বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম
আমাদের শরীর প্রকৃতিগতভাবে প্রতিদিন শ্লেষ্মা তৈরি করে। প্রায় এক লিটার শ্লেষ্মা সাধারণত প্রতিদিন আমাদের শরীরে তৈরি হয়। শ্বাসতন্ত্রকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এই শ্লেষ্মা। তবে শ্লেষ্মার পরিমাণ বেশি হলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা।
অতিরিক্ত শ্লেষ্মা আমাদের কাছে কফ নামে পরিচিত। কফ বা শ্লেষ্মা বলতে বুঝায়, ফুসফুস এবং উর্দ্ধ শ্বাসনালীগুলোর পর্দার কোষগুলোর দ্বারা উৎপন্ন একটা ঘন এবং আঠালো তরল পদার্থ।
একজন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে শ্লেষ্মার ঘনত্ব পাতলা থাকে, তাই এটি লক্ষণীয় হয় না। কিন্তু কিছু অসুখের সময় ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুর মত সংক্রামক শক্তিকে জালে ফেলতে শ্লেষ্মা ঘন হয়।
ঊর্ধ্ব শ্বাসনালীর সংক্রমণ, সাধারণ সর্দি, এলার্জি, এজমা, নিউমোনিয়া, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি (ফুসফুস) ডিজিজ (সিওপিডি) এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো রোগে শ্লেষ্মা / কফ বেশি উৎপন্ন হতে পারে।
দীর্ঘদিন বুকে কফ জমে থাকলে সাংঘাতিক পরিণতি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের বুকে কফ জমে থাকার কারণে নিউমোনিয়া হতে পারে। তাই বুকে কফ জমলে সতর্ক থাকতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা করতে হবে।
আজকের আর্টিকেলে আলোচনার বিষয় হচ্ছে বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম। এছাড়াও আলোচনা করা হবে বুকে কফ জমার কারণ, ঘরোয়া প্রতিকার ইত্যাদি সম্পর্কে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করছি আপনারা উপকৃত হবেন।
আরও পড়ুনঃ ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম
বুকে কফ জমার কারণ

বিভিন্ন কারণে বুকে কফ জমতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে শুষ্ক কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হলে বুঝে নিবেন আপনার বুকে কফ জমেছে। বুকে কফ জমার কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
অ্যাসিড রিফ্লাক্স
অ্যাসিড রিফ্লাক্স হচ্ছে একটি পরিপাক রোগ। এই রোগে পাকস্থলীর অ্যাসিড বা পিত্ত খাদ্যনালীর আস্তরণে জ্বালাপোড়া করে। অ্যাসিড রিফ্লাক্স হলে পাকস্থলীর এসিড খাদ্যনালী থেকে গলাতে চলে আসে। যা গলাকে উত্ত্যক্ত করে এবং শ্লেষ্মা নিঃসরণ করে। অতিরিক্ত পরিমাণ শ্লেষ্মা তৈরি হয়ে বুকে কফ জমে।
ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমণ
আমাদের শ্বাসনালী বা ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণ হলে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা নিঃসরিত হয়। সাধারণত ফ্লু (Flu), একিউট ব্রংকাইটিস এবং নিউমোনিয়ার মত সংক্রমণে শ্বাসনালী বাড়তি শ্লেষ্মা উৎপন্ন করে। অতিরিক্ত শ্লেষ্মা নিঃসরণের ফলে বুকে কফ জমা হয়।
এলার্জি
এলার্জির কয়েকটি উপসর্গ হলো : হাঁচি, কাশি, বুকে কফ জমা, চোখে চুলকানি ও বুক আঁটসাঁট হওয়া। বায়ুবাহিত কোন কিছুর প্রতি (যেমন : ফুলের রেণু ও ধুলা) এলার্জিক হলে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয়। যার ফলে বুকে কফ জমে।
হাঁপানি
শ্বাসকষ্ট এবং বুকে আঁটসাঁট অনুভূতি হওয়ার পাশাপাশি হাঁপানি হলে বুকে কফও জমে। হাঁপানির কারণে শ্বাসনালীতে প্রদাহ হয় বলে অতিরিক্ত পরিমাণ শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয়। অতিরিক্ত শ্লেষ্মার ফলে বুকে কফ জমে। তবে হাঁপানি হলে অল্প পরিমানে সাদা বা স্বচ্ছ শ্লেষ্মা দুশ্চিন্তার কোন কারণ নয়।
সিওপিডি
সিওপিডি এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Chronic obstructive pulmonary disease. ফুসফুসের কিছু রোগ সিওপিডির অন্তর্ভুক্ত। যেমন : ক্রনিক ব্রংকাইটিস এবং এম্ফিসেমা। ক্রনিক ব্রংকাইটিস ব্রঙ্কিয়াল টিউবে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং বাড়তি শ্লেষ্মা তৈরি করে। ফুসফুসকে উত্ত্যক্ত করে এমন কিছুর দীর্ঘমেয়াদী সংস্পর্শে (যেমন :ধূমপান) সাধারণত সিওপিডি হয়। হাঁপানি থেকেও সিওপিডি হতে পারে।
