দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান, এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

বর্তমান যুগকে বলা হয়ে থাকে বিজ্ঞান নির্ভর যুগ। বিজ্ঞানের অবদান রয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষণে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যা কিছু ব্যাবহার করি,

সে সব বিজ্ঞানের দান। আমাদের চারপাশের সবকিছুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছে বিজ্ঞান। 

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান এর অবদানের কারণে মানুষ প্রকৃত অর্থেই আধুনিক মানুষ হয়ে উঠেছে।

সভ্যতার সেই ধুসর দিনে মানুষের একদিন প্রকৃতির খেয়ালখুশিতে নিয়ন্ত্রিত হতো তার জীবন। কিন্তু মানুষের সেই অসহয় জীবন পছন্দ হয়নি।

মানুষ তার স্বপ্নকে সফল করে তুলতে প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রুপকে ভেদ করতে চাইল। অবশেষে মানুষ তার স্বপ্ন সাধনাকে পূর্ণ করেছে জলে, স্থলে ও মহাশূন্যে। আজকের আমাদের আলোচনা মুলত দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান এর অবদান ও এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।

আরও পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার নিয়ম, আর্টিকেলের ধরন ও প্রয়োজন

প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের অবদান  

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

মানুষের আত্মরক্ষার ও আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে বিজ্ঞান সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে বিজ্ঞান মানুষের দৈনন্দিন জীবনের নিত্যসঙ্গী। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান

অ্যান্টি-বায়োটিক রোগ প্রতিরোধের জন্য আবিষ্কার হয়েছে যা চিকিৎসা জগতে এনেছে যুগান্তকার বিল্পব। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান অবদান চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি বিষ্ময়কর সংযোজন হলো রেডিয়ামের অতিবেগুনী রশ্নি, X-Ray,ECG  প্রভৃতি। বিজ্ঞানের অকুণ্ঠ দান হলো ব্রেন অপরেশন,হূৎপিন্ড পরিবর্তন প্রভৃতি কাজের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। 

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান 

বিজ্ঞানের আশীর্বাদে যেন শস্যশ্যামল হয়ে উঠেছে আজকের শুষ্ক পৃথিবী।দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান  আর্শীবাদের ফলে চাষীরা হালের পরির্বতে তুলে নিয়েছে ট্রাকটর।

বীজ ছড়ানোর যন্ত্র, পাকা ফসল মাড়ার যন্ত্র, আগাছা নিড়ানে, রাসায়নিক সার এবং উন্নত মানের উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক ও জীবানু নাশক ঔষধ। বিজ্ঞনের দানে ভরপুর যেন আজ চাষীদের প্রাণ।

শিল্পক্ষেত্রে

 পুরানো অবসান ঘটিয়ে বিজ্ঞান ঘটিয়েছে শিল্পবিল্পব।দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান কারণে  মানুষ যা করতে সময় নিচ্ছে বিজ্ঞান তা কয়েক সেকেন্ডে করে দিচ্ছে, কম্পিউটার ও উন্নত মানের বহু যন্ত্রপাতি হাতে তুলে নিয়েছে এবং মানুষকে করেছে চির আধুনিক। 

পড়াশোনায়  

বিজ্ঞানের কল্যানহস্ত প্রসারিত বর্তমান যুগে শিক্ষা-দীক্ষায়। পেনসিন রাবার, কলম, কাগজ, লেখনী সামগ্রী সবই বিজ্ঞানের দান। এখন ঘরে বসে যোগাড় করা যায় ইন্টারনেট ওটিভি খুলে পড়াশোনার সামগ্রী। 

পরিবহনে 

বিজ্ঞান এনেছে ক্ষিপ্রগতি পরিবহন জগতে। মানুষ নিমিশে একদেশ থেকে অন্যদেশে চলে যেতে পারে তা সম্ভব হয়েছে  বিজ্ঞানের কল্যানের কারণে। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান দানে মানুষ অসীম আকাশে পাড়ি দিচ্ছে আজ পৃথিবীর সীমা ছাড়িয়ে। 

