ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা করার পদ্ধতি সমুহ  

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা 

কম-বেশি সকলেরই ব্রণ হয়, যা আমাদের মুখের উজ্জ্বলতা এবং সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। ছেলে কিংবা মেয়ে উভয়েরই যেকোনো বয়সে হতে পারে ব্রণ। তবে বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। শুধু মুখেই নয় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে এই ব্রণ।

মূলত ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য আমরা অনেক সময় বাজারের কেমিক্যালযুক্ত পণ্য ব্যবহার করি। তবে নকল পণ্যের ভিড়ে আসল পণ্য বের করা দায়।

কিন্তু এসব পণ্য ব্যবহার করে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন রকম সমস্যা। তাইতো আমরা গুগলে সার্চ করি ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কে জানতে। যেন নকল পণ্য ব্যবহার করে প্রতারিত না হই। কিছু ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিকভাবে ব্রণ দূর করতে পারবেন আপনি। 

ব্রণ দূর করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায়। ব্রণ দূর করার সবচেয়ে উত্তম এবং নিরাপদ উপায় হচ্ছে ঘরোয়া ভাবে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা। নিয়মিত রূপচর্চা করলে ব্রণ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বক হবে উজ্জ্বল।

যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কে। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করি অবশ্যই আপনারা উপকৃত হবেন। 


আরও পড়ুনঃ দাদ চুলকানি দূর করার ক্রিম, ব্যবহার ও সতর্কতা


আজকের আলোচ্য বিষয়

ব্রণ হওয়ার কারণ 

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা

বিভিন্ন কারণে আপনার ত্বকে ব্রণ হতে পারে। হরমোন ক্ষরণে তারতম্য, জীবাণু সংক্রমণ, ত্বকের অযত্ন, দুশ্চিন্তা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ব্রণ হয়। ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা বিষয়ে জানার পূর্বে ব্রণ হওয়ার কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক। 

ত্বকের অযত্ন 

মূলত ব্রণ হয় আমাদের ত্বকে। ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার না করলে ব্রণ এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ ধুলাবালি জমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। তাই নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরী। খেয়াল রাখবেন শুষ্ক আবহাওয়াতে যেন ধুলাবালি না জমে ত্বকে। 

শরীরে পানি কমে যাওয়া 

ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে শরীরে পানি কমে যাওয়া। বিশেষ করে গরমের দিনে শরীর থেকে বিভিন্ন উপায়ে পানি বের হয়ে যায়। গরমের দিনে শরীর থেকে পানি বের হওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে ঘাম। আর আমরা জানি ঘেমে গেলে শরীরের পানি কমে যায়। তাই ব্রণ দূর করতে এবং সুস্থ থাকার জন্য দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। 

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব 

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ। তেমনি ঘুমের অভাবে আপনার ত্বকে দেখা দিতে পারে ব্রণের সমস্যা। আমরা যখন ঘুমাই তখন শরীর তার নিজস্ব কাজগুলো করতে থাকে। ঘুমের সময় শরীরের প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসরণ বা হরমোন তৈরি করার মতো জটিল প্রক্রিয়াগুলি চলতে থাকে। 

তবে নিয়মিত না ঘুমালে শরীরের নিজস্ব কাজের ব্যাঘাত ঘটে। কম ঘুম বা অনিয়মিত ঘুম ব্রণ প্রতিরোধকারী হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়। যার ফলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়। তাই পর্যাপ্ত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের সুস্থ থাকার জন্য। 

বয়সন্ধিকাল 

বয়সন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীরা বিভিন্ন রকম শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার ভেতর দিয়ে যায়। এই সময় ছেলে-মেয়ে উভয়েরই ব্রণ হয়ে থাকে। বয়সন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেখা দেয় অবসাদ, দুশ্চিন্তা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, খাবারদাবারের অবহেলা ইত্যাদি।

এছাড়াও নিজের শরীরের যত্ন নিজে নিতে না পারার সমস্যা তো আছেই। এসব কারণে শরীরে হরমোনের প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয় বা দেখা দেয় হরমোনের অভাব। আর এসব কারণেই দেখা দেয় ব্রণ। 

