ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও কাগজপত্র

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ডাচ বাংলা ব্যাংক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতক কর্মকান্ডের বড় একটি  অংশ পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ড যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে এটি প্রতিষ্টিত করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২১০ টি শাখা, ৪৭৭৪টি এটি এম বুথ, ৪৫০০ টি এজেন্ট ব্যাংকিং অফিস এবং ১১০০ টি ফাস্ট ট্রাক সব সময় ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে।

বর্তমানে রকেট নামে পরিচিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি ডাচ বাংলা ব্যাংক দিয়ে থাকে। ২ কোটি ৪০ লাখেরও অধিক পরিমাণ গ্রাহক রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংকে।

বর্তমানে ঘরে বসেই ডাচ বাংলা ব্যাংকের সেবা পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলে আমরা ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরব।

আরও পড়ুনঃ

ডাচ ব্যাংলা একাউন্টের প্রকারভেদ

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ডাচ ব্যাংলা ব্যাংকে দুই ধরণের একাউন্ট খোলার ব্যাবস্থা আছে। প্রথমটি হলো সেভিংস একাউন্ট দ্বিতীয়টি হলো র্স্টুডেন্ট একাউন্ট।এছাড়া এগুলোর আয়তাই আরো কিছু একাউন্ট রয়েছে নিম্নে তার নামগুলো আলোচনা করা হলো:

১. Saving Deposit Account (Saving Account) = 500 taka Initial Deposit Amount.

২. Saving Deposit Account plus (Saving Account) =500 Taka Initial Deposit Amount.

৩. Special Notice Deposit Account (Fixed Deposit) = 2000 taka initial Deposit

৪. Current Deposit Account(current Account) =1000 taka initial Deposit Account

৫. Interest Free Savings Deposit Account (Saving Account) = 5000 taka Initial Deposit Amount

৬. Excel Saving Account ( Saving Account) = 500 taka initial Deposit Account.

৭. DBBl School Savers Account (Student Account) = 500 Taka initial Deposit Amount.

র্সটুডেন্ট একাউন্ট বাদে অন্য সকল অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একই ডকুমেন্ট ব্যাবহার করা হয়।

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সকলেরি জানা দরকার।কারণ ডাচ বাংলঅ একাউন্ট খুব জনপ্রয় মাধ্যম। নিম্নে একাউন্ট খোলঅর নিয়ম আলেঅচনা করা হলো:

প্রথমে স্থানীয় শাখ অফিসে যেতে হবে। এরপর কোন একাউন্ট খুলবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। ব্যাংক থেকে আবেদন ফরম নিয়ে ফর্মটি ভালোভাবে পুরণ করতে হবে।এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপএ এবং ব্যাংকে প্রথম মাসের ডিপোজিট অগ্রিম জমা দিতে হবে।

ব্যাংক আপনার কাগজপএ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে আপনার একাউন্ট চালু করে দিবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে-

১। আবেদনকারীর ছবি,

২। জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকফি,

৩। নমিনি আইডি,নমিনি ছবি ইত্যাদি

একাউন্ট খোলার জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট আছে এমন কোন ব্যাক্তির সুপারিস প্রয়োজন পড়ে। এনবিএন অ্যামরো মোবাইল অ্যাপ ব্যাবহারের মাধ্যমে অনলাইনে একাউন্ট খোলার সুযোগ রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে রেজিস্টেশন করে একাউন্ট খোলা যায়। ডাচ বাংলা একাউন্ট খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তা আলোচনা করা হলো:

১। যিনি একাউন্ট খুলতে আগ্রহী তার দুই কপি পাসপোাট সাইজের ছবি লাগবে।

২। ছবিযুক্ত পরিচয়পএ আনতে হবে পাসপোর্ট/ ভোটার আইডিকার্ড যে কোন একটি আনতে হবে।

৩। যার মাধ্যমে আপনি একাউন্ট করতে এসেছেন তার  এক কপি ছবি এবং তার ভোটার আইডি কাডের কপি জমা দিতে হবে।

৪। ইউটিলিটি বিলের কপি ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

৫। যদি ব্যাবসায়ী হয়ে থাকেন তবে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম  আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে।