সিস্টিক ফ্রাইব্রোসিস
সিস্টিক ফ্রাইব্রোসিস (Cystic Fibrosis) একটি বংশগত রোগ। এই রোগের কারণে শরীরে পুরু এবং শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয়। সিস্টিক ফ্রাইব্রোসিস ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গে কফ জমাতে পারে। এই রোগে বয়স বাড়ার সাথে ফুসফুসের অন্যান্য অবনতিও হতে থাকে।
বুকে কফ জমে থাকার লক্ষণ বা উপসর্গ
কোন রোগ দীর্ঘায়ু হওয়ার পূর্বেই এর নির্ণয় এবং নিরাময় অত্যন্ত জরুরী। যেন পরবর্তীতে প্রকট আকার ধারণ করতে না পারে। কিছু প্রাণঘাতী রোগ আছে যা হলে রোগী পূর্বে থেকে কিছুই বুঝতে পারে না। আবার এমন কিছু রোগ আছে যা হওয়ার পূর্বে শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। বুকে কফ জমলেও শরীরে কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ পূর্বে থেকেই দেখা দেয়। বুকে কফ জমার উপসর্গ গুলো নিচে দেওয়া হল :
- নাক দিয়ে অনবরত শ্লেষ্মা বের হওয়া।
- প্রথম দিকে শরীরে জ্বর থাকা। এমনকি শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- শুয়ে থাকার সময় নাকের পিছন দিক থেকে গলায় শ্লেষ্মা ক্ষরণ।
- মাঝেমধ্যে বমির ভাব হওয়া। অনেকের ক্ষেত্রে কফ জমার কারণে মারাত্মক বমি হয়।
- সশব্দে অনবরত গলা ঝাড়া এবং গলা পরিষ্কার করার ইচ্ছা।
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। সাঁ সাঁ করে বা শব্দ করে নিঃশ্বাস ফেলা।
- পেট থেকে শুরু করে বুক পর্যন্ত জ্বালাপোড়া বা বুকে ব্যথা হওয়া।
- গলার আওয়াজ কর্কশ হওয়া।
- থুতুতে রক্ত (কাশির সাথে বের হওয়া শ্লেষ্মা)।
বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম – ট্যাবলেট
ঠান্ডা, সর্দি, কাশি বা ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যার কারণে বুকে কফ জমে। বুকে কফ জমে থাকলে দেখা দিতে পারে শরীরে বিভিন্ন রকম জটিলতা। তাই কফ জমে থাকলে অবশ্যই বের করতে হবে। বুকের কফ বের করার জন্য রয়েছে কিছু ঘরোয়া উপায় এবং কিছু ঔষধ। বাজারে বেশ কিছু বুকের কফ বের করার ট্যাবলেট আছে। বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম নিচে দেওয়া হল :
১. অ্যালকফ কফজেল ট্যাবলেট ( Alkof Cofgel Tablet)
প্রস্তুতকারক : অ্যালকেম ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ( Alkem Laboratories Ltd)
উপাদান :
ডেক্সট্রোমিথরফান (Dextromethorphan),
ক্লোরফেনিরামিন (Chlorpheniramine),
গুয়াইফেনেসিন (Guaifenesin),
ব্রোমহেক্সিন (Bromhexine)
বিশেষ দ্রষ্টব্য :
- অ্যালকফ কফজেল ট্যাবলেট কফ নিরাময় করার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট রোধ করতেও সাহায্য করে।
- এই ওষুধটির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যাদের ব্রংকাইটিস আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন।
- এই ট্যাবলেট চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
২. মিউকোলিট ট্যাবলেট (Mucolyt Tablet)
প্রস্তুতকারক : ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ( Incepta Pharmaceuticals Limited)
উপাদান : ব্রোমহেক্সিন হাইড্রোক্লোরাইড (Bromhexine hydrochloride) – ৮ মিলিগ্রাম
মূল্য : একক মূল্য ২ টাকা এবং এক পাতার মূল্য (২×১০) ২০ টাকা।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : মিউকোলিট ট্যাবলেট গলার কফ নিরাময় করতে সাহায্য করে।
বুকের কফ বের করার সিরাপ
বুকের কফ বের করার ওষুধ (ট্যাবলেট) এর চেয়ে ডাক্তাররা সিরাপ খেতে বেশি পরামর্শ দেন। কফ বের করার জন্য সিরাপ অনেক বেশি উপকারী। বুকের কফ খুব সহজে বের করে দিবে এমন কয়েকটি সিরাপের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. এমব্রক্স (Ambrox)
- উপাদান : এমব্রোক্সল হাইড্রোক্লোরাইড (১৫ মি.গ্রা. / ৫ মি.লি.)
