ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর উপায়

শরীরের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি কারন ওজন বেড়ে যাওয়া শরীরের জন্য খুবই বিপদজনক। ওজন বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে, শরীরের দেখা দেয় নানা সমস্যার, ডায়াবেটিস, হার্ট, প্রেসার এর মতো অনেক অশান্তিকর সমস্যার।

যারা অতিরিক্ত জাঙ্কফুডে অভ্যস্ত, তাদের শারীরিক ওজন একটু বেশিই থাকে। আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ওজন কমানোর উপায় এবং ওজন নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য। ওজন কমানোর উপায় (weight loss) সহ বিস্তারিত তথ্য জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

অনেকের ক্ষেত্রে আবার ওজন কমানোর জন্য খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেন, এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অপুষ্টিতে ভুগেন। এটা একদমই উচিত নয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে কিছুটা ডায়েট মেন্টেইন করে চলতে হয়, এবং কিছু নিয়ম কানুন ও নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

অতিরিক্ত ওজনের জন্য খাওয়া দাওয়া একেবারে বন্ধ করে দেওয়া এটা একদমই সঠিক কাজ নয়, উল্টো ওজন কমার ক্ষেত্রে বিপরীতে আরো শারীরিক অসুস্থতার সম্মুখীন হতে হয়। সঠিক খাবার খেতে হবে, বেশি করে সবুজ শাকসবজি এবং বেশি করে পানি পান করবেন। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে (weight loss) অবশ্যই অতিরিক্ত খাবার, তৈলাক্ত খাবার, জাঙ্কফুট, অতিরিক্ত ঘুম এগুলো থেকে বিরত থাকবেন।

আরও পড়ুনঃ মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি ও নিয়ম প্রণালি

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবু পানি খুবই উপকারী এবং কার্যকরী। হজম প্রক্রিয়ায় খুবই ভালো কাজ করে লেবুর রস এবং এটি ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস। লেবু (lemon) পানি শুধু ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নয়, হার্টকে সুস্থ রাখে পাশাপাশি ক্যান্সার থেকেও রক্ষা করে। লেবু পানি খুবই উপকারী কারণ এতে রয়েছে পেকটিন যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড মেটাবলিজম বাড়ায়. এর ফলে শরীরের ওজন কমাতে (weight loss) সাহায্য করে।

লেবুতে পটাশিয়াম থাকার কারণে ওজন কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। উষ্ণ এক গ্লাস গরম জলে দুই চা চামচ লেবুর রস ও এক চিমটি লবণ দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে পান করুন। এই লেবু পানি পান করার ফলে আপনার ওজন কমাবে ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনার সারাদিনের খাবার সহজেই হজম হয়ে যাবে। 

শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ক্ষয়ের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস। লেবু পানি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের একটি অংশবিশেষ। নিয়মিত লেবু পানি, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করলে অবশ্যই অতিরিক্ত ওজন কমানো বা ওজন নিয়ন্ত্রণের রাখা সম্ভব। 

ওজন কমানোর খাবার তালিকা

অবশ্যই সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের মধ্যে ৩০০-৩৫০ ক্যালরি রাখতে হবে এবং বাকি ৩০০ ক্যালরি অন্যান্য খাবারের মধ্যে রাখতে হবে। ক্যালরি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। প্রতিদিন একবার সবুজ চা পান করতে পারেন, কারণ সবুজ চা ওজন কমাতে খুবই সহায়ক। শুধু খাবারের দিকে লক্ষ্য না রেখে নিয়মিত ব্যায়ামের দিকে ও লক্ষ্য রাখুন। কারণ ব্যায়ামও ওজন কমানোর (lose weight) ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। ব্যায়াম শুধু অতিরিক্ত ওজন বা ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উপকারী নয় ব্যায়াম শারীরিক সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। 

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে শরীরে ক্যালরি খুবই জরুরি। মস্তিষ্ক যাতে সঠিকভাবে কাজ করে, শরীরে যাতে কোন ক্লান্তি না আসে, তাই অনিয়মিতভাবে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ না করে খাবারের একটি চার্ট অনুসরণ করা উচিত। নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি, খাবারের একটি চার্ট অনুসরণ করে খাদ্যাভাস গ্রহণ করলে অবশ্যই তাড়াতাড়ি ওজন কমানো (lose weight) সম্ভাব। চলুন সেরকমই একটি ওজন কমানোর উপায় বা খাবারের চার্ট দেখে আসি,

আরও পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা যা জানা জরুরী

সকালের নাস্তা দুপুরের খাবার সন্ধ্যার নাস্তা রাতের খাবার 
১. ঘুম থেকে উঠে ২ গ্লাস পানি, হালকা গরম হলে খুবই ভালো হয়। 

২. উষ্ণ গরম জলে লেবু পানি, ডিমের সাদা অংশ, কাজুবাদাম, দূধ, চিয়াসিড, শসা,গাজর, চিনি ছাড়া রং ছাড়া আধা, পুদিনা, দারুচিনি দিয়ে।  অথবা দুটি শুকনো রুটির (তেলে ভাজা ছাড়া) সাথে কিছু সবজি ভাজি। 

১. এক বাটি বাদামী ভাত,সালাদ,ডাল, হালকা সবুজ সবজির তরকারী। 

২. এক বাটি ভাত, ১ পিস মাছ অথবা ২ পিস মাংস, কিছু তরকারী। অবশ্যই অতিরিক্ত তেল ছাড়া। 

