টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পদ্ধতি

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট

প্রেগন্যান্সি সব মহিলাদের জন্যই আনন্দময় অভিজ্ঞতা। তারা সাধারণত প্রেগন্যান্সি নিশ্চিতের আশায় থাকেন এবং নিশ্চিত হওয়ার পর সুখবরটি সকলকে জানায়।

প্রেগন্যান্সির এই ব্যাপারটি প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরে বসেই নিশ্চিত হওয়া যায়। যদিও এখন মহল্লার ফার্মেসিতেও প্রেগন্যান্সি টেস্টের কিট পাওয়া যায়।

তবে আপনি চাইলে টাকা বাঁচিয়ে ঘরোয়া উপাদানের সাহায্যেই টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন। 

আজকের আর্টিকেলে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুব সহজেই টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট এর পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো।

আরও পড়ুনঃ ৬ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ও সঠিক নিয়ম

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পদ্ধতি

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট

টুথপেস্টের ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ টুথপেস্টে প্রস্রাব মেশানোর পর কিছুক্ষণের মধ্যেই নীল হয়ে গেলে রেজাল্ট পজিটিভ বলে ধরা হয়।

এছাড়াও টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার একটি ভিন্ন পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • প্রথমে একটি ব্রাশে টুথপেস্ট নিয়ে নিন।
  • একটি পাত্রে কিছু পরিমাণ মনিং ইউরিন নিয়ে ব্রাশটি ডুবিয়ে নিন ।
  • টুথব্রাশটি পাত্র থেকে বের করে নিয়ে ব্রাশটি শুকাতে দিন।
  • যদি টুথপেস্ট এ গোলাপী বা বেগুনি রঙ দেখা যায় তবে আপনি গর্ভবতীহতে পারেন। 

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টের নির্ভুলতা 

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টের নির্ভুলতা কতটা তা নির্ভর করে কিছু বিষয়ের ওপর।চলুন জেনে নিই।

  • টুথপেস্টের ধরণ
  • আপনার প্রস্যাবের ঘনত্ব
  • আপনার প্রস্রাবের হরমোন HCG এর পরিমাণ

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টের ঝুঁকি

টুথপেস্ট দিযে প্রেগন্যান্সি টেস্টের কোনো ঝুঁকি নেই,কিন্তু এই টেস্টটি সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য নয়।তাই আপনি যদি প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে চান তবে অবশ্যই ভালো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে পারেন।

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টের বিকল্প পদ্ধতি

টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টের বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে আপনি  প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট ব্যবহার করতে পারেন।প্রেগনেন্সি টেস্ট গুলি আপনি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়ায় কেনা এবং ব্যবহার করা যায়।

এই প্রেগনেন্সি কিট গুলো আপনি যেকোনো ফার্মেসিতে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন ।এগুলো বেশ নির্ভরযোগ্য এবং গর্ভাবস্থা নির্ণয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়।

ঘরোয়া পদ্ধিতে প্রেগনেন্সি টেস্ট 

টুথপেস্ট ছাড়াও বাসায় থাকা কিছু জিনিস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন।এখন কিভাবে করবেন এই প্রেগনেন্সি টেস্ট তা নিচে উল্লেখ করা হলো।

ব্লিচ পরীক্ষা

একটি বাটিতে মনিং ইউরিনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মেশান। এরপর এতে যদি বেশি ফেনা হতে থাকে,তবে বুঝতে হবে আপনি মা হতে চলেছেন। 

ভিনেগার পরীক্ষা

প্লাস্টিকের বাটিতে ভিনেগার ও প্রস্রাব মেশান। এতে যদি বুদবুদ তৈরি হয় এবং মিশ্রণের রঙে পরিবর্তন হয়, তবে  বুঝতে হবে আপনি সন্তানসম্ভবা।

চিনি

একটি বাটিতে মনিং ইউরিনের সঙ্গে দু’ই থেকে তিন চামচ চিনি মেশান। চিনি যদি গলে না গিয়ে দলা পাকিয়ে যায়, তবে বুঝতে হবে আপনি মা হতে চলেছেন।

তবে এই সব পদ্ধতিতে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা সম্ভব আপনি অন্তসত্তা কিনা। নিশ্চিত হতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 প্রাকৃতিক গর্ভাবস্থার পরীক্ষার উপকারিতা 

প্রাকৃতিক প্রেগনেন্সি টেস্টের নির্দিষ্ট সুস্পষ্ট এবং কিছু কম সুস্পষ্ট সুবিধা আছে । নীচে গর্ভাবস্থার পরীক্ষা করার প্রাকৃতিক উপায়গুলির কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