- প্রস্তুতকারক : স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি
- এমব্রক্স সিরাপ দিনে দুইবেলা খাবারের পর সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৫০ টাকা।
২. মুকোসপেল ( Mucosple)
- উপাদান : ব্রোমহেক্সিন হাইড্রোক্লোরাইড (৪ মি.গ্রা. / ৫ মি.লি.)
- প্রস্তুতকারক : স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি
- মুকোসপেল সিরাপ দিনে দুইবেলা খাবারের পর সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৪০ টাকা।
- একাধারে ৬-৭ দিন সেবন করলে কফ নিরাময় হয়ে যাবে।
৩. ও-কফ (Ocof)
- উপাদান : ডেক্সট্রোমেথর্ফেন + ফিনাইলএফ্রিন + ট্রাইপ্রোলিডিন {(২০ মি.গ্রা. + ১০ মি.গ্রা. + ২.৫ মি.গ্রা.) / ৫ মি.লি.}
- প্রস্তুতকারক : স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি
- ও-কফ সিরাপ দিনে তিনবেলা সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ১১০ টাকা।
৪. রি-কফ (Recof)
- উপাদান : এমব্রোক্সল হাইড্রোক্লোরাইড (১৫ মি.গ্রা. / ৫ মি.লি.)
- প্রস্তুতকারক : রেনেটা লিমিটেড
- রি-কফ সিরাপ দিনে তিনবেলা সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৪০ টাকা।
৫. টোসপেল (Tuspel)
- উপাদান : গুয়াইফেনেসিন + ডেক্সট্রোমেথর্ফেন + মেনথল {(২০০ মি.গ্রা. + ১৫ মি.গ্রা + ১৫ মি.গ্রা) / ৫ মি.লি.}
- প্রস্তুতকারক : বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
- টোসপেল সিরাপ দিনে দুইবেলা সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৮৫ টাকা।
৬. লাইটেক্স (Lytex)
- উপাদান : এমব্রোক্সল হাইড্রোক্লোরাইড (১৫ মি.গ্রা. / ৫ মি.লি.)
- প্রস্তুতকারক : ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
- লাইটেক্স সিরাপ দিনে তিনবেলা সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৫০ টাকা।
৭. ওয়ান-কফ (OneCof)
- উপাদান : এমব্রোক্সল হাইড্রোক্লোরাইড (১৫ মি.গ্রা. / ৫ মি.লি.)
- প্রস্তুতকারক : ওয়ান ফার্মা লিমিটেড
- ওয়ান-কফ সিরাপ দিনে দুই বেলা সেবন করতে হবে।
- প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৫০ টাকা।
বুকের কফ দূর করার ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
বুকের কফ দূর করার ওষুধে দেখা দিতে পারে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। যেমন :
- দুর্বলতা এবং ক্লান্তি ভাব
- ঘুমের ভাব
- হ্যালুসিনেশন
- স্নায়বিকতা
- হালকা মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা
- বমির ভাব বা বমি হওয়া
- জল বিয়োজন হওয়া
- অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা
- ঘাম এবং অস্থির অনুভূতি
- এডিমা (ফোলা)
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- পেট খারাপ
- মুখ শুষ্ক হওয়া
বুকের কফ বের করার ঘরোয়া উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে বুকের এবং গলার কফ বের করার কয়েকটি উপায় নিচে বর্ণনা করা হলো :
মধু ও তুলসী পাতা
বুকের কফ বের করার জন্য মধু অনেক উপকারী। হাদিসে আছে, মধু সকল রোগের মহৌষধ। বুকে কফ হলে নিয়ম করে কয়েকবার মধু খাবেন। মধু এবং তুলসী পাতা একত্রে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে।
মধু ও আদা
হাফ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চামচ মধু এবং দুই চামচ আদার রস মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি প্রত্যেকদিন দুই থেকে তিনবার সেবন করুন। এটি বুকের কফ বের করতে দারুন কার্যকরী। এছাড়াও দুই থেকে তিনবার দিনে আদা কুচি লবণ দিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতেও কফ বের হওয়া সম্ভাবনা অনেক থাকে।
মধু ও পেঁয়াজ
ঠান্ডা বা সর্দি কাশি জাতীয় অসুখে পেঁয়াজের তুলনা হয় না। বুকের কফ বের করতেও পেঁয়াজ অনেক কার্যকরী। পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মধু এবং পানি একত্রে মিশিয়ে অনেকক্ষণ ধরে গরম করুন। এরপর এই মিশ্রণটি হালকা ঠান্ডা হলে পরিমাণ মতো গ্রহণ করুন।
কাঁচা হলুদ
কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য সর্দি এবং কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়া বুকের কফ বের করতে কাঁচা হলুদ অনেক কার্যকরী। হালকা গরম পানিতে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে নিন। অতঃপর এই মিশ্রণটি দিয়ে গার্গেল করুন। আশা করি উপকৃত হবেন।
মধু এবং গরম পানি
আমরা সকলেই জানি, মধু সর্দি কাশির জন্য কতটা কার্যকরী। গরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন অথবা গরম পানির মধ্যে মধু দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল করুন। অতঃপর এই মিশ্রণটি সেবন করুন। আশা করছি আপনার বুকের কফ বের হয়ে আসবে।
লবণ এবং পানি
বুকের কফ বের করার জন্য লবণ এবং পানির মিশ্রণ খেলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। লবণ এবং পানির মিশ্রণ শ্বাসযন্ত্র থেকে খুব সহজেই কফ বের করতে সহায়তা করে। তাই বুকে কফ জমলে এই মিশ্রণটি সেবন করতে পারেন।
শিশুর বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম
সাধারণত বড়দের তুলনায় শিশুদের বেশি ঠান্ডা লাগে। ঠান্ডা লাগার কারণে শিশুদের বুকে কফ আটকে যেতে পারে। বুকে কফ আটকে গেলে শিশুদের শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হয়। তবে বুকের কফ দূর করার জন্য শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ না খাওয়ানোই ভালো। এক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। যেমন:
- হালকা গরম পানির সাথে এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এই মিশ্রণটি শিশুর বুকের কফ জমা থেকে স্বস্তি দিবে।
- শিশুর ঠান্ডার সমস্যা হলে টমেটো এবং লেবুর স্যুপ খাওয়াতে পারেন। এটি শিশুর পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বুকের কফ গলিয়ে স্বস্তি দিবে।
- গরম পানি দিয়ে শিশুর নাকে ভাপ দিন। এভাবে কয়েকবার করলে শিশুর বন্ধ নাক খুলে যাবে।
- সর্দি বা কাশি হলে অবশ্যই শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করাবেন। এতে সর্দি শরীরে বসে যাবে না।
- শিশুর সর্দি কাশি হলে ঘুমানোর সময় মাথা কিছুটা উঁচু করে রাখুন। এতে করে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া অনেক সহজ হয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : উপরে বর্ণিত ঘরোয়া উপায়গুলা অবলম্বন করার পরেও যদি শিশুর কফ বা সর্দি কাশি ঠিক না হয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। মনে রাখবেন বুকে কফ জমে থাকলে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
শেষকথা
ঠান্ডা জাতীয় সমস্যা হলে বুকে কফ জমে যায়। বুকের কফ বের করার জন্য রয়েছে কিছু ঘরোয়া উপায় এবং ওষুধ। উপরের আলোচনায় বর্ণনা করা হয়েছে বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম সম্পর্কে। মনে রাখবেন প্রতিটি রোগী এবং তাদের সমস্যা ভিন্ন।
তাই রোগীর বয়স, রোগের ধরন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে একেকজনের চিকিৎসা এবং ওষুধের ডোজ একেক রকম হয়। তাই চেষ্টা করবেন ওষুধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। বুকের কফ বের করার ওষুধ নাম সম্পর্কে আরও কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
বুকের কফ বের করার ঔষধ নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ
১. বুকের কফ দূর করার মেশিনের নাম কি?
উত্তর : বুকের কফ দূর করার জন্য সাকার মেশিন (Sucker Machine) ব্যবহার করা হয়।
২. গলার কফ দূর করার ঔষধের নাম কি?
উত্তর : গলার কফ দূর করতে নিম্নোক্ত সিরাপ খেতে পারেন –
- তুসকা প্লাস (Tusca plus)
- অ্যাডোভাস (Adovas)
- এমব্রক্স (Ambrox)
- ও-কফ (Ocof)
৩. বুকের কফ কেন হয়?
উত্তর : ঋতু পরিবর্তনের কারণে আমাদের শরীরে দেখা দেয় জ্বর, ঠান্ডা বা কাশি। যার ফলে পরবর্তীতে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠাণ্ডার সঙ্গে হার মানে।
ফলস্বরূপ অনেকেরই ঠান্ডার ফলে বুকে কফ জমা হয়। অনেকের আবার বুকের কফ অনায়াসেই বের হয়ে যায়। আর যাদের বুকের কফ সহজে বের হতে চায় না, তাদের জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় বা ওষুধ সেবন করতে হয়।
আরও পড়ুন-
মুখের ব্রণ দূর করার উপায়, চিকিৎসা পদ্ধতি
লবঙ্গের উপকারিতা ও অপকারিতা, লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম