মানসিক রোগের ঔষধের নাম
আমরা মূলত মানসিক রোগী বা রোগকে বলতে বুঝি পাগল রোগীদের। মানসিক রোগ কি আসলেই এটাই? অনেক রকম মানসিক রোগ হতে পারে। যেমন- ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি, মুড সুইং আরো বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগ হতে পারে।
অনেকেই ভাবে মানসিক রোগে ভুগলে ডাক্তার দেখাতে হবে। মানসিক রোগের ঔষধের নাম অনেকেরই অজানা।রোগটি সারতে হয়তো অনেক সময় লাগবে অথবা মানসিক রোগের ঔষধ সারাজীবন খেতে হবে।
অনেকে এরকম নানান ধরনের চিন্তায় ভুগেন। এই মানসিক রোগ টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বংশগতভাবে হয়ে থাকে। একটা জীবনে হঠাৎ করে কেউ কোনো ক্রমার (ধাক্কা) মুখে পড়লে মানুষ পুরোপুরি ডিপ্রেসড হয়ে যায়। তবে, মানসিক রোগ এমন একটা রোগ যেটা থেকে মুক্তির উপায় আছে এবং ঔষধও আছে।
মানসিক রোগ হয়ে থাকে মানুষের অতিরিক্ত চিন্তা থেকে। তবে এই রোগের জন্য দ্রুত চিকিৎসা করানো টা খুবই জরুরি। তাছাড়া ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এ সমস্ত রোগীরা পরিবারের কারো সাথে নিজের সমস্যার কথা বলতে চায় না বা শেয়ার করে না।
তাই এরকম রোগীদের উচিত দুশ্চিন্তা বা পেরেশানিতে পড়লে নিজের সমস্যার কথা পরিবারের সাথে বলা। এজন্য অনেক মানসিক রোগী সুস্থও হয়ে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে রোগের কারণ ভিন্ন হয়ে থাকে। মানসিক রোগের ঔষধের নাম গুলো নিয়ে আজকের আর্টিকেল।
আরও পড়ুনঃ গলা ব্যাথার ঔষধের নাম, চিকিৎসা ও ব্যাবহারবিধি
মানসিক রোগের ঔষধের নাম – রোগের কারণ

মনের ব্যাধির নামই হচ্ছে মানসিক রোগ। ভ্রান্ত বস্তু দেখা বা কথা শুনা, সিজোফ্রেনিয়া, ডিমেনশিয়া, অনিদ্রা, ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, পোস্ট ট্রমা স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, অটোফ্যাজিয়া, ক্লিপ্টোম্যানিয়া, ওসিডি বা শুচিবাই ইত্যাদি। যাদের মানসিক রোগের সমস্যা, তাদের ক্ষেত্রে সর্ব প্রকার অসুস্থতা সর্বপ্রথম মানুষের মনে দেখা দেয়।
এটার চিকিৎসা সঠিক সময়ে না করলে আরো বড় আকার ধারণ করে। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী আমাদের দেহের যেকোনো ব্যাধিই নিরাময় করাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা দেহের রোগকে রোগ বলে গণ্য করে থাকি এবং সেটার চিকিৎসার জন্য তখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া হয়।
আমাদের মানসিক অসুস্থতা বা সুস্থতাও যে একটা বড় কিছু, সেটা খেয়াল করা হয় না। যখন কোনো মানুষের দ্বারা কোনো কাজ বা সাংসারিক কাজ চলছেই না। অর্থাৎ লোকেরা তাকে পাগল বলে বারবার, তখনই ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়।
অন্য সব কাজ ঠিকঠাক চলছে বা সাংসারিক কাজও ঠিকঠাক চলছে, কোনো বিশৃঙ্খলা হচ্ছে না, মানসিক দিক দিয়ে সে যতোই অসুস্থ থাকুক না কেন তা কারো নজরেই পড়ে না। আর তাই চিকিৎসার দরকার বলে মনে করে না।
একটু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে শত-শত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে একজনও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না যে মানসিক দিক দিয়ে সে সুস্থ আছে। অথচ মানসিক রোগের যে চিকিৎসা করতে হবে, সেটা কারো মাথায় নেই, কোনো আগ্রহও নেই।
মানসিক রোগ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। যেমন-
(১) শরীরে কোনো কঠিন ব্যাধি
(২) হঠাৎ ভয় পেলে
