টাফনিল এর কাজ কি, টাফনিল খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা

টাফনিল এর কাজ কি

টাফলিন ঔষধটি  সাধারণত মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যাথা, যেকোনো বেদনাশক ও জ্বরে বেদনাশক কাজে টাফলিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনার মধ্যে যখন এই ধরনের কোন রোগ পাওয়া যাবে, সে ক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে এই ওষুধটি সেবন করতে বলবেন এবং কিভাবে সেবন করবেন সেটাও বলে দিবেন।

সকল ঔষধ সেবন করার পূর্বে তার নিয়ম রয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকালে এটা গ্রহণ করা উচিত। তবে কেউ কেউ আছেন সামান্য মাথাব্যথায় এটি ব্যবহার করে থাকেন, এটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে মাথাব্যথা সেরে গেলেও অতিরিক্ত টাফলিন ব্যবহার করলে শারীরিক অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই অবশ্যই নিয়ম মেনে খাবেন এবং সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। আপনি টাফনিল এর কাজ কি, টাফনিল কিভাবে সেবন করবেন, কতদিন খাবেন, টাফনিল এর দাম কত এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

টাফলিন এর কাজ

টাফনিল এর কাজ কি

টাফলিন অনেক মানুষ অনেক কারণে খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে একটি ব্যথাজনক কারণে খাওয়া হয়ে থাকে। তবে ডাক্তাররা কয়েকটা কারণেই এটি নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। টাফনিল এর কাজ কি তার মধ্যে হচ্ছে–

  • প্রথমত মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যাথায় ডাক্তাররা এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  • পোস্ট-অপারেটিভ ব্যথার জন্য এটি নির্দেশনা দিয়ে থাকেন ‌।
  • বেদনাশক ও জ্বরে বেদনাশক কাজে ডাক্তাররা এটি খেতে বলেন বা নির্দেশনা দেন।

টাফলিন খাওয়ার নিয়ম

সকল ঔষধ খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। একটি ওষুধ সেবন করার আগে আপনাকে জানতে হবে এটা কখন খাওয়া জরুরী বা কখন খাওয়া উচিত। আপনি যখন একটি ওষুধ খাবেন আপনাকে জানতে হবে আপনার শরীরের অবস্থা কেমন এবং আপনার ওজন কতটুকু, আপনার বয়স কতটুকু , এই সব কিছুর ওপর নির্ভর করে ওই ওষুধের পরিমাপটা। 

অবশ্যই একটা ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যে কোন কিছু হয়ে গেলে কোন কিছু না বুঝেই ওষুধ খেয়ে থাকেন বা খেয়ে ফেলেন। কোন কিছু না জেনে না বুঝে খাওয়া ঠিক নয়, না জেনে শুনে খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

বিশেষ করে অসৎ সেবনের আগে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাছাড়াও যে সকল রোগীরা অনেক শিশু অর্থাৎ বাচ্চা তাদের ক্ষেত্রেও কি পরিমান ঔষধ খেতে হবে সেই বিষয়টি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে আসি টাফনিল খাবার নিয়ম–

টাফনিল সাধারত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে যখন মাইগ্রেনের ব্যথা হয় তখন ২০০ মিলিগ্রাম প্রথম উপসর্গ প্রদর্শিত হলে দিতে হবে। টাফনিল এর কাজ কি তা জানার পর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। এর থেকে দুই ঘন্টা পর পুনরাবৃত্তি হতে পারে।

এ কারণে সম্পূর্ণ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া আপনি এটা ২০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট রোগীকে দিতে পারবেন না। যখন মাইগ্রেনের ব্যাথা হালকা থাকে বা যাদের হালকা থেকে মধ্যম্বেতা রয়েছে তাদের জন্য ১০০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম দিনে তিনবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।

টাফনিল এর কাজ কি – ট্যাবলেট এর দাম

আপনি টাফনিল ট্যাবিলিটি যেকোনো সাধারণ ঔষধ ফার্মেসিতে পেয়ে যাবেন। বর্তমান সময়ে সকল ঔষধেরই ডুপ্লিকেট ঔষধ দেখা যায় বা পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক ওষুধটি যাচাই করে কিনতে হবে।

টাফনিল ট্যাবলেটের পাওয়ার আলাদা আলাদা রয়েছে যেমন কোন ট্যাবলেটের পাওয়ার ১০০, কোন ট্যাবলেটের পাওয়ার 200। তবে ভিন্ন পাওয়ারের হলেও টাফনিল সকল ট্যাবলেটের দাম একই হয়ে থাকে।

সাধারণত টাফনিল ট্যাবলেটটি বাজারে স্কাপ কোম্পানির ট্যাবলেট আকারে বাজারজাত করা হয়ে থাকে, এই ঔষধের প্রতি পাতা হচ্ছে ১০০ টাকা এবং প্রতি পিস হচ্ছে ১০ টাকা করে। টাফনিল এর কাজ কি তা না জেনে ওষুধটি সেবন করার পূর্বে বা কাউকে সেবন করতে দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিতে হবে।

আপনারা টাপনিল ঔষধটি যেকোনো সাধারণ ফার্মেসিতে পেয়ে যাবেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কোন রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ঔষধটা কিনতে হবে।

অতিরিক্ত খেলে কি হয়

কোন ঔষধি অতিরিক্ত সেবা করা উচিত নয় বা কোন ডাক্তারই প্রয়োজন এর দিকে অতিরিক্ত খাওয়ার কথা বলেন না। অনেকেই ভেবে থাকেন যে অতিরিক্ত ওষুধ খেলে তাড়াতাড়ি রোগ সেরে যাবে।