১. চা, কফি, সবুজ চা অথবা কোন নিরামিষ স্যুপ। ১. এক বাটি নিরামিষ সবজির স্যুপ, সালাদ, কিছু ফলমূল ( আপেল, পেঁপে, কলা) তবে অবশ্যই ফলমূল পরিমিত ভাবে খেতে হবে, অতিরিক্ত নয়। 

২. অথবা ২ টা তেলেভাজা ছাড়া শুকনো রুটি এবং সাথে কিছু সবজি ভাজি,১ পিস মাছ।

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

তথ্য প্রযুক্তির এই ইন্টারনেটের যুগে যদিও মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় (lose weight) রয়েছে অনেক, তারপরও কার্যকরী টিপস পাওয়া খুবই মুশকিল। কিছু কিছু ক্ষেত্র বিশেষ রয়েছে যেগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে অবশ্যই মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। সেরকমই কিছু ওজন কমানোর উল্লেখযোগ্য উপায় হচ্ছে, 

১. প্রচুর পানি পান করা। 

২. রং চা অথবা সবুজ চা খাওয়া।

৩. সকালেকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবু পানি পান করা। 

৪. নিয়মিত কিছু পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। 

৫. পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটকে এড়িয়ে চলুন, এবং সকালে চিনি মিশ্রিত চা এড়িয়ে চলুন।

৬. বেশি করে সবুজ সবজি পান করুন এবং নিয়মিত কিছু ফলমূল খেতে পারেন। 

৭. নিয়মিত ব্যায়াম করুন। 

৮. অতিরিক্ত খাবার বর্জন করুন। 

৯. অতিরিক্ত ঘুমাবেন না, প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো শরীরের জন্য ভালো।

১০. যেকোন খাবার ভালো করে চিবিয়ে খাবেন। এতে করে ভালো হজম হয়। 

বিশেষ করে মহিলারা বেশি চিনিযুক্ত খাবার বা কফি খেতে পছন্দ করেন। এটা খুবই ওজন বাড়াতে সাহায্য করে. রোজা বা উপবাসের দিনগুলোতে একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন. কারন এই সময় উপবাস বা রোজা থাকার কারণে সারাদিনের শেষে সঠিক খাবার গ্রহণ করলে ওজন খুব তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়

অনেকের কাজের ব্যস্ততা ও সুযোগের অভাবে প্রায় সময় নিয়মিত ব্যায়াম করা হয় না। তাই হয়তো চিন্তায় পড়ে যান যে নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। আপনার লাইফস্টাইল ও ডায়েটে পরিবর্তন এনেও শরীরের বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব। 

  • নিয়মিত পানি পান করা। 
  • প্রতিদিন সকাল অথবা সন্ধ্যায় ৪৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন।
  • খাবারের তালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বাড়িয়ে দিন। 
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার বা চিনি এড়িয়ে চলুন। 
  • যেকোনো খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান, এতে ভালো হজম হয়, এবং খাবার চিবিয়ে ফেলে খাবারের ক্যালরির পরিমাণ হ্রাস পায়। 

যেকোন খাবার ভালো করে  চিবিয়ে না খেলে, ওজন বৃদ্ধি পায়। তাছাড়াও, লাইফস্টাইল বা ডায়েটের ক্ষেত্রে ওজন কমানো সম্ভব হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করাটা শারীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। যথা সম্ভব চেষ্টা করবেন কিছুটা সময় হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করা। শারীরিকভাবে শরীরকে সুস্থ রাখতে মনের দিক থেকে ফিট রাখতে, চিন্তামুক্ত, মনকে ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে নিয়মিত ব্যায়াম। 

শেষকথা

আপনার শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে, কিছুটা সংযত থেকে ওজন কমানোর উপায় গুলো (lose weight) নিয়মিত ব্যবহার করুন বা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সব নিয়মকানুন ও ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন। সবকিছু অনুসরণ করে চললেই বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব, এতে অতিরিক্ত চিন্তার কোন কারণ নেই। ওজন কমানোর (lose weight) ক্ষেত্রে একেবারে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ না করে ধীরে ধীরে নিয়মিত ব্যায়াম করে, সব তথ্য মেনে চলে ওজন কমালে সেটা শরীরের জন্য খুবই ভালো।

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারলেন ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। আশা করি পুরো পোস্টটি পড়ে আপনি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ওজন কমানোর উপায় নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ’s

১. ওজন কমানোর সবচেয়ে কার্যকর পিল কোনটি

উত্তর:- ফেন্টারমাইন গ্রহণকারীরা 12 সপ্তাহের মধ্যে শরীরের ওজনের সর্বোচ্চ শতাংশ হারান।

২. ওজন কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় কি? 

উওর:- ওজন কমানোর সহজ উপায় হচ্ছে, ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া, লিকুইড ক্যালরি খাওয়া কমিয়ে দেওয়া, বেশি পরিমাণে পানি পান করা, তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, বেশি করে শাকসবজি খাওয়া, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর নাস্তা নির্বাচন করা, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা, ফলমুল গ্রহণ করা মূলত এগুলো অনুসরণ করে চললেই ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে উঠে। 

৩. কি খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমে?

উত্তর:- গ্রিন টি, পানি, পেস্তা বাদাম, মাশরুম, অলিভ অয়েল, ব্রোকলি

আরও পড়ুন-

Drop Shipping বিজনেস কী? ড্রপশিপিং ব্যবসা করার সুবিধা

ডাটা এন্ট্রি কি ? ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায়

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধা

Leave a Comment