পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করবেন ও কিভাবে

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট

একজন মহিলার গর্ভবতী হওয়ার যে সকল লক্ষণ দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম একটি লক্ষণ হলো পিরিয়ড মিস হওয়া।

কিন্তু কোন নারীর পিরিয়ড মিস হয়েছে মানেই সে গর্ভবতী এমনটা ভাবা যাবে না। নারীদের বিভিন্ন কারণেই পিরিয়ড মিস হয়ে থাকে। 

তাই একজন মহিলাকে গর্ভধারণের বিষয়টি নিশ্চত হওয়ার জন্য প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে। কিন্তু পিরিয়ড মিস

হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হবে তা আমাদের সকলকে ভালোভাবে জানতে হবে। 

কিটের মাধ্যমে প্রেগন্যান্সি টেস্টের নিয়ম জেনে রাখা দরকার। প্রথম মাসে গর্ভবতী হওয়ার প্রথমে সাধারণত কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না।

তবে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা তা জানা যায়। তবে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য ছাড়াই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা যায়।

আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন প্রেগন্যান্সি কতদিন পর বুঝা যায়, পিরিয়ড মিশ হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ,

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করেবেন, প্রেগন্যান্সি হওয়ার কত দিন পর মাসিক বন্ধ হয় ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ কাঠি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম ও সময়

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট

১। পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে থেকে মাথা ঘোরা এবং মুড সুইং দেখা যায়।

২। সকাল বেলায় খারাপ লাগা শুরু হয় এটি গর্ভবতী মায়েদের একটি লক্ষণ

৩।  অনেক গর্ভবতী মায়েদের খাবারের প্রতি রুচি বেড়ে যায় আবার অনেকের খাবার খাওয়ার আগ্রহ থাকে না। 

৪। গর্ভবতী নারীদের শরীরে হরমোন পরিবর্তন হওয়ার কারণে ঘন ঘন প্রসাব হয়ে থাকে।

৫।  গর্ভবতী নারীদের কিছুক্ষণ পরপর গলা শুকিয়ে যায় এবং পানির পিপাসা লাগে। 

৬। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে মাথা ঘোরা এবং মাথা ব্যথা শুরু হয়।

৭। গর্ভবতী নারীদের দূর গন্ধ যুক্ত সাদা স্রাব বেশি হয়। 

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট – যেভাবে টেস্ট করবেন

প্রেগন্যান্সি টেস্টের জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে  প্রেসাব থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। কারণ সকালের প্রথমবারের প্রস্রাব বেশি ঘনীভূত থাকে।

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হবে এবং কখন টেস্ট করতে হবে তা আমরা অনেকেই ভুলে যায়।  সকালের প্রস্রাবে এইচসিজি হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকে।

তবে প্রচুর পানি পান করে অথবা পিরিয়ডের ডেট আসার আগে এই টেস্ট করলে রির্পোট ভুল আসতে পারে। প্রেগন্যান্সি কিটের প্যাকেটে এটি ব্যাবহারের নিয়ম কানুন লেখা থাকে।

সেই নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা করতে হবে। প্রথমে একটা পাত্রে সকালের প্রস্রাব সংগ্রহ করে রাখতে হবে। একটা ড্রপে পাত্র থেকে প্রস্রাব উঠান। এরপর প্রেগন্যান্সি টেস্টের নির্দিষ্ট স্থানে ড্রপের মাধ্যমে নমুনা দিতে হবে।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ফলাফল পাওয়া যাবে। প্রেগন্যান্সি টেস্টের নিয়ম হলো যদি কীটে একটি দাগ উঠে তাহলে মহিলা গর্ভবতী না আর যদি কীটে দুটি দাগ উঠে তাহলে মহিলা গর্ভবতী মনে করতে হবে। 

প্রেগন্যান্সি টেস্ট কতদিন পর করতে হয়

পিরিয়ড মিশ হওয়ার পর  কখনো তারাহুড়ো করে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা উচিত নয়। পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হবে সে বিষয়ে একটি মত হলো কমপক্ষে ১ সপ্তাহ অপেক্ষা করে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে।