(৩) জেনেটিক (বংশগত কারণেও হয়ে থাকে। বাবা-মা তার পূর্ব পুরুষ দের মস্তিষ্ক বিকৃতি থাকলে সন্তান দেরও মানসিক রোগ প্রকাশ পায়।)
(৪) অতিরিক্ত নেশা
(৫) মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে
(৬) মানসিক দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, দুঃখ, নিরাশ, অত্যধিক আনন্দ
(৭) পরিবেশগতভাবে
(৮) নিদ্রাহীনতা
(৯) কেউ দুর্বল জায়গায় আঘাত দিয়ে কথা বললে
(১০) কেউ মানুষের সামনে অপমান অপদস্ত করলে
মানসিক রোগের নাম
১। এরোটোম্যানিয়া
এই রোগী মনে করেন যে, কেউ হয়তো তার প্রেমে পড়েছে এবং সে সামাজিক মর্যাদার উপরে। সেই মানুষটি যদি এই রোগীর সাথে সামান্য কথাও বলে তবুও সে মনে করে যে তাকে ঐ মানুষটি অনেক পছন্দ করে বা ভালোবাসে।
পরক্ষণে যদি রোগী নিজেই প্রেম নিবেদন করে, তখন যদি মানুষটি না বলে দেয়। তবুও সে মনে করে যে, এই না এর পিছনে হ্যাঁ লুকিয়ে আছে।
২। কোয়াসিমোডো সিনড্রোম
এই রোগী সব সময় নিজের মধ্যে কি কি দোষ ত্রুটি আছে তা খুঁটিয়ে বের করে আনার চেষ্টা করে। যদি খুত বা ত্রুটি না থাকলেও তবুও কল্পনায় সেটা ভাবতে থাকে।
যেমন ধরুন, রোগীর দাঁত স্বাভাবিক ভাবেই আছে। কিন্তু সে মনে করবে তার দাঁত মনে হয় উঁচু হয়ে গিয়েছে। এটা সে এমন ভাবে ভাবতে শুরু করে যে, একটা সময় সে লজ্জায় বাইরে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।
৩। ফ্রেগোলি ডেল্যুশন
ডেল্যুশন অব ডাবলস এর আরেক নাম। এই রোগী মনে করেন যে, ছদ্মবেশে তার চারপাশের মানুষ তাকে অনুসরণ করে। এবং এটাও ভাবে যে তাকে অনুসরণ করে কোনো বিষয় হাসিল করে নিতে চায়।
৪। ক্যাপগ্রেস ডেল্যুশন
এই রোগী মনে করেন যে, নিজে যে অপরাধ করবে সেগুলো অন্য জনের জন্য হয়েছে সেটা দাবি করবে। এটা ভাবে যে, তার খুব কাছের বন্ধু তার সাথে এমন করেছে।
৫। প্যারাফ্রেনিয়া
এই রোগী নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় মানুষ ভাবতে থাকে। তার মতো এরকম কেউ এই পৃথিবীতে নেই। এটা সে প্রকাশ করে কম। তবে মনে মনে কল্পনা করে বেশি।
মানসিক রোগের শারীরিক লক্ষণ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা: মেখলা সরকার (মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ) বলেছেন,❝যখন কোনো ব্যক্তির আচরণ, ব্যবহারে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়।
বিশেষ করে তার আবেগ প্রকাশের পরিবর্তন আসে এবং সেটা তার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে শুরু করে, তখনি তার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।❞
তার মতামত অনুযায়ী মানসিক রোগের লক্ষণ যেগুলো হতে পারে-
- অনেক দিন ধরে নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে আড়ালে রাখা।
- হঠাৎ করে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা।
- টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা।
- সবার সাথে ঝগড়া করা।
- অন্যদের সাথে একেবারে কথা বলতে না চাওয়া।
- গায়েবি কোনো আওয়াজ বা কথা শুনতে পাওয়া।
- অতিরিক্ত শুচিবাইগ্রস্ত হয়ে ওঠা।
- নিজেকে দায়ী মনে করা বা নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা।
- প্রাত্যহিক যে কাজ গুলো করা হয় নিয়মিত (গোসল বা দাঁত মাজা বা নিজের যত্ন নেওয়া) সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
- যেসব কাজে আনন্দ বা আগ্রহ হওয়ার কথা, সেগুলোর প্রতি নিরানন্দ বা অনাগ্রহ হয়ে ওঠা।
- সাসাজিক সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া।