কম সময় সুস্থ হওয়ার জন্য অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করে ফেলেন। অতিরিক্ত ঔষধ সেবন করার ফলে আপনার তাড়াতাড়ি তো রূপ কমবেই না বরং আপনি আরো অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। 

টাফনিল ট্যাবলেট অতিরিক্ত খেলে আপনার মাথা ব্যাথা, বমি বমি ভাব, বমি, রক্তপাত, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব হওয়া, এবং খিচুনিও হতে পারে ইত্যাদি অতিরিক্ত ওষুধ খেলে আরো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আপনার অবশ্যই টাফনিল এর কাজ কি তা জেনে টাফনিল ওষুধটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে। তীব্র বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে বৃক্ষ-বৈক্য এবং যকৃতির ক্ষতিও টাফলিন অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য হতে পারে।

চিকিৎসকরা কোন সময়েই গর্ভ অবস্থায় এই ওষুধটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তাব করেন না। টাফলিন ঔষধটি গর্ব অবস্থায় কখনোই ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয় না। তাই অবশ্যই আপনার যদি কোন সমস্যা দেখা যায় আর আপনি গর্ভাবস্থায় থাকেন তাহলে তা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া একদমই খাওয়া যাবে না।

শেষ কথা

আমরা সবাই জানি টাফলিন সাধারণত মাইগ্রেনের মাথা ব্যাথার উপশম করতে ব্যবহার করা হয় এবং অপারেটিভ পরবর্তী ব্যাথা এবং জ্বরের বেতন আসুক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে বা ব্যবহার করার জন্য ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আপনার যদি এরকম কোন সমস্যা থাকে তাহলে আপনি টাফলিন ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। 

যেকোনোই ঔষধি সেবন করার পূর্বে ঔষধ ব্যবহার করার নিয়ম, আপনার শরীরের অবস্থার সাথে ঔষধের পরিমাণ এবং অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত। আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি টাফনিল ওষুধটির কাজ কি, টাফলিন ঔষধ খাওয়ার নিয়ম এবং এর পার্শ্বপাতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আশা করবো আমাদের আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন। যেকোন ঔষধই ভালো করে জেনেশুনে সেবন করবেন। হুটহাট করে ফার্মেসি থেকে ঔষধ নিয়ে এসে খাওয়া উচিত নয়। ধন্যবাদ।

বি:দ্র: ওষুধের মাত্রা ঠিক রাখতে সব সময় যেকোন ঔষধ আলো থেকে দূরে রাখুন, শীতল স্থানে রাখুন এবং শুকনো স্থানে রাখুন। এবং অবশ্যই যেকোন ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। 

টাফনিল এর কাজ কি সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

প্রশ্ন ১: টাফনিল ঔষধ কি কাজে লাগে?

উত্তর:- টাফনিল ঔষধ উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রেও মাইগ্রেনের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এটি মাইগ্রেনের সমস্যায় প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করবে। 

প্রশ্ন ২: টাফনিল ট্যাবলেট এর কাজ কি? 

উত্তর:- এটি একটি অ স্টেরয়েডাল বিরোধী প্রদাহী ড্রাগ (নসাইড) হিসেবে কাজ করে যা শরীরের হরমোন গুলি নিয়ন্ত্রণ করে। যা শরীরে ব্যথা ও প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটির ফলে মাথা ব্যাথা,আর্থারটিস, অন্যান্য ছোটখাটো আঘাতের ব্যাথা, পেছনের ব্যাথা এবং মাসিকের ব্যাথাও হতে পারে। 

প্রশ্ন ৩: টাফনিল কি?

উত্তর:- টাফনিল ১০ এমজি ট্যাবলেট বিষন্নতার উপসর্গগুলি উপশম করতে ব্যবহৃত হয়। এই লক্ষণগুলির মধ্যে আগ্রহের ক্ষয়, বিষন্নতা, জ্বালাময়তা এবং অলসতা অন্তর্ভুক্ত থাকে।

প্রশ্ন ৪: মাইগ্রেন কি স্থায়ীভাবে নিরাময়যোগ্য?

উত্তর:- আপনি আপনার এমন জিনিস গুলো এড়াতে পারেন যা আপনার মাইগ্রেনকে ট্রিগার করে। মাইগ্রেনের জন্য এখনও স্থায়ীভাবে কোন প্রতিকার নেই। কিন্তু এর ঔষধগুলি তা প্রতিরোধ বা বন্ধ করতে সাহায্য করতে পারে। যা আপনার মাইগ্রেনের লক্ষণগুলোকে আরো খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। মানসিক চাপ কমানো এবং ভালো ঘুমের অভ্যাসের মতো জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলোও সাহায্য করতে পারে। 

প্রশ্ন ৫: এক সপ্তাহ ধরে মাইগ্রেন কেন হয়? 

উত্তর:- মাইগ্রেনের সমস্যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিনও স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু একটি মাইগ্রেন যা ৭২ ঘন্টার বেশি স্থায়ী হয় তাকে স্ট্যাটাস মাইগ্রেনোসাস বলা হয়। একটি সাধারণ মাইগ্রেন কখনো কখনো স্ট্যাটাস মাইগ্রেনোসাসে পরিনত হতে পারে, যদি আক্রমণ শুরু হওয়ার পরে আপনি যথেষ্ট তাড়াতাড়ি চিকিৎসা না করেন। 

আরও পড়ুন-

সিনকারা সিরাপ এর উপকারিতা ও সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়

Leave a Comment