তেল-মসলাযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার 

অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ। ফাস্টফুড, ডিপ ফ্রাই করা খাবার, কোমল পানীয় ইত্যাদি যত বেশি খাওয়া হবে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়বে। কারণ এইসব খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। আর খাবার হজম না হলে পেট পরিষ্কার থাকে না। পেট পরিষ্কার না থাকা অথবা নিয়মিত মলত্যাগ না করা ব্রণ সহ অনেক রোগের কারণ। 

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা – ঘরোয়া পদ্ধতি  

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কে জানা থাকলে এই সমস্যা দূর করা অনেকটাই সহজ। ইতিমধ্যেই জেনেছি যে, আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এটি আকারে বড় হয়। ভিতরে জমতে থাকে পুঁজ এবং এটি ধীরে ধীরে ব্রণ হিসেবে প্রকাশ পায়। এই সমস্যা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় নিচে দেওয়া হল :

কাঁচা হলুদ এবং চন্দনের গুঁড়া 

ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে কার্যকরী নাম হচ্ছে কাঁচা হলুদ এবং চন্দন গুঁড়া। সমপরিমাণ কাঁচা হলুদ এবং চন্দন গুঁড়া নিয়ে সামান্য পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। ব্রণ আক্রান্ত স্থানে এই পেস্ট মাখিয়ে রাখুন। এরপর শুকানোর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই পেস্ট ব্যবহারে ব্রণের সঙ্গে ব্রনের দাগও দূর করে। 

মুলতানি মাটি 

ব্রণের সমস্যা দূর করতে মুলতানি মাটি অনেক সাহায্য করে। মুলতানি মাটির সঙ্গে পানি মিশিয়ে তৈরি করুন একটি পেস্ট। তারপর পেস্টটি মুখে ভালোভাবে লাগান। শুকানোর পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহার করার ফলে ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ হবে। যার ফলে ব্রণের সমস্যা কমে যাবে। 

শসার রস 

শুধু খেলেই নয় ত্বকের ব্যবহারেও শসার অনেক উপকারিতা আছে। শসার রস ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে কার্যকরী। শসার রস মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর মুখটা পরিষ্কার করে নিন। শসার রস দিয়ে আইস কিউব তৈরি করেও রেখে দিতে পারেন। এটি ব্যবহার করার ফলে ব্রণের সমস্যার পাশাপাশি ওপেন পোরসের সমস্যাও দূর হবে। 

মধু এবং আপেল 

ব্রণ এবং ব্রনের দাগ দূর করার আরেকটি কার্যকরী উপায় হচ্ছে মধু এবং আপেলের ব্যবহার। এর জন্য প্রথমে আপেলের পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্টে ৪ থেকে ৬ ফোঁটা মধু মিশান।

এই পেস্টটি মুখে ব্যবহার করার কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহারে গায়ের রং উজ্জ্বল হয় এবং ব্রণের সমস্যাও দূর হয়। চেষ্টা করবেন সপ্তাহে ৩-৪ দিন এই পেস্ট ব্যবহার করার। 

শসার রস, চালের গুঁড়া এবং মধু 

ইতিমধ্যে জেনেছি শসার রস ব্রণের জন্য কতটা কার্যকরী। ব্রণ দূর করার পাশাপাশি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে শসার রসের সঙ্গে চালের গুড়া মিশিয়ে নিবেন। মধুতে যাদের অ্যালার্জি নেই তারা এই মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক হবে পরিষ্কার। এই ফেসপ্যাক ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করতেও সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন ব্রণ থাকলে কিন্তু স্ক্রাব করা যাবে না। ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সঠিক ভাবে করতে হবে।

তুলসী পাতার রস 

তুলসী পাতায় রয়েছে আয়ুর্বেদিক গুণ। ব্রণ দূর করতেও এটি অনেক কার্যকরী। তুলসী পাতার রস ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এরপর শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকানোর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন এটি ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। 