- অকারণে অন্যদের সন্দেহ করা।
- সিদ্ধান্তহীনতা বা মনোযোগ কমে যাওয়া। খুব তীব্র হলে আত্মহত্যার মতো চিন্তা পরিকল্পনা করা ও চেষ্টা করে।
- ঘুম অস্বাভাবিক বাড়া বা কমতে পারে।
- খাবারের প্রতি রুচি কম বা বেশি হওয়া।
- পেশাগত কোনো কাজ বা বাসার বা অফিসের কাজের প্রতি অনীহা চলে আসা।
ডা: মেখলা সরকার বলেন,❝এগুলো লক্ষণ দেখা দিলেই যে মানসিক রোগ হবে তাও নয় কিন্তু। তবে এরকম লক্ষণ দেখা দিলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলা উচিত। তারা বিশ্লেষণ করে বুঝবেন যে কোন সমস্যার জন্য এমন হচ্ছে।❞
মানসিক রোগের ঔষধের নাম – এল্যাপ্যথী
মানসিক রোগের ঔষধের নাম বেশ কিছু রয়েছে। তবে এগুলো না খেয়ে প্রাকৃতিক ভাবে মানসিক রোগ থেকে নির্মুল করা ভালো এবং চেষ্টা করতে হবে যেকোনো ধরনের সমস্যা থেকে নিজেকে বের করে আনতে। মানসিক রোগের ঔষধের নামগুলো হচ্ছে-
মানসিক রোগের ঔষধের নাম | মিলিগ্রাম | দাম |
রেসিডোন (Residon) | ২ এমজি | ৪৬.১২ টাকা |
রেসিডোন (Residon) | ৪ এমজি | ৮১.০০ টাকা |
ডিপ্রেক্স (Deprex) | ৫ এমজি | ২৫.০০ টাকা |
নেক্সসিটাল (Nexcital) | ১০ এমজি | ১৩০.০০ টাকা |
অক্সাপ্রো (Oxapro) | ১০ এমজি | ১২০.০০ টাকা |
অক্সাট (Oxat) | ২০ এমজি | ১২০.৩০ টাকা |
কুপেক্স (Qupex) | ২০০ এমজি | ₹88.7 |
মানসিক রোগের ঔষধের নাম – হোমিওপ্যাথি
মানসিক রোগের ঔষধের নাম | সমস্যা সমাধান | দাম |
ক্যামোমিলা ৬ | খিটখিটে মেজাজ হওয়া, খামখেয়ালি কাজ, রাগ চেপে রাখায় উপসর্গ দেখা দিলে | ₹121.50 |
ওপিয়াম ৬ | কোনো জন্তু দেখতে পাচ্ছে মনে হওয়া | ₹125.00 |
ইথুজা ৬ | ইঁদুর দেখতে পাওয়া, কোনো বিষয়ে মনোনিবেশ করতে না পারা, পরিক্ষার ব্যাপারে হতাশ হওয়া | ₹95.00 |
ক্যানাবিস ইন্ডিকা ১ | অন্যমনস্ক ভাব লক্ষণে | ₹89.00 |
স্ট্র্যামোনিয়াম ৬ | ভূতপ্রেত দেখতে পাওয়া, চিৎকার করা, অনবরত বকবক করা | ₹95.00 |
ব্যাপ্টিসিয়া ৬ | নিজের দেহ খণ্ডিত দেখা | ₹85.00 |
ইগ্নেসিয়া ৩০ | নীরবে রোদন, বিমর্ষ-ভাব, চোখের পানি ফেলা, একা থাকার ইচ্ছা | ₹89.00 |
নাক্সভমিকা ৩ | ধর্মচিন্তা, বিমর্ষভাব লক্ষণে | ₹130.00 |
প্যাসিফ্লোরা (মাদার) | রক্তচাপ বৃদ্ধিতে | ₹119.00 |
পালস ৬ | রোগিণীর রোগের কথা বলার সময় কান্না | $19.99 |
ল্যাকেসিস ৬ | অনবরত কথা বলা | ₹124.00 |
বেলেডোনা ৬ | অনবরত কথা বলা | ₹95.00 |
অ্যাসিড ফস ৬ | স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া বা দুর্বলতায়, কথা বলার ইচ্ছে না থাকা | ₹119.00 |
প্লাটিনা ৩০ | পাগল হয়ে যাচ্ছে মনে হওয়ায় | ₹95.00 |
স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া ৬ | খামখেয়ালি মেজাজ | ₹89.00 |
লাইকোপোডিয়াম ৩০ | লোকের সঙ্গ ভালোবাসা | ₹128.00 |
নাক্সভমিকা ৬ | লোকের সঙ্গ লাভে বিরক্তি | ₹228.00 |
সালফার ৩০ | উৎকণ্ঠা থাকা, অস্থিরতা ভাব থাকা | ₹94.00 |
আর্সেনিক ৬ | রাগ ভালো হবে মনে করে নিরাশ হওয়া, অস্থিরতা ভাব থাকা | ₹95.00 |
অ্যাকোনাইট ৩ | অস্থিরতা ভাব থাকা | ₹117.00 |
কফিয়া ৬ | সব বিষয়ে টনটনে জ্ঞান থাকা | ₹95.00 |
হায়োসায়েমাস ৩ | কাউকে খুন করার ইচ্ছে জাগে | ৳750.00 |
অরাম মেট ৩০ | আত্মহত্যা করার ইচ্ছে জাগে | ₹124.00 |
শরীরের যেমন যেকোনো সমস্যা হলে মনের ওপর প্রভাব পড়ে, সেরকম মনের অবস্থা খারাপ হলে শরীরের ওপর প্রভাব পড়ে। একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
মন যদি ভালো থাকে, তাহলে যেকোনো কাজের প্রতি একটা আগ্রহ আসে। আবার শরীর ভালো থাকলে মনের অবস্থাও ভালো থাকে। কোনটিই বাদ দিয়ে চরা যাবে না।