  • প্রাকৃতিক প্রেগনেন্সি টেস্টের একটি অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থার ঘটনায় এর দূরতার কারণে বেশ উপকারী ।
  • প্রাকৃতিক প্রেগনেন্সি টেস্টগুলি আপনাকে দোকানের কাউন্টারে প্রেগনেন্সি টেস্টের কিটগুলির জন্য জিজ্ঞাসা করার বিব্রততা থেকে বাঁচায় ।
  •  এই পরীক্ষাগুলি আপনাকে আপনার সম্ভাব্য গর্ভাবস্থাকে গোপন রাখতে অনুমতি দেয় এই পরীক্ষা।
  •  বাসা-বাড়িতে সহজে পাওয়া জিনিস ব্যবহার করে সম্পন্ন করা যেতে পারে ।
  •  কিট কেনার চেয়ে প্রাকৃতিক গর্ভাবস্থার পরীক্ষাগুলি সস্তা । 
  • প্রেগনেন্সি টেস্টের কিটগুলির জীবন সম্পর্কে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা

বাসায় প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট দিয়ে যদি সঠিক ভাবে,সঠিক সময় মেনে ইউরিন টেস্ট করেন, তা হলে ফলাফল সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ৯৯ %। তবে আপনি প্রেগন্যান্ট না নয়, এ বিষয়ে চরম সিদ্ধান্ত নেবেন আপনার স্বাস্থ্যকর্মী

  • প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটে পজিটিভ রেজাল্ট আসলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখান ১০০ %  নিশ্চিত হওয়ার জন্য। এছাড়াও, অন্তস্বত্তা হওয়ার পরে কিছু ঔষধপত্র প্রয়োজন হয় বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন প্রয়োজন হয়। সে বিষয়ে পরামর্শ করবেন চিকিৎসকই। 
  • ঋতুচক্র মিস হওয়ার পরের দিনই যদি কিটে রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তা হলে কয়েকদিন পরে আবার চেষ্টা করতে হবে। আপনার শরীরকে যথেষ্ট মাত্রায় এইচসিজি(HCG) হরমোন তৈরি করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিন। 
  • যখন কনসিভ করার সম্ভাবনা হবে,তবে তার থেকে দশ থেকে চৌদ্দ দিন পরে যদি রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তবে পিরিয়ড মিস হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর আবার টেস্ট করুন।
  •  যদি শরীরে হঠাৎ কোনও পরিবর্তন অনুভব করেন বা আপনার মনে হচ্ছে আপনি কনসিভ করেছেন, অথচ টেস্ট কিটে রেজাল্ট নেগেটিভ আসছে; তা হলে ।অবশ্যই একবার ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

পরিশেষে

সুসন্তান আল্লাহর দেওয়া এক বড় নেয়ামত। আল্লাহ যখন চান তখন তাকে তা দেন। তাই প্রেগনেন্সি টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসলেও চিন্তিত হবেননা। নিজেকে আনন্দে রাখুন, নিজেকে নিয়ে সতর্ক থাকুন, শরীরের কোনও অস্বস্তি চেপে না রেখে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যে কোনো অসুবিধা থেকে অনেক রক্ষা পাবেন।

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিভাবে করতে হয় এবং এর আনুষাঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে।আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।এধরণের আরও আর্টিকেল পেতে আমাদের ব্লগটি ফলো করে রাখুন।ধন্যবাদ।

প্রেগনেন্সি টেস্ট সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর/FAQ

১) মাসিক বন্ধ হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়?

উত্তর: যদি আপনার পিরিয়ড চক্র নিয়মিত হয়,তাহলে আপনি আপনার পিরিয়ড মিস হওয়ার প্রথম দিনেও গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করতে পারেন। যদি আপনার পিরিয়ড চক্র নিয়মিত না হয় তাহলে আপনি ৭-১০  দিন অপেক্ষা করতে পারেন। যাইহোক,৬-৭ দিন পরেও পরীক্ষা করে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।

২) প্রস্রাব ও টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট?

উত্তর: টুথপেস্ট দিয়ে বাড়িতে প্রেগনেন্সি টেস্টের জন্য আপনার যা দরকার তা হল একটি পরিষ্কার বাটি, দুই টেবিল চামচ সাদা টুথপেস্ট এবং সকালে প্রস্রাব সংগ্রহ করা। একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ টুথপেস্ট এবং এক টেবিল চামচ প্রস্রাব মিশিয়ে নিন।এরপর যদি টুথপেস্ট নীল হয়ে যায় এবং ফেনাযুক্ত হয়ে যায়, তাহলে আপনি গর্ভবতী।

৩) প্রেগনেন্সি কিভাবে নিশ্চিত করব?

উত্তর: প্রেগনেন্সি পরীক্ষাগুলো হল একজন ব্যক্তি কীভাবে খুঁজে পায় যে সে গর্ভবতী কিনা । বেশিরভাগ লোক তাদের প্রস্রাব ব্যবহার করে বাড়িতে গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করে। যাইহোক, আপনি রক্তের নমুনা বা প্রস্রাব ব্যবহার করে আপনার প্রদানকারীর অফিসে গর্ভাবস্থা পরীক্ষাও নিতে পারেন। সবচেয়ে সঠিক ফলাফলের জন্য, হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার জন্য আপনার পিরিয়ড মিস না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

আরও পড়ুন-

নাভি কেমন হলে ছেলে হয়, সঠিক ধারনা ও তথ্যসমুহ

ছেলে সন্তান পেটের কোন দিকে নড়ে ও বাচ্চার অবস্থান

Leave a Comment