গোলাপজল এবং চন্দন কাঠের গুঁড়া  

চন্দন কাঠের গুঁড়ার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে তৈরি করুন একটি পেস্ট। অতঃপর ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তবে অনেকের ত্বকের সঙ্গে গোলাপজল এডজাস্ট হয় না। সেক্ষেত্রে গোলাপজলের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন মধু। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন ব্যবহার করুন এই মিশ্রণ। ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ব্রনের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে এটি। 

গোলাপজল এবং দারচিনির গুঁড়া 

নিয়মিত গোলাপজল ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারচিনির গুঁড়ার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এই পেস্ট ব্রনের উপর লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। অপেক্ষার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি ও ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। 

পেঁপে ও চালের গুঁড়া 

অপরিষ্কার ত্বকে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য নিয়মিত ত্বকে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এক কাপ পরিমাণ পাকা পেঁপে চটকে নিন। এর সঙ্গে মেশিয়ে নিন এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং চালের গুঁড়া। ফেসপ্যাকটি শুধু মুখে নয় পুরা শরীরেই লাগাতে পারেন।

পুরা শরীরে লাগালে ২০-২৫ মিনিট ম্যাসেজ করে গোসল করে ধুয়ে ফেলুন। এখানে পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা। 

ডিমের সাদা অংশ 

ডিমের সাদা অংশ ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে ডিমের সাদা অংশ মাসাজ করে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে। আরো ভালো হবে যদি এর সঙ্গে লেবুর রস যোগ করা হয়। সারারাত রাখতে না চাইলে ৩০ মিনিট পরও ধুয়ে ফেলতে পারেন। 

মুলতানি মাটি এবং নিমপাতা 

এক মুঠ পরিমান নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে পিষে নিন অথবা ব্লেন্ড করুন। নিম পাতার পেস্ট এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি এবং সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে নিন। ফেসপ্যাকটি তৈরি করার পর মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। শুকানোর পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। 

পুদিনা পাতা 

অতিরিক্ত গরমে ত্বকের ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয়। সেই সমস্যা দূর করতে পুদিনা পাতা অনেক উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে বা ব্লেন্ড করে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। তারপর এটি ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 

রক্ত চন্দন পাউডার এবং আনারের খোসা 

রক্ত চন্দন পাউডার এবং আনারের খোসার গুঁড়া একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে প্রথমে। এরপর এতে দুই চামচ টক দই বা দুধ দিয়ে তৈরি করুন একটি ফেসপ্যাক। এরপর এটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেলুন। এর নিয়মিত ব্যবহার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে এবং ব্রণের দাগ করবে দূর। 

সরিষা এবং মধু 

সরিষাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ স্যালিসিলিক অ্যাসিড। যা খুব সহজেই ব্রনের জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে। সামান্য পরিমাণ সরিষা গুঁড়ার সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে তৈরি করুন একটি ফেসপ্যাক। ব্রণ আক্রান্ত স্থানে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক ব্রণ দূর করবে এবং ব্রনের দাগও দূর করবে। 

বরফ 

ব্রণের সমস্যা দূর করতে অনেক সহজে একটি সমাধান হচ্ছে বরফ। প্রথমে আপনার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর বরফের টুকরা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিন।

কাপড়ে মোড়ানো বরফ কয়েক মিনিট ব্রণের উপর রাখুন। মনে রাখবেন বরফ সরাসরি ত্বকে লাগানো যাবে না। একটানা অনেকক্ষণ রাখবেন না। পাঁচ মিনিটের বিরতি দিয়ে ব্যবহার করুন।  

টুথপেস্ট 

ব্রণ দূর করার জন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। একদিনের মধ্যে ব্রণ শুকিয়ে যাবে টুথপেস্ট ব্যবহারে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে টুথপেস্টের প্রলেপ ব্রণের উপর দিয়ে রাখুন। সকালে উঠে লক্ষ্য করবেন ব্রণ অনেকটা শুকিয়ে গেছে। এটি ব্যবহারে ব্রণের ফোলা ভাবও কমে যায়। তবে জেল টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না। 

ব্রণ দূর করতে কিছু টিপস্ 

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কেতো জানানো হলো। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রণ দূর করার জন্য কিছু টিপস্। 