এছাড়া অন্য কোন নথি দরকার লাগলে জমা দিতে হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং সেভিং একাউন্ট খোলার নিয়ম অনেকটা একি রকমের হয়ে থাকে। ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ,জাতীয় পরিচয় পএর ফটোকপি এবং ১ কপি নমিনির ছবি লাগবে।এরপর এসকল কাগজপএ নিয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা অফিসে যেতে হবে। এবং সেখান থেকে আপনাকে ফরম দিবে এবং সেই ফরম পুরণ কেরতে হবে। এরপর প্রাথমিক ডিপোজিট জমা দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপএ জমা দিতে হবে। এরপর সেভিংস একাউন্ট চালু হয়ে যাবে।সেভিং একাউন্ট খোলার পর নূন্যতম জমার পরিমাণ ক্যাশ একাউন্টে জমা দিতে হবে। এরপর ১-২ দিনের মধ্যে ব্যাংক থেকে এটি এম কার্ড দেওয়া হবে।

সেভিংস একাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যে কোন ব্যাংকের একাউন্ট খুলতে হলে কিছু প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ পত্র লাগে। ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী সেভিং একাউন্ট খুলতে যা যা লাগে তা আলোচনা করা হলো:

১। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লোগবে।

২। একাউন্ট খোলার জন্য আপনার বয়স ১৮ হতে হবে।

৩। আপনার পাসপোর্ট সাইজের চার কপি ছবি লাগবে।

৪। যাকে আপনি নমিনি করবেন তার ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয়প পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

৫। আপনাকে প্রথম ডিপোজিট নূন্যতম ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে।

৬। যারা ব্যাবসা করে তাদের অবশ্যই ট্রেড লাইন্সের কপি জমা দিতে হবে।

৭। ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

৮। পূর্ব করো DBBL অ্যাকাউন্ট খোলা আছে এমন ব্যাক্তির সুপারিস লাগবে।

সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা

সাধারণত মানুষ ডাচ বাংলা একাউন্ট সুবিধা নেওয়ার জন্যই  ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চায়। নিম্নে ডাচ বাংলা একাউন্টের সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো:

১। সেভিংস একাউন্ট থেকে খুব সহজেই চেক ইস্যু হয়।

২। ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ডর ব্যাবহার করা যায়।

৫। ডাচ বাংলা ব্যাংকের যেকোন শাখায় সহজেই টাকা উঠানে যায়।

৬। এস এম এস ব্যাংকিং এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধাগুলো পাওয়া যায়।

৭। উন্নতমানের ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হয়ে থাকে।

৮। ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে খুব সহজে ধার পাওয়া যায়।

৮। DBBL থেকে সহজেই DPS খোলা যায়।

৯। ব্যাংক থেকে আনলিমিটেড পরিমাণ লেনদেন করা যায়। 

সেভিংস একাউন্ট এর লিমিটেশন

সেভিংস একাউন্টে তেমন কোন অসুবিধা নেই বললেই চলে। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেমন:

১। একাউন্ট থাকলে তার জন্য চার্জ এবং ফি প্রদান করতে হবে।

২। সেভিংস একাউন্টে মত বারবার লেনদেন করা যায় না। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লেনদেন করতে হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট করার নিয়ম

অনেক স্টুডেন্ট আছে যার স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চাই।স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংকের কোন স্থানীয় শাখা থেকে ফরম সংগ্রহ করে তা পূরণ করতে হবে। ফরম পূরণ করার পর ব্যাংকে জমা দিতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর আপনার একাউন্ট চালু হবে।

এরপর ব্যাংক থেকে আপনাকে এটিএম কার্ড দিবে টাকা উঠানোর জন্য। ব্যাংক থেকে আপনি পরবর্তীতে চেক বই সংগ্রহ করতে পারেন। স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই স্টুডেন্ট হতে হবে।

স্টুডেন্ট একাউন্ট এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সেভিংস একাউন্ট থেকে কিছুটা ভিন্ন স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে যেসব কাগজ পএ লাগে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১।  আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন কপি অথবা এনআইডি কার্ডর ফটোকপি জমা দিতে হবে।

২।  স্টুডেন্টদেরকে অবশ্যই তাদের প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড জমা দিতে হবে।

৩। পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি জমা দিতে হবে।

৪। যাকে নমিনি বানানো হবে তার ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হবে।

৫। ডাচ বাংলঅ ব্যাংকের র্পূবে একাউন্ট খোলা আছে এমন ব্যাক্তির সুপারিস থাকতে হবে। 

৬। স্টুডেন্টের মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।

৭। যে সকল স্টুডেন্ট ব্যাবসা করে তাকে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে বেশি পরিমাণ লেনদেনের জন্য।

