারে যেতে হবে। টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্মোক্ত চার্জ ধার্য করা হবে।
যাত্রা শুরুর ৪৮ ঘন্টা আগে টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে, এসি ক্লাসের জন্য ৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণীর জন্য 30 টাকা এবং অন্য শ্রেণীর জন্য ২৫ টাকা পরিষেবা চার্জ সহ কাটা হবে।
৪৮ ঘন্টার কম এবং ২৪ ঘন্টার বেশি হলে, ভাড়ার ২৫% কাটা হবে।
২৪ ঘন্টার কম এবং ১২ ঘন্টার বেশি হলে, ভাড়ার ৫০% কাটা হবে।
১২ ঘন্টার কম এবং ০৬ ঘন্টার বেশি ভাড়ার ৭৫% কাটা হবে।
০৬ ঘন্টার কম সময়ের জন্য কোন ফেরত নেই।
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
শেষ কথা
বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ ভ্রমণ ব্যবস্থা হল ট্রেন। শুধু নিরাপদ নয় নিরাপদ এর পাশাপাশি ট্রেন ভ্রমণ সাশ্রয়ী বটে। তাই বর্তমানে মানুষ বাসে ভ্রমণের থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু ট্রেনের টিকিট কাটা এতটা সহজ ছিল না, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হতো টিকিটের জন্য। এতে বেশ বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতো, তুলনামূলক ভাবে বিভ্রান্তি এড়াতেই মানুষ দূরপাল্লার যেকোনো যানবাহনে ভ্রমণ করতেন।
তবে বর্তমান সরকার মানুষের এই দুর্ভোগ কমাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট, অনলাইনে কাটার সিস্টেম চালু করেছেন। এই সিস্টেম চালু হতে সাধারণ জনগণ খুবই উপকৃত হয়েছেন। এখন ঘরে বসেই নিজের হাতে স্মার্টফোন দিয়েও ট্রেনের টিকিট কাটা সম্ভব।
রেলওয়েঅনলাইনে ট্রেনের টিকেট নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সময় কখন?
উত্তরঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সময় হলো ২৪ ঘন্টা। তবে একটি নির্দিষ্ট টাইমে টিকিট ছাড়ে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় সকাল ৮ হতে রাত ১০ টা পর্যন্ত টিকিট কাঁটা যায়, যদি টিকিট পর্যাপ্ত পরিমান থাকে।
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কতদিন আগে পাওয়া যায়?
উত্তর: ১০ দিন আগে থেকেই ট্রেনের টিকেট আয়ভেলেবেল হয়ে যাই। আপনি চাইলে ১০ দিন আগেই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে পারবেন।
ট্রেনের টিকিটের মুল্য কিভাবে পরিশোধ করবো?
উত্তরঃ অনলানে টিকিটের মুল্য পরিশধ করতে চাইলে আপনাকে পেমেন্ট করতে সাহায্য করবে বিকশ,রকেট ইত্যাদি কিছু পেমেন্ট সিস্টেম।
আরও পড়ুন-
পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করার নিয়ম