  • ব্রণ দূর করার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপায় হচ্ছে মুখ পরিষ্কার করা। প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ বার মুখ পরিষ্কার করবেন। 
  • ভালো ব্র্যান্ডের ফেসওয়াস বা ক্লিনজার ব্যবহার করবেন। কুসুম গরম পানিতে মুখ ধোয়া সবচেয়ে ভালো। মুখ মোছার সময় নরম তোয়ালে ব্যবহার করবেন। 
  • কমপক্ষে ৯-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। 
  • রাতে খাবারের পর নিয়মিত মৌসুমী ফল খাবেন। ফলমূল আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে। 
  • অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার এবং ফাস্টফুড পরিত্যাগ করুন। 
  • অতিরিক্ত রোদ্রে যাবেন না। রোদ্রে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই সানব্লক ব্যবহার করবেন। 
  • বাহির থেকে এসে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মুখে ধুলাবালি জমে গেলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়। হালকা গরম পানির স্টীমও নিতে পারেন। স্টীম নিলে ত্বকের জমে থাকা ধুলাবালি পরিষ্কার হয়। 
  • ব্রণ হলে অনেকেই নখ দিয়ে ফাটানোর চেষ্টা করেন। তবে এটা একদমই করা যাবে না। 
  • প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। 
  • ব্রণ না ঠিক হওয়া পর্যন্ত মুখে মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। 
  • ব্রণ এবং ত্বকের দাগ অনেক বেশি হলে এবং ঘরোয়া উপায় কার্যকর না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। 

শেষকথা 

ব্রণ নিয়ে বিড়ম্বনা কমবেশি সবারই পোহাতে হয়। ব্রণ হলে আমরা খুবই টেনশনে পড়ে যাই। কোন প্রোগ্রামে যেতে আমাদের অস্বস্তি লাগে। তাই চেষ্টা করি কিভাবে ব্রণ কমানো যায়। ব্রণ কমানোর সঠিক উপায় সবাই জানি না। আজকে চেষ্টা করেছি ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কে আলোচনা করতে।

আশা রাখছি আপনারা উপকৃত হবেন। আপনারা যদি উপকৃত হন অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না। এছাড়াও ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা আপনার মূল্যবান প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। সবার সুস্থতা কামনায় আজকে বিদায় নিচ্ছি। 

ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ 

১. বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় কি? 

উত্তর : একটি পরিষ্কার কাপড় নিয়ে তাতে ২-৩ টি বরফের টুকরা পেঁচিয়ে নিন। তারপর ব্রণের ওপর আলতোভাবে ১০ মিনিটের মত মালিশ করুন। এর ফলে ব্রণের লালচে ভাব দূর হবে এবং সেই সাথে ব্রণের আকারও ছোট হয়ে যাবে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, বরফের এরকম ব্যবহার প্রতিদিন করলে ব্রণের প্রকোপ থেকে বাঁচা যেতে পারে। 

২. এক রাতে মুখের ব্রণ দূর করার উপায় কি? 

উত্তর : এক রাতে মুখের ব্রণ দূর করার উপায় :

  • টি ট্রি অয়েল দ্রুত ব্রণ কমিয়ে দেয়। ঘুমানোর আগে এক ফোটা টি ট্রি অয়েল ব্রণের ওপর লাগিয়ে নিন। ঘুম থেকে ওঠার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্রণ অনেকটাই কমে গেছে। 
  • লেবুর রস ব্রণ দূর করতে অনেক কার্যকরী। ঘুমানোর পূর্বে একটি তুলার বল বানিয়ে তাতে লেবুর রস মাখিয়ে ব্রনের উপর কিছুক্ষণ রাখুন। সকাল উঠে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। 
  • ডিমের সাদা অংশ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং অ্যামিনো এসিড। এই উপাদানগুলো ব্রণের জীবানুকে ধ্বংস করে ফেলে। ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফাটিয়ে নিয়ে আঙ্গুলের সাহায্যে ব্রণের উপরে লাগান। ৪-৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলুন। 

আরও পড়ুন-

মুখে ব্রণ কমানোর উপায়, কার্যকারিতা ও চিকিৎসা

ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায় ও চিকিৎসা

Leave a Comment