৮। অনেক সময় স্টুডেন্টদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ প্রয়োজন হতে পারে।

স্টুডেন্ট একাউন্টের সুবিধা

স্টুডেন্টরা সাধারণত ডাচ বাংলা একাউন্ট খোলার জন্য  ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চায়। নিম্নে স্টুডেন্টদের ডাচ বাংলা একাউন্ট খোলার সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১। এটিএম কার্ড একাউন্ট খোলার সাথে সাথে দিয়ে দেওয়া হয়।

২। এটিএম বুথ থেকে ডাচবাংলা ব্যাংকের যে কোন শাখায় অর্ত লেনদেন করা যায়।

৩। টু ফেক্টর অথেনটিকেশনের ব্যাবহার করে একাউন্ট সিকিউরিটি দেওয়া হয়।

৪। স্টুডেন্টরা সবসময় ব্যাবহার করতে পারে স্টুডেন্ট একাউন্ট।

৫। এসএমএস এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে।

৬। বর্মানে স্টুডেন্ট একাউন্টেন ধঅরীদেরও চেক বই দিয়ে থাকে।

৭। ঘরে বসেই একাউন্ট থেকে লেনদেন করা যায় ডিজিটাল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।

৮। স্টুডেন্ট একাউন্টটি রকেটের সাথে সংযুক্ত করা সম্ভব।

৮। স্টুডেন্টনরা ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে এডুকেশেন লোনের জন্য আবেদন করতে পারে।

স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সীমাবদ্ধতা

ডাচ বাংলঅ ব্যাংকের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই কারণে অনেকে  ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে আগ্রহী হয় না ।নিম্নে অসুবিধা আলোচনা করা হলো: 

১। প্রতিমাসে স্টুডেন্ট একাউন্ট জমা ও উত্তেঅলনের পরিমাণ ২লক্ষ টাকার বেশি হবে না।

২। একাউন্ট থকে ৫০ হাজার টাকার বেশি ১ দিনে উত্তোলন করা যাবে না।

৩। ৫০০০ টাকার বেশি একাউন্ট ব্যালেন্স তুললে চার্জ দিতে হবে।(চার্জ ১০০ টাকা + ১৫ টাকা ভ্যাট)

৪। এক লক্ষ টাকার বেশি ১ বছরের মধ্যে তুললে ১৫০ টাকা ফি দিতে হবে।

৫। ৫ বারের বেশি এটিএম কার্ড১ দিনে অর্থ উত্তোলনের জন্য ব্যাবহার করা যাবে না।

শেষকথা

ডাচ বাংলা ব্যাংক বর্তমানে বাংলাদেশের অধিক চাহিদা সম্পন্ন, বিশ্বস্ত ও অধিক সুবিধা প্রদানকারী ব্যাংক। আর এই ব্যাংকের যেকোনো একাউন্ট খোলা অনেক সহজ। এছাড়াও ডাচ ব্যাংকের রয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা।

এখন ডাচ বাংলা ব্যাংকের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে আপনি চাইলে বিদেশ থেকে টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন। আর খুব সহজেই টাকা দেশে বসেই একাউন্ট এ পাবেন। এতে আপনার টাকা নিরাপদে দেশে পাঠাতে পারবেন।

আশা করছি ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পেয়েছেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১। ডাচ বাংলা ব্যাংকে সর্বোচ্চ কত টাকা রাখা যায়?

উত্তরঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক সহ বেশ কিছু ব্যাংক ৫০ হাজার টাকার বেশি তুলতে দেয় না। আর আপনি একবারে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা তুলতে পারবেন।

২। ডাচ বাংলা ব্যাংক এ একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?

উত্তরঃ একাউন্ট খুলতে কোন টাকা লাগে না, একাউন্ট খুলে টাকা রাখতে হয় ‌। ১০৫০ টাকার চেয়ে কিছু বেশি রাখতে হয়।

৩। Dbbl এজেন্ট ব্যাংকিং কি?

উত্তরঃ বিশেষ করে দূরবর্তী অবস্থানের ক্লায়েন্টদের জন্য, এজেন্ট ব্যাঙ্কিং বিভাগ তাদের ব্যাঙ্কিং এজেন্টগুলিতে তহবিল এবং অন্যান্য গ্রহণযোগ্য পরিষেবাগুলি জমা দিতে এবং উত্তোলন করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন-

Leave a Comment