কারণ তাড়াতাড়ি করে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করলে অনেক সময় সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যাায় না। আপনার পিরিয়ড যদি প্রতি মাসেই একটু দেরিতে হয় বা যদি অনিয়মিত হয় তাহলে পিরিয়ড শেষদিন থেকে ৩৫ থেকে ৪০ দিন পর টেস্ট করতে হবে।

প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের দাম কেমন

বিভিন্ন ব্রান্ডের প্রেগন্যান্সি কিটের দাম বিবিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে এই কিটের দাম সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

লবণ দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে চাইলে 

লবণ দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট হলো একটি সনাতন পদ্ধতি। পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হবে তা  তা  দাদি-নানীরা জানত না। তাই তারা বাড়িতে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করত। লবণ দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্টর নিয়ম জেনে নিন-

যা লাগবে

১। একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাচের গ্লাস লাগবে। 

২। অল্প পরিমাণ লবণ লাগবে।

৩। সকাল বেলার প্রথম প্রস্রাব লাগবে।

৪। একটি ড্রপার লাগবে। 

যেভাবে পরীক্ষা করবেন

সকালবেলার প্রথম প্রস্রাব ড্রপের সাহায্যে কয়েক ফোঁটা নিতে হবে। সেই প্রস্রাবের উপর সামান্য লবণ দিতে হবে। এরপর কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

এরপর যদি দেখেন যদি প্রস্রাবে বুদবুদ উঠতে থাকে তাহলে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন। আর যদি কোন পরিবর্তন না দেখতে পান তাহলে মনে করতে হবে আপনি গর্ভবতী হন নি। 

প্রেগন্যান্ট হওয়ার কত দিন পর মাসিক বন্ধ হয়

একজন নারী গর্ভবতী হওয়ার পর পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হয় তা হলো পরবতী মাসিক হওয়ার সময় পর্যন্ত মানে চার সপ্তাহ বা এক মাস পর ফলাফল জানা যায় মহিলা গর্ভবতী কিনা।

মাসিকের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও যদি মাসিক না হয় তাহলে পরীক্ষা করতে হবে। রেজাল্ট পজেটিভ হলে তো তা বুঝতেই পারবেন

আর নেগেটিভ হলে আবার চেষ্টা করতে হবে। যাদের মাসিকে অনিয়মিত হয় তাদের বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। প্রেগন্যান্ট হয়েছে কিনা তা জানা যায় মাসিক বন্ধের ৩০ দিন পর। 

শেষকথা

একজন মহিলা গর্ভধারণের কিছু দিনের মধ্যে গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি দেখা যায়। তবে গর্ভধারণের  উপসর্গগুলো পিরিয়ডের সময় বা এর ১-২ সপ্তাহে আগে বা পরে দেখা যায়।

তবে যদি এই লক্ষণগুলো লক্ষ করেন তবে প্রসূতি বিশেষজ্ঞ সাথে পরমর্শ করা উচিত। আশা করি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতিসহ একজন নারী গর্ভবতী হলে কি করতে হবে এবং  

পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট  করলে বুঝা যায় তা সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেল পাঠকদের অনেক উপকার করবে। এই আর্টিকেল ভালো লেগে থাকলে সকলের নিকট শেয়ার করে দিবেন। 

পিরিয়ড সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর / FAQ 

১। প্রেগনেন্ট হলে কত দিনের মধ্যে বোঝা যায়?

উত্তরঃ সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণগুলি গর্ভধারণের 6-41 দিনের মধ্যে অনুভব করা শুরু করে

২। কত দিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়?

উত্তরঃ প্রায় সব গর্ভবতী মহিলার একটি ইতিবাচক প্রস্রাব গর্ভাবস্থা পরীক্ষা হবে মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিন থেকে এক সপ্তাহ পর। একটি আধুনিক হরমোন গর্ভাবস্থা পরীক্ষা, একটি ইতিবাচক ফলাফল দেখাচ্ছে গর্ভাবস্থার শুরুতে প্রতিদিন একটি করে গর্ভাবস্থা পরীক্ষার স্ট্রিপগুলির একটি সিরিজ।

আরও পড়ুন-

হরমোনের সমস্যা বোঝার উপায় ও রোগের লক্ষণসমুহ

প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি ও নিয়ম

Leave a Comment