মানসিক সমস্যা হলে উপরের যে সমস্যা গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু না কিছু দেখা দিবে। এই অবস্থায় রোগীর সাথে কখনোই খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। এই লক্ষণ গুলোর সাথে মিলিয়ে নিজে নিজে মানসিক রোগের ঔষধ খেতে যাবেন না এবং অন্যকেও খাওয়াতে যাবেন না।
আবার শুধুমাত্র একটি লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়। অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
মানসিক রোগের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অনেকে বলে থাকেন ঔষধ উপকারী ও ভালো বস্তু। আংশিকভাবে কথাটি সত্য। তবে পুরোপুরি নয়। ঔষধ রোগ ভালো করে, আবার রোগ তৈরিও করে। সব ঔষধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহনীয় ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে।
আবার কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে রোগী মারা যায় পর্যন্ত। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ লাখ মানুষ ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন এক লাখ রোগী মৃত্যুবরণ করে।
অনেকের মৃত্যু হয় না, কিন্তু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আমরা অনেকেই জানি না যে, মানসিক রোগের ঔষধের কারণে বমিবমি ভাব, মাথা ঘোরা সমস্যা, মানসিক পরিবর্তন, ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য, তন্দ্রাচ্ছন্ন, অনিদ্রা, পেট জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া মতো সমস্যা গুলো হতে পারে।
যেটা একটা মানুষের জীবনে খুবই খারাপ অবস্থা ডেকে আনে।
মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
মানসিক রোগের ঔষধের নাম সম্পর্কে আমরা ধারণা পেয়েছি। তবে কিছু উপায় অবলম্বন করে মানসিক রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। মানসিক রোগ থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, সেটা সম্পর্কে জানবো-
১। নিয়মমাফিক জীবন যাপন করা
একটা সঠিক সুন্দর নিয়মে যায় জীবন যাপন করেন, তাহলে মানসিক সমস্যা গুলো তেমন দেখা যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা, খাওয়া, ঘুম সঠিক সময়ে হলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
২। ধূমপান ও মাদক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে
অনেকে বলেন যে, নেশার কোনো দ্রব্য খেতে থাকলে মানসিক দিক দিয়ে শান্তি পাওয়া যায়। কথা টা একদমই ভুল। মানসিক রোগীর অসুস্থতা আরো বাড়িয়ে তুলবে যেকোনো ধরনের নেশার দ্রব্য। তাই এই ধরনের দ্রব্য হতে দূরে থাকাটাই শ্রেয়।
৩। ধর্মীয় কাজে মনোনিবেশ করা
মানসিক রোগীর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কোরআন তেলাওয়াত করা টা খুবই দরকার। এতে মনে অনেক প্রশান্তি আসবে। এছাড়াও ওয়াজ, গজল, ইসলামিক সঙ্গীত শুনবেন। জিকির আযকার করতে থাকবেন নিয়মিত। নিয়মিত যদি এগুলো করতে থাকেন তাহলে মানসিক সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে।
৪। সুষম ও ভিটামিন যুক্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, শাক-সবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন যুক্ত খাবার তালিকায় রাখতে হবে। এতে দেহের শক্তি পাবে ও মন মেজাজ প্রফুল্ল থাকবে।
৫। বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকা
বিভিন্ন ধরনের কাজ বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিজেকে নিয়োজিত রাখা।