মহাকাশ গবেষণায়  

মানুষ আজ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাচ্ছে মাহাকাশে উপগ্রহ পাঠিয়ে এবং আগামী দিনে গ্রহান্তরে পাড়ি দেবার চেষ্টা করছে উপগ্রহ প্রেরিত ছবি দেখে।

অবসর বিনোদনে

বিনোদনের জন্য সামগ্রী যোগান দিচ্ছে বিজ্ঞান যা মানুষের কর্মজীবনের ক্লান্তি দূরিকরণে সাহায্য করে থাকে। বিজ্ঞান দিয়েছে বেতার, মোবাইল,ভিডিও গেম, চলচিত্র ইত্যদি বিনেদনের সামগ্রী।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের কুফল  

বিজ্ঞানের যেমন কিছু সুফল রেয়েছে তেমন এর কিছু কুফল ও রয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো: 

যত্ন সর্বস্বতা

অকশেষে সুখ লাভের আশায় আজ আমরা সর্বত্র যান্ত্রিকতা আজ আমাদের গ্রাস করেছে বিজ্ঞান নির্মিত যন্ত্র। আজ চা বানাই, লিফট বহুতলায় তুলে দেয়, বৈদ্যুতিক পাখা, বৈদতিক চুলা ইত্যাদি কাজ করে থাকি বিদ্যুতের মাধ্যমে। আমাদের জীবনকে কৃত্রিম করে তুলেছে বিজ্ঞানের এইসব যান্ত্রিকতা। 

পরমাণু বোমার আতঙ্ক

বিজ্ঞানীরা পরমাণু বোমা বিশ্বের উন্নতির জন্য নিমার্ণ করেছেন। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান অপ-প্রয়াগ করে যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদীরা লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিন্যাস বিন্যাশ সাধন করছে। পরমাণু যে কতটা বিপদজনক মানবসমাজের জন্য তা হিরোসিমা ও নাগাসাকি বীবৎসতা মানুষকে মনে করিয়ে দেয়।

শেষকথা

বিজ্ঞানতো মানুষেরিই সৃষ্টি দোষ কার বিজ্ঞানের না মানুষের। মালিক যেমন হুকম দেয় গোলাম সেমতো  কাজ করে থাকে। তাই দোষ দিয়ে লাভ নাই বিজ্ঞানকে সব ক্ষেত্রে।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান এর ফলস্বরূপ মানুষ যদি যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তাহলে যন্ত্র একদিন মানুষের ক্ষতি করবে। মানুষকে বিজ্ঞানের ভালো মন্দ দুইটা দিক বিবেচনা করে কাজ করতে হবে। 

বিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

১। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান কি?

উত্তরঃ আমরা যাতায়াতের জন্য গাড়ি, বাইক বা সাইকেলের উপর নির্ভর করি এবং এগুলো সবই বিজ্ঞানের সৃষ্টি। আমরা পরিষ্কারের জন্য সাবান ব্যবহার করি, এবং এটি বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের ফল। আমরা যখন রান্না করি, তখন আমরা এলপিজি গ্যাস এবং চুলা ব্যবহার করি এবং এগুলোও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পণ্য।

২। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কি দৈনন্দিন জীবনের অংশ?

উত্তরঃ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তাদের প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি কীভাবে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার একটি অংশ তার কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল: আমরা রিয়েল-টাইমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করি।

৩। বিজ্ঞানের গুরুত্ব কি?

উত্তরঃ এটি একটি দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করতে অবদান রাখে, আমাদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করে, আমাদের রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ সরবরাহ করে, ব্যথা এবং ব্যাথা উপশম করে, আমাদের মৌলিক চাহিদাগুলির জন্য জল সরবরাহ করতে সাহায্য করে – আমাদের খাদ্য সহ, শক্তি সরবরাহ করে এবং খেলাধুলা সহ জীবনকে আরও মজাদার করে তোলে , সঙ্গীত, বিনোদন।

আরও পড়ুন-

গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা

রবি ইন্টারনেট অফারের কোডসমুহ, রিচার্জ ও মেয়াদ

Leave a Comment