৬। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব দের সাথে মেলামেশা করা
মানসিক দিক দিয়ে কেউ অসুস্থ হলে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয়। তখন সেই রোগী আরো একা এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেজন্য মানসিক রোগীদের উচিত আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সকলের সাথে মেলামেশা করা।
৭। প্রতিদিন নিয়মমাফিক ব্যায়াম করা
প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘন্টা মতো হাঁটা। সাধারণ কিছু কিছু সাধারণ ব্যায়াম আছে, সেগুলো নিয়মিত করা। এর কারণে মেজাজ প্রফুল্ল হবে, বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
৮। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
মানসিক রোগীদের বড় সমস্যা হচ্ছে ঘুম কম হওয়া বা বেশি হওয়া। দৈনিক ৮-১০ ঘন্টা ঘুমানো খুবই দরকার। সঠিক সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে হবে।
উপরোল্লিখিত উপায় গুলো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও আপনার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা বেশি ভালো।
শেষ কথা
সর্বপ্রথম মানুষের মনে সর্ব প্রকার অসুস্থতা দেখা দেয়। আস্তে আস্তে শরীরের যন্ত্রের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা প্রকাশ পায়। তৎক্ষনাৎ ভাবে মানসিক রোগ সহজ উপায়ে দূরীকরণ ও বিনাশ সাধন ও স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা দরকার।
জৈব ও অজৈব পদার্থের রাসায়নিক সংযোগে জীবদেহ গঠিত। এর মধ্যে যেকোনো একটির ক্রিয়ার অভাব হলেই শরীরে রোগ বাসা বাঁধবে। প্রকৃত অবস্থায় জীবদেহের এই স্বভাব আছে কিনা সেটা নির্ধারণ করা, আর না থাকলে সেটা সেই স্বভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।
আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী ব্যাধি নিরাময় করা। মানসিক রোগের ঔষধের নাম গুলো সম্পর্কে আজ আমরা সম্পূর্ণ ধারণা পেলাম। বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সম্পর্কিত আর্টিকেল গুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যন্য আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন।
মানসিক রোগের ঔষধের নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ
১। মানসিক ঔষধ কয়টি?
উত্তর: মানসিক ঔষধ হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি পাওয়া যায়। আপনি যেটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করেন সেটা খেতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
২। সবচেয়ে শক্তিশালী মানসিক ঔষধ কোনটি?
উত্তর: মানসিক রোগের জন্য এলোপ্যাথির চেয়ে হোমিওপ্যাথি ঔষধ অনেক কার্যকরী। আপনার শরীর ও মনের বিভিন্ন বিষয় গুলো শুনে তারপর বিশ্লেষণ করে আপনার জন্য কোন ঔষধ টা প্রযোজ্য সেটাই আপনাকে দেওয়া হবে। এবং খুবই কার্যকরী ও শক্তিশালী ঔষধই আপনাকে দেওয়া হবে।
৩। মানসিক রোগ কি ভালো হয়?
উত্তর: কারো কারো ক্ষেত্রে শতভাগ নির্মুল না হলেও আংশিক সুস্থ হয়ে যায়। আবার কারো ক্ষেত্রে চিকিৎসার মাধ্যমে একদম সুস্থ হয়ে যায়। শুধু ঔষধের ওপর নির্ভর করে থাকলেই হবে না। শরীরে অন্য অসুখ থাকলে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি।
আরও পড়ুন-
সিনকারা সিরাপ এর উপকারিতা ও সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
পুরুষের মেছতা দূর করার ক্রিম ও ব্যাবহারবিধি